আকুলিকো

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আকুলিকো, চাচাদো, আকুইকো, আকুসি, পিজচো (স্পেনীয়: Acullico) এক ধরনের সামাজিক, ধর্মীয় বিশ্বাসবোধ ও চিকিৎসার্থে ব্যবহৃত ঔষধ। কিঞ্চিৎ আকারে নেশাজাতীয় কোকা পাতা মুখের অভ্যন্তরে গাল ও চোয়ালের মাঝখানে রাখা হয়।[১] দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার উত্তরাংশ, চিলির উত্তরাংশ, বলিভিয়ার পশ্চিমাংশ, পেরু, ইকুয়েডর, কলম্বিয়ায় এটি লোকেরা চিবিয়ে থাকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচু এলাকার এসকল দেশে মূলতঃ অক্সিজেনের ঘাটতি মোকাবেলায় ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, শারীরিক ক্লান্তিবোধ, ক্ষুধামন্দা ও বদহজম দূরীকরণেও এর প্রয়োগ হয়।[২] কোকা পাতা চিবানোর এ রীতিকে সচরাচর ‘আকুলিকার’, ‘চাচর’, ‘পিজচায়ের’, ‘কোকুইয়ার’ ও ‘ককুইরোস’ নামে ডাকা হয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

আন্দিজ পর্বত এলাকায় প্রায় আট হাজার বছর পূর্বে কোকা চাষের কথা জানা যায়।[৩][৪] মোচে সংস্কৃতিতে সিরামিকের পাত্রে চাচার্জিংয়ের প্রমাণ বহন করছে। উপনিবেশবাদের পর এর চর্চা বেশ কমে যায়। তবে, সেরো রিকো ডে পটসি এলাকায় খনির ন্যায় কষ্টকর কাজে নিযুক্ত ইন্ডিয়ানদের সহায়তায় এ সংস্কৃতি রক্ষা পায়।

তৈরীকরণ[সম্পাদনা]

আই বা ইলিপ্টা কোকা পাতার উপর রাখা অবস্থায় আছে।

সাধারণতঃ ক্ষারজাতীয় সোডিয়াম বাইকার্বনেট[৫] বা চুন বা গাছ পুড়িয়ে ছাঁই বা ব্লিচ বা ইলিপ্টা ব্যবহার করে এর প্রতিক্রিয়া বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়।[৬] এরপর চুনের তরল বের করে ফেলা হয়। ব্লিচ বা ইলিপ্টা হালকা ধূসর বা ঘন বর্ণের হবে ও কিছু পাতার মাঝে রেখে মুখে দিতে হয়।

দীর্ঘ দূরত্বে বাস চালনা, অবকাঠামো নির্মাণ, খনির কাজ ও এ জাতীয় সমগোত্রীয় পেশায় এ অভ্যাস দীর্ঘদিন যাবৎ চলে আসছে। উপনিবেশকালীন সময়ে খনির ন্যায় কিছু ব্যবসায় এটি চলমান থাকে। কিন্তু নতুন কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা কাজের ফাঁকে বা পরীক্ষা চলাকালীন দীর্ঘ সময় সজাগ রাখতে এর ব্যবহার করতে থাকে।

রাজনৈতিক ব্যবহার[সম্পাদনা]

জাইম পাজ জামোরা’র ন্যায় বেশ কিছু বলিভীয় সরকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রতিপালনে সহযোগিতা করে আসছে। তবে, ইভো মোরালেস এ ঐতিহ্য পালনে নতুন মাত্রা যোগ করেন। জনগোষ্ঠীর একটি অংশের প্রাত্যহিক কাজে এর ব্যবহার ও এজাতীয় সাংস্কৃতিক কাজের অনুশীলনে সহয়তাকল্পে তিনি ‘জাতীয় আকুলিকো দিবস’ পালনের কথা উল্লেখ করেন। ১১ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে বলিভিয়া ১৯৬১ সালের মাদকবিরোধী সম্মেলনে স্বাক্ষর করলেও ১৯ ধারায় নিম্নবর্ণিত শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়:

বহুজাতিভিত্তিক বলিভিয়া রাষ্ট্রে প্রচলিত কোকা পাতা চিবানোর বিষয়টি সংরক্ষিত আছে। সাংস্কৃতিক ও ঔষধের উদ্দেশ্যে কোকা পাতা ব্যবহার ও খরিদ করা যাবে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. MAGNY, Caroline (২০০৯)। Cuando ya no se puede tomar trago ni chacchar coca. El caso de los conversos “protestantes” en los Andes centrales peruanos. (Spanish ভাষায়)। S6। Anthropology of food। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  2. TORCHETTI, Tracy (১৯৯৪)। Coca Chewing and High Altitude Adaptation1। Totem: The University of Western Ontario Journal of Anthropology। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  3. PALMER, Jason (২ ডিসেম্বর ২০১০)। Coca leaves first chewed 8,000 years ago, says research (Spanish ভাষায়)। BBC। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  4. RIVERA, Mario A. (2005)। Antiquity of Coca-Leaf Chewing in the South Central Andes: A 3,000 Year Archaeological Record of Coca-Leaf Chewing from Northern Chile (Spanish ভাষায়)। 37। Journal of Psychoactive Drugs। সংগ্রহের তারিখ 15 December  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  5. The lime, or the ashes of a burnt plant known as bleach "The Coipa of the Andean salares" |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) (Spanish ভাষায়)। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. TOYNE, J. Marla (১৯৯৯)। The Transformation of Coca to Cocaine: An Overview of Traditional Drug Use and Modern Drug Use (Spanish ভাষায়)। 7। Totem: The University of Western Ontario Journal of Anthropology। পৃষ্ঠা 23। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]