ফেরিক অক্সাইড
![]() | |
![]() | |
![]() | |
নামসমূহ | |
---|---|
ইউপ্যাক নাম
আয়রন(III) অক্সাইড
| |
অন্যান্য নাম
ফেরিক অক্সাইড, হেমাটাইট, ফেরিক আয়রন, রেড আয়রন অক্সাইড, রুজ, ম্যাগনেটাইট, colcothar, iron sesquioxide, মরিচা, ochre
| |
শনাক্তকারী | |
ত্রিমাত্রিক মডেল (জেমল)
|
|
সিএইচইবিআই | |
কেমস্পাইডার | |
ইসিএইচএ ইনফোকার্ড | ১০০.০১৩.৭৯০ |
ইসি-নম্বর |
|
ই নম্বর | E১৭২(ii) (রঙ) |
মেলিন রেফারেন্স | 11092 |
কেইজিজি | |
পাবকেম CID
|
|
আরটিইসিএস নম্বর |
|
ইউএনআইআই | |
কম্পটক্স ড্যাশবোর্ড (EPA)
|
|
| |
বৈশিষ্ট্য | |
Fe2O3 | |
আণবিক ভর | ১৫৯.৬৯ g·mol−১ |
বর্ণ | লাল-বাদামীরঙের কঠিন পদার্থ |
গন্ধ | গন্ধহীন |
ঘনত্ব | 5.25 g/cm3[১] |
গলনাঙ্ক | ১,৫৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২,৮০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট; ১,৮১২ kelvin)[১] decomposes ১০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২২১ ডিগ্রি ফারেনহাইট; ৩৭৮ kelvin) β-dihydrate, decomposes ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট; ৪২৩ kelvin) β-monohydrate, decomposes ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট; ৩২৩ kelvin) α-dihydrate, decomposes ৯২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট; ৩৬৫ kelvin) α-monohydrate, decomposes[৩] |
দ্রাব্যতা | Soluble in diluted acids,[১] barely soluble in sugar solution[২] Trihydrate slightly soluble in aq. tartaric acid, citric acid, CH3COOH[৩] |
+3586.0·10−6 cm3/mol | |
প্রতিসরাঙ্ক (nD) | n1=2.91, n2=3.19 (α, hematite)[৪] |
গঠন | |
স্ফটিক গঠন | Rhombohedral, hR30 (α-form)[৫] Cubic bixbyite, cI80 (β-form) Cubic spinel (γ-form) Orthorhombic (ε-form) |
Space group | R3c, No. 161 (α-form)[৫] Ia3, No. 206 (β-form) Pna21, No. 33 (ε-form) |
Point group | 3m (α-form)[৫] 2/m 3 (β-form) mm2 (ε-form) |
Coordination geometry |
Octahedral (Fe3+, α-form, β-form)[৫] |
তাপ রসায়নবিদ্যা[৬] | |
তাপ ধারকত্ব, C | 103.9 J/mol·K[৬] |
স্ট্যন্ডার্ড মোলার এন্ট্রোফি এস |
87.4 J/mol·K[৬] |
গঠনে প্রমান এনথ্যাল্পির পরিবর্তন ΔfH |
−824.2 kJ/mol[৬] |
গিবসের মুক্ত শক্তি (ΔfG˚)
|
−742.2 kJ/mol[৬] |
ঝুঁকি প্রবণতা | |
জিএইচএস চিত্রলিপি | ![]() |
জিএইচএস সাংকেতিক শব্দ | সতর্কতা |
জিএইচএস বিপত্তি বিবৃতি | H315, H319, H335[৭] |
জিএইচএস সতর্কতামূলক বিবৃতি | P261, P305+351+338[৭] |
এনএফপিএ ৭০৪ | |
Threshold Limit Value | 5 mg/m3[১] (TWA) |
প্রাণঘাতী ডোজ বা একাগ্রতা (LD, LC): | |
LD৫০ (মধ্যমা ডোজ)
|
10 g/kg (rats, oral)[৯] |
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য অনাবৃতকরণ সীমা (NIOSH): | |
PEL (অনুমোদনযোগ্য)
|
TWA 10 mg/m3[৮] |
REL (সুপারিশকৃত)
|
TWA 5 mg/m3[৮] |
IDLH (তাৎক্ষণিক বিপদ
|
2500 mg/m3[৮] |
সম্পর্কিত যৌগ | |
অন্যান্য অ্যানায়নসমূহ
|
Iron(III) fluoride |
অন্যান্য ক্যাটায়নসমূহ
|
Manganese(III) oxide Cobalt(III) oxide |
সম্পর্কিত iron oxides
|
Iron(II) oxide Iron(II,III) oxide |
সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা ছাড়া, পদার্থসমূহের সকল তথ্য-উপাত্তসমূহ তাদের প্রমাণ অবস্থা (২৫ °সে (৭৭ °ফা), ১০০ kPa) অনুসারে দেওয়া হয়েছে। | |
![]() ![]() ![]() | |
তথ্যছক তথ্যসূত্র | |
ফেরিক অক্সাইড অথবা আয়রন(III) অক্সাইড একটি অজৈব যৌগ যার রাসায়নিক সংকেত Fe2O3 । এটি লোহা অর্থাৎ আয়রনের প্রধান তিনটি অক্সাইডের মধ্যে একটি। অপর দুটি হ'ল আয়রন (II) অক্সাইড (FeO) যা বিরল এবং আয়রন (II, III) অক্সাইড (Fe3O4) যা ম্যাগনেটাইট খনিজ নামে হিসাবেও প্রাকৃতিতে পাওয়া যায়। হেমাটাইট হিসাবে পরিচিত খনিজটি লোহা নিষ্কাশনের জন্য ইস্পাত শিল্পে প্রধান কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার হয়। এটি প্রধানত ফেরিক অক্সাইড এবং লোহার প্রধান উৎস। ফেরিক অক্সাইড সহজেই অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে। আয়রন (III) অক্সাইডকে প্রায়শই মরিচা বলা হয়। এই সংজ্ঞা কিছুটা ঠিক কারণ মরিচার বেশ কিছু ধর্ম এবং উপাদান ফেরিক অক্সাইডের সঙ্গে মেলে। তবে রসায়নে মরিচাকে আর্দ্র অর্থাৎ হাইড্রাস ফেরিক অক্সাইড হিসাবে বর্ণণা করা হয়।[১০].
গঠন
[সম্পাদনা]ফেরিক অক্সাইড বিভিন্ন রূপে (polymorphs) পাওয়া যায়। প্রধানটি আলফা( α )রূপে যেখানে, আয়রন অষ্টতলক জ্যামিতির আকারে থাকে অর্থাৎ প্রতিটি আয়রন কেন্দ্র ছয়টি অক্সিজেন লিগ্যান্ডে আবদ্ধ। গামা( γ ) রূপে কিছু আয়রন চতুস্তলকীয় জ্যামিতির আকারে থাকে যেখানে এটি চারটি অক্সিজেন লিগ্যান্ডে আবদ্ধ।.
আলফা দশা
[সম্পাদনা]আলফা ফেরিক অক্সাইড (α-Fe2O3) হলো ফেরিক অক্সাইডের সর্বাধিক সাধারণ রূপ। প্রাকৃতিকভাবে খনিজ হেমাটাইটে এই দশাটি দেখা যায়। হেমাটাইট লোহার প্রধান আকরিক।এর চৌম্বকীয় ধর্ম অনেকগুলি কারণের উপর নির্ভর করে যেমন, চাপ, কণার আকার এবং চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের তীব্রতার উপর।
গামা দশা
[সম্পাদনা]গামা ফেরিক অক্সাইড (γ-Fe2O3 ) এর চতুস্তলকীয় কাঠামো রয়েছে। এটি উচ্চ তাপমাত্রায় আলফা দশা থেকে রূপান্তরিত হয়। এটি খনিজ ম্যাগনেটাইট হিসাবে প্রাকৃতিতে পাওয়া যায়। এটি ফেরোম্যাগনেটিক তাই রেকর্ডিং টেপ তৈরিতে কাজে লাগে।[১১] যদিও 10 ন্যানোমিটারের চেয়ে ছোট অতি সূক্ষ্ম (আল্ট্রাফাইন) কণাগুলি অতিচুম্বকীয় (সুপারপ্যাম্যাগনেটিক)।এটি গামা আয়রন (III) অক্সাইড-হাইড্রোক্সাইডকে তাপ প্রয়োগ করে অনার্দ্র অবস্থায় এনে প্রস্তুত করা যেতে পারে। আরেকটি পদ্ধতিতে আয়রনের (II, III) অক্সাইড (Fe3O4) কে সাবধানে জারিত করে পাওয়া যায়।[১১] আয়রন (III) অক্সালেটকে তাপ বিয়োজনের দ্বারা অতি সূক্ষ্ম (আল্ট্রাফাইন) কণা প্রস্তুত করা যায়।
বিক্রিয়া
[সম্পাদনা]ফেরিক অক্সাইডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়া হলো কার্বোথার্মাল বিজারণ। অর্থাৎ কর্বনের উপস্থিতিতে তাপ বিজারণ। এই বিক্রিয়ার সাহায্যে লোহা উৎপাদন করা হয়। যে লোহা ইস্পাত তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
Fe2O3 + 3 CO → 2 Fe + 3 CO2
ফেরিক অক্সাইডের সঙ্গে অ্যালুমিনিয়ামের আর একটি খুব তাপউৎপাদক জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া হয়। এটিকে থারমিট বিক্রিয়া( thermite reaction) বলে।[১২]
2 Al + Fe2O3 → 2 Fe + Al2O3
এই প্রক্রিয়াটির সাহায্যে তৈরি গলিত লোহা দিয়ে রেলপথের রেলের লাইন জোড়া লাগানো ও মেরামতি করা হয়। ঢালাই লোহার অস্ত্র, ভাস্কর্য ও যন্ত্রপাতি তৈরিতে থারমিট বিক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হয়।
প্রস্তুতি
[সম্পাদনা]আয়রনের জারণের ফলে আয়রন (III) অক্সাইড তৈরি হয়। পরীক্ষাগারে সোডিয়াম বাইকার্বনেট দ্রবণকে তড়িৎবিশ্লেষণ করে এটি তৈরি করা যায়। এক্ষেত্রে ধণাত্মক তড়িৎদ্বার অর্থাৎ অ্যানোডটি লোহার হয়। সোডিয়াম বাইকার্বনেটেের দ্রবণ নিষ্ক্রিয় থাকে। বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না :
4 Fe + 3 O2 + 2 H2O → 4 FeO(OH)
বিক্রিয়ায় উৎপন্ন আর্দ্র আয়রন (III) অক্সাইডকে প্রায় ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করে অনার্দ্র আয়রন (III) অক্সাইড পাওয়া যায়।[১৩][১৪]
2 FeO(OH) → Fe2O3 + H2O
ব্যবহার
[সম্পাদনা]লৌহ শিল্পে
[সম্পাদনা]আয়রণ (III) অক্সাইডের কাঁচামাল হিসাবে সব থেকে বেশি ব্যবহার হ'ল লোহা এবং ইস্পাত শিল্পে যেমন লোহা, ইস্পাত এবং অনেক সংকর ধাতু উৎপাদন করতে।[১৪]
পালিশের কাজে
[সম্পাদনা]ফেরিক অক্সাইডের খুব সূক্ষ্ম গুঁড়ো "জুয়েলার্স রুজ", "রেড রুজ" বা শুধু মাত্র রুজ হিসাবে পরিচিত। এটি ধাতুর গয়না, লেন্স প্রভৃতি দ্রব্যের শেষ পর্যায়ে পালিশ করতে ব্যবহার হয়। ইতিহাসে প্রসাধনী হিসাবে এর ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেরিয়াম (IV) অক্সাইডের মতো কিছু আধুনিক পলিশের চেয়ে রুজ ধীরে ধীরে কাটে যায় তাই এখনও চশমার কাচ এবং ধাতুর গয়না পালিশ করতে রুজ ব্যবহার করা হয়। রুজ সোনার পালিশ করার সময় সোনার উপর রুজের কিছুটা হালকা দাগ থেকে যায়, যা সোনাকে আরও উজ্জ্বল দেখায়। বাজারে রুজ গুঁড়ো, লেই, পোলিশিং কাপড়ের উপর জরির মতন দেখতে বা শক্ত ছোট দণ্ডের( মোম বা গ্রিজযুক্ত) আকারে বিক্রি হয়। গয়নার কারিগরেরা গহনাগুলিতে থাকা অবশিষ্ট রুজ শ্রবণোত্তর শব্দতরঙ্গের সাহায্যে পরিষ্কার করে দেয়।
রঞ্জক
[সম্পাদনা]"পিগমেন্ট ব্রাউন ৬", "পিগমেন্ট ব্রাউন ৭", এবং "পিগমেন্ট রেড ১০১" এইসব নামে আয়রন (III) অক্সাইড রঙ্গক হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ Haynes, p. 4.69
- ↑ "A dictionary of chemical solubilities, inorganic"। archive.org। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ ক খ Comey, Arthur Messinger; Hahn, Dorothy A. (ফেব্রুয়ারি ১৯২১)। A Dictionary of Chemical Solubilities: Inorganic (2nd সংস্করণ)। New York: The MacMillan Company। পৃষ্ঠা 433।
- ↑ Haynes, p. 4.141
- ↑ ক খ গ ঘ Ling, Yichuan; Wheeler, Damon A.; Zhang, Jin Zhong; Li, Yat (২০১৩)। Zhai, Tianyou; Yao, Jiannian, সম্পাদকগণ। One-Dimensional Nanostructures: Principles and Applications। John Wiley & Sons, Inc.। Hoboken, New Jersey: John Wiley & Sons, Inc.। পৃষ্ঠা 167। আইএসবিএন 978-1-118-07191-5।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Haynes, p. 5.12
- ↑ ক খ গ Sigma-Aldrich Co. Retrieved on 2014-07-12.
- ↑ ক খ গ "NIOSH Pocket Guide to Chemical Hazards #0344" (ইংরেজি ভাষায়)। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ (NIOSH)।
- ↑ ক খ "SDS of Iron(III) oxide" (পিডিএফ)। KJLC। England: Kurt J Lesker Company Ltd.। ২০১২-০১-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৭-১২।
- ↑ PubChem। "Iron oxide (Fe2O3), hydrate"। pubchem.ncbi.nlm.nih.gov (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১১।
- ↑ ক খ Housecroft, Catherine E.; Sharpe, Alan G. (২০০৮)। "Chapter 22: d-block metal chemistry: the first row elements"। Inorganic Chemistry
(3rd সংস্করণ)। Pearson। পৃষ্ঠা 716। আইএসবিএন 978-0-13-175553-6।
- ↑ Adlam; Price (১৯৪৫)। Higher School Certificate Inorganic Chemistry। Leslie Slater Price।
- ↑ Handbook of Preparative Inorganic Chemistry, 2nd Ed. Edited by G. Brauer, Academic Press, 1963, NY. Vol. 1. p. 1661.
- ↑ ক খ Greenwood, N. N.; Earnshaw, A. (১৯৯৭)। Chemistry of the Element (2nd সংস্করণ)। Oxford: Butterworth-Heinemann। আইএসবিএন 978-0-7506-3365-9।