জ্যাক ক্রাপ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জ্যাক ক্রাপ
১৯৬৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জ্যাক ক্রাপ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন ফ্রেডরিক ক্রাপ
জন্ম(১৯১২-১০-১৪)১৪ অক্টোবর ১৯১২
সেন্ট কলাম্ব মেজর, কর্নওয়াল, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১(1981-02-13) (বয়স ৬৮)
নোল, ব্রিস্টল, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাব্যাটসম্যান, আম্পায়ার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৩৫)
৮ জুলাই ১৯৪৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট৫ মার্চ ১৯৪৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৩৬ - ১৯৫৬গ্লুচেস্টারশায়ার
আম্পায়ারিং তথ্য
টেস্ট আম্পায়ার৪ (১৯৬৪–১৯৬৫)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৫২
রানের সংখ্যা ৩১৯ ২৩,৬১৫
ব্যাটিং গড় ২৯.০০ ৩৫.০৩
১০০/৫০ ০/৩ ৩৮/১৩৬
সর্বোচ্চ রান ৫৬ ১৭৫
বল করেছে ৪৬০
উইকেট
বোলিং গড় ৫১.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/২৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৭/– ৩৮৬/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২১ অক্টোবর ২০২০

জন ফ্রেডরিক ক্রাপ (ইংরেজি: Jack Crapp; জন্ম: ১৪ অক্টোবর, ১৯১২ - মৃত্যু: ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮১) কর্নওয়ালের সেন্ট কলাম্ব মেজর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪০-এর দশকের শেষদিকে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন জন ক্রাপ নামে পরিচিত জ্যাক ক্রাপ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

কর্নওয়ালের সেন্ট কলাম্ব মেজর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী জ্যাক ক্রাপ ব্রিস্টলের স্ট্যাপলটন ক্রিকেট ক্লাবের মাধ্যমে খেলোয়াড়ী জীবনের সূচনা ঘটান। তৃতীয় একাদশের পক্ষে প্রথম খেলাতেই শূন্য রানের সন্ধান পান তিনি। তবে, পরবর্তীতে কয়েকটি খেলায় দর্শনীয় ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনের মাধ্যমে নিজেকে প্রথম একাদশের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করান। গ্লুচেস্টারশায়ারের যাচাই-বাছাইয়ের খেলায় অংশগ্রহণের জন্যে ওয়ালি হ্যামন্ডের কাছ থেকে আমন্ত্রণ বার্তা পান। ১৯৩৬ সালে গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। এরপর থেকে ঐ দলে পরবর্তী বিশ বছর নিয়মিতভাবে খেলতেন। এক পর্যায়ে তিনি দলের অধিনায়কের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত জন ক্রাপের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। কার্যকর মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। বেশ রক্ষণাত্মক ধাঁচে ও অসীম ধৈর্য সহযোগে অনেক রান পেয়েছেন। ফার্স্ট স্লিপে অবস্থান করতেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সাতটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জ্যাক ক্রাপ। ৮ জুলাই, ১৯৪৮ তারিখে ম্যানচেস্টারে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৫ মার্চ, ১৯৪৯ তারিখে পোর্ট এলিজাবেথে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

বামহাতি নির্ভরযোগ ব্যাটসম্যান ও স্লিপ ফিল্ডার হিসেবে জ্যাক ক্রাপের বেশ সুনাম ছিল। শুরুতে তাকে বেশ সম্ভাবনাময় টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে তার টেস্ট অভিষেক বেশ বিলম্বে হয়। ১৯৪৮ সালে প্রথম কর্নিশম্যান হিসেবে ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলেন।[১] দূর্ভাগ্যজনকভাবে ইংল্যান্ড দলের প্রবল প্রতিপক্ষ ও অপরাজেয় নামধারী অস্ট্রেলিয়া দলের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে গ্লুচেস্টারশায়ারের খেলায় তিনি তার শক্তিমত্তা দেখিয়েছিলেন। ঐ বছর স্বল্প কয়েকজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে অস্ট্রেলীয়দের বিপক্ষে শতরান করার গৌরব অর্জন করেন। ১০০ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ঐ গ্রীষ্মে বেশ কয়েকজন ইংরেজ খেলোয়াড়ের ন্যায় তিনিও তার প্রতিভার যথোচিত বিচ্ছুরণ ঘটাতে ব্যর্থ হন।

১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। টেস্টগুলোয় তিনি তেমন দর্শনীয় খেলা উপহার দিতে পারেননি।[১] তবে, চূড়ান্ত টেস্টে অ্যালান ওয়াটকিন্সের সাথে তিন বল বাকী থাকতে দলকে বিজয়ী হতে সহায়তা করেন।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৪৯ সালে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েন। তাসত্ত্বেও, গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ সুন্দর খেলা প্রদর্শন করতে থাকেন। ১৯৫৩ সালে দলের প্রথম পেশাদার অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৫৫ সালে জর্জ এমেটের কাছে তিনি এ দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। ঐ বছর তাকে গ্লুচেস্টারশায়ারের অধিনায়ক হিসেবে বেশ হিমশিম খেতে হয়েছিল।[১] খেলোয়াড়ী জীবনের শেষের বছরগুলোয় হাতে চর্মরোগের লক্ষ্মণ ধরা পড়ে ও এক পর্যায়ে অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

জ্যাক ক্রাপের জন্মস্থানে স্মারকসূচক প্লাক

ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেন যে, দর্শনীয় ব্যাটসম্যানের তুলনায় বেশ সংযত ভঙ্গীমায় উইকেটে অবস্থান করতেন। ১৯৫৪ সাল বাদে বাদ-বাকী চৌদ্দ মৌসুমে সহস্রাধিক রান তুলতে পেরেছিলেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর আম্পায়ার জগতের দিকে ধাবিত হন। বাইশ মৌসুম প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা পরিচালনা করেছিলেন। তন্মধ্যে চারটি টেস্টে মাঠে থেকে খেলা পরিচালনা করেন।[১]

ফ্রেড ট্রুম্যানের ৩০০তম টেস্ট উইকেট প্রাপ্তকালীন তা পর্যবেক্ষণ করেন। অনেকগুলো বছর ফ্রেড ট্রুম্যান পরিচিতদেরকে ঐ উইকেট প্রাপ্তিতে বলটি দেখাতেন। কিন্তু, তার মৃত্যুর অল্প কিছুদিন পর ফ্রাঙ্ক কিটিং নামীয় সাংবাদিককে তিনি জানান যে, ঐতিহাসিক বলটি অদল-বদল করে নিজের কাছে রেখেছেন।

দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে তাকে খেলোয়াড়ী জীবন সংক্ষিপ্ত করতে হয়। তবে, জনপ্রিয় ও সম্মানীয় আম্পায়ার হিসেবে সময় অতিবাহিত করেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮১ তারিখে ৬৮ বছর বয়সে ব্রিস্টলের নোল এলাকায় জ্যাক ক্রাপের দেহাবসান ঘটে। তার ইংরেজ ব্লেজার সেন্ট কলাম্ব ওল্ড কর্নওয়াল সোসাইটিতে রক্ষিত আছে। সেন্ট কলাম্ব মেজরের ব্রিজের গৃহের বাগানে একটি প্লাক রয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 46আইএসবিএন 1-869833-21-X 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]