অরুণকুমার বসু
অরুণকুমার বসু | |
---|---|
জন্ম | কলকাতা ব্রিটিশ ভারত | ২৪ মার্চ ১৯৩৩
মৃত্যু | ৪ ডিসেম্বর ২০১৬ কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ ভারত | (বয়স ৮৩)
ভাষা | বাংলা |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় (১৯৩৩ - ১৯৪৭) ভারতীয় (১৯৪৭-২০১৬) |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | বাংলা কাব্যসংগীত ও রবীন্দ্র সংগীত নজরুল-জীবনী |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | নজরুল পুরস্কার সরোজিনী স্বর্ণপদক |
অরুণকুমার বসু (২৪ মার্চ ১৯৩৩ - ৪ ডিসেম্বর ২০১৬) ছিলেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক, জনপ্রিয অধ্যাপক, কবি, গীতিকার ও শিশু সাহিত্যিক। কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী - "নজরুল-জীবনী" রচনার জন্য তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নজরুল পুরস্কার লাভ করেন।[১] তিনি কালজয়ী বাংলা গান রচনা করেছেন ভাস্কর বসু নামে।[২]
জীবনী
[সম্পাদনা]অধ্যাপক অরুণকুমার বসুর জন্ম ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মার্চ ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায়। পড়াশোনা কলকাতায়। বাংলা ভাষা সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি ও সরোজিনী বসু স্বর্ণপদক লাভ করেন। দীর্ঘদিন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পর ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। আমন্ত্রিত অধ্যাপক হিসাবে যুক্ত ছিলেন কলকাতা, বর্ধমান, যাদবপুর, বিশ্বভারতী, ত্রিপুরাসহ নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে।[৩] অধ্যাপক বসু বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের অন্যতম বিশেষজ্ঞ হিসাবেও সংশ্লিষ্ট ছিলেন। রবীন্দ্র সংগীতের উপর তার অসংখ্য গবেষণাপত্র বিশেষজ্ঞ মহলে সমাদৃত ও উচ্চ-প্রশংসিত হয়েছে। তিনি পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির সম্মানিত সদস্য ছিলেন। দেশ বিদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে আমন্ত্রিত হয়েছেন।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং রবীন্দ্রসংগীতে গবেষণার পাশাপাশি অধ্যাপক বসু গণনাট্য আন্দোলনের সঙ্গে কিছুদিন যুক্ত ছিলেন। প্রখ্যাত গীতিকার সলিল চৌধুরীর সঙ্গে তার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। তিনি নিজেও গীতিকার হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তবে সঙ্গীতের জগতে তার পরিচয় ছিল ভাস্কর বসু নামে।[৪] কালজয়ী বাংলা গান সৃষ্টি করেছেন তিনি। যেমন—
- সোনার হাতে সোনার কাঁকন (সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের কন্ঠে গীত)
- ভাঙা তরী শুধু এ গান (দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের কন্ঠে গীত)
- মধুমতী যায় বয়ে যায় (তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্ঠে গীত)
- বলো তো আরশি তুমি মুখটি দেখে (নির্মলা মিশ্রের কন্ঠে গীত)[২] ইত্যাদি।
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের বাংলার রূপকথা- ঠাকুরমার ঝুলি অবলম্বনে তিনি ছোটদের জন্য গীতিনাট্য রচনা করেছেন।[২]
রচিত গ্রন্থসমূহ
[সম্পাদনা]অধ্যাপক অরুণকুমার বসুর শতাধিক গবেষণাপত্র অগ্রন্থিত রয়েছে। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থগুলি হল—
- রবীন্দ্র–বিচিন্তা,
- শক্তিগীতি–পদাবলী,
- বাংলা কাব্যসংগীত ও রবীন্দ্রসংগীত,
- ক্ষণিকের বাণীশিল্পী রবীন্দ্রনাথ,
- যেথা এই চৈত্রের শালবন,
- বৈকালীর গান,
- আমার আপন গান,
- সমকালের রবীন্দ্রভাবনা,
- কথাশিল্পের নানাদিক,
- সলিল থেকে সুমন এবং তারপর
- রাশিয়ার চিঠি ও রবীন্দ্রনাথের রাশিয়া ভাবনা
- হে মহাসুন্দর শেষ (সহ লেখক তাপস রায়)
- ছায়া-রোদের ভেলা,
- সৈয়দ মুজতবা আলী জন্মশতবর্ষ স্মারক গ্রন্থ ইত্যাদি।
সম্মাননা
[সম্পাদনা]অধ্যাপক অরুণকুমার বসু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরোজিনী বসু স্বর্ণপদক ছাড়াও বহু সম্মান ও পুরস্কার লাভ করেন। কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে 'রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য' উপাধিতে ভূষিত করে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার "নজরুল-জীবনী" গ্রন্থটির জন্য নজরুল পুরস্কার প্রদান করে।
জীবনাবসান
[সম্পাদনা]বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীতের বিদদ্ধ বিশেষজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ অধ্যাপক অরুণকুমার বসু গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৪ ডিসেম্বর রবিবার কলকাতায় প্রয়াত হন।[২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ অরুণকুমার বসু, লেখক পরিচিতি ফ্ল্যাপ হতে। বাংলা কাব্যসংগীত ও রবীন্দ্র সংগীত। দে'জ পাবলিশিং, কলকাতা। আইএসবিএন 81-7079-521-4।
- ↑ ক খ গ ঘ "Researcher, lyricist Arun Kumar Basu dies"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৫।
- ↑ "অরুণকুমার বসু Archives"। ২০২২-১২-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৫।
- ↑ "বাংলা গানের ভাষা নির্মাণে লোকাভরণ শৈলী : প্রসঙ্গ ভাস্কর বসুর গান"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৫।