বিষয়বস্তুতে চলুন

তিন গোয়েন্দা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তিন গোয়েন্দা
তিন গোয়েন্দার ২৩ নম্বর বই ‘হারানো উপত্যকা’-এর প্রচ্ছদ, প্রথম প্রকাশ- জানুয়ারি, ১৯৮৯
লেখক
প্রচ্ছদ শিল্পী
শরাফত খান
দেশ বাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধারাবাহিকতিন গোয়েন্দা
বিষয়কিশোর থ্রিলার
ধরনথ্রিলার/ রহস্য/ অ্যাডভেঞ্চার/ অলৌকিক/ ভৌতিক
প্রকাশকসেবা প্রকাশনী
প্রকাশনার তারিখ
১৯৮৫ - বর্তমান
মিডিয়া ধরনপ্রিন্ট (পেপারব্যাক)

তিন গোয়েন্দা বাংলাদেশের সেবা প্রকাশনী হতে প্রকাশিত জনপ্রিয়[] একটি কিশোর গোয়েন্দা কাহিনী সিরিজ।[] তিন গোয়েন্দা সিরিজের স্রষ্টা রকিব হাসান

১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাস থেকে বিদেশী কাহিনী অবলম্বনে শুরু হয় এই সিরিজটি।[] প্রথম থেকেই রকিব হাসানই এই বিখ্যাত সিরিজটি লেখার কাজ করেন।[] রকিব হাসান একটানা ২০০৩ পর্যন্ত মোট ১৫৮টি কাহিনী লেখেন।[] পরবর্তীতে শামসুদ্দীন নওয়াব এটি লেখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।[] শামসুদ্দীন নওয়াব নামে বিভিন্ন সময় গোস্ট রাইটাররা বই লিখেছেন।[টীকা ১] এর মধ্যে অন্যতম কাজী আনোয়ার হোসেনের বড় ছেলে কাজী শাহনূর হোসেন।[] ‘তিন গোয়েন্দা’ তিনজন কিশোর গোয়েন্দার গল্প।

তিন গোয়েন্দা পুরোপুরি মৌলিক কাহিনী নয়।[] ইউরোপআমেরিকার বিভিন্ন গোয়েন্দা কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে রচিত। বিশেষ করে প্রথম দিককার বইগুলো রবার্ট আর্থারের ইংরেজি সিরিজ থ্রি ইনভেস্টিগেটরস অবলম্বনে রচিত।[] আবার কিছু বই এনিড ব্লাইটনের ফেমাস ফাইভ অবলম্বনে রচিত।[][১০] এই তিনজন গোয়েন্দাকে ঘিরেই ‘তিন গোয়েন্দা’র শোভন প্রকাশনা বের হয় তিন বন্ধু নামে প্রজাপতি প্রকাশন থেকে।[] এই নামের প্রথম বইটি ছিল আমি রবিন বলছি[১১]

দৈনিক প্রথম আলো পরিচালিত একটি জরিপে বেরিয়ে আসে, বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের পঠিত গল্পের বইয়ের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বই হচ্ছে ‘তিন গোয়েন্দা’, আর প্রিয় চরিত্রের মধ্যে আছে যথাক্রমে কিশোর পাশা, রবিন মিলফোর্ড আর মুসা আমান। জরিপে ৪৫০ জনের মধ্যে ৮১ জনই (১৮%) তিন গোয়েন্দার পক্ষে মত দিয়েছে।[১২]

পরিচিতি

[সম্পাদনা]

তিন গোয়েন্দা সিরিজের বইগুলোর শুরুতেই একটা পরিচিতি দেয়া থাকে, যেটা নতুন পাঠকের জন্য সহায়িকার কাজ করে। সাধারণত পরিচিতিটা এভাবে দেয়া হয়:[১৩]

হ্যাল্লো কিশোর বন্ধুরা—
আমি কিশোর পাশা বলছি অ্যামিরিকার রকি বীচ থেকে। জায়গাটা লস অ্যাঞ্জেলসে, প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে। হলিউড থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে। যারা এখনও আমাদের পরিচয় জানো না, তাদের বলছি আমরা তিন বন্ধু একটা গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছি। নাম
তিন গোয়েন্দা
আমি বাঙালি, থাকি চাচা-চাচীর কাছে। দুই বন্ধুর একজনের নাম মুসা আমান। ব্যায়ামবীর, আমেরিকান নিগ্রো; অন্যজন আইরিশ আমেরিকান, রবিন মিলফোর্ড, বইয়ের পোকা।
একই ক্লাসে পড়ি আমরা।
পাশা স্যালভিজ ইয়ার্ডে লোহা-লক্কড়ের জঞ্জালের নিচে পুরান এক মোবাইল হোম-এ আমাদের হেডকোয়ার্টার।
তিনটি রহস্যের সমাধান করতে চলেছি—
এসো না, চলে এসো আমাদের দলে।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

রকিব হাসানই সেবা প্রকাশনীর কর্ণধার কাজী আনোয়ার হোসেনকে প্রস্তাব করেন কিশোরদের উপযোগী একটি কাহিনী শুরু করার। সেবা প্রকাশনী থেকে তখন কুয়াশা সিরিজ শেষ হয়ে যাওয়ায় আনোয়ার হোসেনও সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।[] অবশেষে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে প্রকাশিত হয় তিন গোয়েন্দার প্রথম বই "তিন গোয়েন্দা"।[১১] ২০০৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত টানা লিখে যান রকিব হাসান।[] তারপর এই সিরিজের হাল ধরেন শামসুদ্দীন নওয়াব। এদিকে কাজী শাহনূর হোসেনের পরামর্শে তিন গোয়েন্দার পুরনো বইগুলো প্রকাশিত হতে থাকে ভলিউম আকারে, কয়েকটি বই একসাথে। পুরনো বইগুলো আর আলাদাভাবে বের হয় না। এদিকে শামসুদ্দীন নওয়াব মূল চরিত্রগুলোর পাশাপাশি অন্তর্ভুক্ত করলেন নতুন চরিত্র কাকাতুয়া কিকো। শামসুদ্দীন নওয়াবের রচনায় কাহিনীগুলো ধার করা হয় এনিড ব্লাইটন, ক্রিস্টোফার পাইকসহ আরো অনেক লেখকের বই থেকে। এছাড়া সেবা প্রকাশনীর অন্যান্য সিরিজ যেমন "গোয়েন্দা রাজু", "রোমহর্ষক" আর কাজী শাহনূর হোসেনের লেখা "নীল-ছোটমামা" সমস্ত বইই রূপান্তর করা হয়েছে তিন গোয়েন্দায়। এছাড়াও শামসুদ্দীন নওয়াবের পাশাপাশি রকিব হাসানও মাঝে মাঝে তিন গোয়েন্দা লিখে থাকেন।[১৪]

পৃথিবীর বৃহত্তম সাধারণ-আগ্রহের বাণিজ্যিক প্রকাশনা সংস্থা ‘র‍্যান্ডম হাউস’ কর্তৃক প্রকাশিত মূল ইংরেজি ‘থ্রি ইনভেস্টিগেটরস (১৯৬৪-১৯৮৭)’ সিরিজে ৪৩ টি বই প্রকাশিত হয়েছিল[] যার মধ্যে ১০টি লেখেন রবার্ট আর্থার, ১৩টি লেখেন উইলিয়াম আর্ডেন (যার আসল নাম ছিল মাইকেল কলিন্স), ২টি লেখেন নিক ওয়েস্ট, ১৫টি লেখেন এম ভি ক্যারি বা ম্যারি ভার্জিনিয়া ক্যারি এবং ৩টি লেখেন মার্ক ব্র্যান্ডেল। এই বইগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। একটি জার্মান-দক্ষিণ আফ্রিকান চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থা দুটি চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেন- ‘দ্য থ্রি ইনভেস্টিগেটরস অ্যান্ড দ্য সিক্রেট অফ স্কেলেটন আইল্যান্ড (২০০৭)’ এবং ‘দ্য থ্রি ইনভেস্টিগেটরস অ্যান্ড দ্য সিক্রেট অফ টেরর ক্যাসল (২০০৯)’, যা ব্যাপক জনপ্রিয় হয়।[১৫] চলচ্চিত্র দুটির কাহিনী বইয়ের থেকে অনেকটা আলাদা এবং আধুনিক সময়ের পটভূমিতে চিত্রিত যেখানে জুপ, পীট এবং বব এর কাছে ‘জিপিএস’, ‘সেলফোন’ এর মত প্রযুক্তি রয়েছে।

পরবর্তীতে ‘দা থ্রী ইনভেস্টিগেটরস ক্রাইম বাস্টার্স (১৯৮৯-১৯৯০)’ নামে একটি সিরিজে ১১টি বই প্রকাশিত হয় যার মধ্যে একটি করে লেখেন উইলিয়াম আর্ডেন এবং মার্ক ব্র্যান্ডেল। ক্রাইম বাস্টার্সের অন্যান্য লেখকরা হচ্ছেন—মেগান এবং এইচ উইলিয়াম স্টাইন, জি এইচ স্টোন, উইলিয়াম ম্যাক কে এবং পিটার লের‍্যাঞ্জিস।

এনিড ব্লাইটন ২১টি ফেমাস ফাইভ (১৯৪২-১৯৬৩) সিরিজের বই লেখেন যা অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। এই সিরিজের ভিত্তিতে ১৯৭৭ সাল এবং ১৯৯৫ সালে টিভি সিরিজ চিত্রিত হয়েছিল। বর্তমানে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থা ‘ফেমাস ফাইভ’ সিরিজের চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। ‘ফেমাস ফাইভ’ সিরিজের দুই ভাই জুলিয়ান, ডিক এবং তাদের বোন অ্যান কে তিন গোয়েন্দার কিশোর, মুসা, রবিন এ পরিবর্তন করা হয়। তিন ভাই-বোনের চাচাতো বোন হল জর্জিনা পারকার।

এনিড ব্লাইটন ১৫টি সিক্রেট সেভেন (১৯৪৯-১৯৬৩) সিরিজের বই লেখেন যা অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। এছাড়া এভালিন ল্যামান্ড (Evelyne Lallemand) ফ্রেঞ্চ ভাষায় ১২টি সিক্রেট সেভেন (১৯৭৬-১৯৮৪) সিরিজের বই লেখেন যা পরে ইংরেজিতে অনুদিত হয়। গোয়েন্দা রাজু সিরিজ এ সিরিজ অবলম্বনে লেখা যাতে চরিত্রগুলো ছিল- রাজু (তিন গোয়েন্দায় কিশোর, সিক্রেট সেভেনে পিটার), অপু (তিন গোয়েন্দায় মুসা, সিক্রেট সেভেনে জ্যাক), অজিত (তিন গোয়েন্দায় রবিন, সিক্রেট সেভেনে কলিন), টিপু (তিন গোয়েন্দায় বব, সিক্রেট সেভেনে জর্জ), মিশা (তিন গোয়েন্দায় মিশা, সিক্রেট সেভেনে জেনেট), রানু (তিন গোয়েন্দায় ডলি, সিক্রেট সেভেনে প্যাম), অনিতা (তিন গোয়েন্দায় অনিতা, সিক্রেট সেভেনে বারবারা), কুকুর জিমি (তিন গোয়েন্দায় টিটু, সিক্রেট সেভেনে স্ক্যাম্পার), বাবলি (তিন গোয়েন্দায় বাবলি, সিক্রেট সেভেনে সুসি) এবং লুডু (তিন গোয়েন্দায় পটার, সিক্রেট সেভেনে জেফ)। পরবর্তিতে গোয়েন্দা রাজু সিরিজের বইগুলোকে তিন গোয়েন্দায় পরিণত করায় ‘সিক্রেট সেভেন’ সিরিজের বইও তিন গোয়েন্দা সিরিজে অন্তর্ভুক্ত আছে।

‘রোমহর্ষক’ বা রেজা-সুজা সিরিজ লেখা হয়েছে ‘হার্ডি বয়েজ’ সিরিজ অবলম্বনে যেখানে ছেলেরা তিন গোয়েন্দার চেয়ে বয়সে অল্প বড় এবং আপাতদৃষ্টিতে অপেক্ষাকৃত বিপজ্জনক অভিযানে অংশ নেয়। ‘রোমহর্ষক’ সিরিজের বইগুলোও তিন গোয়েন্দায় পরিণত করায়, ‘হার্ডি বয়েজ’ সিরিজের বইও তিন গোয়েন্দা সিরিজে অন্তর্ভুক্ত আছে। ১৯২৭ সাল থেকে আজ (২০১৪) পর্যন্ত ‘হার্ডি বয়েজ’ সিরিজের ৪৮৯ টি বই প্রকাশিত হয়েছে।

শামসুদ্দিন নওয়াবের রচনায় কাহিনীগুলোতে ক্রিস্টোফার পাইকের কিছু বই অবলম্বনে লেখা হয়েছে। ক্রিস্টোফার পাইকের আসল নাম কেভিন ক্রিস্টোফার ম্যাকফাডেন এবং তিনি ১৯৮৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ৭৫টি ‘অ্যাডাল্ট ফিকশন’, ভৌতিক এবং ‘ভ্যাম্প্যায়ার’ কাহিনী লেখেন।

প্রধান চরিত্রসমূহ

[সম্পাদনা]

তিন গোয়েন্দা বলতেই বোঝায় তিনজন কিশোর, যারা রহস্য সমাধানে প্রচণ্ড আগ্রহী, তবে রহস্য সমাধানের পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চারও তাদের অন্যতম আকর্ষণ।[] কিশোর পাশা, মুসা আমান এবং রবিন মিলফোর্ড এই তিনজন কিশোরকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে তিন গোয়েন্দার কাহিনী।[১৬] মাঝেমধ্যে জর্জিনা পার্কার (সংক্ষেপে ‘জিনা’) ও তার কুকুর রাফিয়ান (সংক্ষেপে ‘রাফি’) তাদের অভিযানে সহায়তা করে। এছাড়াও রয়েছে টকার ও নটি। তিন গোয়েন্দা 'গ্রীণ হিলস স্কুল'-এ একই শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। তবে তারা কোন শ্রেণীতে পড়ে, বইতে তার উল্লেখ না থাকায় পাঠক কিশোর-কিশোরীরা তিন গোয়েন্দাকে নিজের শ্রেণীর বলে কল্পনা করে নেয়। কিশোর, মুসা এবং রবিন—তিনজনেই বাস করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার রকি বীচ শহরে। তাদের বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনী নিয়েই তিন গোয়েন্দা সিরিজ।

কিশোর পাশা

[সম্পাদনা]

কিশোর পাশা তিন গোয়েন্দা সিরিজের প্রধান চরিত্র, গোয়েন্দা প্রধান[১৬] বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত। বাবা জাহেদ পাশা। মাত্র ৭ বছর বয়সে এক ঝড়ের রাতে গাড়ি দুর্ঘটনায় তার মা-বাবা দুজনেই মারা যান। চাচা রাশেদ পাশা (মূল চরিত্র- টিটাস জোন্স) ও চাচী মারিয়া পাশার (কিশোরদের 'মেরি চাচি', মূল চরিত্র- মাথিল্ডা জোন্স) কাছেই সে মানুষ হয়[১৭] (মূল সিরিজে জুপিটারের বাবা মা দুজনেই পেশায় যুগল নৃত্য শিল্পী ছিলেন এবং জুপের ৪ বৎসর বয়সে দুজনে একসাথে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান)। চাচা রাশেদ পাশার একটি স্যালভেজ ইয়ার্ড আছে, নাম "পাশা স্যালভেজ ইয়ার্ড"। রাশেদ পাশা বিশাল পাকানো গোঁফের অধিকারী।[১৪] এদিকে কিশোর পাশার কোঁকড়া চুল, গভীর কালো দুচোখে বুদ্ধির ঝিলিক! ক্ষুদ্র জিনিসও তার চোখ এড়ায় না। যে জিনিস একবার দেখে সেটা মনে থাকে দীর্ঘদিন। কিশোর পাশা একজন চমৎকার অভিনেতাও বটে। ছোটবেলায় একটি কমেডি সিরিজে একটা হাসির চরিত্র করেছিলো বলে এখনও সে বেশ লজ্জাবোধ করে (মূল সিরিজে এই অনুষ্ঠানের নাম ‘বেবি ফ্যাটসো’ বা বাংলা সিরিজের ‘পাগল সঙ্ঘ’ বই অনুযায়ী অনুষ্ঠানটির নাম ‘পাগল সঙ্ঘ’ যাতে কিশোরের চরিত্রটি ছিল ‘মোটুরাম’। উল্লেখ্য যে, কিশোর চরিত্রটিকে দেখান হয়েছে সে ছোটবেলায় মোটাসোটা ছিল কিন্তু বর্তমানে আর মোটা নেই। অপরদিকে, মূল সিরিজে জুপিটার সবসময়ই মোটাসোটা, একটু ভারি স্বাস্থ্যের অধিকারী)। ইলেকট্রোনিক্সের কাজে সে বেশ পটু, তাই তাকে "ইলেক্ট্রোনিক্সের যাদুকর"ও বলা হয়। তার মুদ্রাদোষ হলো: গভীর চিন্তামগ্ন অবস্থায় সে ক্রমাগত নিচের ঠোঁটে চিমটি কাটতে থাকে। তাছাড়াও সময় নাহলে কখনোই কাউকে কোনো কিছু বলতে চায় না! কোনো কোনো বইতে তার ‘বাঘা’, ‘চিতা’ এবং ‘টিটু’ নামে তিনটি কুকুরের নামও পাওয়া যায়। সে সাধারণত মেয়েদের ব্যাপারে আগ্রহী নয়। "থ্রি ইনভেস্টিগেটরস"-এ কিশোর পাশার প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো জুপিটার জোনস (মূল চরিত্র- ডাক নাম জুপ, মূল ইংরেজি সিরিজের প্রচ্ছদ অনুযায়ী জুপ ১৩-১৪ বছর বয়েসি কাল চুলের শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান কিশোর।)।[১০] জানা যায়,পাঠকদের মধ্যে অধিকাংশ কিশোর-কিশোরীরাই “কিশোর” চরিত্র টিকে বেশি পছন্দ করে।

মুসা আমান

[সম্পাদনা]

মুসা আমান তিন গোয়েন্দা সিরিজের দ্বিতীয় চরিত্র, গোয়েন্দা সহকারী[১৬] আফ্রিকান বংশোদ্ভূত। বাবা-মায়ের সাথে থাকে। বাবা রাফাত আমান হলিউডের বড় টেকনিশিয়ান এবং মা মিসেস আমান গৃহিনী। মুসাকে ঘর-বাড়ি পরিষ্কার করা, লনের ঘাস ছাটা এসব কাজ প্রায়ই করতে হয়। নিয়মিত ব্যায়াম করে আর পেশিশক্তিতে সবল। প্রয়োজনে প্রচণ্ড শক্ত মাথা দিয়ে শত্রুর পেটে আঘাত করতে তার জুড়ি নেই। তার মাঝে মাঝেই নানারকম বাতিক জাগে। কিছুদিন পর তা মিটে গেলে আরেকটা শখে মন চলে যায়। তার মুদ্রাদোষ হলো: কথায় কথায় “খাইছে”, “সেরেছে” কিংবা “ইয়াল্লা” বলা। সে একটু ভোজনরসিকও বটে। কিছুটা ভীতু প্রকৃতির, ভূতে তার যত ভয়। তবে বিপদের মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সাহসী হয়ে উঠে মুসা। মুসা মোটামুটির দক্ষতার সাথে বিমান চালাতেও পারে।[১৩] তবে মুসা বই পড়তে অপছন্দ করে। কিছু গল্পে দেখা যায় মুসার একটি কুকুর আছে যার নাম সিমবা। কিছু গল্পের তার একটি কাকাতুয়াও আছে যার নাম কিকো। "থ্রি ইনভেস্টিগেটরস"-এ মুসা আমানের প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো পীট ক্রেনশো (মূল ইংরেজি সিরিজের প্রচ্ছদ অনুযায়ী পীট ১৩-১৪ বছর বয়েসি বাদামী চুলের শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান কিশোর। পীট তিন জনের ভিতরে সবচেয়ে লম্বা এবং গঠনে শক্তিশালী)।[১০]

রবিন মিলফোর্ড

[সম্পাদনা]

তিন গোয়েন্দার নথি গবেষক হিসেবে পরিচিত রবিন মিলফোর্ড।[১৬] আয়ারল্যান্ডের বংশোদ্ভূত। বাবা রজার মিলফোর্ড একজন সাংবাদিক এবং মা শেলী মিলফোর্ড গৃহিনী, তবে একটি গল্পে দেখা যায় তিনি কিছুদিনের জন্য সাংবাদিকতার চাকরি করেছিলেন। রবিনের কাজ হচ্ছে তিন গোয়েন্দার সকল কেসের রেকর্ড রাখা বা নথি সংরক্ষণ করা। পাহাড়ে চড়ায় সে ওস্তাদ; কয়েকবার পাও ভেঙেছে একারণে। বই পড়তে খুব ভালোবাসে আর বই থেকে দ্রুত উদ্ধৃতি দিতে পারে বলে সে "চলমান জ্ঞানকোষ" হিসেবে পরিচিত। তিন গোয়েন্দার সবার মধ্যে সবচেয়ে কেতাদুরস্ত আর দেখতেও সুন্দর। রবিন রকি বীচ লাইব্রেরীতে একটি খণ্ডকালীন চাকরিও করে। কিছুদিন অবশ্য একটি ব্যান্ডের দলের সঙ্গেও কাজ করেছে। তাছাড়া রবিনও বিমান চালাতে পারে, তবে সে অতোটা দক্ষ নয়।[১৩] দলের অন্যান্য সদস্যের মতো সে কারাতে খেলায় দক্ষ। "থ্রি ইনভেস্টিগেটরস"-এ রবিন মিলফোর্ডের প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো রবার্ট বব এন্ড্রুজ (মূল ইংরেজি সিরিজের প্রচ্ছদ অনুযায়ী বব ১৩-১৪ বছর বয়েসি সোনালী চুলের শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান কিশোর, চোখে চশমা পরিধান করে। বব তিন জনের ভিতরে লম্বায় এবং সাইজে সবচেয়ে ছোটখাট)।[১০]

সহায়ক চরিত্রসমূহ

[সম্পাদনা]

জর্জিনা পারকার ও রাফিয়ান

[সম্পাদনা]

জর্জিনা পারকার, সংক্ষেপে তাকে সবাই ডাকে 'জিনা' বলে। বিখ্যাত বিজ্ঞানী হ্যারিসন জোনাথন পারকার (মূল চরিত্র- কোয়েন্টিন কিরিন) ও কেরোলিন পারকারের একমাত্র মেয়ে জিনা। প্রথমে জিনা রকি বীচে থাকত না, স্রেফ ছুটি কাটাতে এসে সে তিন গোয়েন্দার সাথে রহস্যোদঘাটনে জড়াত। পরবর্তীতে সে রকি বীচেই স্কুলে ভর্তি হয় (ছুটি গল্প দ্রষ্টব্য)। জিনা পোষা প্রাণীর প্রতি খুব মমতাশীল। 'রাফিয়ান' (মূল চরিত্র- টিমি) নামে তার একটি পোষা কুকুর আছে, যাকে আদর করে সংক্ষেপে 'রাফি' বলে ডাকা হয়। তিন গোয়েন্দার অনেকগুলো তদন্তে সাথে ছিলো রাফিয়ান। জিনা প্রায়ই নিজেকে ছেলেদের সমকক্ষ করে তুলতে ছেলেদের মতো করে ভাবে আর তখন নিজের নাম বলে 'জর্জ গোবেল'। মায়ের থেকে জিনা গোবেল দ্বীপের মালিক। এটির মালিক ছিল মূলত তার নানা।

ধারণা করা হয় যে, জিনা চরিত্রটি এনিড ব্লাইটনের "ফ্যামাস ফাইভ" সিরিজের 'জর্জিনা জর্জ কিরিন' চরিত্র থেকে ধার করা হয়েছে।[১৪]

লেখিকা ব্লাইটন প্রকাশ করেন যে, জর্জিনা চরিত্রটি তার নিজের স্বভাবের ছায়া অবলম্বনে রচিত। কাহিনীতে দেখা যায় যে, জর্জিনা বা জর্জ ছেলেমি স্বভাবের, দুঃসাহসী, বদমেজাজি এবং বিশ্বস্ত। সে কিশোরকে কিঞ্চিত পছন্দ করে।

জিনার সাথে তিন গোয়েন্দার কাহিনীগুলো হলো ''প্রেতসাধনা'' ''সাগরসৈকত'' ''ছুটি'' ''ছিনতাই'' ''বোম্বেটে'' ''আবার সম্মেলন'' ''গোলাপী মুক্তো'' ''প্রজাপতির খামার'' ''কালো হাত'' ''মূর্তির হুঙ্কার'' ''চিতা নিরুদ্দেশ'' ''অভিনয়'' ''জিনার সেই দ্বীপ'' ''সৈকতে সাবধান'' ''নতুন স্যার'' ''এখানেও ঝামেলা'' ইত্যাদি।

উল্লেখ্য যে, মূল ইংরেজি “দ্য থ্রি ইনভেস্টিগেটরস" সিরিজ এর পটভূমি মূলত আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসের রকি বিচ এলাকা হলেও, ফেমাস ফাইভ সিরিজের পটভূমি হল দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ড এর ডরসেট কাউন্টি, অন্যান্য ইংলিশ এবং ওয়েলস কাউন্টি এবং সমুদ্র সৈকত এলাকা।

অন্যান্য চরিত্রসমূহ

[সম্পাদনা]

ডেভিস ক্রিস্টোফার

[সম্পাদনা]

ডেভিস ক্রিস্টোফার হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যাঁর কাছ থেকে তিন গোয়েন্দার গোয়েন্দাগিরির হাতেখড়ি।[১৭] (মূল চরিত্র- আলফ্রেড হিচকক) তিনি বাস্তব চরিত্র ছিলেন, তার তৎকালীন খ্যাতির কারণে তার নাম অনেকগুলো বই সিরিজ জনপ্রিয় করতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহার করা হয়) তিনি হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক। প্রথম গল্পে তিন গোয়েন্দা তাকে একটি ভূতুড়ে বাড়ি খুঁজতে সহায়তা করে, সেই থেকে পরিচয়। পরবর্তীতে প্রায়ই নানারকম কেস তিন গোয়েন্দার হাতে গছিয়ে দিয়েছেন। করেছেন অনেক সাহায্যও। এছাড়া তিন গোয়েন্দার প্রায় প্রতিটি কেসের কাহিনী নিয়েই তিনি কিশোর-কিশোরীদের উপযোগী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন।

ভিক্টর সাইমন

[সম্পাদনা]

ভিক্টর সাইমন হলেন একজন পেশাদার প্রাইভেট গোয়েন্দা (মূল চরিত্র- হেক্টর সেবাস্তিয়েন, একজন লেখক, আলফ্রেড হিচকক এর মত বাস্তব চরিত্র নন। সেবাস্তিয়েন তিন গোয়েন্দার কাছ থেকে শুনে তাদের অভিযান লিপিবদ্ধ করেন)।[১৭] তিনি বিভিন্ন সময় নিজের কাছে আসা বিভিন্ন ছোটখাটো কেস ধরিয়ে দেন তিন গোয়েন্দাকে। আবার অনেক সময়ই তিনি নিজে তিন গোয়েন্দার সাথে একই কেসে কাজ করেন। এছাড়া বিভিন্ন রহস্যোদঘাটন শেষে তিন গোয়েন্দা তাঁর কাছে গিয়ে রিপোর্ট জমা দেয়। তিনি খুবই সম্পদশালী ব্যক্তি। ভিক্টর সাইমনের বাসায় একজন ভিয়েতনামী রাঁধুনী আছেন, নাম নিসান জাং কিম, যিনি প্রায়ই উদ্ভট উদ্ভট সব খাবার রান্না করে প্রথমবার মুসাকে দিয়ে চাখিয়ে দেখেন। তার একটি ছোট বিমান আছে। ল্যারি কংকলিন হলো ভিক্টর সাইমনের বিমানের পাইলট। গোয়েন্দাদের সাথে তার প্রথম পরিচয় হয় "খোঁড়া গোয়েন্দা" বইয়ে।

ক্যাপ্টেন ইয়ান ফ্লেচার

[সম্পাদনা]

ক্যাপ্টেন ইয়ান ফ্লেচার হলেন রকি বীচ পুলিশ চীফ (মূল চরিত্র- স্যামুয়েল রেনল্ডস, সবাই ‘চীফ রেনল্ডস’ বলে ডাকে। তিনি ভারি, বিশালদেহী এবং মাথায় হালকা টাক রয়েছে। দ্রষ্টব্যঃ ইংরেজি ‘দ্যা থ্রি ইনভেস্টিগেটরস’ সিরিজের চতুর্থ বই ‘দ্যা মিস্ট্রি অফ দ্যা গ্রীন ঘোস্ট’, লেখক- রবার্ট আর্থার, প্রকাশ- ১৯৬৫ সাল)। তিনি অনেক সময়ই তিন গোয়েন্দাকে বিভিন্ন কেস দিয়ে থাকেন।[১৭] তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন যে, জটিল নকশার মর্ম উদ্ধার করার জন্য কিশোর পাশার মতো এমন যোগ্য লোক আর তাঁর জানামতে কেউ নেই। ক্যাপ্টেন ইয়ান ফ্লেচারই তিন গোয়ন্দার ড্রাইভিং লাইসেন্স করে দিয়েছিলেন। তাছাড়া তিনি তিন গোয়েন্দা কে যেকোনো জায়গায় তদন্ত করবার অনুমতি দিয়ে তার নিজের স্বাক্ষর সংবলিত একটি সবুজ কার্ড দিয়েছিলেন। এই কার্ডের মাধ্যমে পরবর্তীতে তিন গোয়েন্দা অনেক সুবিধা পায়। এই সবুজ কার্ডে লেখা আছে- “প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, এই কার্ডের বাহক রকি বীচ পুলিশকে সহায়তাকারী একজন স্বেচ্ছাসেবক জুনিয়র সহকারী ডেপুটি। তাকে যেকোনো সহযোগিতা প্রদান করলে প্রশংসিত করা হবে।”[১৩]

ওমর শরীফ

[সম্পাদনা]

ওমর শরীফ মিশরীয় বংশোদ্ভুত রোমাঞ্চপ্রিয় দক্ষ বৈমানিক।[১৭] তিনি চিত্র পরিচালক ডেভিড ক্রিস্টোফারের পছন্দের পাইলট। গায়ে তাঁর বেদুইনের রক্ত, তাই সাহসের কমতি নেই। ওমরের সাথে তিন গোয়েন্দার বেশ কিছু অভিযান রয়েছে, যেমন: জলদস্যুর দ্বীপ ১ ও ২, গোপন ফর্মুলা, দক্ষিণের দ্বীপ, ওকিমুরো কর্পোরেশন ইত্যদি। 'ওকিমুরো কর্পোরেশন' হলো তিন গোয়েন্দা আর ওমর শরীফের সম্মিলিতভাবে খোলা একটি ফ্লাইং ক্লাব, যার 'ও' দ্বারা বোঝায় ওমর, 'কি' দ্বারা কিশোর, 'মু' দ্বারা মুসা আর 'রো' দ্বারা রবিনকে। ধীরে ধীরে ওমর, তিন গোয়েন্দার পছন্দের 'ওমর ভাই' হয়ে যান।

চিত্রচোর শোঁপা

[সম্পাদনা]

গোয়েন্দা শোঁপা হচ্ছে ইউরোপের একজন বিখ্যাত গোয়েন্দা।[১৭] আর চিত্রচোর শোঁপা হচ্ছে চিত্রকলা চোর (মূল চরিত্র- ভিক্টর হিউজেনে, ফরাসি নাগরিক এবং বিপজ্জনক আন্তর্জাতিক চিত্রকলা চোর)। চমৎকার এই বুদ্ধিমান মানুষটির কিশোরের জন্য রয়েছে অন্যরকম এক শ্রদ্ধা। শোঁপার সাথেও তিন গোয়েন্দার কয়েকটি অভিযান রয়েছে। যেমন: কাকাতুয়া রহস্য, ঘড়ির গোলমাল[১৪]

শোফার হ্যানসন

[সম্পাদনা]

হ্যানসন (মূল চরিত্র- ওরদিংটন) হচ্ছে "রোলস রয়েস"-এর ব্রিটিশ শোফার[১৭] মধ্যপ্রাচ্যের এক শেখের জন্য প্রস্তুত করা হয় এই রোলস রয়েস। কিন্তু তিনি নিতে আপত্তি জানানোয় এর প্রতিষ্ঠান "রেন্ট-এ-কার অটোরেন্টাল কোম্পানী" গাড়িটিকে বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় এবং একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেই প্রতিযোগিতায় বুদ্ধিদীপ্ত জবাব দিয়ে গাড়িটি ৩০দিনের জন্য ব্যবহারের সুযোগ পায় কিশোর পাশা, সেই সুবাদে তিন গোয়েন্দা। সেই গাড়ির চালক হ্যানসন। ৩০ দিনের সুযোগ শেষ হয়ে গেলে অত্যন্ত মূল্যবান "রক্তচক্ষু" পাথর খুঁজে দেবার পর এর মালিক অগাস্ট অগাস্ট তাঁর নামে তিন গোয়েন্দাকে রোলস রয়েস ব্যবহারের অনুমতি এনে দেন। এভাবেই হ্যানসনের সাথে মিত্রতা আরো গভীর হয় তিন গোয়েন্দার। পুরোনো প্রায় সব বইগুলোতেই তাঁকে দেখা যায়; অনেক সময় অনেক কেসে সহায়তাও করে থাকেন তিন গোয়েন্দাকে।

ফগর‍্যাম্পারকট

[সম্পাদনা]

হ্যারিসন ওয়াগনার ফগর‍্যাম্পারকট একজন পুলিশ কনস্টেবল।[১৭] তিন গোয়েন্দা তাকে একবাক্যে "ঝামেলা" বলে সম্বোধন করে থাকে, কেননা তিনি কথা কথায় নাক সিঁটকিয়ে 'ঝামেলা' শব্দটি উচ্চারণ করেন। সাধারণত এই চরিত্রটি প্রজাপতি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত তিন গোয়েন্দার শোভন প্রকাশনা তিন বন্ধু সিরিজে দেখতে পাওয়া যায়। তিন বন্ধু সিরিজের মোট ২৮টি বই প্রকাশিত হয়।[] ছোটবেলায় যখন 'গ্রিন হীলস' নামক গ্রামে রবিন, মুসা আর মুসার চাচাতো বোন ফারিয়া থাকতো, কিশোর মাঝে মাঝে সেখানে ছুটি কাটাতে যেতো, তখনকার ঘটনাগুলো সাধারণত তিন বন্ধু সিরিজের মুখ্য বিষয়। তিন বন্ধুর এখানেও ঝামেলা বইতে দেখা যায় ফগর‍্যাম্পারকটকে বদলি করে দেয়া হয়েছে গোবেল বীচে।

ববর‍্যাম্পারকট

[সম্পাদনা]

উইলিয়াম ববর‍্যাম্পারকট, তিন বন্ধু সংক্ষেপে যাকে বব বলে ডাকে, ফগর‍্যাম্পারকটের ভাতিজা। কিন্তু তার চাচা ফগের সাথে তার আচরণগত বৈশিষ্টের যথেষ্ট পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। তিন গোয়েন্দার ভালো বন্ধু; বিভিন্ন কেসে সরাসরি সহায়তা করেছে সে, যদিও চাচা সব সময়ই বিরোধিতা করেছেন এসবের। সাধারণত 'তিন বন্ধু' সিরিজে তাকে দেখতে পাওয়া যায়।

টেরিয়ার ডয়েল

[সম্পাদনা]

টেরিয়ার ডয়েল, তিন গোয়েন্দার কাছে শুঁটকি টেরি নামে যে পরিচিত।[১৭] টেরিয়ার সব সময়ই ঝামেলা পাকাতে ওস্তাদ। টেরিকে মুসা দুচোখে দেখতে পারে না। শুঁটকি টেরির মূল ধারণাটা নেওয়া হয়েছে থ্রি ইনভেস্টিগেটরস-এর "স্কিনি নরিস" চরিত্রটি থেকে। টেরির একটি নিজস্ব বাহিনী রয়েছে। তিন গোয়েন্দা এই বাহিনীকে শুঁটকি বাহিনী বলে ডাকে। এই বাহিনীর সদস্যরা হলো টাকি, কডি, ক্যাপ, গ্যারি, নিটু, হ্যারল্ড। টেরির মতো তার বাহিনীও সবসময় তিন গোয়েন্দার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়।[১৪]

রোডালিন ওয়ার্নার

[সম্পাদনা]

রোডালিন ওয়ার্নার এর ডাকনাম হল রোডা। সে ভীষণ বদমেজাজি। সে তিন গোয়েন্দার ডেথ সিটির বন্ধু। সে ভীষণ সাহসী। তিন গোয়েন্দা যখন ডেথ সিটিতে বেড়াতে আসে তখন রোডা তাদের সাথী হয়। তার সাথে তিন গোয়েন্দার কিছু অভিযান হল হিম পিশাচের কবলে, ডেথ সিটির দানব ইত্যাদি।

মরগ্যান লে ফে

[সম্পাদনা]

মরগ্যান লে ফে হল রাজা আর্থারের সময়্কার এক জাদুকরী লাইব্রেরিয়ান। তিনি জাদুর ট্রী হাউসের প্রধান লাইব্রেরিয়ান। তিন গোয়েন্দা ও জিনা ট্রী হাউসে চড়ে অতীত-ভবিষ্যতে যেতে পারে। পরবর্তীতে তারা মাস্টার লাইব্রেরিয়ান হয়ে ওঠে। ট্রী হাউসে চড়ে তারা বিভিন্ন অভিযান করে। এর মধ্যে কয়েকটি অভিযান হল ভূতের শহর, ড্রাগনরাজার দেশে, চাঁদের মানুষ, স্বাধীনতা তুমি ইত্যাদি।

রেমন রেফটন

[সম্পাদনা]

রেমন হলো তিন গোয়েন্দার একজন বন্ধু। সে তিন গোয়েন্দার সাথে রকি বিচ স্কুলে একই ক্লাসে পড়ে। সে একজন শক্তিশালী ছেলে। সে রাগবি দক্ষ। সে তিন গোয়েন্দাকে অনেক কেসে সাহায্য করেছে। তিন গোয়েন্দার অদৃশ্য খুনী, চ্যাম্পিয়ন গোয়েন্দা, মেলায় ঝামেলা বইয়ে রেমনকে দেখা যায়।

তিন গোয়েন্দার হেডকোয়ার্টার, উপকরণাদি ও কৌশল

[সম্পাদনা]

হেডকোয়ার্টার

[সম্পাদনা]

তিন গোয়েন্দার হেডকোয়ার্টার বা প্রধানকেন্দ্র বলতে বোঝায় একটি মোবাইল ভ্যান, যা ফেলনা অবস্থায় রাশেদ পাশা দীর্ঘদিন আগে কিনে এনেছিলেন। পাশা স্যালভেজ ইয়ার্ডে লোহা-লক্কড়ের স্তুপের নিচে পড়ে যাওয়ায় তা ভুলে যান কিশোরের চাচা। আর সেই সুযোগে বোরিস ও রোভার এর সাহায্যে তিন গোয়েন্দা সেই মোবাইল হোমের ভিতর তৈরি করে নিয়েছে নিজেদের হেডকোয়ার্টার। হেডকোয়ার্টারের স্থান খুব ছোট হলেও এতে রয়েছে ডার্করুম, যেখানে তিন গোয়েন্দা ছবি ওয়াশ করে থাকে; আছে নিজেদের বসার জন্য আলাদা জায়গা; টেলিফোন ও তাতে সংযোগ দেয়া লাল বাতি, যাতে হেডকোয়ার্টারের বাইরে থাকলে ঐ বাতির জ্বলা-নিভা দেখে তারা বুঝে নিতে পারে হেডকোয়ার্টারে টেলিফোন বাজছে; আছে পেরিস্কোপ, তিন গোয়েন্দা যার নাম দিয়েছে "সর্বদর্শন"; তবে "গোরস্তানে আতঙ্ক" বই-এ পেরিস্কোপের জায়গায় সিসি ক্যামেরা দেখা গেছে এছাড়া আছে নিজেদের তদন্ত করা কেস-রিপোর্টগুলো সংরক্ষণের জায়গা। এই গোপন হেডকোয়ার্টারে ঢোকার জন্য তারা তৈরি করে নিয়েছে আলাদা আলাদা গোপন পথ: "সবুজ ফটক এক", "দুই সড়ঙ্গ", "সহজ তিন", "লাল কুকুর চার" হলো সেসব গোপন পথেরই গুপ্ত নাম। তবে দ্য থ্রি ইনভেস্টিগেটরস-এর সকল বই অবলম্বনে কিশোর আলোর কাহিনি তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে পাশা স্যালভেজ ইয়ার্ডের মাধ্যমে কাহিনির শুরু হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।[]

কার্ড

[সম্পাদনা]

পাশা স্যালভিজ ইয়ার্ডেই তিন গোয়েন্দা একটি পুরোন ছাপার-যন্ত্রকে সারিয়ে নিয়ে নিজেদের কার্ড ছাপিয়ে নেয়। কার্ডের উপরে শিরোনাম আকারে বড় করে লেখা থাকে "তিন গোয়েন্দা" কথাটি; তার ঠিক নিচেই থাকে তিনটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?); তার নিচে প্রথম সারিতে "গোয়েন্দা প্রধান:কিশোর পাশা", দ্বিতীয় সারিতে "গোয়েন্দা সহকারী:মুসা আমান", তৃতীয় সারিতে "নথি গবেষক: রবিন মিলফোর্ড" লেখা। কার্ডের গায়ে তিনটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন দেয়ার বুদ্ধিটা কিশোরের। এই তিনটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন একই সাথে তিনজন গোয়েন্দাকে প্রতীকায়িত করবে, আর রহস্যময়তা ও জিজ্ঞাসা ফুটিয়ে তুলবে। এছাড়া এই চিহ্ন (?) তাদের নিজেদের ট্রেডমার্ক হিসেবেও কাজ করে, কেননা যখনই তারা কোথাও বিপদে পড়ে যায়, তখনই এই চিহ্ন এঁকে নিজেদের উপস্থিতি বা অবস্থান জানান দিয়ে থাকে অন্যদের। এভাবে অনেকবারই তারা বিভিন্ন বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে।

অবশ্য পরবর্তিতে তিন গোয়েন্দা তাদের কার্ডে প্রশ্নবোধক চিহ্নের স্থলে আশ্চর্যবোধক চিহ্ন (!) বসিয়ে নেয়। কিশোরের অভিমত, এই চিহ্ন দ্বারা নাকি আরো বেশি রহস্যময়তা ফুটিয়ে তোলা যায়। কার্ডের গায়ে এরকম চিহ্ন দেয়ার ক্ষেত্রে কিশোরের অভিমত হলো, এভাবে নাকি কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় এবং অপরিচিত ব্যক্তি কাছে চিহ্নগুলোর অর্থ বোঝানোর ছলে কিছুক্ষণ অতিরিক্ত সময় বের করে কথা বলা যায়, এতে তদন্তে অনেক সুবিধা হয়। তবে এই সব চিহ্ন অনেকের সন্দেহ জাগানোয় কিশোর কিছু দিনের জন্য চিহ্নগুলো উঠিয়ে দেয়।

তিন গোয়েন্দার তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি হলো "ভূত-থেকে-ভূতে"। এই পদ্ধতিতে কোনো সন্দেহজনক চরিত্র কিংবা কোনো কিছুর খোঁজ পেতে শহরের ছেলে-মেয়েদের সহায়তা নিয়ে থাকে তিন গোয়েন্দা। এজন্য প্রথমে তিন গোয়েন্দার প্রত্যেক সদস্য তাদের ৫ জন বন্ধুকে ফোন করে কিসের খোঁজ করছে তা জানিয়ে দেয়। যাদেরকে ফোন করেছে তাদের প্রত্যেকে আবার ৫ জন বন্ধুকে ফোন করে এটা জানায়। এই বন্ধুরা ফোন করে তাদের ৫ জন বন্ধুকে। এভাবে শহরের তাবৎ ছেলেমেয়েরা জেনে যায় খবরটি। ভূত-থেকে-ভূতের সঙ্গে মিল আছে জুপিটার জোনসদের "গোস্ট টু গোস্ট হুক আপ"[১৪]

সমালোচনা

[সম্পাদনা]

তিন গোয়েন্দা বিভিন্ন সময় সমালোচিত হয়েছে নানা কারণে। প্রথমত তিন গোয়েন্দা মৌলিক কাহিনী না হওয়ার কারণে সমালোচিত হয়। এছাড়া মাসুদ রানা সিরিজের প্রাথমিক বদনামের প্রেক্ষিতে 'প্রজাপতি' প্রকাশনীর বই অনেক পরিবারে নিষিদ্ধ হয়ে যায় বলে তিন গোয়েন্দাও অনেক অভিভাবকের নজরে নেতিবাচক হয়ে ওঠে।

তিন গোয়েন্দা সিরিজের বই

[সম্পাদনা]

তিন গোয়েন্দা সিরিজের ৩০০'রও বেশি বই বেরিয়েছে। তন্মধ্যে প্রথম ১৬০টি বইই উপন্যাস আর বাকি সবগুলোই বড় গল্প। সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত প্রতিটা বইই পেপারব্যাক, এবং দাম কম। তবে প্রজাপতি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইগুলো শোভন এবং হার্ডকভারে, আর এগুলোর দামও তুলনামূলক বেশি। তিন গোয়েন্দা সিরিজ প্রথমে সব বই একক বই হিসেবে প্রকাশিত হত। রকিব হাসান প্রথম ১৬০টি তিন গোয়েন্দা রচনা করেন। তারপর ২১৫ নং পর্যন্ত তিন গোয়েন্দা রচনা করেন শামসুদ্দীন নওয়াব। এরপর থেকে তিন গোয়েন্দার একক বই প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায় এবং তিনটি একক বই একত্র করে ভলিউম আকারে প্রকাশ হয়। এ ভলিউমগুলোতে তিন গোয়েন্দা সিরিজ ছাড়াও রকিব হাসান রচিত তিন বন্ধু সিরিজের সকল বই (তিন গোয়েন্দার ছোটবেলার গ্রীনহিলসের কাহিনী), আবু সাঈদ (রকিব হাসানের ছদ্মনাম)[১৮] রচিত গোয়েন্দা রাজু সিরিজের সকল বই, জাফর চৌধুরী (রকিব হাসানের ছদ্মনাম)[১৮] রচিত অ্যাডভেঞ্চার সিরিজের কয়েকটি বই ও রোমহর্ষক সিরিজের সকল বই, টিপু কিবরিয়া রচিত কিশোর হরর সিরিজের কয়েকটি বই এবং কাজী শাহনূর হোসেন রচিত নীল-ছোটমামা সিরিজের সকল বই তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে প্রকাশ করা হয়।

তিন গোয়েন্দায় রূপান্তরিত অন্যান্য সিরিজ

[সম্পাদনা]

গোয়েন্দা রাজু

[সম্পাদনা]

গোয়েন্দা রাজু বাংলাদেশের সেবা প্রকাশনী হতে প্রকাশিত একটি কিশোর গোয়েন্দা কাহিনী সিরিজ। এ সিরিজের লেখক আবু সাঈদ যা রকিব হাসান-এর ছদ্মনাম। গোয়েন্দা রাজু মোট সাত জন সদস্য নিয়ে একটি গোয়েন্দা দল গঠন করে, দলের নাম দেয়া হয় গোপন রহস্যভেদী দল সংক্ষেপে রদল। কিন্তু কেউ যাতে না বুঝতে পারে তাই রদল-এর পরের অক্ষরগুলো নিয়ে সাঙ্কেতিক ভাবে দলের নাম করা হয় লধশ। বইগুলো মূলতঃ এনিড ব্লাইটন ও পরবর্তীতে এভালিন ল্যামান্ড রচিত 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজের ভাবানুবাদ। এনিড ব্লাইটন ১৫টি সিক্রেট সেভেন (১৯৪৯-১৯৬৩) সিরিজের বই লেখেন। এছাড়া এভালিন ল্যামান্ড (Evelyne Lallemand) ফ্রেঞ্চ ভাষায় ১২টি সিক্রেট সেভেন (১৯৭৬-১৯৮৪) সিরিজের বই লেখেন যা পরে ইংরেজিতে অনুদিত হয়।

গোয়েন্দা রাজু সিরিজের বইসমূহ

[সম্পাদনা]
  1. মামার মন খারাপ - ছোট্ট ছেলে রাজু। ওর শখ- মস্তবড় গোয়েন্দা হবে, মামার মতো। পাখির বাসার নিচে এক অদ্ভুত মেসেজ কুড়িয়ে পেল রাজুর সহকারী অপু, তাতে লেখা: গভীর রাতে আলোর সঙ্কেত দেখানো হবে পোড়া বাড়ির টাওয়ার থেকে। মামাকে নিয়ে চললো ওরা গা-ছমছমে পোড়া বাড়িতে। ওখানে মাটির নিচে ঘরে নাকি মাঝে মাঝেই ভূত দেখে লোকে। রাতের অন্ধকারে নাকি ছায়ার মতো ঘুরে বেড়ায় কারা! আমরা জানি এ-সবই রাজু আর অপুর বানানো গল্প। কিন্তু সত্যিই যখন এক রাতে টাওয়ার থেকে এলো রহস্যময় আলোর সঙ্কেত, তখন? চমকে উঠল দুই বন্ধু। আরে, ব্যাপার কী? বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে পোড়াবাড়ির রহস্য নামে ভলিউম ৭৬-এ যোগ করা হয়।
  2. সাবাস! - পরামর্শটা মামাই দিয়েছেন: চেষ্টা করলে ভালো গোয়েন্দা হতে পারবি তুই, রাজু। একটা রহস্যভেদী দল গড়ে ফেল। সাতজন মিলে ওরা দল তো গড়লো, 'রদল' বদলে সাঙ্কেতিক নাম রাখলো 'লধশ'। কিন্তু তারপর? রহস্য পাবে কোথায়? গরমের জন্য হেড কোয়ার্টার করা হলো গাছের উপরে। কিন্তু অন্য কেউও এটা ব্যবহার করছে, কে সে? বইটি 'দি সিক্রেট সেভেন'-এর তৃতীয় গল্প 'ওয়েল ডান সিক্রেট সেভেন' এর ভাবানুবাদ।[১৯] বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে ঝড়ের বনে নামে ভলিউম ৬২-এ যোগ করা হয়।
  3. বিরোধী দল - লধশদের দেখাদেখি অপুর বোন বাবলিও গোয়েন্দা দল খুলেছে। তাদেরকে বোকা বানাতে বাবলি গোপন মিটিং করে, যা শুনে লধশরা জিগার বার্নে যায়। কিন্তু যখন লধশেরা রেলওয়ে স্টেশনে আসে, ঘটনা বিপদজনক হয়ে উঠে। বইটি 'দি সিক্রেট সেভেন'-এর চতুর্থ গল্প 'সিক্রেট সেভেন অন দ্য ট্রেইল' এর ভাবানুবাদ। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে বাবলি বাহিনী নামে ভলিউম ৬৮-এ যোগ করা হয়।
  4. দামী কুকুর - যখন লধশরা গোপনে মানুষের পিছু নেয়া অনুশীলন করছিল, বব ধরা পড়ে যায় আর তার বাবা তাকে লধশ থেকে বের করে নেয়। এলাকায় হঠাৎ করে দামী কুকুরগুলো হারিয়ে যেতে থাকে। লধশেরা কুকুর চোরকে ধরার অভিযানে বেরিয়ে পড়ে। বইটি 'দি সিক্রেট সেভেন'-এর পঞ্চম গল্প 'গো এহেড সিক্রেট সেভেন' এর ভাবানুবাদ। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে হারানো কুকুর নামে ভলিউম ৬৭-এ যোগ করা হয়।
  5. হিপ হিপ হুররে - অন্ধকারে ভালো দেখা যায় না। রাজু মনে করলো, তার আব্বাই উঠেছেন গাড়িতে। চলতে শুরু করলো গাড়ি। একটা লাইট পোস্টের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় চমকে উঠলো রাজু। কে লোকটা? তার বাবা তো নয়। দ্বিতীয় লোকটাকেও দেখেনি সে কোনদিন। পেটের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো রাজুর। ভয় পেলে এরকম অনুভূতি হয় মানুষের। ভাবলো, কারা ওরা? গাড়ি চোর? কি করবে এখন সে? বইটি 'দি সিক্রেট সেভেন'-এর ষষ্ঠ গল্প 'গুড ওয়ার্ক সিক্রেট সেভেন' এর ভাবানুবাদ।[২০] বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে গাড়ি চোর নামে ভলিউম ৮২-এ যোগ করা হয়।
  6. চকলেট কোম্পানী - টেলিভিশনে খবর শুনে একেবারে তাজ্জব হয়ে গেল গোয়েন্দারা। আশ্চর্য খবর। অনিতা বললো, 'আমি শুনেছি, ভিনগ্রহ থেকে আসে ইউ এফ ও। কোনোটা পিরিচের মতো, কোনোটা গরুর গাড়ির চাকার মতো...' শহরের সবাই চমকে গেছে। মাঝে মাঝেই নাকি ওখানকার আকাশে দেখা যাচ্ছে অপিরিচিত আকাশযান। তবে কি পৃথিবীর মানুষকে আক্রমণের জন্যে দল বেঁধে এসে চড়াও হয়েছে মঙ্গলগ্রহবাসীরা? তদন্ত করে দেখতে চললো রাজু গোয়েন্দার দল। এভালিন ল্যামান্ড-এর ফরাসি ভাষায় রচিত 'দি সিক্রেট সেভেন'-এর সপ্তম গল্প 'Les Sept et les soucoupes volantes' এর ইংরেজি অনুবাদ 'দি সেভেন অ্যান্ড দি ইউএফওস'-এর ভাবানুবাদ। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে ইউএফও রহস্য নামে ভলিউম ৬১-এ যোগ করা হয়।
  7. নতুন হেডকোয়ার্টার - ছাউনি মেরামতের কাজ চলছে। তাই লধশেরা বাধ্য হলো হেডকোয়ার্টার পরিবর্তনে। খুব সুন্দর একটি গোপন গুহায় হেডকোয়ার্টার বানানো হল। কিন্তু এখান থেকে হারিয়ে যাচ্ছে খাবার, বই এমনকি গদি পর্যন্ত। অন্যকেউ নিশ্চিতভাবে ব্যবহার করছে ওদের হেডকোয়ার্টার। বইটি 'দি সিক্রেট সেভেন'-এর সপ্তম গল্প 'সিক্রেট সেভেন উইন থ্রু' এর ভাবানুবাদ। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে গুহা-রহস্য নামে ভলিউম ৮৩-এ যোগ করা হয়।
  8. সার্কাস - গুলির পরপরি শোনা গেল অনেকগুলো কিঁচ কিঁচ শব্দ, মাটিতে ঝাঁপ দিয়ে পড়ল রাজু, টিপু আর রানু। পারলে মাটির ভেতরে ঢুকে যেতে চায়। আর গুলি হলো না। কিন্তু ওটা কিসের শব্দ? মাটিতে পা ঘষার মত না? নাকি ভূট্টা খেতে হাটাহাটি করছে কিছু? শোনা গেল তীক্ষ্ণ চিতকারঃ মেরেছি! মেরেছি! লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল তিনজনে। ফোপাতে শুরু করলো রানু, 'হায়-হায়রে! মেরেই ফেললো!' বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে সিংহ নিরুদ্দেশ নামে ভলিউম ৭৫-এ যোগ করা হয়। [২১]
  9. খেলনা বিমান - বিশাল নির্জন প্রাসাদের প্রতিটি ঘরে তালা। কারও ঢোকার উপায় নেই। সে জন্যই, যখন ব্যালকনি ঘরের ভেতর আলো জ্বলতে দেখা গেল, চমকে গেল রাজু। তদন্ত শুরু হতেই ঘটতে থাকলো একের পর এক রহস্যময় ঘটনা। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে দুখী মানুষ নামে ভলিউম ৬৯-এ যোগ করা হয়।
  10. সোনার মেডেল - চুরি গেছে সোনার মেডেল। দুঃখে ভেঙে পড়েছেন বেচারা বৃদ্ধ জেনারেল। দেখে সইতে পারলো না অজিত, কথা দিয়ে ফেললো: ওগুলো উদ্ধার করে দেবে সে। কি আর করা, কথা তো আর ফিরিয়ে নেয়া যায় না - কাজে নেমে পড়লো লধশ-রা...। বইটি 'দি সিক্রেট সেভেন'-এর চতুর্দশ গল্প 'লুক আউট সিক্রেট সেভেন' এর ভাবানুবাদ। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে 'মেডেল রহস্য' নামে ভলিউম ৫৯-এ যোগ করা হয়।[২২]
  11. সুরের নেশা - লধশদের চোখের সামনে একটি বাড়ি পুড়ে গেল। তার কয়েক দিন পর, দোকান থেকে একটি বেহালা চুরি হলো। দুটি ঘটনা কি সম্পর্কযুক্ত? বইটি 'দি সিক্রেট সেভেন'-এর দশম গল্প 'পাজল ফর দ্য সিক্রেট সেভেন' এর ভাবানুবাদ। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে সুরের মায়া নামে ভলিউম ৫৮-এ যোগ করা হয়।
  12. আজব ভূত - রানু রাস্তায় হঠাৎ করে পেয়ে যায় একটা চিরকুট যাতে সংকেত লেখা ছিল। সংকেতের অর্থ উদ্ধার করতে গিয়ে বাবলিদের কাছে বারবার বোকা বনে যায় লধশেরা। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে ভূতের খেলা নামে ভলিউম ৫৭-এ যোগ করা হয়।
  13. আজব রশ্মি - 'আজব ভূত' রহস্যের সমাধানের পর পেরিয়ে গেছে বেশ কয়েক বছর। অনেক পরিবর্তন হয়েছে, ভেঙে গেছে রহস্যভেদী দল - লধশ। প্রধান কারণ, রানু আর অনিতারা চলে গেছে অন্য জায়গায়। বাবলি আর অপুরাও জায়গা বদল করেছে। তবে রাজুদের সঙ্গে দেখা হয় মাঝে মাঝে। এক ছুটিতে পাহাড়ঘেরা লেক ডিস্ট্রিক্ট-এ বেড়াতে এলো অপু, বাবলি, মিশা, রাজু আর জিমি। হঠাৎ করেই পেয়ে গেল রহস্য। জানলো, নতুন আবিষ্কৃত একটা যন্ত্র গিয়ে পড়েছে খারাপ লোকের হাতে। তাদের মধ্যে রয়েছে নিষ্ঠুর খুনী আর খেপাটে বিদেশী গুপ্তচর। ওরা মারাত্মক ক্ষতি করে দেবার আগেই হস্তক্ষেপ করলো চার গোয়েন্দা। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে অদৃশ্য রশ্মি নামে ভলিউম ৮০-এ যোগ করা হয়। [২৩]
  14. জাহাজ চুরি - ডবিমুর গাঁয়ে নিতুদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে রাজু, মিশা আর অপু। সেখান থেকে নৌকা নিয়ে পিকনিক করতে চললো ডল আইল্যান্ডে। প্রচন্ড ঝড় উঠলো সাগরে। ভেঙে পড়তে লাগলো পাহাড়ের দেয়াল। পানিতে কালো বিশাল ছায়াটা দেখে চমকে উঠলো গোয়েন্দারা। ওটা কি? ডুবুরির পোশাক পড়ে পানিতে নামলো রাজু। তাকে পেটে নিয়ে পিছলে নেমে যেতে লাগলো ওটা। তলিয়ে যাচ্ছে গভীর পানিতে...। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে হারানো জাহাজ নামে ভলিউম ৪৮-এ যোগ করা হয়।[২৪]
  15. নকশা পাচার - বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে খেলনা ভালুক নামে ভলিউম ৫০-এ যোগ করা হয়।
  16. টাকের ওষুধ - 'কপাল!' অবাক হয়ে বললো নিতু। 'মানুষের কপাল ছোট করা যায় না!' 'যায় না, আমিও জানি', রাজু বললো। 'কিন্তু আজকে আমার কাছে ছোট লেগেছে।' 'এ হতেই পারে না!' 'কিন্তু হয়েছে!' নিজের কথায় অটল রইলো রাজু। 'কপালটাই প্রথমে চোখে পড়েছিল আমার। বিশাল। অনেক উপরে চুল। অথচ আজ অনেক নিচে নেমে এসেছে। যেন রাতারাতি চুল গজিয়ে ঢেকে দিয়েছে কপাল।' 'কি জানি, আমাজনের নরমুন্ডু শিকারীদের পাল্লায় পড়েছিল হয়তো।' অপু বললো, 'চামড়া আর হাড় নরম করে ছোট করে দেয়ার কায়দা জানে ওরা। তা-ই করে দিয়েছে।' আজব এক রহস্যে জড়িয়ে পড়েছে রাজু গোয়েন্দার দল। সমাধান করা তো দূরের কথা, কি যে ঘটছে সেটাই বুঝতে পারছে না। তবে হাল ছাড়লো না ওরা...। বইটি পরে তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করে টাক রহস্য নামে ভলিউম ৫৫-এ যোগ করা হয়।[২৫]

প্রধান চরিত্রসমূহ

[সম্পাদনা]
  • রাজু - লধশের নেতা এবং গ্রুপের সবথেকে বুদ্ধিমান সদস্য। পুরো নাম আসিফ খান।'দি সিক্রেট সেভেন'-সিরিজে রাজুর প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'পিটার'।
  • মিশা - রাজুর বোন। পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা খুবই ভাল, একবার দেখেই মনে রাখতে পারে। গ্রুপের মেয়েদের মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজে মিশার প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'জেনেট'।
  • অপু - রাজুর সবচেয়ে কাছের বন্ধু। প্রায়ই পাসওয়ার্ড ভুলে যায়। 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজে অপুর প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'জ্যাক'।
  • রানু - মিশার বান্ধবী। রানু আর অনিতা পরস্পরের খুবই কাছের বন্ধু। 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজে রানুর প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'প্যাম'।
  • অনিতা - রানুর বান্ধবী। সবসময় রানু ও অনিতা একসাথে থাকতে দেখা যায়। 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজে অনিতার প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'বারবারা'।
  • অজিত - রাজুর সহপাঠী। গ্রুপে সবথেকে চুপচাপ। অন্ধকারকে দারুন ভয় পায়। 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজে অজিতের প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'কলিন'।
  • টিপু - রাজুর সহপাঠী, অজিতের প্রিয় বন্ধু। তার বাবা একবার তাকে লধশ থেকে বের করে নেয়। 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজে টিপুর প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'জর্জ'।
  • জিমি - রাজু আর মিশার পালিত প্রশিক্ষিত কুকুর। খেতে খুব পছন্দ করে। 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজে জিমির প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'স্ক্যাম্পার'।
  • বাবলি - অপুর বুদ্ধিমতী ছোট বোন। লধশের কাজে প্রায়ই বাধার সৃষ্টি করে। কোন কোন গল্পে লধশদের সাথি হিসেবে থাকে এবং তাদের সাহায্য করে। 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজে বাবলির প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'সুসি'।
  • লুডু - বাবলির বান্ধবী। 'দি সিক্রেট সেভেন' সিরিজে লুডুর প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'জেফ'।
  • নিনা - অপুর খালাতো বোন।
  • আশরাফ চৌধুরী - রাজু ও মিশার বাবা। 'দি সিক্রেট সেভেন'-সিরিজে প্রতিসঙ্গী চরিত্র হলো 'জ্যাক দ্য ফার্মার'।

তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর

[সম্পাদনা]

তিন গোয়েন্দায় ভাল মানের কাহিনির অভাবে এবং রকিব হাসান তিন গোয়েন্দা লেখা ছেড়ে দেওয়ায় সেবা প্রকাশনীর অন্যান্য অনেক সিরিজের মত গোয়েন্দা রাজুর সকল বই তিন গোয়েন্দায় রূপান্তর করা হয় এবং তিন গোয়েন্দা ভলিউমে যোগ করা হয়। রাজু তিন গোয়েন্দায় কিশোর, অপু তিন গোয়েন্দায় মুসা, অজিত তিন গোয়েন্দায় রবিন, টিপু তিন গোয়েন্দায় বব, মিশা তিন গোয়েন্দায় মিশা, রানু তিন গোয়েন্দায় ডলি, অনিতা তিন গোয়েন্দায় অনিতা, কুকুর জিমি তিন গোয়েন্দায় টিটু, বাবলি তিন গোয়েন্দায় বাবলি এবং লুডু তিন গোয়েন্দায় পটার চরিত্র হিসেবে স্থান পায়।

টেলিভিশনে তিন গোয়েন্দা

[সম্পাদনা]

২৭ অক্টোবর ২০১৪ থেকে মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রতি মঙ্গল ও বুধবার রাত আটটায় তিন গোয়েন্দা ধারাবাহিকের প্রচার শুরু হয়। এর কাহিনি বিন্যাস ও নাট্যরূপ দিয়েছেন মাজহারুল হক পিন্টু। চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন আবুল হোসেন খোকন। কিশোর পাশার চরিত্রে কাব্য সাগর নুরুল মোমেন, রবিন মিলফোর্ড চরিত্রে বাঁধন এবং মুসা আমান চরিত্রে অয়ন অভিনয় করেছেন। নাটকটি চিত্রায়িত হয়েছে কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিভিন্ন লোকেশনে।[২৬]

পাদটীকা

[সম্পাদনা]
  1. গোস্ট রাইটার হলেন সেসব লেখক যারা অন্যের নামে বই প্রকাশে চুক্তিবদ্ধ হন।
  1. Asjadul Kibria (১৭-২৩ জুন, ২০০৮)। "The spy who turns 73" (ওয়েব)ডেইলি নিউ এজ (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা। সংগ্রহের তারিখ জুন ২, ২০১০  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. প্রতিবেদক, নিজস্ব (৩০ নভেম্বর ২০১৮)। "বই পড়েই প্রথম দেখতে পেয়েছিলাম তিন গোয়েন্দার মুখ"প্রথম আলো (প্রকাশিত হয় ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। ২৬ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০২১ 
  3. "নতুন রূপে তিন গোয়েন্দা..."সমকাল। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। ১৪ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০২১ 
  4. কিশোর আলো আগস্ট ২০১৫, পৃ. ৫১
  5. মামুর ২০১৫, পৃ. ২৭
  6. "মূল্য তালিকা" (প্রিন্ট)। সেগুনবাগিচা, ঢাকা: সেবা প্রকাশনী। ফেব্রুয়ারি ১, ২০০৯। 
  7. নাসের ২০১৫, পৃ. ৩৫-৩৬
  8. মামুর ২০১৫, পৃ. ২৯-৩৩
  9. কিশোর আলো আগস্ট ২০১৫, পৃ. ৫৮-৫৯
  10. সাইফ দবিস (১৭ নভেম্বর ২০০৯)। "তিন গোয়েন্দা সিরিজের রহস্যভেদ হলো!"ওয়েব। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল (ওয়েব) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ২, ২০১০ 
  11. হাসান ২০১৫, পৃ. ৩৯-৪১
  12. তানজিনা হোসেন ও সিমু নাসের (ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০০২ খ্রিস্টাব্দ)। "নতুন প্রজন্ম: বই ও অন্যান্য"। ছুটির দিনে, দৈনিক প্রথম আলো (প্রিন্ট)। ঢাকা। পৃষ্ঠা ৫, ৬।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য);
  13. রকিব হাসান। "গোপন ফর্মুলা"। ভলিউম ৩০ (গোপন ফর্মুলা) (প্রিন্ট)। তিন গোয়েন্দা। সেগুনবাগিচা, ঢাকা: সেবা প্রকাশনী। আইএসবিএন 984-16-1377-8 
  14. ইশতিয়াক হাসান (২২ অক্টোবর ২০১০)। "তিন গোয়েন্দার পঁচিশ বছর" (ওয়েব)দৈনিক কালের কণ্ঠ। ঢাকা। সংগ্রহের তারিখ ২২ অক্টোবর ২০১০ 
  15. মামুর ২০১৫, পৃ. ৩৩
  16. মামুর ২০১৫, পৃ. ২৪-২৫
  17. মামুর ২০১৫, পৃ. ২৮-২৯
  18. কিশোর আলো আগস্ট ২০১৫, পৃ. ৫২
  19. https://www.goodreads.com/book/show/28243278
  20. https://www.goodreads.com/book/show/28233546
  21. https://www.goodreads.com/book/show/28244592
  22. https://www.goodreads.com/book/show/28233403
  23. https://www.goodreads.com/book/show/28169582
  24. https://www.goodreads.com/book/show/28169567
  25. https://www.goodreads.com/book/show/28169579
  26. মাছরাঙায় তিন গোয়েন্দা, প্রথম আলো ২৭ অক্টোবর ২০১৪।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  • মামুর, আবদুল্লাহ (২০১৫), হক, আনিসুল, সম্পাদক, "৩০ বছরে তিন গোয়েন্দা", কিশোর আলো (প্রকাশিত হয় আগস্ট ২০১৫), (১১), পৃষ্ঠা ২২-৩৮ 
  • হাসান, রকিব (২০১৫), হক, আনিসুল, সম্পাদক, "তিন গোয়েন্দার তিরিশ বছরে", কিশোর আলো (প্রকাশিত হয় আগস্ট ২০১৫), (১১), পৃষ্ঠা ৩৯-৪১ 
  • হক, আনিসুল, সম্পাদক (২০১৫), "রকিব হাসানের সাক্ষাৎকার", কিশোর আলো (প্রকাশিত হয় আগস্ট ২০১৫), (১১), পৃষ্ঠা ৫১-৬২ 
  • নাসের, সিমু (২০১৫), হক, আনিসুল, সম্পাদক, "কাজী শাহনূর হোসেনের সাক্ষাৎকার", কিশোর আলো (প্রকাশিত হয় আগস্ট ২০১৫), (১১), পৃষ্ঠা ৩৫-৩৬