কাশীপুর জমিদার বাড়ি

স্থানাঙ্ক: ২৩°২৭′৫৬″ উত্তর ৮৮°৫২′৪২″ পূর্ব / ২৩.৪৬৫৬৪২৫° উত্তর ৮৮.৮৭৮৩২৮° পূর্ব / 23.4656425; 88.878328
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কাশীপুর জমিদার বাড়ি
মানচিত্র
সাধারণ তথ্য
ধরনবাসস্থান
ঠিকানাকাশীপুর, জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৩°২৭′৫৬″ উত্তর ৮৮°৫২′৪২″ পূর্ব / ২৩.৪৬৫৬৪২৫° উত্তর ৮৮.৮৭৮৩২৮° পূর্ব / 23.4656425; 88.878328

কাশীপুর জমিদার বাড়ি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিবিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলায় অবস্থিত।[১]

জমিদার বাড়ির অবস্থান[সম্পাদনা]

চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর হতে ৭ কিলোমিটার দূরে কেডিকে ইউনিয়নের কাশীপুর গ্রামের ভৈরব নদের তীরবর্তী অঞ্চলে জমিদারবাড়িটি অবস্থিত।[২][৩]

জমিদার বাড়ির ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৮৬১ সালে নির্মিত হয় এই জমিদার বাড়িটি। এই জমিদার বাড়িটিতে থাকতেন তৎকালীন সময়ের জমিদার মিনায় কুমার ও বিনয় কুমার।[৪] তারা ছিলেন অত্যন্ত অত্যাচারী। তারা গ্রামের অধিবাসীর ওপর জুলুম-নির্যাতন করতেন। এজন্য গ্রামের অধিবাসীরা সব সময় আতঙ্কিত ছিল।

১৯৪৭ সালের ১৪-১৫ আগস্টের পূর্বে কাশীপুর জমিদার বাড়িটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার অন্তর্গত ছিল।[৫] বর্তমানে এখানকার বসবাসকারী বাসিন্দাদের পূর্বপুরুষগণের সাথে মিনায় কুমার ও বিনয় কুমার ১২০০ বিঘা জমি বিনিময় করে সপরিবারে ভারত গমন করেন।[৬][৪] এর মাধ্যমে বিনয় কুমার মজুমদারের জমিদার প্রথা বিলুপ্তি ঘটে এবং গ্রামের অধিবাসীরা শান্তিপূর্ণভাবে জীবনযাপন করে।[২]

জমিদার বাড়িটিতে এখনও জমিদারের ব্যবহৃত নানা জিনিসপত্র রয়েছে। সেগুলো মধ্যে রয়েছে- সোফা, টেবিল, খাট-পালঙ্কসহ আরও নানা জিনিসপত্র। এছাড়া এখানে পানি উপরে উত্তোলনের জন্য সেই বিশেষ মোটরটি[ক] এখনও বিদ্যমান।[৭][৬][৮] জমিদার বাড়িটিতে আরও রয়েছে গোলাঘর ও কুয়া।[৮] জমিদার বাড়িটির প্রধান ফটকের সম্মুখে একটি কৃষ্ণচূড়া ও বট গাছ বিদ্যমান আছে।[৮] বর্তমানে এই বাড়িতে কাবিল এবং হাবিল নামে দুই ভাই বসবাসরত আছেন। তারা এই বাড়ির প্রসঙ্গে বলেন যে এই বাড়িটিতে থাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, তারপরও তারা এখানে বসবাস করছে।[২][৫]

শরৎচন্দ্র কর্তৃক মহেশ রচনা[সম্পাদনা]

জমিদার মিনায় কুমার ও বিনয় কুমার শরৎচন্দ্রের সম্পর্কে মামা ছিলেন। একবার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মামাবাড়ি বেড়াতে এসে গ্রামের অধিবাসীর উপর মামার এই ভয়াবহ আচরণ জানতে পারেন এবং এতে শরৎচন্দ্র খুবই মর্মাহত হন। আর এখানে বসে তিনি রচনা করেন তার বিখ্যাত ছোট গল্প ‘মহেশ’।[৩][৪][৯] শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এই গল্পটিতে দরিদ্র কৃষক গফুর, তার ছোট মেয়ে আমেনা ও পালিত গরু মহেশের করুণ কাহিনীর মাধ্যমে জমিদার প্রথার এই কলঙ্কময় পর্বটি তুলে ধরেন।[২][৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. মূলতঃ এই জমিদার বাড়িতে একটি টিউবওয়েল আছে। এটি দ্বারা কোনো মোটর ছাড়াই পানি উত্তোলন করা যায় উপরে। সেজন্য একাধিক তথ্যসূত্রে এই টিউবয়েলটিকে "বিশেষ মোটর" বলা হয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "কাশিপুর জমিদার বাড়ি সংস্কারের অভাবে ধবংসের দ্বারপ্রান্তে - দৈনিক দেশ দেশান্তর"web.archive.org। ২০২৩-০৪-২১। Archived from the original on ২০২৩-০৪-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-৩০ 
  2. জনকণ্ঠ, দৈনিক। "মহেশ গল্পের কাশিপুর জমিদারবাড়ি"দৈনিক জনকণ্ঠ || Daily Janakantha (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৬-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-২৯ 
  3. "অযত্ন অবহেলায় ধ্বংসের পথে জমিদার বাড়ি"Nayashatabdi। ২০২৩-০৬-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-২৯ 
  4. রুমঃ, নিউজ (২০২১-১২-০২)। "সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে কাশিপুর জমিদার বাড়ি | Daily Somoyer Somikoron" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০১-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-২৯ 
  5. https://www.amarsangbad.com (২০২০-০৯-২০)। "ধ্বংসের পথে মহেশ গল্পের জমিদারবাড়ি"amarsangbad.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৬-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-৩০ 
  6. "শরৎচন্দ্রের স্মৃতিবিজড়িত জমিদার বাড়ি"www.kholakagojbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-২৯ 
  7. Desk, News (২০২২-১০-২০)। "শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিবিজড়িত কাশিপুর জমিদারবাড়ি"সকালের শিরোনাম (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৬-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-৩০ 
  8. shomoyBD। "ধ্বংসের পথে কাশিপুর জমিদার বাড়ি"সময়বিডি - shomoybd (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১২-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-২৯ 
  9. "অবহেলায় পড়ে আছে কাশিপুরের জমিদার বাড়ি"জাগো নিউজ২৪। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২৩