নিখিল বরণ সেনগুপ্ত
নিখিল বরণ সেনগুপ্ত | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | (বয়স ৭০)
পেশা | চিত্রপরিচালক, অভিনেতা, চিত্রশিল্পী ও প্রযোজনা নকশাকার |
কর্মজীবন | ১৯৭৬–২০১৪ |
দাম্পত্য সঙ্গী | বিজয়া সেনগুপ্ত |
নিখিল বরণ সেনগুপ্ত (১৩ ডিসেম্বর ১৯৪৩ - ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪) ছিলেন একজন বাংলা, হিন্দি ও ওড়িয়া চিত্রপরিচালক, অভিনেতা, চিত্রশিল্পী এবং প্রযোজনা নকশাকার। "গাপা হেলেবি সাতা" (১৯৭৫) দিয়ে তিনি একজন চিত্রপরিচালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি জননী (১৯৮৪), সাহারি বাঘা (১৯৮৫), মা ও মমতা, সুনা চাদেই (১৯৮৭), যুগান্তর, তাহাদের কথা, বাঘ বাহাদুর (১৯৮৯) এবং মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার (২০০২) এর মতো চলচ্চিত্রগুলোয় অবদান রেখে সাফল্য অর্জন করেছেন।
চলচ্চিত্র শিল্পে তার ৪০ বছরের কর্মজীবনে, তিনি ওড়িশার তরুণ প্রতিভাদের মঞ্চে নিতে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ১৯৯৪ সালে "জননী" চলচ্চিত্রের জন্য সেরা চিত্রপরিচালক হিসাবে পুরস্কৃত হন এবং ২০০৯ সালে আজীবন অর্জন বিভাগে "গুরু কেলু চরণ" পুরস্কারে ভূষিত হন।[১][২]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]সেনগুপ্ত ভারতের ওড়িশা রাজ্যের প্রাক্তন রাজধানী ও বৃহত্তম শহর কটকে বেড়ে ওঠেন। কটকের রানীহাট বিদ্যালয়ে পড়াশোনার মাধ্যমে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। পরে তিনি র্যাভেনশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। কিন্তু তার ঝোঁক ছিল শিল্পজগতের দিকে, যা তাকে কলকাতার গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফটে শিল্পকলা অধ্যয়ন করতে নিয়ে যায়।
১৯৬৯ সালে পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার সাথে কাজ করেন। এছাড়াও তিনি একজন ভিজ্যুয়ালাইজার এবং বেশ কয়েকটি ম্যাগাজিনের চিত্রক হিসাবে কাজ করেছেন। তারপর তিনি পেইন্টিংয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তার কাজের কয়েকটি প্রদর্শনী করেন। তবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর তিনি আর পেছন ফিরে তাকানোর সময় পাননি।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]ওড়িয়া চলচ্চিত্র শিল্পে একজন পথপ্রদর্শক হিসেবে নিখিলের ওড়িয়া, বাংলা এবং হিন্দি তিন ভাষায় ৩৫ জন পরিচালকের সাথে ১০০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে কাজ করার ঈর্ষণীয় রেকর্ড রয়েছে। তিনি ওড়িয়া চলচ্চিত্র শিল্পের একমাত্র সদস্য, যিনি অপর্ণা সেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, মনমোহন দেশাই, অমল পালেকর, প্রশান্ত নন্দা, বিপ্লব রায় চৌধুরী, নিতাই পালিত, গোবিন্দ তেজ এবং রাজু মিশরার মতো অদম্য ব্যক্তিদের সাথে কাজ করেছেন।
তিনি হাকিম বাবু, জননী এবং হিসাব নিকাশ চলচ্চিত্রে শিল্প নির্দেশনার জন্য তিনটি রাজ্য পুরস্কারের বিজয়ী। তার স্বতন্ত্র অভিষেক হয়েছিল ওড়িয়া চলচ্চিত্র শিল্পের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র গাপা হেলেবি সাতা দিয়ে।[৩] গুরু কেলুচরণ মহাপাত্র পুরস্কারের বিচারক তার পরিষেবা এবং বিশিষ্টতার স্বীকৃতিস্বরূপ নিখিল বরণ সেনগুপ্তকে ২০০৮ সালের সিনেমায় "বিশিষ্ট ব্যক্তি" বিভাগে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে অত্যন্ত আনন্দিত বোধ করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]নিখিল বিজয়া সেনগুপ্তকে বিয়ে করেন। তাদের নীল সেনগুপ্ত ও বিমান সেনগুপ্ত নামে দুই ছেলে আছে। নিখিল অবসর সময়ে জল রঙে আঁকতে পছন্দ করতেন। তিনি ২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ৭০ বছর বয়সে মারা যান।[৪]
চলচ্চিত্র জীবন
[সম্পাদনা]চিত্রপরিচালক
[সম্পাদনা]- তোরা মরা কথা হবে চুপচাপ (২০১১)
- অ্যা মিলানা জুগা জুগারা (২০১০)
- আয়নাতে (২০০৭)
- পরী মহল (২০০৩)
- মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার (২০০২)
- হাউজ অব মেমোরিজ (২০০০)
- নির্বাচন (১৯৯৪)
- সুনা ভাউজা (১৯৯৪)
- বস্ত্র হারান (১৯৯১)
- চাকাদোলা কারুচি লীলা (১৯৯০)
- মা আমাকে শক্তি দে (১৯৯০)
- আসুচি মো কালিয়া সুনা (১৯৮৯)
- বাঘ বাহাদুর (১৯৮৯)
- বিধির বিধান (১৯৮৯)
- পুয়া মোরো কালা ঠাকুরা (১৯৮৮)
- চাকা আখি পাবু দেখুছি (১৯৮৭)
- সুনা চাদেই (১৯৮৭)
- তুন্ডা বৈদা (১৯৮৭)
- সাহারি বাঘা (১৯৮৫)
- চাকা ভাউনরি (১৯৮৫)
- হাকিম বাবু (১৯৮৫)
- জাগা হাতারে পাঘা (১৯৮৫)
- সময় বাধা বলোয়ান (১৯৮৫)
- জননী (১৯৮৪)
- হিসাব নিকাশ (১৯৮২)
- নয়া (১৯৭৯)
- বলিদান (১৯৭৮)
- গল্প হেলেবি সাতা (১৯৭৬)
- শেষ শ্রাবণ (১৯৭৬)
অভিনয়
[সম্পাদনা]- পরী মহল (২০০৩)
- দ্য স্কয়ার সার্কেল (১৯৯৬)
- নির্বাচন (১৯৯৪)
- আসুচি মো কালিয়া সুনা (১৯৮৯)
প্রযোজনা নকশাকার
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Rhythm rhapsody in guru's memory"। The Telegraph। ২০০৮-০৯-০৬। ২০১২-১১-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-১৪।
- ↑ "Guru Kelu Charan award"। নর্তকী। ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৯-১৩।
- ↑ Chakra, Shyamhari। "I enjoy painting as much as art direction"। The New Indian Express। ২০১৬-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-০২।
- ↑ "Art director Nikhil Da' passes away"। Odisha Sun Times। ২০১৪-০২-১৮। ২০১৪-০২-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০২-১৮।