কৃষ্ণা পুনিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কৃষ্ণা পুনিয়া
১৯তম কমনওয়েলথ গেমস-২০১০ দিল্লি, কৃষ্ণা পুনিয়ার মহিলাদের ডিসকাস প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক লাভ
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম (1977-05-05) ৫ মে ১৯৭৭ (বয়স ৪৬)
আগ্রোহা, হরিয়াণা, ভারত
উচ্চতা১.৮ মি[১]
ওজন৭৯ কেজি (২০১৩–বর্তমান)
ক্রীড়া
দেশ ভারত
ক্রীড়াঅ্যাথলেটিক্স
বিভাগডিসকাস
সাফল্য ও খেতাব
ব্যক্তিগত সেরা৬৪.৭৬ মি (ওয়াইলুকু ২০১২)
পদকের তথ্য

কৃষ্ণা পুনিয়া (জন্ম ৫ই মে ১৯৭৭) আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক জয়ী ভারতীয় ডিসকাস থ্রোয়ার, ৩ বার অলিম্পিক অংশগ্রহণকারী, পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত, কংগ্রেস পার্টির রাজনীতিবিদ এবং রাজস্থানের সাদুলপুর (বিধানসভা কেন্দ্র)র বর্তমান এমএলএ[২][৩][৪] তিনি ২০০৪, ২০০৮ এবং ২০১২ সালের অলিম্পিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় খেলেছিলেন।[৩] ২০১০এ কমনওয়েলথ গেমসে, তিনি স্বর্ণ পদক জেতেন[৪] ২০১৮-২০২৩ মেয়াদে রাজস্থান বিধানসভায় তিনি একজন নির্বাচিত বিধায়ক।[২]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

তিনি একজন হিন্দু জাঠ পরিবারে জন্মেছেন।[৫] তার পরিবার সিওয়ানি তহশিলের বিধওয়ান গ্রামের অধিবাসী, পরে তারা আগ্রোহা তে চলে যান।[২] পুনিয়া ১৯৭৭ সালের ৫ই মে হরিয়াণার আগ্রোহা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এটি হিসার জেলায় অবস্থিত।[৬][৭][৮] ৯ বছর বয়সে তার মা মারা যাওয়ার পর তিনি বাবা ও পিতামহীর কাছে বড় হন।[৫] জাঠ মানুষের ঐতিহ্য অনুসারে, পুনিয়া শৈশব থেকে জমিতে কাজ করে তার শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করেন।[৫] তার বাবার একটি দুগ্ধ খামার ছিল, যেখানে ৮০টি মোষ ছিল। পুনিয়া ১৫ বছর বয়সেই সেখানে তার বাবাকে সাহায্য করতেন। [৫]

২০০০ সালে চারু জেলার গগরবাস গ্রামের বীরেন্দর সিং পুনিয়ার সঙ্গে দেখাশোনা করে তার বিবাহ হয়।[২] ২০০১ সালে, তাদের একটি ছেলে হয়।[২] বীরেন্দর একজন প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ ছিলেন এবং তিনি বিয়ের পর কৃষ্ণাকে উৎসাহিত ও প্রশিক্ষিত করেন।[৫] দম্পতি ভারতীয় রেলে কাজ করেন এবং জয়পুরে থাকেন। কৃষ্ণা জয়পুরের কানোরিয়া পিজি মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে ব্যাচেলর অফ আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

ক্রীড়া জীবন[সম্পাদনা]

২০০৬ দোহা এশিয়ান গেমসে তিনি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন। কৃষ্ণা পুনিয়া দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ৬১.৫৩ মি দূরে ডিসকাস ছুঁড়েছিলেন, সেই সময় এটি তার ব্যক্তিগত সেরা। তিনি চীনের আইমিন সিং (৬৩.৫২ মি) এবং চীনেরই মা জুয়েনজান (৬২.৪৩মি) দের পিছনে শেষ করেন। ৪৬ তম মুক্ত জাতীয় অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে কৃষ্ণা পুনিয়া সোনা জিতেছিলেন, জনপ্রিয় সীমা আন্তিল এবং হরবন্ত কাউরদের আগে। তিনি ২০০৮ বেজিং অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন কিন্তু ফাইনালে পৌঁছোতে পারেননি, যোগ্যতা অর্জন পর্বে ৫৮.২৩ মি ছুঁড়ে দশম হয়ে শেষ করেছিলেন। ৮ই মে ২০১২তে, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই তে, ৬৪.৭৬ মিটার ছুঁড়ে নতুন জাতীয় রেকর্ড সহ তার ব্যক্তিগত সেরাটি আরো উন্নত করেছিলেন।

২০১০ কমনওয়েলথ গেমস[সম্পাদনা]

ডিসকাস থ্রোয়ার কৃষ্ণা পুনিয়া ভারতের প্রথম মহিলা মহিলা ক্রীড়াবিদ, যিনি দিল্লি ২০১০ কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণপদক জিতেছেন। পুনিয়া ৬১.৫ মিটার ছুঁড়ে ডিসকাস ইভেন্টে ঐতিহাসিক বিজয়ের নেতৃত্ব দেন। কমনওয়েলথ গেমসের ট্র্যাক ও ফিল্ড ইভেন্টে স্বর্ণপদক জেতা তিনি প্রথম ভারতীয় মহিলা এবং মিলখা সিংএর পর এই ধরনের ইভেন্টে স্বর্ণপদক জেতা প্রথম ভারতীয়। মিলখা সিং ১৯৫৮ কার্ডিফ কমনওয়েলথ গেমসে পুরুষদের ৪৪০ গজ দৌড়ে সোনা জিতেছিলেন।

২০১২ লন্ডন অলিম্পিক[সম্পাদনা]

২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকের মহিলা ডিসকাস বিভাগে তিনি কৃতিত্বপূর্ণ ষষ্ঠ হয়ে শেষ করেছিলেন। পুনিয়ার ৬৩.৬২ মিটারের সেরা প্রচেষ্টা তার পঞ্চমবারের প্রয়াসে এসেছিল। তিনি প্রথম প্রচেষ্টায় ৬২.৪২ মিটার, তৃতীয় প্রচেষ্টায় ৬১.৬১ এবং ষষ্ঠ ও শেষ প্রচেষ্টায় ৬১.৩১ মিটার ছুঁড়েছিলেন। দ্বিতীয় ও চতুর্থ প্রয়াস দুটিতে তার ফাউল থ্রো হয়েছিল।[৯] এর আগে মিলখা সিং, পি. টি. ঊষা, শ্রীরাম সিং, গুরবচন সিং রনধাওয়া এবং অঞ্জু ববি জর্জ এর পর অলিম্পিকের ট্র্যাক ও ফিল্ডের চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছানর কৃতিত্বধারী কেবলমাত্র ষষ্ঠ ভারতীয় ছিলেন তিনি।[১০]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

২০১৩ সালে, চুরু, - তার স্বামীর জেলার একটি নির্বাচনী সমাবেশে, রাহুল গান্ধী এবং তখনকার মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলোত এর উপস্থিতিতে, তিনি আইএনসি পার্টিতে যোগ দেন। এর আগে কংগ্রেস নেতৃত্ব তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।[৩]

২০১৩ রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে, তিনি প্রতিদ্বন্দিতা করেছিলেন সাদুলপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে, কিন্তু তিনি তার প্রথম নির্বাচনে হেরে যান, বিজেপি এবং বিএসপির পেছনে থেকে তৃতীয় হন।[৩] ২০১৮ রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে, তিনি আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং ৭০,০০২ ভোট পেয়ে ১৮,০৮৪ ভোটের ব্যবধানে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে একই আসন জেতেন।[২]

সম্মান[সম্পাদনা]

  • ২০১১ সালে "পদ্মশ্রী" বেসামরিক সম্মান: ভারত সরকার দ্বারা পুরস্কৃত।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "KRISHNA POONIA"g2014results.thecgf.comCommonwealth Games Federation। ১৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৬ 
  2. Krishna wins poll battle in Rajasthan in second attempt, The Tribune, 13 December 2018.
  3. Electoral Triumph Same As Winning Gold: Congress Candidate Krishna Punia, NDTV, 26 Nov 2018.
  4. "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৫। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৫ 
  5. Knight, Matthew; Yasukawa, Olivia (৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "Krishna Poonia: Discus diva champions Indian girl power"CNN। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  6. "KRISHNA POONIA"iaaf.orgInternational Association of Athletics Federations। ৩০ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৬ 
  7. "Gold Rush..Fast Paced Development" (পিডিএফ)Haryana Review (English ভাষায়)। Government of Haryana24 (11): 44। নভেম্বর ২০১০। ১৩ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৬ 
  8. Koshie, Nihal (১২ অক্টোবর ২০১০)। "All Jats Night: Discus trio make history"Indian Express। ২১ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৬ 
  9. "Krishna Poonia Finishes 7th"। The Hindu। 
  10. "Krishna Poonia Qualifies for Discus Final"। The Hindu।