এ. টি. এম. শামসুদ্দিন
এ. টি. এম. শামসুদ্দিন | |
---|---|
জন্ম | ১৯২৭ |
মৃত্যু | ২০০৯ (বয়স ৮১–৮২) |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
অন্যান্য নাম | তাহের শামসুদ্দিন চারুবাক |
পেশা | সাংবাদিক |
এ. টি. এম. শামসুদ্দিন (১৯২৭-২০০৯), যিনি চারুবাক নামেও পরিচিত, একজন বাংলাদেশী লেখক, সাংবাদিক, অনুবাদক, কমিউনিস্ট এবং ইউনিয়ন সংগঠক।[১] তিনি পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম সর্বদলীয় ভাষা আন্দোলন কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২]
প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]
আবু তাহের মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, তাহের শামসুদ্দিন নামেও পরিচিত। তার জন্ম বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের চট্টগ্রামে। তার বাবা আহমেদুর রহমান ছিলেন কলকাতা বন্দর কমিশনের একজন কর্মচারী। তার যখন তিন বছর বয়স তখন তার মা মারা যান। তার বাবা শামসুদ্দিনের মায়ের চাচাতো ভাইয়ের সাথে পুনরায় বিয়ে করেছিলেন, যিনি পরে মারা যান। তিনি তার মামার পরিবারে বেড়ে ওঠেন।[৩] তার উপর পরিবার নির্ভরশীল থাকায় তিনি বিয়ে করতে পারেননি।
ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]
তিনি মাছ ধরা, উচ্ছাঙ্গ সঙ্গীত, খেলাধুলা, দর্শন এবং ইতিহাস পছন্দ করতেন। এছাড়াও তিনি ইউরোপ ও উপমহাদেশের বহু দেশে ভ্রমণ করেছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের বিষয়ে তার খুব স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। তিনি রবীন্দ্রনাথ, রোমেন রোল্যান্ড, টলোস্টয়, তারাশঙ্কর, মানিক, সুনীল, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ শামসুল হক, শামসুর রাহমান এবং হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা পছন্দ করতেন।
সক্রিয় রাজনীতি[সম্পাদনা]
শামসুদ্দিন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিলেন এবং জেলেও ছিলেন। ক্লাস নাইনে পড়ার সময় তিনি জেলা মুসলিম ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। তার স্নাতক শেষ হয়নি। পরবর্তীকালে, তিনি অত্যন্ত কঠোর কমিউনিস্ট ছিলেন এবং আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির কর্মী ছিলেন। তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে যোগ দেন।
সম্পাদক[সম্পাদনা]
শামসুদ্দিন প্রথমে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় যোগ দেন। ১৯৬১ সালে ঢাকার 'দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। তিনি উদয়ন, যুববার্তা, সোভিয়েত সমিক্ষা, সোভিয়েত রিভিউ ইত্যাদি পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সোভিয়েত দুতাবাসে কর্মজীবন[সম্পাদনা]
তিনি ঢাকায় সোভিয়েত দূতাবাসে কাজ করতেন এবং প্রেস ইনফরমেশন বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। তিনি ২১ বছর পর অবসর নেন।
কাজ[সম্পাদনা]
তিনি অনেক ব্যঙ্গ ও দুঃসাহসিক গল্প লিখেছেন। ১৯৬৬ সালে তার প্রথম উপন্যাস 'বনানীর বুকে' প্রকাশিত হয়। কাজী আনোয়ার হোসেন তাকে অনুপ্রাণিত করেন এবং ১৯৮৭ সালে তিনি রহস্য পত্রিকাতে বটমুলের গল্প দিয়ে তার লেখা শুরু করেন। তার প্রথম অনুবাদ 'হোজা নাসিরুদ্দিন'। এছাড়াও তিনি 'পাকিস্তান যখন ভাংলো', 'লেফটেন্যান্ট জেনারেল গুল হাসান খানের' স্মৃতিকথা সহ অনেক অনুবাদ করেছেন।[৪]
তার লেখা গ্রন্থ[সম্পাদনা]
পশ্চিমা সিরিজ:[সম্পাদনা]
- আগন্তুক
- ঈগলের বাসা
- শেষ প্রতিপক্ষ
- সন্দের্শের রক্ত চাই
- গ্রীন ফিল্ডের আউট ল'
জুলস ভের্ন সিরিজ[সম্পাদনা]
- আশি দিনে বিশ্ব ভ্রমণ
- চাঁদে অভিযান
- বেগমের রত্নভান্ডার
- নাইজারের বাঁকে
- বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ
তিন গোয়েন্দা[সম্পাদনা]
রকিব হাসানের প্রস্থানের পর এ.টি.এম. শামসুদ্দিন তিন গোয়েন্দা লিখেছেন। তিনি ৩০টিরও বেশি এ বই লিখেছেন।
অন্যান্য অনুবাদ[সম্পাদনা]
- ট্রাইটনের নৌবিহার
- ক্যারি অন, জিভস
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "Tribute paid to Shamsuddin"। দ্য ডেইলি স্টার। ১৮ আগস্ট ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০২২।
- ↑ "Veteran journo Shamsuddin ill"। দ্য ডেইলি স্টার। ২২ মে ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০২২।
- ↑ "A. T. M. Shamsuddin"। Academic Dictionaries and Encyclopedias (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-০৫।
- ↑ "পাকিস্তান যখন ভাঙলো - এ টি এম শামসুদ্দীন"। Liberation War Bangladesh। ১৭ জুন ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০২২।