আল্প আরসালান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
MdsShakil (আলোচনা | অবদান)
103.130.112.182 (আলাপ)-এর সম্পাদিত 4732623 নম্বর সংশোধনটি বাতিল করা হয়েছে ,উপাধি ব্যবহার(mobileUndo)
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
Khan Muhammad Shakil (আলোচনা | অবদান)
তথ্য সংযোগ
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
২৬ নং লাইন: ২৬ নং লাইন:
পিতা [[চাঘরাই বেগ|চাঘরাই বেগের]] মৃত্যুর(১০৫৯ খ্রিষ্টাব্দ) পর তিনি [[খোরাসান|খোরাসানের]] শাসক হন। তার চাচা [[তুঘরিল বেগ|তুঘরিল বেগের]] মৃত্যুর পর আল্প আরসালানের ভাই সুলাইমান [[তুঘরিল বেগ]] এর উত্তরাধিকারী হন। আরসালান ও আরেক চাচা [[কুতালমিশ|কুতালমিশের]] মধ্যে এই উত্তরাধিকার নিয়ে লড়াই হয়। আল্প আরসালান কুতালমিশকে পরাজিত করেন এবং ১০৬৪ সালের ২৭ এপ্রিল [[সেলজুক রাজবংশ|মহান সেলজুক রাজবংশের]] সুলতান হন এবং [[আমুদরিয়া]] থেকে [[টাইগ্রিস]] পর্যন্ত [[পারস্য সাম্রাজ্য|পারস্যের]] একচ্ছত্র সম্রাট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
পিতা [[চাঘরাই বেগ|চাঘরাই বেগের]] মৃত্যুর(১০৫৯ খ্রিষ্টাব্দ) পর তিনি [[খোরাসান|খোরাসানের]] শাসক হন। তার চাচা [[তুঘরিল বেগ|তুঘরিল বেগের]] মৃত্যুর পর আল্প আরসালানের ভাই সুলাইমান [[তুঘরিল বেগ]] এর উত্তরাধিকারী হন। আরসালান ও আরেক চাচা [[কুতালমিশ|কুতালমিশের]] মধ্যে এই উত্তরাধিকার নিয়ে লড়াই হয়। আল্প আরসালান কুতালমিশকে পরাজিত করেন এবং ১০৬৪ সালের ২৭ এপ্রিল [[সেলজুক রাজবংশ|মহান সেলজুক রাজবংশের]] সুলতান হন এবং [[আমুদরিয়া]] থেকে [[টাইগ্রিস]] পর্যন্ত [[পারস্য সাম্রাজ্য|পারস্যের]] একচ্ছত্র সম্রাট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।


আল্প আরসালান তার উজির [[নিজামুল মুলক|নিজামুল মুলকের]] সাহচর্যে রাজ্যপরিচালনা করতেন। নিযামুল মুলক মুসলিম ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি। আল্প আরসালান তার সন্তান [[প্রথম মালিক শাহ|প্রথম মালিক শাহকে]] উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন। [[কাপাডোকিয়া|কাপাডোকিয়ার]] রাজধানী [[কায়সেরি|কায়সারিয়া মাযাকা]] দখল করার উদ্দেশ্যে তার বাহিনী [[ইউফ্রেটিস]] পার হয়ে শহর আক্রমণ করে। সুলতান স্বয়ং বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। এরপর তিনি [[আর্মেনিয়া]] ও [[জর্জিয়া|জর্জিয়ার]] দিকে অগ্রসর হন এবং ১০৬৪ সালে এই দুই অঞ্চল জয় করেন।
আল্প আরসালান তার উজির [[নিজামুল মুলক|নিজামুল মুলকের]] সাহচর্যে রাজ্যপরিচালনা করতেন। নিযামুল মুলক মুসলিম ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি। আল্প আরসালান তার সন্তান [[প্রথম মালিক শাহ|প্রথম মালিক শাহকে]] উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন। [[কাপাডোকিয়া|কাপাডোকিয়ার]] রাজধানী [[কায়সেরি|কায়সারিয়া মাযাকা]] দখল করার উদ্দেশ্যে তার বাহিনী [[ইউফ্রেটিস]] পার হয়ে শহর আক্রমণ করে। সুলতান স্বয়ং বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। এরপর তিনি [[আর্মেনিয়া]] ও [[জর্জিয়া|জর্জিয়ার]] দিকে অগ্রসর হন এবং ১০৬৪ সালে এই দুই অঞ্চল জয় করেন।[https://www.askummah.com/2020/12/alp-arslan.html বিস্তারিত]


== বাইজেন্টাইন প্রতিরোধ ==
== বাইজেন্টাইন প্রতিরোধ ==

০৭:৪৮, ১০ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আল্প আরসালান বেগ
মহান সেলজুক সাম্রাজ্যের সুলতান
আল্প আরসালান বেগ ১০৭১ বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে সেলজুক তুর্কিদের বিজয়ে নেতৃত্ব দেন
রাজত্ব১০৬৪–১০৭২
রাজ্যাভিষেক২৭ এপ্রিল ১০৬৪
পূর্বসূরিতুঘরিল বেগ
উত্তরসূরিপ্রথম মালিক শাহ
জন্ম১০২৯
মৃত্যু১৫ ডিসেম্বর ১০৭২ (৪৩ বছর)
আমু দরিয়া, তুর্কিস্তান
সমাধি
পূর্ণ নাম
মুহাম্মদ বেগ বিন দাউদ চাঘরাই
প্রাসাদসেলযুক রাজবংশ
পিতাচাঘরাই বেগ
ধর্মসুন্নি ইসলাম
মানযিকার্টের যুদ্ধ

আল্প আরসালান বেগ [১] (১০২৯-১৫ ডিসেম্বর ১০৭২) (ফার্সি:بیگ آلپ ارسلان‎ālp arslān; আরবি: الب ارسلان بیگ alb arslān), আসল নাম মুহাম্মদ বেগ বিন দাউদ চাঘরাই, তিনি সেলজুক রাজবংশের তৃতীয় সুলতান এবং সেলজুকের প্রপৌত্র। তার সময় থেকেই সেলজুক বংশ রাজবংশ হিসেবে প্রতিষ্টা লাভ করে। তার সামরিক দক্ষতা, বীরত্ব এবং লড়াইয়ে পারদর্শিতার জন্য তিনি আল্প আরসালান উপাধি লাভ করেন। তুর্কিতুর্কমেন ভাষায় এর অর্থ “বীর সিংহ”।[২]

কর্মজীবন

পিতা চাঘরাই বেগের মৃত্যুর(১০৫৯ খ্রিষ্টাব্দ) পর তিনি খোরাসানের শাসক হন। তার চাচা তুঘরিল বেগের মৃত্যুর পর আল্প আরসালানের ভাই সুলাইমান তুঘরিল বেগ এর উত্তরাধিকারী হন। আরসালান ও আরেক চাচা কুতালমিশের মধ্যে এই উত্তরাধিকার নিয়ে লড়াই হয়। আল্প আরসালান কুতালমিশকে পরাজিত করেন এবং ১০৬৪ সালের ২৭ এপ্রিল মহান সেলজুক রাজবংশের সুলতান হন এবং আমুদরিয়া থেকে টাইগ্রিস পর্যন্ত পারস্যের একচ্ছত্র সম্রাট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

আল্প আরসালান তার উজির নিজামুল মুলকের সাহচর্যে রাজ্যপরিচালনা করতেন। নিযামুল মুলক মুসলিম ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি। আল্প আরসালান তার সন্তান প্রথম মালিক শাহকে উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন। কাপাডোকিয়ার রাজধানী কায়সারিয়া মাযাকা দখল করার উদ্দেশ্যে তার বাহিনী ইউফ্রেটিস পার হয়ে শহর আক্রমণ করে। সুলতান স্বয়ং বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। এরপর তিনি আর্মেনিয়াজর্জিয়ার দিকে অগ্রসর হন এবং ১০৬৪ সালে এই দুই অঞ্চল জয় করেন।বিস্তারিত

বাইজেন্টাইন প্রতিরোধ

১০৬৮ সালে সিরিয়া যাত্রাকালে আল্প আরসালান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যে আক্রমণ করেন। সম্রাট ৪র্থ রোমানোস ডিয়োজেনেস আক্রমণকারীদের সাথে কিলিকিয়াতে সাক্ষাত করেন। এই দুই বাহিনীর মধ্যে তিনটি মারাত্মক লড়াই সংঘটিত হয়। প্রথম দুইটি সম্রাট নিজে পরিচালনা করেন এবং তৃতীয়টি মানুয়েল কমনেনুস কর্তৃক পরিচালিত হয়। ১০৭০ সাল নাগাদ সেলজুকরা পরাজিত হয় এবং ইউফ্রেটিসের তীরবর্তী অঞ্চলে ফিরে আসে। ১০৭১ সালে রোমানোস আনুমানিক ৩০০০০ সৈন্যের বাহিনী নিয়ে পুনরায় আরসালানের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। তার বাহিনীতে কুমান তুর্কি, ফ্রাঙ্কনর্মানরাও ছিল। এই বাহিনী উরসেল দা বেইউলের নেতৃত্বে আর্মেনিয়ার দিকে অগ্রসর হয়।

ভন লেকের উত্তর দিকের মুরাট নদীর তীরবর্তী মানযিকার্টে আল্প আরসালান ও রোমানোসের বাহিনী মুখোমুখি হয়। সুলতান আল্প আরসালান সন্ধির প্রস্তাব করলেও সম্রাট রোমানোস তা প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে দুই বাহিনীর মধ্যে লড়াই শুরু হয়। এই যুদ্ধ ইতিহাসে মানযিকার্টের যুদ্ধ বলে পরিচিত। বাইজেন্টাইন বাহিনীর কুমান সৈনিকরা, যারা মূলত ভাড়াটে সৈন্য ছিল, তৎক্ষণাৎ দলত্যাগ করে সেলজুক তুর্কিদের পক্ষে যোগ দেয়। কুমানদের দলত্যাগের ঘটনায় প্ররোচিত হয়ে ফ্রাঙ্ক ও নর্মানরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে।[৩] ফলে বাইজেন্টাইনরা যুদ্ধে সম্পূর্ণরূপে পর্যুদস্ত হয়।

সম্রাট রোমানোসকে বন্দী অবস্থায় আল্প আরসালানের সামনে আনা হয়। আল্প আরসালান তার সাথে সদয় আচরণ করেন। নিম্নোক্ত আলাপ তাদের মধ্যে হয়েছিল বলে কথিত আছে[৪] : আল্প আরসালান: যদি আমাকে আপনার সামনে বন্দী হিসেবে আনা হত তবে আপনি কী করতেন? রোমানোস: হয়ত আমি আপনাকে হত্যা করতাম অথবা কন্সটান্টিনোপলের রাস্তায় প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতাম। আল্প আরসালান: আমার শাস্তি এর চেয়েও কঠিন। আমি আপনাকে ক্ষমা করেলাম এবং আপনি মুক্ত।

আল্প আরসালানের এই বিজয় নিকট এশিয়ায় সেলজুক তুর্কিসুন্নি মুসলিমদের জন্য লাভজনক হয়ে উঠে। যদিও পরবর্তী চার শতাব্দী পর্যন্ত বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য টিকে ছিল এবং ক্রুসেডারদের কারণে মুসলিমরা ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়, মানযিকার্টের যুদ্ধ আনাতোলিয়ায় তুর্কিদের অগ্রযাত্রার পক্ষে সহায়ক হয়ে উঠে। এডওয়ার্ড গিবনসহ অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তার মতে মানযিকার্টের পরাজয় হল পূর্বাঞ্চলীয় রোমান সাম্রাজ্যের পতনের সূচনা। বাইযান্টাইনদের কাছ থেকে আনাতোলিয়া অধিকারের ঘটনা ক্রুসেডের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হয়।

আল্প আরসালানের মহত্ব

রাষ্ট্রীয় কাঠামো

মানযিকার্টের যুদ্ধের পর আল্প আরসালান ও ৪র্থ রোমানোস

আল্প আরসালানের কর্তৃত্ব সামরিক ক্ষেত্রে সীমিত ছিল। রাষ্ট্রীয় অন্যান্য কাজ তার উজির নিযামুল মুলক নিয়ন্ত্রণ করতেন। নিযামুল মুলক বিভিন্ন প্রশাসনিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত সামরিক জায়গীর প্রথা যাযাবর তুর্কিদের পারসিক, তুর্কি ও সেলজুক অঞ্চলের অন্যান্য সংস্কৃতির সম্পদের দিকে টেনে আনতে সমর্থ হয় এবং আল্প আরসালানকে একটি বিশাল বাহিনীর ভরণপোষণে সমর্থ করে তোলে।

সুলাইমান ইবনে কুতালমিশ ছিলেন আরসালানের ক্ষমতার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বীর পুত্র। তাকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশের শাসক নিযুক্ত করা হয় এবং আনাতোলিয়ায় বিজয় সম্পন্ন করার ভার অর্পণ করা হয়। এই কাজে তাকে নিযুক্ত করার কারণ হিসেবে আল্প আরসালান ও কুতালমিশের মধ্যকার যুদ্ধে সম্পর্কে ইবনে আল আসিরের বক্তব্য থেকে ধারণা করা যায়। তিনি লিখেছেন যে আল্প আরসালান কুতালমিশের মৃত্যুর জন্য কেঁদেছিলেন এবং আত্মীয় হারানোর কারণে গভীরভাবে শোকাহত ছিলেন।

মৃত্যু

মানযিকার্টের যুদ্ধের পর আল্প আরসালান পশ্চিম এশিয়ার অধিকাংশ অধিকার করেন। এরপর তিনি তার পূর্বপুরুষদের অঞ্চল তুর্কিস্তান অধিকার করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। এক শক্তিশালী সেনাবাহিনী নিয়ে তিনি আমু দরিয়ার দিকে যাত্রা করেন। নদী পার হওয়ার আগে কিছু দুর্গ দখল করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তৎমধ্যে একটি বেশ কয়েকদিন ধরে ইউসুফ আল-হারেযমি প্রতিরোধ করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি আত্মসমর্পণে বাধ্য হন এবং সুলতানের সামনে তাকে আনা হয়। সুলতান তাকে মৃত্যুদন্ড দেন। ইউসুফ তৎক্ষণাৎ তার ছুরি বের করে সুলতানের উপর হামলা চালান। এর চার দিন পর ১০৭২ সালের ২৫ নভেম্ব আরসালান মৃত্যু বরণ করেন। মার্ভে তার পিতা চাঘরাই বেগের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। তার সমাধিতে লেখা রয়েছে: “যারা সুলতান আল্প আরসালান বেগ'র আকাশসম জাকজমক দেখেছ, দেখ, তিনি এখন কালো মাটির নিচে শায়িত...”

তথ্যসূত্র

  1. "বেগ (পদবি)"উইকিপিডিয়া। ২০১৮-১১-১৭। 
  2. "Alp Arslan." Encyclopedia of World Biography. 2004. Encyclopedia.com. (September 5, 2011). http://www.encyclopedia.com/doc/1G2-3404700163.html
  3. Runciman, Steve (১৯৯২)। The First Crusade। Cambridge University Press। 
  4. Peoples, R. Scott Crusade of Kings Wildside Press LLC, 2008. p. 13. আইএসবিএন ০-৮০৯৫-৭২২১-৪, 9780809572212