করমচা
করমচা | |
---|---|
করমচা গাছ | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Angiosperms |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Asterids |
বর্গ: | Gentianales |
পরিবার: | Apocynaceae |
গণ: | Carissa |
প্রজাতি: | C. carandas |
দ্বিপদী নাম | |
Carissa carandas L. | |
প্রতিশব্দ | |
|
করমচা হল টক স্বাদের ছোট আকৃতির একটি ফল। ইংরেজিতে একে Bengal currant বা Christ's thorn বলা হয়।[১] Carissa গণভুক্ত কাঁটাময় গুল্মজাতীয় করমচা উদ্ভিদটি এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে পাওয়া যায়। কাঁচা ফল সবুজ, পরিণত অবস্থায় যা ম্যাজেন্টা লাল-রং ধারণ করে। অত্যন্ত টক স্বাদের এই ফলটি খাওয়া যায়, যদিও এর গাছ বিষাক্ত। করমচার ঝোপ দেখতে সুন্দর। বর্তমানে এটি একটি বিলুপ্তপ্রায় গাছ।[২]
কাঁটাযুক্ত গুল্মজাতীয় এ উদ্ভিদটি প্রাকৃতিক ভাবেই জন্মে। তবে এটা চাষও করা সম্ভব। ঝোপের মতো বলে গ্রামাঞ্চলে এই গাছ বাড়ির সীমানায় বেড়া হিসেবে লাগানো হয়। [৩]
ঔষধি গুণাবলি
[সম্পাদনা]করমচা ফল হিসেবে বেশ অবহেলিত হলেও এর পুষ্টিগুণ কিন্তু মোটেও অবহেলা করার মতো নয়! প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় রয়েছে- এনার্জি- ৬২ কিলোক্যালরি কার্বোহাইড্রেট- ১৪ গ্রাম প্রোটিন- ০.৫ গ্রাম ভিটামিন এ- ৪০ আইইউ ভিটামিন সি- ৩৮ মিলিগ্রাম রিবোফ্লেভিন- ০.১ মিলিগ্রাম নিয়াসিন- ০.২ মিলিগ্রাম আয়রন- ১.৩ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম- ১৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম- ২৬০ মিলিগ্রাম কপার- ০.২ মিলিগ্রাম করমচার নানা গুণাবলি আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষায় নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। যেমন - করমচাতে কোনো ফ্যাট বা কোলেস্টেরল নেই। তাই ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য এ ফল খুব উপকারী। করমচা ওজন কমাতেও সাহায্য করে। ভিটামিন সি-তে ভরপুর করমচা খাবারে রুচি বাড়ায়। মৌসুমী সর্দি-জ্বর নিরাময়ে সাহায্য করে। স্কার্ভি, দাঁত ও মাড়ির নানা রোগ প্রতিরোধে করমচা সাহায্য করে। করমচাতে উপস্থিত ভিটামিন বি গায়ের চুলকানিসহ ত্বকের নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। করমচা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ কমাতেও করমচা সাহায্য করে। যকৃত ও কিডনীর রোগ প্রতিরোধে করমচা সহায়তা করে। এর পটাশিয়াম শরীরের দূষণ বহিষ্কারকরণে সহায়তা করে। করমচা কৃমিনাশক হিসেবেও কাজ করে। এছাড়া পেটের নানা অসুখ নিরাময়েও করমচা উপকারী। শরীরের ক্লান্তি ও বার বার হাই তোলা থেকে মুক্তি পাবার জন্য করমচার রস বেশ কাজে দেয়। বাতরোগ ও ব্যথাজনিত জ্বর নিরাময়ে করমচা খুব উপকারী। করমচাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যা চোখের জন্য খুবই উপকারী। করমচার কার্বোহাইড্রেট কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। করমচা বেশ ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি ফল। ভারতবর্ষের আদি চিকিত্সা শাস্ত্র চরক-এ এর উল্লেখ রয়েছে। ফলের পাশাপাশি এর গাছের অন্যান্য অংশেরও রয়েছে নানা কার্যাবলি। যেমন - করমচা গাছের পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি পান করলে কালাজ্বর দ্রুত নিরাময় হয়। করমচা গাছের মূলে রয়েছে হৃদরোগ নিরাময়ে উপকারী ক্যারিসোন, বিটাস্টেরল, ট্রাইটারপিন, ক্যারিনডোনা ও লিগনাম। কাঁচা ফলের রস কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।[৪]
গাছের বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]করমচা গাছ সাধারণত কাঁটাযুক্ত চিরহরিৎ উদ্ভিদ, যার গড় উচ্চতা ২ থেকে ৪ মিটার। এর পাতা মসৃণ এবং দৈর্ঘে ৪ থেকে ৭.৫ সেন্টিমিটার হয় এবং প্রস্থে ২.৫ থেকে ৪ সেন্টিমিটার হয়। এর পাতা বা ডাল যখন ক্ষতিগ্রস্থ হয় তখন সাদা রঙের কষ বের হয়।
ফলন ঋতু
[সম্পাদনা]করমচা সাধারণত গ্রীষ্মকালের ফল। এপ্রিল মাসের শেষভাগ থেকে গাছে ফল আসা শুরু করে এবং জুন মাসের মধ্যবর্তী সময়ে ফল পাকে। তবে বাংলাদেশ এবং ভারতে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফল পাকে। কাঁচা অবস্থায় সাধারণত সবুজ রঙের থাকে এবং পাকার পর লাল-মেজেন্ডা রঙ ধারণ করে। করমচা গাছের বয়স ২ বছর হলে ফলন দেওয়া শুরু করে[৫]।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
করমচা ফুল
-
করমচার কচিপাতা
-
করমচা ঝোপ
-
করমচা গাছে ফল
-
পাকা করমচা ফল
-
করমচা গাছের পাতা
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ <Khare CP. Indian Medicinal Plants: An Illustrated Dictionary Springer Berlin; 2007 pg. 123.
- ↑ Floridata page for Carissa macrocarpa
- ↑ "Species List: 18. Carissa macrocarpa"। Manie van der Schijff Botanical Garden। University of Pretoria। পৃষ্ঠা 18। ২০০৬-০৯-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৯।
- ↑ "Carissa carandas"। Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০১-০২।
- ↑ "Carissa carandas"। Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০১-০২।