কচুরিপানা
এই নিবন্ধটির একটা বড়সড় অংশ কিংবা সম্পূর্ণ অংশই একটিমাত্র সূত্রের উপর নির্ভরশীল। |
কচুরিপানা Eichhornia | |
---|---|
পরিচিত কচুরিপানা (E. crassipes) | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Monocots |
শ্রেণীবিহীন: | Commelinids |
বর্গ: | Commelinales |
পরিবার: | Pontederiaceae |
গণ: | Eichhornia নুথ |
প্রজাতি | |
সাতটি প্রজাতি, : |
কচুরিপানা একটি জলজ উদ্ভিদ। এর ইংরেজি নাম water hyacinths। বৈজ্ঞানিক নাম:Eichhornia (বর্তমান নাম: Pontederia)। এর সাতটি প্রজাতি আছে এবং এগুলো মিলে আইকরনিয়া গণটি গঠন করেছে। কচুরিপানা মুক্তভাবে ভাসমান বহুবর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকা। এটি পুরু, চকচকে এবং ডিম্বাকৃতির পাতাবিশিষ্ট কচুরিপানা পানির উপরিপৃষ্ঠের ওপর ১ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। এর কাণ্ড থেকে দীর্ঘ, তন্তুময়, বহুধাবিভক্ত মূল বের হয়, যার রং বেগুনি-কালো। একটি পুষ্পবৃন্ত থেকে ৮-১৫ টি আকর্ষণীয় ৬ পাঁপড়ি বিশিষ্ট ফুলের থোকা তৈরি হয়।
কচুরিপানা খুবই দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে। এটি প্রচুর পরিমাণে বীজ তৈরি করে যা ৩০ বছর পরও অঙ্কুরোদগম ঘটাতে পারে। সবচেয়ে পরিচিত কচুরিপানা Eichhornia crassipes রাতারাতি বংশবৃদ্ধি করে এবং প্রায় দু' সপ্তাহে দ্বিগুণ হয়ে যায়।
কচুরিপানা দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধের প্রাদেশিক ফুল।
বাংলায় কচুরিপানার আগমনের ইতিহাস
[সম্পাদনা]ধারণা করা হয় কচুরিপানার অর্কিড-সদৃশ ফুলের সৌন্দর্যপ্রেমিক এক ব্রাজিলীয় পর্যটক ১৮শ' শতাব্দীর শেষভাগে বাংলায় কচুরিপানা নিয়ে আসেন। তারপর তা এত দ্রুত বাড়তে থাকে যে ১৯২০ সালের মধ্যে বাংলার প্রায় প্রতিটি জলাশয় কচুরিপানায় ভরে যায়। নদ-নদীতে চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে আর জলাভূমির ফসল আমন ধান আর পাট চাষ অসম্ভব হয়ে পড়ে, ফলে বাংলার অর্থনীতিতে স্থবিরতা দেখা দেয়।
এমন পরিস্থিতিতে সরকার কচুরিপানার দৌরাত্ম্য হ্রাসে বাংলার জলাভূমি আইন, বাংলার মিউনিসিপ্যালিটি আইন, বাংলার স্থানীয় সরকার আইন এবং বাংলার স্থানীয় গ্রাম সরকার আইন সংশোধন করে। কচুরিপানার বিস্তার ও ধ্বংসপ্রণালী নির্ধারণ করার জন্য ১৯২১ সালে বাংলার গভর্ণমেন্ট একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটির সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন স্যার জগদীশচন্দ্র বসু। নবগঠিত কমিটি কচুরিপানার বিস্তার নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু আইন প্রণয়নের পরামর্শ দেয় এবং বলেন, এই মুহূর্তে সমবেত চেষ্টায় জল থেকে কচুরিপানা তুলে ধংস করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। ১৯২৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. পল ব্রুকের উপর কচুরিপানা নিয়ে গবেষণার ভার দেওয়া হয়। তিনি ১৯৩৪ সালে গবেষণার ফলাফল জানান এবং জগদীশচন্দ্র বসুর কমিটির কথায় সহমত প্রকাশ করেন।[১] ১৯৩৬ সালে কচুরিপানা আইন জারি করা হয়, যার মাধ্যমে বাড়ির আশেপাশে কচুরিপানা রাখা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত কচুরিপানা পরিষ্কার অভিযানে অংশ নেয়াকে নাগরিক কর্তব্য ঘোষণা করা হয়। আক্রান্ত এলাকার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে কচুরিপানা দমনে কার্যকর অভিযান চালতে আদিষ্ট হন। জনতা এই কাজে উৎসাহের সাথে যোগ দেয়। ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে সবগুলো দলের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাকে কচুরিপানার অভিশাপ-মুক্ত করার অঙ্গীকার ছিল। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক নির্বাচনে বিজয় লাভ করে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং কচুরিপানার বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান চালান। ১৯৩৯ সালে পল্লী সংগঠক বিভাগের প্রচেষ্টায় কচুরিপানা ধ্বংস সপ্তাহ পালন করা হয়।
কচুরিপানার বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের সাফল্য লাভের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল সার হিসেবে পঁচানো কচুরিপানার উৎকৃষ্টতা। এই গুণের কারণে ভূমিহীন কৃষকরা কচুরিপানা জমিয়ে ভাসমান কৃষিজমি তৈরি করতে শুরু করে। অবশেষে ১৯৪৭ এর মধ্যে বাংলার জলাশয়গুলো কচুরিপানা-বদ্ধতা থেকে মুক্তি লাভে সক্ষম হয়। তবে এখনও বাংলার জলাশয়ে কচুরিপানা বহাল তবিয়তেই আছে।
কচুরিপানা এখন প্রধানত সার হিসেবেই অধিক ব্যবহূত হয় এবং বর্ষাকালে বন্যা আক্রান্ত অঞ্চলে গবাদি পশুর খাদ্য যোগায়। এছাড়া হাওর অঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় বাঁশ দিয়ে আটকে রেখে ঢেউয়ের আঘাত থেকে ভিটে-মাটি রক্ষায় ব্যবহূত হয়। [২][উল্লেখ করুন]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ মিত্র, শ্রীদেবেন্দ্রনাথ (১৯৪২)। কচুরিপানা। শ্যামবাজার, কলিকাতা: বঙ্গীয় পল্লী সংগঠক বিভাগ। পৃষ্ঠা ২০–২১।
- ↑ বাংলাপিডিয়া
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
বাংলাদেশের পুকুরে ঘন কচুরিপানা
-
কচুরিপানা
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |