কুমুদরঞ্জন মল্লিক
কুমুদরঞ্জন মল্লিক | |
---|---|
কপিঞ্জল | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭০ | (বয়স ৮৭)
জাতীয়তা | বাঙালি |
নাগরিকত্ব | ![]() ![]() |
শিক্ষা | এফ.এ. (সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) বি.এ. (বঙ্গবাসী কলেজ ) |
পেশা | শিক্ষকতা, কবি |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | বঙ্কিমচন্দ্র সুবর্ণ পদক জগত্তারিণী স্বর্ণ পদক পদ্মশ্রী (১৯৭০) |
দাম্পত্য সঙ্গী | সিন্ধুবালা দেবী |
সন্তান | জ্যোৎস্নানাথ মল্লিক |
পিতা-মাতা |
|
কুমুদরঞ্জন মল্লিক (ইংরেজি: Kumudranjan Mullick) (১ মার্চ, ১৮৮৩ — ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭০) হলেন বাংলার রবীন্দ্রযুগে স্বনামধন্য পল্লীপ্রেমী কবি ও শিক্ষাবিদ।[২]
জন্ম ও শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]
কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক ১৮৮৩ সালের ১ লা মার্চ (১২৮৯ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসে) অবিভক্ত বাংলার (বর্তমানের পশ্চিমবঙ্গের) পূর্ব বর্ধমান জেলার কোগ্রামে (বর্তমানে কুমুদগ্রাম) মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ছিল একই জেলার বৈষ্ণবতীর্থ শ্রীখন্ড গ্রামে৷[১] পিতা পূর্ণচন্দ্র মল্লিক ছিলেন কাশ্মীর রাজসরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। মাতা ছিলেন সুরেশকুমারী দেবী।
কুমুদরঞ্জন ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে এন্ট্রান্স, ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার রিপন কলেজ বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে এফ.এ. এবং ১৯০৫ সালে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে বি.এ. পাস করেন ও বঙ্কিমচন্দ্র সুবর্ণপদক প্রাপ্ত হন।[৩]
কর্মজীবন[সম্পাদনা]
বর্ধমান জেলার মাথরুন নবীনচন্দ্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরূপে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখনীয় এই যে, বাংলার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ওই স্কুলে তার ছাত্র ছিলেন।
কবি প্রতিভা[সম্পাদনা]
বাল্যকাল থেকেই কুমুদরঞ্জনের কবিত্বশক্তির বিকাশ ঘটে। কবির গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে অজয় ও কুনুর নদী। এই গ্রাম আর নদীই হল কবির মুখ্য প্রেরণা। কবিতায় নির্জন গ্রামজীবনের সহজ-সরল রূপ তথা নিঃস্বর্গ প্রেম চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। পল্লী-প্রিয়তার সঙ্গে বৈষ্ণবভাবনা যুক্ত হয়ে তার কবিতার ভাব ও ভাষাকে স্নিগ্ধতা ও মাধুর্য দান করেছে। 'কপিঞ্জল' ছদ্মনামে তিনি চুন ও কালি নামে ব্যঙ্গকাব্য রচনা করেন।
কাব্য গ্রন্থ[সম্পাদনা]
তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলি হলঃ
- শতদল (১৯০৬ - ০৭)
- বনতুলসী (১৯১১)
- উজানী (১৯১১)
- একতারা (১৯১৪)
- বীথি (১৯১৫)
- চুন ও কালি (১৯১৬)
- বীণা (১৯১৬)
- বনমল্লিকা (১৯১৮)
- কাব্যনাট্য দ্বারাবতী (১৯২০)
- রজনীগন্ধা (১৯২১)
- নূপুর (১৯২২)
- অজয় (১৯২৭)
- তূণীর (১৯২৮)
- স্বর্ণসন্ধ্যা (১৯৪৮)
তার অপ্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটি হল 'গরলের নৈবেদ্য'। এটি সোমনাথ মন্দির সম্পর্কিত ১০৮ টি কবিতার সংকলন হিসাবে প্রকাশ।
সম্মাননা[সম্পাদনা]
বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকদের প্রতিষ্ঠান -'সাহিত্যতীর্থ' এর তীর্থপতি ছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে 'জগত্তারিণী স্বর্ণপদক' দিয়ে সম্মান জানায়।[৪] ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে ২১ এপ্রিল ভারত সরকার তাকে 'পদ্মশ্রী' উপাধিতে ভূষিত করে।[৫]
তার সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন-
"কুমুদরঞ্জনের কবিতা পড়লে বাংলার গ্রামের তুলসীমঞ্চ, সন্ধ্যাপ্রদীপ, মঙ্গলশঙ্খের কথা মনে পড়ে।"
মৃত্যু[সম্পাদনা]
১৯৭০ সালের ১৪ ডিসেম্বর কবি কুমুদরঞ্জন মৃত্যুবরণ করেন।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ প্রবন্ধ: আত্মস্মৃতি, শ্রীকুমুদরঞ্জন মল্লিক, মাসিক বসুমতী (ফাল্গুন,১৩৫৭)
- ↑ সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ১৪৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ "মল্লিক, কুমুদরঞ্জন - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৫।
- ↑ Kumud Ranjan Mullick Banglapedia.org. Retrieved 18 June 2021
- ↑ Kumud Ranjan Mullick Banglapedia.org. Retrieved 18 June 2021