ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার সমর্থক
ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা একটি কাতালান ফুটবল দল যা বার্সেলোনা শহরে অবস্থিত। ১৮৯৯ সালে জোয়ান গাম্পারের নেতৃত্বে একদল ইংরেজ, সুইস এবং স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে ক্লাবটি গঠিত হয়। ১৯২৮ সালে, স্পেনের প্রথম সারির ফুটবল লীগ লা লিগা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই ক্লাব লীগটির অংশ এবং এদের কখনও দ্বিতীয় বিভাগে অবনমন ঘটেনি। এখন পর্যন্ত এই ক্লাব ২২ বার লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এছাড়া, ২৫ বার কোপা দেল রে এবং ৪ বার উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগও জিতেছে। ক্লাবের ১১৪ বছরের ইতিহাসে সমর্থকবৃন্দ ক্লাবটির কাতালান পরিচয় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯২৩ সালে মিগুয়েল প্রিমো দি রিভেরার স্বৈরাচারী শাসন থেকে শুরু করে ফ্রান্সিস ফ্রাঙ্কোর ফ্যাসিবাদী শাসন পর্যন্ত, বার্সেলোনা এবং কাতালোনিয়ার উপর বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতিক নিষেধাজ্ঞা প্রণয়ন করা হয়, যা ক্লাবটিকে একটি বিদ্রোহের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলে। ১৯৭৮ সালে স্পেনে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে, ক্লাবের কিছু সমর্থক গ্রুপ গড়ে ওঠে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বয়িক্সোস নয়িস।
২০০৩ সালে রোনালদিনিয়োর আগমন, এবং পরবর্তীতে লা লিগা এবং চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার সাফল্যের কারণে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দলের সমর্থকদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
বার্সেলোনার তিন ধরনের সমর্থক রয়েছে: সসি, পেনি এবং কিউল। সসি বা ক্লাবের সদস্যরা ক্লাব প্রেসিডেন্ট বা অন্যান্য নির্বাচনে ভোট প্রদানের যোগ্য। পেনিরা ঘনিষ্ঠভাবে সসিদের সাথে সংসৃষ্ট। এগুলো হল ফ্যান ক্লাব। কিউলরা হলেন ক্লাবের সাধারণ সমর্থক। এদের কোন আনুষ্ঠানিক সদস্যপদ নেই।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯০৯ সালের পূর্বে, বার্সেলোনা বিভিন্ন স্টেডিয়ামে খেলেছিল। এগুলোর কোনটিই ক্লাবের মালিকানাধীন ছিলনা। ১৯০৯ সালের ১৪ মার্চ থেকে বার্সেলোনা ক্যাম্প দি লা ইন্দাস্ত্রিয়াকে ঘরের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে, যার ধারণক্ষমতা ছিল ৬,০০০। এটিই ছিল ক্লাবের মালিকানাধীন প্রথম মাঠ। ১৯২২ সাল থেকে বার্সেলোনা ব্যবহার শুরু করে লেস কোর্তস স্টেডিয়াম। প্রাথমিকভাবে, এর ধারণক্ষমতা ২০,০০০ হলেও পরবর্তীকালে তা ৬০,০০০ এ উন্নীত করা হয়। লেস কোর্তস স্টেডিয়ামের উপরের সারি থেকে সমর্থকদের ডাকনাম কিউল-এর উত্পত্তি। যা কাতালান শব্দ Cul (বাংলা: গাধা) থেকে প্রাপ্ত।
১৯৪০ এর মাঝামাঝি সময়ে, পেনিয়েসের ধারণার উদ্ভব ঘটে। এটি ছিল একটি ফ্যান ক্লাব এবং একটি অর্থনৈতিক সহায়তার ক্লাবের সংমিশ্রন। ফ্রান্সিস ফ্রাঙ্কোর একনায়কতন্ত্রের সময় যখন ক্লাবের অর্থনৈতিক সহায়তা এবং জনগনের সমর্থনের প্রয়োজন ছিল, তখন এটি গড়ে ওঠে। ১৯৪৪ সালে, একদল সমর্থক এবং প্রাক্তন খেলোয়াড়দের নিয়ে প্রথম পেনিয়া সলেরা গড়ে ওঠে।[১] ১৯৫৩ সালে, ক্যাম্প ন্যু তৈরির প্রস্তাব করা হলে পেনিয়ারাই অর্থনৈতিক দিক দেখাশুনা করে। স্যান ম্যামেস তৈরির সময় অ্যাথলেতিক বিলবাও-এর অর্থনৈতিক পরিকল্পনা থেকে অনুপ্রেরণা জোগানো হয়। পেনিয়াদের একটি সংগঠন নির্মাণ কাজে অর্থনৈতিক সহায়তা করার অঙ্গীকার করে। ফলাফলস্বরূপ, স্টেডিয়ামের পরবর্তী নির্মাণ কাজ ক্লাবটিকে সমর্থকদের হাতে নিয়ে আসে, ফলে পেনিয়ারা ক্লাবে রাজনৈতিক প্রভাব পেয়ে যায়, যা এখনও বহাল রয়েছে।[২]