ফিরদৌস আল-হিকমা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফিরদৌস আল-হিকমা
فردوس الحكمة
লেখকআলি ইবনে সাহল রাব্বান আল-তাবারি
দেশআব্বাসীয় খিলাফত
ভাষাআরবী
ধরনবিশ্বকোষ
প্রকাশিত৮৫০

ফিরদৌস আল-হিকমা ( فردوس الحكمة ),[১] ইংরেজীতে প্যারাডাইস অফ উইজডম নামে পরিচিত,[২] আলী ইবনে সাহল রাব্বান আত-তাবারির রচিত একটি চিকিৎসাশাস্ত্রের বিশ্বকোষ যা ৮৫০ সালের দিকে সম্পন্ন হয়। এটি প্রাচীনতম ইসলামী চিকিৎসা বিশ্বকোষগুলির মধ্যে একটি। ছত্রিশটি অধ্যায়ে বিভক্ত বিশ্বকোষটি বিভিন্ন গ্রিক পন্ডিতদের উদ্ধৃতি এবং আত-তাবারির বেশ কিছু ব্যক্তিগত অদ্ভুত ঘটনার বিবরণে সমৃদ্ধ। ১৯২৮ সালে যুক্তরাজ্য হতে এটির ইংরেজি অনূদিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়।

বিষয়বস্তু[সম্পাদনা]

আত-তাবারি তার বিশ্বকোষটি ৩৬০টি আবওয়াব ( বা অধ্যায়ে) ভাগ করেছেন।[৩] এটিতে সাতটি আনওয়া (বা খন্ড) রয়েছে যা অ্যারিস্টোটেলের মতবাদ; ভ্রূণবিদ্যা; অ্যানাটমি; স্বপ্ন; মনোবিজ্ঞান; পুষ্টি; বিষবিদ্যা; সৃষ্টিতত্ত্ব; জ্যোতির্বিদ্যা; এবং ভারতীয় ঔষধ-এর মত বিশদ বিষয়সমূহ ধারণ করে।[৩]

আত-তাবারি তার বর্ণনা করা প্রতিটি রোগের জন্য একটি প্রতিকার প্রদান করেছেন; উদাহরণস্বরূপ, তিনি গ্রিক চিকিৎসক গ্যালেনের উদ্ধৃতি দিয়ে পরামর্শ দেন যে নেকড়ের মল দিয়ে কোলিক নিরাময় করা যেতে পারে।[৪] গ্যালেন ছাড়াও, আত-তাবারি অ্যাফ্রোডিসিয়াসের আলেকজান্ডার সহ অন্যান্য গ্রিক পন্ডিতদের ব্যাপকভাবে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। তার উদ্ধৃত করা গ্রিক পণ্ডিতদের মধ্যে আর্কিজেনস, অ্যারিস্টটল, ডেমোক্রিটাস, ডায়োস্কোরাইডস, হিপোক্রেটিস; পিথাগোরাস; এবং থিওফ্রাস্টাস অন্যতম।[২] তিনি তার সমসাময়িক আরবীয় চিকিৎসকদের বেশ কিছু উদ্ধৃতি দিয়েছেন।[৩]

উপরন্তু, বিশ্বকোষটিতে আত-তাবারির কিছু "অদ্ভুত ঘটনা"র ব্যক্তিগত বিবরণ আছে।[৫] যেমন- বানর-সদৃশ মানব, যে "বানরের মতোই সহবাসের লোভ করেছিল",[৬] একটি অগ্নিকুণ্ডের বর্ণনা যা একটি জরথুষ্ট্রীয় মন্দির ধ্বংস করেছিল,[৭] এবং তিনি গর্ভপাত ঘটাতে পারে এমন একটি পাথরের বর্ণনা করেন যেটি "গর্ভপাত প্ররোচিত করে"।[৮]

প্রকাশনার ইতিহাস[সম্পাদনা]

তাবারিস্তান ভিত্তিক চিকিত্সক আলী ইবনে সাহল রাব্বান আত-তাবারি ৮৫০ সালের দিকে এটির রচনা সম্পূর্ণ করেছিলেন এবং আব্বাসীয় খলিফা আল-মুতাওয়াক্কিলকে উৎসর্গ করেছিলেন,[৯] কাজটি "প্রথম সর্ব-সমেত চিকিৎসা সংকলন" [৩] এবং ইসলামের উম্মেষ ও চিকিৎসাবিদ্যার উন্নয়নের প্রাথমিক যুগের বিশ্বকোষের একটি বলে মনে করা হয়।[১০][১১][১২][১৩] বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড থমাসের মতে, এটি "ইসলামী বিশ্বের চিকিত্সকদের জন্য একটি ভিত্তি পাঠ" হয়ে উঠেছে।[১৪]

ব্রিটিশ পারস্যবিদ এডওয়ার্ড জি. ব্রাউন ১৯২৩ সালে বিশ্বকোষটি সম্পাদনা ও অনুবাদ করার সময় মারা যান; প্রকল্পটি পরবর্তীকালে ১৯২৮ সালে ব্রাউনের মেধাবী শিষ্য মুহম্মদ জুবায়ের সিদ্দিকী দ্বারা সম্পূর্ণ ও প্রকাশিত হয়।[১৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

উদ্ধৃতি[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]