নরওয়ের ইতিহাস
নরওয়ের ইতিহাস |
---|
ধারাবাহিকের একটি অংশ |
![]() |
সময়রেখা |
নরওয়ের ইতিহাস নরওয়ের ভূখণ্ড এবং জলবায়ু দ্বারা বিস্ময়কর মাত্রায় প্রভাবিত হয়েছে। প্রায় ১০,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ বরফ পাতের পশ্চাদপসরণের পর, প্রথম দিকের বাসিন্দারা উত্তরের যে অঞ্চলে চলে গিয়েছিল, সেটিই হচ্ছে এখনকার নরওয়ে। তারা উপকূলীয় অঞ্চল বরাবর সোজা উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছিল, উষ্ণায়িত উপসাগরীয় প্রবাহ আনুকুল্যে জীবনের কষ্ট অনেক সহনীয় ছিল। বেঁচে থাকার জন্য তারা মাছ ধরত এবং বল্গাহরিণ (এবং অন্যান্য পশু) শিকার করত। খ্রিস্টপূর্ব ৫,০০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৪,০০০ এর মধ্যে প্রথম দিকের কৃষি বসতিগুলি ওসলোফোর্ডের চারপাশে গড়ে উঠেছিল। ধীরে ধীরে, খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ থেকে ৫০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে, এই কৃষি বসতিগুলি নরওয়ের দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে – উত্তর অঞ্চলের বাসিন্দারা শিকার ও মাছধরা চালিয়ে যেতে থাকে।
নব্যপ্রস্তরযুগ সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ থেকে শুরু হয়েছিল। অভিবাসন সময়কালে প্রথম সর্দারেরা দল নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরক্ষার প্রথম ধাপে এগোতে শুরু করে। অষ্টম শতাব্দীর শেষ দশক থেকে নরওয়েজীয়রা সমুদ্রের ওপারে প্রথমে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ এবং পরে আইসল্যান্ড এবং গ্রিনল্যান্ড পর্যন্ত চলে যায়। ভাইকিং যুগে একীকরণ দেখা গিয়েছিল। একাদশ শতাব্দীতে খ্রিস্টানীকরণ হয়েছিল এবং নিদারোস একটি আর্চডায়োসেস হয়ে ওঠে। বার্গেন মূল বাণিজ্য বন্দরে পরিণত হয়েছিল, তাকে নিয়ন্ত্রণ করত হানসিয়াটিক লীগ। ১৩৯৭ সালে, ডেনমার্ক এবং সুইডেনের সাথে, নরওয়ে কাল্মার সংগঠনে প্রবেশ করেছিল।
১৫২৩ সালে সুইডেন সংগঠন ত্যাগ করার পরে, নরওয়ে ডেনমার্ক – নরওয়ে সংগথনের কনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠে। ১৫৩৭ সালে পুনর্গঠন উপস্থাপিত হয়েছিল এবং ১৬৬১ সালে সম্পূর্ণ রাজতন্ত্র আরোপ করা হয়েছিল। ১৮১৪ সালে, ডেনমার্কের সাথে নেপোলিয়ানো যুদ্ধে পরাজিত হবার পর কিয়েলের চুক্তি অনুসারে নরওয়েকে সুইডেনের রাজার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। নরওয়ে কিন্তু তার স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং একটি সংবিধানও পরিগ্রহণ করে। কিন্তু কোনও বিদেশি শক্তিই নরওয়ের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়নি, উপরন্তু কিয়েলের চুক্তি অনুযায়ী নরওয়ের ওপর সুইডেনের দাবিকে সমর্থন করেছিল। ১৮১৪ সালে সুইডেনের সাথে একটি সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের পর, দুটি দেশই মসের যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়। যার মধ্যে নরওয়ে সুইডেনের সাথে ব্যক্তিগত ইউনিয়ন মেনে নিয়েছিল। তারা, বিদেশী পরিষেবা কে বাদ দিয়ে, নিজেদের সংবিধান, রাজ্যসভা এবং পৃথক প্রতিষ্ঠান বজায় রেখেছিল। বিশেষ রাজ্যসভা (স্টরটিং) সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনী গ্রহণ করার পর এবং ১৮১৪ সালের ৪ঠা নভেম্বর সুইডেনের ত্রয়োদশ চার্লসকে নরওয়ের রাজা হিসাবে নির্বাচিত করে নেওয়ার পর এই ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
১৮৪০ এর দশকে এখানে শিল্পায়ন শুরু হয়েছিল এবং ১৮৬০ এর দশক থেকে বড় আকারের দেশত্যাগ করে উত্তর আমেরিকাতে অভিবাসন হয়েছিল। ১৮৮৪ সালে, রাজা, জোহান স্বেরড্রুপকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন, এইভাবে সেখানে সংসদতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯০৫ সালে সুইডেনের সাথে ইউনিয়নটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। ১৮৮০ থেকে ১৯২০ এর দশক পর্যন্ত রুয়াল আমুনসেন এবং ফ্রিজফ নানসেন এর মতো নরওয়েবাসী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মেরু অভিযান চালিয়েছিলেন।
জাহাজ এবং জলবিদ্যুৎ ছিল দেশের আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। পরবর্তী দশকগুলিতে অর্থনীতির ওঠাপড়া এবং শ্রমিক আন্দোলনের উত্থান শুরু হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪০ এবং ১৯৪৫ সালের মধ্যে জার্মানি নরওয়ে দখল করে নিয়েছিল। এর পরে নরওয়ে ন্যাটোতে যোগদান করেছিল এবং গণ- পরিকল্পনার আওতায় দেশের পুনর্নির্মাণ শুরু হয়েছিল। ১৯৬৯ সালে এখানে জ্বালানি তেল আবিষ্কার হয়েছিল এবং ১৯৯৫ সালের মধ্যে নরওয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে এখানে সম্পদের ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটে। ১৯৮০ এর দশক থেকে নরওয়ে বিভিন্ন বিভাগে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেছিল এবং এই সময় ব্যাংকিং সংকট শুরু হয়েছিল।
একবিংশ শতাব্দীর মধ্যে, নরওয়ে তেল ও গ্যাস উৎপাদন করে বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ হয়ে ওঠে, এর অর্থনীতির ২০ শতাংশ জ্বালানি বিভাগ থেকে আসে।[১] তেল থেকে আয়কে পুনঃ বিনিয়োগ করে, ২০১৭ সালে নরওয়ে বিশ্বের বৃহত্তম সার্বভৌম সম্পদশালী দেশ ছিল।[২]
প্রাগৈতিহাসিক
[সম্পাদনা]শেষ হিমবাহকালের শেষ দিকে প্রায়, ১২,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, নরওয়ের উপকূলরেখা জেগে উঠেছিল। নরওয়ের উপকূল সীল শিকার, মাছ ধরা এবং শিকার সহজলভ্য হওয়ায় প্রথম অভিবাসন এই সময়ে হয়েছিল।[৩] অভিবাসনকারীরা ছিল যাযাবর জাতি, তারা ৯৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যেই ম্যাগারোয়াতে বসতি স্থাপন করেছিল।৮০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে বরফ ক্রমশ কমতে থাকায় সমগ্র উপকূল বরাবর বসতি স্থাপিত হয়। প্রস্তর যুগ ট্রমস এবং ফিনমার্কে কোমসা সংস্কৃতি এবং আরও দক্ষিণে ফসনা সংস্কৃতি নিয়ে গঠিত। আনুমানিক ৭০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, ফসনা সংস্কৃতি থেকে নস্টভেট সংস্কৃতিতে পরিচলন ঘটেছিল। [৪] এই সংস্কৃতি তুলনামূলকভাবে উষ্ণ জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছিল। পরিবেশে তারা বনাঞ্চল এবং শিকারের জন্য নতুন স্তন্যপায়ী প্রাণী পেয়েছিল। নরওয়ের মধ্যে প্রাচীনতম কঙ্কালের সন্ধান পাওয়া গেছে ১৯৯৪ সালে, সোগন নদীর অগভীর জলে এবং কার্বন পরীক্ষায় জানা গেছে এটি খ্রিস্টপূর্ব ৬,৬০০ অব্দের।[৫] ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বের লোকেরা স্লেট সরঞ্জাম, মাটির সরঞ্জাম, স্কিস, স্লেজ ও বড় চামড়ার নৌকা ব্যবহার শুরু করে।[৬]

আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে অসলোফোর্ডের এর আশেপাশে প্রথম কৃষিকাজ ষুরু হয় এবং নব্যপ্রস্তর যুগের গোড়াপত্তন হয়। কৃষিকাজের প্রযুক্তি এসেছিল দক্ষিণ স্ক্যান্ডিনেভিয়া থেকে।[৭] খ্রিস্টপূর্ব ২৯০০ থেকে ২৫০০ এর মধ্যে কৃষিকাজে ব্যাপক উন্নতি হয়। জই, যবের চাষ শুরু হয় এবং গৃহপালিত রূপে শূকর, গবাদি পশু, ভেড়া এবং ছাগল পোষা শুরু হয়। উত্তরদিকে আল্টার উত্তর অবধি এই সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছিল। এই সময়কালে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতি এসে গিয়েছিল, যে সংস্কৃতিতে নতুন অস্ত্র, সরঞ্জাম এবং একটি ইন্দো-ইউরোপীয় উপভাষা এসেছিল। সেই উপভাষা থেকে নরওয়েজীয় ভাষা বিকশিত হয়েছিল। [৮]
নর্ডিক ব্রোঞ্জ যুগ (১৮০০-৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
[সম্পাদনা]ব্রোঞ্জ যুগটি খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০ সালে শুরু হয়েছিল এবং এইসময় অনেক নতুন জিনিস উদ্ভাবিত হয়েছিল। এর মধ্যে আছে লাঙ্গল, ঘর এবং উঠান সহ স্থায়ী খামার। বিশেষত অসলোফোর্ড, ট্রন্ডহিমসফোর্ড, মিওসা এবং জেরেন এর আশেপাশের উর্বর অঞ্চলুকে ঘিরে এই সংস্কৃতি বিকশিত হয়েছিল।[৮] কিছু ফলন এত বেশি হত যে কৃষকেরা পশম এবং চামড়ার বদলে বিলাসবহুল সামগ্রী আনত, বিশেষত জুটল্যান্ডের সাথে এই ব্যবসায় চলত।[৯] প্রায় ১০০০ খ্রিস্টপূর্বে, উরালীয় ভাষাভাষীরা উত্তরের এই অঞ্চলে এসে পৌঁছোয় এবং এখানকার আদিবাসী জনগণের সাথে মিশে যায়, গড়ে ওঠে সামি জনজাতি[৭] আন্তে আইকিওর মতানুসারে[১০] সামি ভাষা সম্পূর্ণ ভাবে গঠিত হয়েছিল ৫০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে।
প্রায় ৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শীতকালীন আবহাওয়া দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন শুরু হয়েছিল। আগে যে বনাঞ্চলে এলম, লেবু, জলপাই এবং ওক দেখা যেত; এর পরে সেখানে জায়গা নিল বার্চ, পাইন এবং স্প্রুসের মত গাছগুলি। জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থ কৃষকরা আশ্রয়ের জন্য আরও কাঠামো তৈরি করা শুরু করল। সেল্ট মানুষজনের কাছ থেকে লৌহ ধাতুবিদ্যার জ্ঞান নিয়ে আরও উন্নত অস্ত্র এবং সরঞ্জাম তৈরি হতে থাকল।[৯]
নর্ডিক লৌহ যুগ (৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ – ৮০০ খ্রিস্টাব্দ)
[সম্পাদনা]লৌহ যুগ চাষ বাসকে আরো সহজ করে দিয়েছিল এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে নতুন অঞ্চলে চাষ শুরু হয়। একটি নতুন সামাজিক কাঠামো বিবর্তিত হয়: ছেলেরা যখন বিবাহ করত তারা একই বাড়িতে থেকে যেত; এই জাতীয় বর্ধিত পরিবার ছিল বংশ। যদি বিরোধ দেখা দিত, সমস্যাটি একটি সমাবেশে আলোচনা করে মেটানো হত। সমাবেশ হল একটি পবিত্র জায়গা যেখানে আশেপাশের অঞ্চল থেকে সমস্ত লোকজন একত্রিত হত এবং অপরাধের জন্য শাস্তি নির্ধারণ করত, যেমন খাবারে জরিমানা প্রদান ইত্যাদি।[১১]
খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দী থেকেই রোমান সাম্রাজ্যের একটি সাংস্কৃতিক প্রভাব শুরু হয়েছিল। নরওয়েজীওরা তাদের নিজস্ব বর্ণমালা, রুনী তৈরি করেছিল। রোমানদের সাথে বাণিজ্যও শুরু হয়েছিল, মূলত পশম এবং চামড়ার বিনিময়ে বিলাসবহুল সামগ্রী। কিছু স্ক্যান্ডিনেভীয়রা রোমান সৈনিক হিসাবেও কাজ করেছিল।[১১] কিছু প্রভাবশালী ও ক্ষমতাশালী কৃষকেরা সর্দার হয়ে বসত। তারা পুরোহিত হিসাবে কাজ করত সৈন্য দল তৈরি করে রাখত। কৃষকদের কাছ থেকে যে ফলন আদায় করে সৈন্যদলের খরচ চলত। এইভাবে তারা বেশ কয়েকটি জনবসতি এবং উপজাতীয় অঞ্চল শাসন করতে সক্ষম হয়েছিল।[১২]
৪০০ থেকে ৫৫০ খিস্টাব্দের মধ্যে অন্যান্য জার্মানিক উপজাতি উত্তর দিকে চলে এসেছিল। এই অভিবাসনের সময়কালে স্থানীয় কৃষকদের এই সর্দারেরা সুরক্ষা দিত, তাই এই সময় তাদের শক্তি এবং প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই সময় কিছু সাধারণ দুর্গ নির্মাণও হয়েছিল। ষষ্ঠ শতাব্দীতে দক্ষিণ নরওয়েতে প্লেগ আঘাত হেনেছিল, শত শত খামার জনহীন হয়ে গিয়েছিল। বেশিরভাগই ৭ম শতাব্দীতে পুনর্নির্মিত হয়েছিল। এছাড়া উত্তর সাগর অঞ্চলে বেশ কয়েকটি মৎস্যচাষী পল্লী গড়ে উঠেছিল এবং লোহা ও সোপস্টোনের ব্যবসায়ে জোয়ার এসেছিল।[১২] কিছু সর্দার বেশিরভাগ ব্যবসাগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছিল এবং ৮ম শতাব্দী জুড়ে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছিল।[১৩]
প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান
[সম্পাদনা]২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, সিক্রেট অফ আইস প্রোগ্রামের গবেষকরা ১,৫০০ বছরের পুরোনো ভাইকিং তীরের ফলক পেয়েছিলেন, যার সময়কাল জার্মানিক লৌহ যুগে। এটি জোটুনহেইমেন পর্বতমালার জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণে নরওয়ের একটি হিমবাহে আটকে ছিল। লোহার তৈরি ফলকটি ১৭ সেন্টিমিটার দীর্ঘ ছিল এবং তার ওজন ছিল মাত্র ২৮ গ্রাম। [১৪][১৫][১৬][১৭]
ভাইকিং যুগ
[সম্পাদনা]
ভাইকিং যুগ ছিল বাণিজ্য, অভিযান এবং উপনিবেশ স্থাপনের মাধ্যমে স্ক্যান্ডিনেভীয় সম্প্রসারণের সময়কাল। ৭৯৩ সালে ভাইকিং যুগের সূচনা বলে মনে করা হয়। এর পিছনে সমুদ্রপথে ভ্রমণের উপযোগী জাহাজের উন্নয়ন এবং উন্নত দিক নির্ণয় কৌশলের আবিষ্কারের ভূমিকা ছিল।
সোনা ও রূপার পাশাপাশি ভাইকিং অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য ছিল বিদেশিদের অপহরণ করে নরওয়েজীয় খামারে দাস হিসেবে আনা। যখনই পুরুষরা যুদ্ধ এবং সমুদ্রযাত্রায় নিযুক্ত থাকত, তখন গৃহস্থালির কাজকর্ম বাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হত, মহিলাদের তত্ত্বাবধানে।
পশ্চিম নরওয়েতে উপযুক্ত কৃষিজমির অভাবের কারণে নরওয়েজীয়রা শেটল্যান্ড, অর্কনি, ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জ এবং হেব্রাইডসের বিচ্ছিন্ন জনবহুল এলাকায় ভ্রমণ এবং উপনিবেশ স্থাপন করতে বাধ্য হয়েছিল। ভাইকিংরা ৮০০ সাল নাগাদ আয়ারল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে বসতি স্থাপন করে এবং ডাবলিন সহ অনেক শহর প্রতিষ্ঠা করে। তাদের আগমনের ফলে ক্ষুদ্র গেলিক রাজারা পরস্পরের মিত্র হয়ে ওঠে এবং ৯০০ সালের মধ্যে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বহিরাগত ভাইকিংদের তাড়িয়ে দেয়।
নবম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ক্ষুদ্র রাজ্যগুলির বৃহত্তম সর্দাররা বড় ক্ষমতার লড়াইয়ে লিপ্ত হন। হ্যারাল্ড ফেয়ারহেয়ার আর্লস অফ লেডের সাথে জোট করেন এবং হাফার্সফজর্ডের যুদ্ধের পর দেশটিকে একীভূত করতে সক্ষম হন।
নবম শতাব্দীর শেষের দিকে নরওয়েজীয়রা আইসল্যান্ড আবিষ্কার করেছিল। ৯৩০ সালের মধ্যে দ্বীপটি ৪০০ নর্স সর্দারের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়।
হ্যারাল্ড ফেয়ারহেয়ারের পুত্র, হ্যাকন দ্য গুড ৯৩০ সালে সিংহাসনে বসেন। তিনি লেইডাং, একটি সংঘবদ্ধ বাহিনী/নৌবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হাকন নরওয়েতে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করেছিলেন। ৯৬০ সালে তার মৃত্যুর পর, ফেয়ারহেয়ার রাজবংশ এবং আর্লস অফ লেডের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।
৯৮০-এর দশকে নরওয়েজীয় বংশোদ্ভূত এরিক দ্য রেডের নেতৃত্বে আইসল্যান্ডের একদল বাসিন্দা গ্রিনল্যান্ডে বসতি স্থাপন করে। [১৮]
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
[সম্পাদনা]২০১৮ সালের অক্টোবরে, প্রত্নতাত্ত্বিক লার্স গুস্তাভসেনের নেতৃত্বে নরওয়েজীয় প্রত্নতাত্ত্বিকরা হ্যালডেন পৌরসভায় ২০ মিটার দীর্ঘ একটি চাপা পড়া গেলেস্টাড ভাইকিং জাহাজ আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন। ভূমি-ভেদকারী রাডার ব্যবহার করে ১০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুসংরক্ষিত এক প্রাচীন ভাইকিং কবরস্থান আবিষ্কৃত হয়। প্রত্নতাত্ত্বিকরা রাডার জরিপের সাহায্যে কমপক্ষে আরও সাতটি পূর্বে অজানা সমাধিস্তম্ভ এবং পাঁচটি দীর্ঘ বাড়ির ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন। [১৯] [২০] [২১] [২২]
মধ্যযুগ
[সম্পাদনা]নর্স পুরাণে প্রতিফলিত ঐতিহ্যবাহী আসাত্রুর বিলুপ্তি এবং খ্রিস্টীয়করণের চেষ্টা প্রথমে হ্যাকন দ্য গুড এবং পরে ওলাভ ট্রিগভাসন করেছিলেন। ১০১৫ সাল থেকে ওলাভ হ্যারাল্ডসন গির্জার আইনপাস করান, প্রাচীন মন্দির ধ্বংস করেন, গির্জা তৈরি করেন এবং পুরোহিতদের একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। অনেক সর্দার আশঙ্কা করেছিলেন যে খ্রিস্টীয়করণ তাদের ক্ষমতা কেড়ে নেবে কারণ ঐতিহ্যবাহী নর্স পৌত্তলিকতায় গোডার হিসেবে তাদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হবে। ১০২৮ সালে ওলাফকে নরওয়ে থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। ১০৩০ সালে তিনি ফিরে আসার চেষ্টা করেন, স্টিকলেস্টাডের যুদ্ধে ওলাফ নিহত হন। গির্জা প্রথম ওলাফকে সন্ত উপাধিতে উন্নীত করে এবং নিদারোস নরওয়ের খ্রিস্টধর্মকেন্দ্রে পরিণত হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই ডেনিশ শাসন এতটাই অজনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে, ১০৩৫ সালে নরওয়ে আবার রাজা ম্যাগনাস ওলাভসন দ্য গুডের অধীনে একত্রিত হয়।
১০৪০ থেকে ১১৩০ সাল পর্যন্ত দেশটি শান্তিতে ছিল। ১১৩০ সালে, সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে এক গৃহযুদ্ধের শুরু হয়। শেষে রাজার সমস্ত পুত্ররা নরওয়েকে ভাগ করে যৌথভাবে শাসন করার অনুমতি পায়। রাজাদের নিয়োগ নিয়ন্ত্রণের প্রয়াসে ১১৫২ সালে নিদারোসের আর্চডায়োসিস তৈরি করা হয়েছিল। রাজার উপর গির্জার প্রভাবও একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ১২১৭ সালে হ্যাকন হ্যাকনসনের ক্ষমতাদখলের মাধ্যমে যুদ্ধ শেষ হয়, তিনি স্পষ্ট উত্তরাধিকার আইন প্রবর্তন করেন। তিনি গ্রিনল্যান্ড এবং আইসল্যান্ডকে নরওয়েজীয় শাসনের অধীনে আনতে সক্ষম হন।
জনসংখ্যা ১০০০ সালে ১,৫০,০০০ থেকে বেড়ে ১৩০০ সালে ৪,০০,০০০ হয়, যার ফলে আরও জমি পরিষ্কার করা এবং খামারগুলিকে উপবিভাগ করা হতে থাকে। ভাইকিং যুগে সমস্ত কৃষকের নিজস্ব জমি থাকলেও ১৩০০ সালের মধ্যে সত্তর শতাংশ জমি রাজা, গির্জা বা অভিজাতদের মালিকানাধীন ছিল। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে কৃষকের ফসলের প্রায় বিশ শতাংশ রাজা, গির্জা এবং অভিজাতদের কাছে যেত।
পতন এবং কালমার মিত্রসংঘ
[সম্পাদনা]
ত্রয়োদশ শতাব্দীকে নরওয়ের স্বর্ণযুগ হিসেবে বর্ণনা করা হয়, এসময় শান্তি ছিল এবং বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছিল, বিশেষ করে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের সাথে, যদিও শতাব্দীর শেষের দিকে জার্মানিও ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অন্তিম মধ্যযুগ জুড়ে রাজা নরওয়েকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যাতে কেন্দ্রীয় প্রশাসন এবং স্থানীয় প্রতিনিধিত্ব ছিল।
১৩৪৯ সালে, ব্ল্যাক ডেথ নরওয়েতে ছড়িয়ে পড়ে এবং এক বছরের মধ্যে জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশকে হত্যা করে। পরবর্তীকালে প্লেগগুলি ১৪০০ সালে জনসংখ্যা অর্ধেক করে দেয়। অনেক সম্প্রদায় সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, যার ফলে প্রচুর জমির সৃষ্টি হয়, যার ফলে কৃষকরা আরও বেশি পশুপালনের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে। কর হ্রাস রাজার অবস্থানকে দুর্বল করে দেয়, এবং অনেক অভিজাত তাদের উদ্বৃত্ত আয় হারান, যার ফলে কেউ কেউ কেবল কৃষক হয়ে পড়েন। উচ্চ ধর্মকর গির্জাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে এবং আর্চবিশপ রাজ্য পরিষদের সদস্য হন।

চতুর্দশ শতাব্দীতে হানজে মিত্রসংঘ নরওয়েজিয় বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং বেশিরভাগ নরওয়েজিয় বন্দর শহরে বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করে। ১৩৮০ সালে, ওলাফ হাকনসন নরওয়ে এবং ডেনমার্ক উভয় সিংহাসনের উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করেন, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে একটি মিলন তৈরি হয়। ১৩৯৭ সালে, প্রথম মার্গারেটের অধীনে, তিনটি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশের মধ্যে কালমার মিত্রসংঘ তৈরি হয়েছিল। তিনি হ্যানসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন, যার ফলে বাণিজ্য অবরোধ এবং নরওয়েজীয়দের উপর উচ্চ কর আরোপ করা হয়, যার ফলে বিদ্রোহ দেখা দেয়। তবে, সেসময় নরওয়ে এবং এর রাজ্য পরিষদ এতটাই দুর্বল ছিল যে মিত্রসংঘ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া সম্ভব হয় নি।
মার্গারেট কেন্দ্রীকরণ নীতি অনুসরণ করেছিলেন যা অনিবার্যভাবে ডেনমার্কের পক্ষে লাভজনক ছিল, কারণ এর জনসংখ্যা নরওয়ে এবং সুইডেনের মিলিত জনসংখ্যার চেয়ে বেশি ছিল। মার্গারেট তার শাসনের অধিকারের স্বীকৃতির বিনিময়ে বার্গেনের লুবেকের হ্যানসিয়াটিক বণিকদের বাণিজ্য সুবিধা দিয়েছিলেন যা নরওয়ের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। হ্যানসিয়াটিক বণিকরা বংশ পরম্পরায় বার্গেনে এক রাজ্যের মধ্যে আরেক রাজ্য গঠন করেছিল। আরও খারাপ ছিল জলদস্যুরা, " ভিকচুয়াল ব্রাদার্স ", যারা বন্দরে তিনটি ধ্বংসাত্মক অভিযান চালায় (শেষটি ১৪২৭ সালে)।
ওল্ডেনবার্গ রাজবংশের ( ১৪৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত ) অধীনে নরওয়ে আরও বেশি করে পশ্চাদপসরণে চলে যায়। ১৫০২ সালে নট আলভসনের অধীনে এক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। ১৫২০-এর দশকে ডেনমার্ক থেকে সুইডেনের স্বাধীনতায় নরওয়ে নিরপেক্ষ ছিল।
স্বাধীনতা
[সম্পাদনা]১৯০৫ সালে চারদলীয় মিশেলসেনের মন্ত্রিসভা নিযুক্ত হওয়ার পর, সংসদ একটি নরওয়েজিয়ান কনস্যুলার পরিষেবা প্রতিষ্ঠার পক্ষে ভোট দেয়। রাজা তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং ৭ জুন সংসদ সর্বসম্মতিক্রমে মিত্রসংঘ ভেঙে দেওয়ার অনুমোদন দেয়। পরবর্তী গণভোটে, মাত্র ১৮৪ জন মিত্রসংঘের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। ডেনমার্কের যুবরাজ নরওয়ের রাজা সপ্তম হাকন নামে পরিচিত হন। পরবর্তী দশ বছরে, সংসদ অসুস্থতার বেতন, কারখানা পরিদর্শন, দশ ঘন্টা কর্মদিবস এবং শ্রমিক সুরক্ষা আইনের মতো সামাজিক সংস্কারের একাধিক উল্লেখযোগ্য আইন পাস করে। এই সময়কালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জলপ্রপাত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ হয়ে ওঠে এবং সরকার বিদেশীদের জলপ্রপাত, খনি এবং বন নিয়ন্ত্রণ থেকে বিরত রাখার জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন করে। এই সময়ে প্রতিষ্ঠিত বৃহৎ শিল্প কোম্পানিগুলির মধ্যে রয়েছে এলকেম, নর্স্ক হাইড্রো এবং সিডভারেঞ্জার । বার্গেন লাইন ১৯০৯ সালে সম্পন্ন হয়, [২৩] পরের বছর নরওয়েজীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯১৩ সালে নারীদের ভোটাধিকার চালু হয়—বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে। ১৮৮০ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত, নরওয়েজীয়রা একাধিক মেরু অভিযান পরিচালনা করে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অভিযাত্রীরা হলেন ফ্রিদতিয়ফ নানসেন, রুয়াল আমুনসেন এবং অটো স্ভেরদ্রুপ । ১৯১১ সালে আমুনসেনের অভিযান দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে প্রথম স্থান অধিকার করে। [২৪]
১৯০৫ সাল থেকে নরওয়ে নিরপেক্ষতার নীতি গ্রহণ করে; প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় নরওয়েজিয় বণিক নৌবহর মূলত ব্রিটিশদের সমর্থনে ব্যবহৃত হত, যার ফলে নরওয়েকে নিরপেক্ষ মিত্র হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। জার্মান আটলান্টিক ইউ-বোট অভিযানে নরওয়েজিয় নৌবহরের অর্ধেক ডুবে যায় এবং ২,০০০ নাবিক নিহত হয়। যুদ্ধের সময় কিছু বণিক বাণিজ্য ও জাহাজ চলাচল থেকে প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছিল, যার ফলে শ্রমিক ও মালিক শ্রেণীর মধ্যে বিভাজন বৃদ্ধি পেয়েছিল। যুদ্ধের সময়কালে ধর্মঘট, লক-আউট এবং মুদ্রানীতির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা প্রাধান্য পেয়েছিল, যার ফলে যুদ্ধের সময় জারি করা অত্যধিক অর্থের ক্ষতিপূরণ হিসেবে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয় এবং বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে জেলেরা এই সময়কালে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যখন কৃষকরা সংগঠিত নিয়মকানুন মেনে বাজার মূল্য ধরে রেখেছিল। ১৯৩১ থেকে ১৯৩৩ সালের মধ্যে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ দশ শতাংশে পৌঁছেছিল। ১৯১৫ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত শিল্প উৎপাদন আশি শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও কর্মসংস্থানের সংখ্যা বেশি বাড়েনি। নরওয়েজিয়ান স্কুল অফ ইকোনমিক্স ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯১৮ থেকে ১৯৩৫ সালের মধ্যে নরওয়েতে নয়টি সরকার ছিল, প্রায় সবগুলোই সংখ্যালঘু ছিল এবং গড়ে আঠারো মাস স্থায়ী ছিল। কৃষি দল ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যদিও এই সময়ে রক্ষণশীলদের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৯২১ সালে লেবার পার্টি বিভক্ত হয়ে যায়, এবং বামপন্থীরা নরওয়ের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা করে। ১৯২০-এর দশকে শক্তিশালী হলেও, ১৯৩০-এর দশকে তারা প্রান্তিকে পরিণত হয়। ১৯২৮ সালে একস্বল্পস্থায়ী লেবার সরকার ক্ষমতা দখল করে, কিন্তু ১৯৩৫ সালের ন্যাগার্ডসভোল্ডের মন্ত্রিসভা পর্যন্ত, যা কৃষি দলের সাথে জোটের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছিল, একটি শক্তিশালী সংসদীয় সমর্থন প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ১৯২০ এবং ১৯৩০ এর দশকে, নরওয়ে বোভেত দ্বীপ, প্রথম পিটার দ্বীপ এবং রানি মড ভূমি এবং ইয়ান মায়েনকে সংযুক্ত করে এবং স্ভালবার্দ চুক্তির মাধ্যমে স্ভালবার্দের ওপর সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করে। নরওয়ের প্রথম অসামরিক বিমানবন্দর, স্ট্যাভাঙ্গার, ১৯৩৭ সালে স্থাপিত হয়েছিল। [২৫]
বিশ্বযুদ্ধোত্তর সময়কাল
[সম্পাদনা]১৯৪৫–১৯৫০
[সম্পাদনা]দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নরওয়েতে একটি আইনি শুদ্ধিকরণ অভিযান পরিচালিত হয় যাতে ৫৩,০০০ জনকে রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে সাজা দেওয়া হয় এবং ২৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যুদ্ধ-পরবর্তী বছরগুলিতে স্ক্যান্ডিনেভিয়াবাদের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়, যার ফলে ১৯৪৬ সালে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এয়ারলাইন্স সিস্টেম, ১৯৫২ সালে নর্ডিক কাউন্সিল এবং নর্ডিক পাসপোর্ট ইউনিয়ন [২৬] মেট্রিক সিস্টেমের সাথে সাথে চালু হয়। যুদ্ধের পর পুনর্গঠনের ফলে নরওয়ে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত ইউরোপের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে, যা আংশিকভাবে বেসরকারি ভোগের রেশনিং এবং উচ্চতর শিল্প বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল। লেবার পার্টি পুরো সময় জুড়ে ক্ষমতা ধরে রাখে। ১৯৪৬ সালে বার্গেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৫০-এর দশকে জলবিদ্যুৎ নির্মাণে ব্যাপক অগ্রগতি দেখা দেয় এবং রাষ্ট্র নর্স্ক জার্নভার্ক স্টিল মিল এবং দুটি অ্যালুমিনিয়াম কারখানা নির্মাণ করে। স্টেট হাউজিং ব্যাংক, স্টেট এডুকেশনাল লোন ফান্ড এবং পোস্টব্যাঙ্কেনের মতো রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলি বেসরকারি ঋণের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণের অনুমতি দেয়। অসলো ১৯৫২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজন করেছিল।
নরওয়ে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে নিজ সদস্যপদকে কেন্দ্র করে নিরপেক্ষতা নীতি বজায় রেখেছিল। ট্রিগভে লি প্রথম মহাসচিব হয়েছিলেন। তবে, সেই সময় জাতিসংঘের প্রতি জনমানসে কোনও উৎসাহ ছিল না। [২৭] স্ভালবার্ডে সোভিয়েত ইউনিয়নের যৌথ নিয়ন্ত্রণ প্রস্তাবের ফলে এবং বিশেষ করে ১৯৪৮ সালের চেকোস্লোভাক অভ্যুত্থানের পর কমিউনিস্ট পার্টি সমস্ত প্রভাব হারিয়ে ফেলে। কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সাম্যবাদ-বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পায়। [২৮] নরওয়ে স্ক্যান্ডিনেভিয় প্রতিরক্ষা ইউনিয়ন গঠনের জন্য আলোচনা শুরু করে, কিন্তু পরিবর্তে ন্যাটোর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরাগভাজন হওয়া এড়াতে নরওয়ে সরকার কখনই নিজ মাটিতে স্থায়ীভাবে বিদেশী সেনা বা পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের অনুমতি দেয়নি। ন্যাটো নরওয়েতে সামরিক বিনিয়োগের সিংহভাগ অর্থায়ন করেছিল, যার ফলে ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে অসংখ্য বিমানবন্দর নির্মিত হতে থাকে।
মার্শাল পরিকল্পনা
[সম্পাদনা]১৯৪৭ সালে নরওয়ে মার্শাল পরিকল্পনায় যোগ দেয়, ৪০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা লাভ করে। মার্শাল পরিকল্পনার মার্কিন নেতাদের ব্যবসায়িক পটভূমির কারণে, নরওয়ের লেবার সরকারের ইআরপি কাউন্সিলের সাথে কাজ করার জন্য তাদের প্রচেষ্টা রক্ষণশীল নরওয়েজীয় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে হতাশ করেছিল। সরকারের সাথে কাজ করতে অনিচ্ছুক হলেও, নরওয়ের পুঁজিবাদীরা মার্শাল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করার বিপদগুলিও জানতেন। অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় সরকারের ভূমিকার প্রতি মার্কিন গ্রহণযোগ্যতা তাদের নতুন চুক্তির সংস্কারবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে। মার্শাল পরিকল্পনা পরিচালনার সময় রক্ষণশীল পুঁজিবাদী ব্যবসায়িক স্বার্থ এবং সরকারের মধ্যে মধ্যস্থতার সুযোগগুলি ১৯৫০-এর দশকে নরওয়েজিয়ান কর্পোরেটিজমের উত্থানের ভিত্তি স্থাপনে সহায়তা করেছিল।
১৯৫০ থেকে ১৯৭২
[সম্পাদনা]
১৯৬০ সালের অক্টোবরে গাড়ি বিক্রি নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হয় এবং একই বছর নরওয়েজিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন নরওয়ের প্রথম টেলিভিশন সম্প্রচার চালু করে। নরওয়ে সুইডিশ শিল্প এবং ডেনিশ কৃষি থেকে প্রতিযোগিতার ভয়ে ভীত ছিল এবং কোনও মুক্ত বাণিজ্য সংস্থায় যোগদান না করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই নীতি ভেঙে ১৯৬০ সাল নরওয়ে ইউরোপীয় মুক্ত বাণিজ্য সমিতিতে যোগ দেয়। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কৃষি এবং মৎস্যশিল্প উভয়ই আরও যান্ত্রিক হয়ে ওঠে, কৃষি ভর্তুকি বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চে উন্নীত হয় এবং ক্ষুদ্র খামার এবং জেলেদের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পায়। ১৯৬১ সালে লেবার পার্টির ন্যাটো, পারমাণবিক এবং ইউরোপীয় নীতির সাথে দ্বিমত পোষণকারী প্রাক্তন লেবার রাজনীতিবিদরা এককাট্টা হয়ে সমাজতান্ত্রিক জনতা পার্টি তৈরি করেন। কিংস বে অ্যাফেয়ারের পর কনজারভেটিভ লিং-এর মন্ত্রিসভা এক মাস শাসন করে। রক্ষণশীল জোট বোর্টেনের মন্ত্রিসভা ১৯৬৫ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে। যুদ্ধের পর সামি অধিকার ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের বিষয় হয়ে ওঠে, ১৯৬৪ সালে একটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৬২ সালে বোডো পর্যন্ত নর্ডল্যান্ড লাইনের সমাপ্তির ফলে নতুন রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়, [২৩] এবং অসলো পাতালরেলের প্রথম অংশ ১৯৬৬ সালে খোলা হয়। যুদ্ধের পর ধীরে ধীরে সামাজিক নিরাপত্তা নীতিমালা চালু করা হয়, ১৯৪৬ সালে শিশু ভাতা চালু করা হয় এবং ১৯৬৪ সালে সামাজিক যত্ন আইন চালু করা হয়। ১৯৬০-এর দশকে নরওয়ে ইউরোপের বৃহত্তম অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানিকারক এবং বিশ্বের বৃহত্তম ফেরোঅ্যালয় রপ্তানিকারক হয়ে ওঠে। ট্রনহাইম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ট্রমসো বিশ্ববিদ্যালয় উভয়ই ১৯৬৮ সালে স্থাপিত হয়েছিলো। মার্কিন সংস্কৃতি এবং বিদেশে অনুরূপ কর্মকাণ্ডের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, ছাত্রযুবরা সাংস্কৃতিক রীতিনীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। ১৯৬০-এর দশকে পরিবেশবাদের উপর ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব দেখা দেয়। ১৯৬২ সালে দেশটির প্রথম জাতীয় উদ্যান রোন্ডেন জাতীয় উদ্যান তৈরি করা হয়েছিল । ১৯৭২ সালে পরিবেশ মন্ত্রণালয় গঠিত হয় যা ছিল বিশ্বের প্রথম। ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে পশ্চিম এবং উত্তর নরওয়েতে একাধিক আঞ্চলিক বিমানবন্দর তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালের এক গণভোটে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্প্রদায়ের সদস্যপদ প্রত্যাখ্যান করা হয়।
তৈল যুগ
[সম্পাদনা]উত্তর সাগরে অনুসন্ধান শুরু হয় ১৯৬৬ সালে। ১৯৬৯ সালে ফিলিপস পেট্রোলিয়াম একোফিস্ক ক্ষেত্রটিতে তেল খুঁজে পায় - যা বিশ্বের দশটি বৃহত্তম ক্ষেত্রগুলির মধ্যে একটি হিসাবে প্রমাণিত হয়। ক্ষেত্রগুলির কার্যক্রম ভাগ করা হয়েছিল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন স্ট্যাটঅয়েল, আংশিকভাবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নর্স্ক হাইড্রো এবং সাগা পেট্রোলিয়াম এবং বিদেশী অপারেটরদের মধ্যে। ১৯৭৭ সালে ইকোফিস্কে একটি বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে এবং ১৯৮০ সালে আলেকজান্ডার কিল্যান্ড আবাসন রিগ ডুবে গেলে ১২৩ জন নিহত হয়; এই ঘটনাবলির পরে পেট্রোলিয়াম নিরাপত্তা বিধিমালা জোরদার করা হয়। স্ট্যাভাঙ্গার এই শিল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। স্ট্যাটঅয়েলের উচ্চ পেট্রোলিয়াম কর এবং লভ্যাংশ সরকারকে তেল শিল্প থেকে উচ্চ আয় দিতে থাকে।
নরওয়ে ১৯৭০-এর দশকে একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে, যার আয়তন ২০,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৭,৭০,০০০ বর্গমাইল) . এরপর একাধিক সীমান্ত বিরোধ দেখা দেয়; ১৯৯০-এর দশকে ডেনমার্ক এবং আইসল্যান্ডের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, কিন্তু ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্যারেন্টস সাগরের সীমান্ত নিয়ে একমত হওয়া সম্ভব হয়নি। [২৯] ১৯৭৩ থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে দেশটি লেবার পার্টির শাসনাধীন ছিল, যারা নতুন বিদ্যালয় ব্যবস্থার মতো একাধিক সংস্কার করে। কৃষকরা বর্ধিত ভর্তুকি পেতেন এবং ১৯৭৪ সাল থেকে নারীদের উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিকানা পাওয়ার অনুমতি দেওয়া হত। [৩০] ১৯৭৮ সালে চাহিদা অনুযায়ী গর্ভপাত বৈধ করা হয়। ভবিষ্যতের তেল আয়ের জন্য নিশ্চিত ঋণ নরওয়েকে ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মন্দা এড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু ১৯৭৭ সালের মধ্যে উচ্চ মজুরি নরওয়ের শিল্পকে অপ্রতিযোগিতামূলক করে তোলে এবং সরকারি ও বেসরকারি ব্যয়ে জোরপূর্বক কাটছাঁট শুরু হয়। উপকূল জুড়ে মাছ চাষ একটি নতুন, লাভজনক শিল্পে পরিণত হয়।

আল্টা বিতর্ক শুরু হয় ১৯৭০-এর দশকে যখন স্ট্যাটক্রাফ্ট আল্টা নদীতে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করে। এই মামলাটি পরিবেশ আন্দোলনকারী এবং সামি অধিকার আন্দোলনকারীদের একত্রিত করে। আল্টা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হলেও বিষয়টি রাজনৈতিক পরিবেশকে বদলে দেয় এবং বৃহৎ আকারের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা কঠিন করে তোলে। ১৯৮৯ সালে সামি সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৮১ সালের নির্বাচনে রক্ষণশীল দল ক্ষমতা দখল করে এবং বৃহৎ নিয়ন্ত্রণহীন সংস্কার বাস্তবায়ন করে: কর কমানো হয়, স্থানীয় বেসরকারি রেডিও স্টেশনের অনুমতি দেওয়া হয়, বেসরকারি কোম্পানি দ্বারা কেবল টেলিভিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়, ঋণ নেওয়ার নিয়ম বাতিল করা হয় এবং বিদেশীদের সরকারি বন্ড কেনার অনুমতি দেওয়া হয়। ১৯৮৬ সালে বিদেশীরা অনিয়ন্ত্রিত হারে ক্রোন বিক্রি শুরু করলে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়, যার ফলে শেষ পর্যন্ত কর বৃদ্ধি করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী কারে উইলোচ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। দক্ষিণপন্থী প্রগতি পার্টি ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে সাফল্য লাভ করে। তৈল শিল্পে উচ্চ মজুরির কারণে কম দক্ষতাসম্পন্ন উৎপাদন শিল্পগুলি প্রতিযোগিতামূলক হতে ব্যার্থ হয় এবং লেবার পার্টি বেশ কয়েকটি সরকারি শিল্প কোম্পানি বন্ধ করে দেয় যারা বড় ধরনের ভর্তুকি পাচ্ছিল। ১৯৮০-এর দশকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পায়, একই সময়ে অপরাধের হারও বৃদ্ধি পায়।
সমুদ্রের নীচে ভার্দো টানেল ১৯৮২ সালে খোলা হয়েছিল । এবং তারপর থেকে দেশটি দ্বীপপুঞ্জের সম্প্রদায়গুলিকে মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত করার জন্য সমুদ্রের নীচে একাধিক টানেল তৈরি করেছে। ১৯৮০ এর দশক থেকে, নতুন সড়ক প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য বৃহত্তম শহরগুলি টোল রিং চালু করে। [৩১] ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে নরওয়েতে ব্যাংকিং সংকট দেখা দেয়। ফলস্বরুপ ডেন নরস্কে ব্যাংক, ক্রিশ্চিয়ানিয়া ব্যাংক এবং ফোকাস ব্যাংকের মতো বৃহত্তম ব্যাংকগুলিকে জাতীয়করণ করা হয়। [৩২] মিনি কম্পিউটার প্রস্তুতকারক নর্স্ক ডেটা ১৯৮৫ সালের মধ্যে নরওয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানিতে পরিণত হয়, আবার ১৯৯৩ সালের মধ্যে দেউলিয়া হয়ে যায়। [৩৩] ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে বেকারত্ব সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল।
১৯৯০ সালের মধ্যে, নরওয়ে ইউরোপের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ ছিল এবং ১৯৯৫ সালের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ হয়ে ওঠে। জনগন ১৯৯৪ সালের গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ প্রত্যাখ্যান করে। পরিবর্তে নরওয়ে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে এবং পরে শেনজেন অঞ্চলেও যোগ দেয়। ১৯৯০-এর দশকে বৃহৎ সরকারি বিনিয়োগ ছিল গার্ডারমোয়েনে একটি নতুন জাতীয় হাসপাতাল এবং অসলো বিমানবন্দর নরওয়ের প্রথম উচ্চ-গতির রেলপথ, গার্ডারমোয়েন লাইনের মাধ্যমে রাজধানীর সাথে সংযুক্ত ছিল। স্ট্যাটোয়েল, টেলিনর এবং কংসবার্গের মতো বেশ কয়েকটি বৃহৎ সরকারি কোম্পানি বেসরকারিকরণ করা হয়। [৩২] লিলহ্যামার ১৯৯৪ সালের শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজন করেছিল। [৩৪] স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির ফলে রাশিয়ার সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধি পায় এবং সামরিক তৎপরতা হ্রাস পায়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Norway Economy: Population, GDP, Inflation, Business, Trade, FDI, Corruption"। www.heritage.org। ২৫ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০২০।
- ↑ "Lessons from Norway, the world's most inclusive economy"। World Economic Forum।
- ↑ Stenersen: 7
- ↑ Stenersen: 8
- ↑ "'Søgnekvinnen' – Norway's Oldest Human Skeleton «"। Thornews.com। ২০১৩-০১-০৭। ২০১৪-০৭-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-২১।
- ↑ Stenersen: 9
- ↑ ক খ Stenersen: 10
- ↑ ক খ Stenersen: 11
- ↑ ক খ Stenersen: 12
- ↑ Aikio, Ante (২০০৪), "An essay on substrate studies and the origin of Saami", Hyvärinen, Irma; Kallio, Petri; Korhonen, Jarmo, Etymologie, Entlehnungen und Entwicklungen: Festschrift für Jorma Koivulehto zum 70. Geburtstag, Mémoires de la Société Néophilologique de Helsinki, 63, Helsinki: Société Néophilologique, পৃষ্ঠা 5–34
- ↑ ক খ Stenersen: 15
- ↑ ক খ Stenersen: 16
- ↑ Stenersen: 17
- ↑ Bailey, Stephanie। "Climate change reveals, and threatens, thawing relics"। CNN। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২৫।
- ↑ cowie, ashley। "Huge 1,500-Year-Old Arrowhead Released From Melting Glacier"। www.ancient-origins.net (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২৫।
- ↑ Ramming, Audrey (২০২০-০৩-০৬)। "Photo Friday: Norwegian Glacial Ice Preserves Ancient Viking Artifacts"। GlacierHub (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৩-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২৫।
- ↑ "1,500-Year-Old Viking Arrowhead Found After Glacier Melts in Norway"। Curiosmos (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৩-০৯। ২০২০-০৩-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২৫।
- ↑ "Landnámabók (Sturlubók)"। www.snerpa.is। ১৫ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "Viking ship burial discovered in Norway just 50cm underground"। the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ অক্টোবর ২০১৮। ১৩ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ Starr, Michelle (১৫ অক্টোবর ২০১৮)। "A Rare Viking Ship Burial Was Just Discovered in Norway, Less Than 2 Feet Underground"। ScienceAlert (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ McGreevy, Nora। "For the First Time in a Century, Norway Will Excavate Viking Ship Burial"। Smithsonian Magazine (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ miljødepartementet, Klima-og (১২ মে ২০২০)। "Vil grave fram det første vikingskipet på 100 år"। Regjeringa.no (নরওয়েজিয়ান নিনর্স্ক ভাষায়)। ১২ জুলাই ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ ক খ "Railway Statistics 2008" (পিডিএফ) (নরওয়েজীয় ভাষায়)। Jernbaneverket। পৃষ্ঠা 44–45। ২২ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১০।
- ↑ "Polar Expeditions"। Fram Museum। ২৯ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১২।
- ↑ "Historikk – Stavanger lufthavn, Sola"। Avinor.no। ২৮ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ "Passport Issues, Citizenship and National Registration"। Nordic Council। ১৮ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১২।
- ↑ Götz, Norbert (২০০৯)। "The Absent-Minded Founder: Norway and the Establishment of the United Nations": 619–637। ডিওআই:10.1080/09592290903455741।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;s140
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Dyomkin, Denis; Fouche, Gwladys (২৭ এপ্রিল ২০১০)। "Russia and Norway strike Arctic sea border deal"। Reuters। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১০।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;s158
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Ieromonachou, P.; Potter, S. (১ সেপ্টেম্বর ২০০৬)। "Norway's urban toll rings: Evolving towards congestion charging?" (ইংরেজি ভাষায়): 367–378। আইএসএসএন 0967-070X। ডিওআই:10.1016/j.tranpol.2006.01.003। ১৭ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ ক খ "Regulatyr Reform in Norway" (পিডিএফ)। Organisation for Economic Co-operation and Development। ২০০৩। ৯ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১২।
- ↑ "Landet rundt TBK overtar Dolphin"। Aftenposten (নরওয়েজীয় ভাষায়)। ২৪ ডিসেম্বর ১৯৯৩। পৃষ্ঠা 11।
- ↑ Hove-Ødegård, Arne; Celius, Sten (২০০৪)। "An Olympic Fairy Tale"। Lillehammer Municipality। ১২ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১০।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Boyesen, Hjalmar Hjorth. The History of Norway (2011)
- Derry, T.K. A Short History of Norway (George Allen and Unwin, 1968 edition)
- Haug, Karl Erik. "Norway", in: 1914-1918-online. International Encyclopedia of the First World War, ed. by Ute Daniel, et al. (Freie Universität Berlin, 2016). online
- Larsen, Karen. A history of Norway (Princeton University Press, 1967) 576pp online
- Myhre, Jan Eivind. "Social History in Norway in the 1970s and Beyond: Evolution and Professionalisation." Contemporary European History 28.3 (2019): 409-421 online
- Midgaard, John. A brief history of Norway (1963) online
- Salmon, Patrick. Scandinavia and the Great Powers 1890-1940 (2002) excerpt
- Sejersted, Francis. The Age of Social Democracy: Norway and Sweden in the Twentieth Century (Princeton University Press; 2014) 543 pages; the history of the Scandinavian social model as it developed after the separation of Norway and Sweden in 1905.
- Stenersen, Ivar, and Oivind Libaek. History of Norway from the Ice Age to the Oil Age (3rd ed. Dinamo Forlag 2007)
- Vinje, Victor Condorcet (2014) The Versatile Farmers of the North; The Struggle of Norwegian Yeomen for Economic Reforms and Political Power, 1750-1814 (Nisus Publications).
নরওয়েজীয় ভাষায়
[সম্পাদনা]- Malmø, Morten (১৯৯৭)। Norge på vingene! (Norwegian ভাষায়)। Oslo: Andante Forlag। আইএসবিএন 978-82-91056-13-5।
- Steine, Tor Olav (১৯৯২)। Fenomenet Norsk Data (Norwegian ভাষায়)। Oslo: Universitetsforlaget। আইএসবিএন 978-82-00-21501-1।
- Stenersen, Øyvind; Libæk, Ivar (২০০৩)। The History of Norway। Forlaget Historie og Kultur (Norwegian ভাষায়)। Lysaker: Dinamo Forlag। আইএসবিএন 978-8280710413।
- Thuesen, Nils Petter (২০১১)। Norges historie। Forlaget Historie og Kultur (Norwegian ভাষায়)। Oslo: Universitetsforlaget। আইএসবিএন 978-8292870518।