বিষয়বস্তুতে চলুন

অরুণ নন্দী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুক্তিযোদ্ধা

অরুণ নন্দী

বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশী সাঁতারু
জন্ম(১৯৪১-১১-২৬)২৬ নভেম্বর ১৯৪১
মৃত্যু১৬ নভেম্বর ২০০৮(2008-11-16) (বয়স ৬৬)[]
জাতীয়তাবাংলাদেশ
পেশাসাঁতারু
কর্মজীবন১৯৬০—২০০৮
পরিচিতির কারণবিশ্বখ্যাত সাঁতারু[]
আদি নিবাসচাঁদপুর
দাম্পত্য সঙ্গীচিরকুমার ছিলেন
পরিবারচাঁদপুরের নন্দী পরিবার
পুরস্কারজাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার

অরুণ নন্দী (১৬ নভেম্বর ১৯৪১—২৬ নভেম্বর ২০০৮) ছিলেন বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশী সাঁতারু। তিনি ১৯৭১ সালে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে তহবিল সংগ্রহে কলকাতার কলেজ স্কয়ারে ৯০ ঘণ্টা ৫ মিনিট সাঁতার কেটে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়া পদক জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার-১৯৬৬ বিজয়ী সাঁতারু।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

১৬ নভেম্বর ১৯৪১ সালে বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার বাগাদী গ্রামের নন্দী পরিবারে অরুণ নন্দী জন্মগ্রহণ করে। নন্দীর পরিবার কলকাতায় স্থায়ী হলেও অরুণ নন্দী দেশ ছাড়তে সম্মত হননি। ব্যক্তিগত জীবন নন্দী চিরকুমার ছিলেন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

অরুণ নন্দী ১৯৭১ সালে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে তহবিল সংগ্রহে কলকাতার কলেজ স্কয়ারে ৯০ ঘণ্টা ৫ মিনিট সাঁতার কেটে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে পাওয়া অর্থ তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয় করেন।[] ওই সময় তার সাঁতার দেখতে সত্যজিৎ রায়, উত্তম কুমার, ব্রজেন দাসসহ অনেক প্রখ্যাত ব্যক্তিরা ছুটে আসেন। এসব ব্যক্তিরা ছাড়াও সাঁতার দেখতে আসা উপস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে রাখতে পুরস্কার মঞ্চেই গান গান মান্না দে। যার মাধ্যমে ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার হয়।

১৯৬২ সালে চৌমুহনী কলেজের সাঁতার প্রতিযোগিতায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হন ১৯৬৫ সালে ইংলিশ চ্যানেল ক্রসিং কমিটির আয়োজনে নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর দীর্ঘ দূরত্বের সাঁতার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে দাউদকান্দি-নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতায় তিনি দ্বিতীয় স্থান দখল করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি পদ্মা, মেঘনাবুড়িগঙ্গা নদীতে ১১০ কি. মি. সাঁতার কেটে চ্যাম্পিয়ন হন।[]

চাঁদপুরের তরুণদের সাঁতারু হিসেবে তৈরির জন্যে তিনি "অরুণ নন্দী সুইমিং ক্লাব" প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০০৩-২০০৬ পর্যন্ত বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন। ২০০৬-২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি ফেডারেশন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[]

পুরস্কার

[সম্পাদনা]

১৯৬৬ সালে জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার বিজয়ী হন। ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক হিসেবে অরুণ নন্দী বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস এসোসিয়েশন (বিএসজেএ) পুরস্কারসহ ক্রীড়াজীবনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক একাধিক সম্মাননা পান। তার সম্মানে চাঁদপুর জেলায় অরুণ নন্দী সুইমিংপুল প্রতিষ্ঠা হয়।[]

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

অরুণ শেষ জীবনে ঢাকার হকি স্টেডিয়ামের দোতালায় একটি খুপড়ি ঘরে দীর্ঘদিন নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করেন এবং কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। পরে চিকিৎসার জন্য তিনি কলকাতায় যান ও কলকাতার একটি হাসপাতালে ২৬ নভেম্বর ২০০৮ সালে চিকিৎসাধীন থাকবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।[][]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Arun Nandi no more"দ্য ডেইলি স্টার। ১৭ নভেম্বর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৯ 
  2. "EDITORIAL : A tribute to Arun Nandi"। দ্য ডেইলি স্টার। ১৮ নভেম্বর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৯ 
  3. "Four swimmers to participate in World Championship"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৬ 
  4. "Former swimmer, freedom fighter cremated"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৬ 
  5. "Swimming hero Nandi dies"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৬