দর্পণ
দর্পন বা আয়না হল এমন একটি মসৃণ তল যেখানে আলোর প্রতিফলনের নিয়মানুযায়ী নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে।[১] সাধারণত কাচে একপাশে ধাতুর প্রলেপ দিয়ে দর্পণ তৈরি করা হয়ে থাকে কারণ কাচ একটি স্বচ্ছ এবং অনমনীয় বস্তু। কাচের যেদিকে সিলভারিং (কাচে ধাতুর প্রলেপ লাগানোর পদ্ধতি) করা থাকে তার বিপরীত পৃষ্ঠকে দর্পণের পৃষ্ঠ বা প্রতিফলক পৃষ্ঠও বলা হয়। যে পরিমাণ আলো দর্পণের প্রতিফলক পৃষ্ঠে আপতিত হয় তার বেশ কিছুটা উক্ত তল কর্তৃক শোষিত হয় এবং বাকিটা প্রতিফলিত হয়। যদিও একপাশে সিলভারিং করা কাচ দর্পণ হিসেবে সর্বোৎকৃষ্ট, ভালোভাবে পালিশ করা যেকোন বস্তুর পৃষ্ঠই দর্পণের ন্যায় আচরণ করতে পারে।[২]
পরিচ্ছেদসমূহ
প্রকারভেদ[সম্পাদনা]
দর্পণ প্রধানত দু প্রকারের হয়ে থাকেঃ
- সমতল দর্পণ
যখন কোন সমতল পৃষ্ঠ মসৃণ হয় এবং তাতে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে, তাকে সমতল দর্পণ (Plane mirror) বলে।[১] যেমন: নিজের চেহারা দেখার জন্য যে আয়না ব্যবহার করা হয়, তা একটি সমতল দর্পণ।
- গোলীয় দর্পণ
কোন গোলকের অংশবিশেষে যে মসৃণ গোলীয়পৃষ্ঠে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তাকে গোলীয় দর্পণ (Spherical mirror) বলে।[১] গোলীয় দর্পণকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যথা: উত্তল দর্পণ ও অবতল দর্পণ।
উত্তল দর্পণ[সম্পাদনা]
যদি কোন গোলকের উত্তল পৃষ্ঠ প্রতিফলকের ন্যায় আচরণ করে তবে তাকে উত্তল দর্পণ (Convex mirror) বলে।অর্থ্যাৎ গোলকীয় দর্পণের বাইরের উত্তলপৃষ্ঠটি উত্তল দর্পণ হিসেবে কাজ করে।একে অপসারী দপণ বলে ।
অবতল দর্পণ[সম্পাদনা]
যদি কোন গোলকের অবতল পৃষ্ঠ প্রতিফলকের ন্যায় আচরণ করে তবে তাকে অবতল দর্পণ (Concave mirror) বলে।অরথাৎ গোলকীয় দর্পণের ভিতরের অবতলপৃষ্ঠটি অবতল দর্পণ হিসেবে কাজ করে।
বিম্ব[সম্পাদনা]
কোন নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে নির্গত আলোক রশ্মি বা রশ্মিগুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসরিত হয়ে যদি দ্বিতীয় কোন বিন্দুতে মিলিত হয় কিংবা দ্বিতীয় কোনো বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয় তবে ঐ দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর বিম্ব বলে। উদাহরণস্বরূপ- আমরা যখন কোন সমতল দর্পণ যেমন আয়নার সামনে কোন বস্তুকে রাখি তখন আমরা আয়নায় ঐ বস্তুটির প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই। আমাদের কাছে মনে হয় যেন বস্তুটি আয়নার পিছনে আছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বস্তুটি আয়নার সামনেই থাকে একেই বলে আয়নার জন্য নতুন অবস্থানে আমরা বস্তুটির যে প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই তা-ই বস্তুর বিম্ব। সমতল দর্পণে গঠিত বিম্ব সর্বদা আলোক উত্সের সমান হয়, উত্তল দর্পণে বিম্ব সর্বদা আলোক উত্সের চেয়ে ছোট হয় কিন্তু অবতল দর্পণের ক্ষেত্রে উত্সের ফোকাস তথা দর্পনের থেকে লম্ব দূরত্বের উপর নির্ভর করে বিম্বের আকার ছোট, বড় বা সমান হতে পারে। বিম্ব দুই প্রকার; * বাস্তব বিম্ব ও * অবাস্তব বিম্ব
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ প্রফেসর ড. গিয়াস উদ্দিন আহমদ; প্রফেসর ড. মমিনুল হক; প্রফেসর রাশিদুল হাসান; প্রফেসর মাহেরা আহমেদ (জুন,২০০৫)। "আলোর প্রতিফলন"। উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান (দ্বিতীয় পত্র) (ষষ্ঠ সংস্করণ)। ঢাকা: মেট্রো পাবলিকেশন্স ঢাকা। পৃষ্ঠা ২৬১–২৯৮। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য); - ↑ M. Nelkon (১৯৯৩)। "Light"। Principles of Physics (10th সংস্করণ)। Singapore: SHING LEE PUBLISHERS PTE LTD.। পৃষ্ঠা 257। আইএসবিএন 9971616688।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
![]() |
উইকিঅভিধানে দর্পণ বা দর্পণ শব্দটি খুঁজুন। |
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে দর্পণ সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |