হুগলি শিল্পাঞ্চল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হুগলি শিল্পাঞ্চল
আগরপাড়া জুট মিলস, হুগলি শিল্পাঞ্চলের একটি পাট কারখানা
আগরপাড়া জুট মিলস, হুগলি শিল্পাঞ্চলের একটি পাট কারখানা
প্রধান শিল্পপাট শিল্প, বস্ত্রশিল্প, ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প,চর্ম শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প
প্রধান শহরকলকাতা, হাওড়া
আয়তন
 • মোট২,০০০ বর্গকিমি (৮০০ বর্গমাইল)

হুগলি শিল্পাঞ্চল[১] বা কলকাতা শিল্পাঞ্চল হল ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্পাঞ্চল।শিল্পাঞ্চলটি হুগলি নদীর দুই তীরে উত্তরে ত্রিবেণী-কল্যাণী থেকে দক্ষিণে উলুবেড়িয়া-বিড়লাপুর পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১৫-১০ কিলোমিটার চওড়া অঞ্চলে গড়ে উঠেছে। এই শিল্পাঞ্চলটি সমগ্র কলকাতাউত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, নদিয়া, হুগলিহাওড়া জেলার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত আর কলকাতাহাওড়া শহর হল শিল্পাঞ্চলটির কেন্দ্রবিন্দু।

শিল্পাঞ্চলটি গড়ে ওঠার কারণ[সম্পাদনা]

প্রধান শিল্পগুলি[সম্পাদনা]

পাটশিল্প[সম্পাদনা]

হুগলি শিল্পাঞ্চলের প্রধান শিল্প হল পাট শিল্প।ভারতের প্রথম পাটকল এই অঞ্চলেই করে উঠেছিল।বর্তমানে এই শিল্পাঞ্চলে মোট ৬০ টি পাটকল রয়েছে।যা ভারতবর্ষের মোট পাটকলের ৭৪ শতাংশ।পাটকল গুলি প্রধানত বজবজ, বিড়লাপুর, উলুবেড়িয়া, সাঁকরাইল, টিটাগড়, জগদ্দল, কাঁকিনাড়া, ভদ্রেশ্বর, আগরপাড়াবালি এলাকায় গড়ে উঠেছে। সবচেয়ে বেশি পাটকল রয়েছে টিটাগড়, উলুবেড়িয়া, বালি ও বজবজ এলাকায়। নিম্ন গাঙ্গেয় উপত্যকার পাট,রাণীগঞ্জ অঞ্চলের কয়লা, হুগলি নদীর জল, ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন (সিইএসসি) ও ডাব্লুবিএসইবি (WBSEB)-এর বিদ্যুৎ এবং স্থানীয় সুলভ শ্রমিক এই শিল্পের সহায়ক হয়েছে।[২]

বস্ত্র বা কার্পাস বয়ন শিল্প[সম্পাদনা]

হুগলি শিল্পাঞ্চলে প্রায় ৪০ টি কাপড়কল রয়েছে।এই কল গুলি হাওড়া, সোদপুর, কল্যাণী, বেলঘরিয়া,শ্যামনগরপানিহাটি এলাকায় গড়ে উঠেছে। এই অঞ্চলের বিপুল চাহিদা, দক্ষিণ ভারত ও পশ্চিম ভারত থেকে আমদানকৃত তুলো, স্থানীয় মূলধন এই কাপড় কল গুলি গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে।

ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প[সম্পাদনা]

ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প হুগলি শিল্পাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ক্ষেত্র।এই শিল্পাঞ্চলের ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প গুলি-

কাগজ শিল্প[সম্পাদনা]

স্থানীয় অঞ্চলের বাঁশ এবং ঝাড়খণ্ড ও ছত্রিশগড়ের সাবাই ঘাস এই শিল্পাঞ্চলের কাগজ শিল্পের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এই কাগজ কারখানা গুলিতে প্রধানত লেখার কাগজ ও টিস্যু পেপার তৈরি হয়।কাগজ কারখানা গুলি হল-

  • ইমামি পেপার মিলস্ (দক্ষিণেশ্বর)
  • ত্রিবেণী টিস্যুজ লিমিটেড (ত্রিবেণী) - আই টি সি এর অধীনস্থ।

রাসায়নিক শিল্প[সম্পাদনা]

কলকাতা ও পার্শ্যবর্তী এলাকায় রাসায়নিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে।এগুলি প্রধানত কোস্টিক সোডা,সালফিউরক অ্যাসিড ও সোডা অ্যাস তৈরি করে।এছাড়া এরা রং পলিথিন,প্লাস্টিক ওষধ তৈরি করে।প্রধান করাখানা গুলি-

  • বেঙ্গল কেমিক্যাল (পানিহাটি),দেজ মেডিক্যাল ( কলকাতা)
  • আইসিআই (ICI) এর অধীনস্থ অ্যালকালি অ্যান্ড কেমিক্যাল কোর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (রিষড়া)।

চর্ম শিল্প[সম্পাদনা]

বানতলার কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সবজবজ এর বাটানগর-এর চর্ম শিল্প গড়ে উঠেছে।বর্তমানে ট্যাংরা ও তিলজলা থেকে ট্যানারি গুলি বানতলায় স্থানাস্তরিত করা হয়েছে।বাটানগড়ের বাটা কোম্পানির জুতো বিখ্যাত।বর্তমানে বানতলাতে একটি জুতো কারখানা তৈরির কথা রয়েছে।

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প[সম্পাদনা]

এই শিল্পাঞ্চলে মোট ১০০ টির মত তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি রয়েছে।উল্লেখ যোগ্য কম্পানি গুলি হল - আরএস সফটওয্যার,সিসিএস ,গ্লোবসিন টেকনোলজি প্রভৃতি।সল্টলেকে সফটওয্যার টেকনোলজি পার্ক তৈরি করা হয়েছে।

আন্যান্য শিল্প[সম্পাদনা]

  • সিমেন্ট করখানা- ডানকুনি
  • যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণ শিল্প- কাশিপুর,দমদম ও ইছাপুর
  • সুতো কারখানা - কল্যাণী
  • অ্যালুমিনিয়াম কারখানা- বেলুড়
  • রবার কারখানা- ডানলপ
  • লিলোলিয়াম ও ক্যালসিয়াম কার্বাইড কারখানা- বিড়লাপুর
  • জুয়েলারি শিল্প- মণিকাঞ্চন, বিধাননগর

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "INDUSTRY OF BENGAL"। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩-০৯-২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. "ধর্মঘটে স্তব্ধ হবে হুগলি শিল্পাঞ্চল,প্রস্তুতি ঘরে ঘরে"গনশক্তি। সংগ্রহের তারিখ ২৩-০৯-২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]