রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার
রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার
রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার এর পুরাতন ভবন
দেশবাংলাদেশ
ধরনসাধারণ গ্রন্থাগার
ব্যাপ্তিউন্মুক্ত
প্রতিষ্ঠিত১৮৮৪
বিলুপ্তি২০১৮
অবস্থানমিয়াপাড়া, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী
সংগ্রহ
সংগৃহীত আইটেমসেক্মপিওর গ্রন্থাবলী ১ম সংস্করণ, অ্যানুয়াল রেজিষ্টার, মাইকেল মধূসূদন দত্তের একেই বলে সভ্যতা ১ম সংস্করণ। বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো ১ম সংস্করণ, ব্রিটিশ আমলের পত্রিকা ভারতবর্ষ, শনিবারের চিঠি, বসুমতি
প্রবেশাধিকার ও ব্যবহার
সদস্যবার্ষিক ও আজীবন
অন্যান্য তথ্য
পরিচালকরাজশাহী জেলা প্রশাসক
কর্মচারী৭ জন

রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন গ্রন্থাগার। এই গ্রন্থাগারের আদি নাম ছিলো রাজশাহী সাধারণ পুস্তকালয়। ১৯৭৫ সালের গঠনতন্ত্র সংশোধনীর মাধ্যমে নামকরণ হয় রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার। ২০১৮ সালে গ্রন্থাগারের আদি ভবন ভেঙে ফেলে জীর্ণসংস্কারের কাজ চলছে।[১] ২০১৯-এ নবীকরণ সমাপ্ত হবার কথা থাকলেও ২০২১-এও তা সমাপ্ত হয় নি।[২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

দিঘাপাতিয়ার জমিদার রাজা প্রমদা নাথ রায়ের দানকৃত জমিতে কাশিমপুরের জমিদার রায় বাহাদুর কেদার নাথ প্রসন্ন লাহিড়ী কর্তৃক স্থাপিত বর্তমান ভবনে গ্রন্থাগারটি ১৮৮৪ সালে আনুষ্ঠানেকভাবে যাত্রা শুরু করলেও প্রকৃত সূচনাকাল আরো আগের। রাজশাহী নগরীর মিয়াপাড়ায় অবস্থিত বলে এটিকে ‘মিয়াপাড়া সাধারণ গ্রন্থাগার’ বলেই চেনে অনেকে। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রানী ভবানীর বংশধর রাজা আনন্দনাথ।

১৮৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা হয় এ গ্রন্থাগার। তবে এর আগে ১৮৭৬ সালে প্রকাশিত উইলিয়াম উইলসন হান্টার প্রণীত স্ট্যাটিস্টিক্যাল এ্যাকাউন্ট বইতে এই লাইব্রেরির কথা বলা হয়েছে। ১৮৮৪ সালে ভবন এবং জমি পাওয়ার পর এই লাইব্রেরিটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়। হান্টারের দেয়া তথ্য মতে ১৮৭১-৭২ সালে এই লাইব্রেরিতে বই ছিল মাত্র ৩ হাজার ২৪৭টি এবং সাময়িকী ছিল ছয়টি। এ সময় পাঠক ছিল নয়জন। এর মধ্যে ছয়জন ছিল ইংরেজ। রাজা আনন্দ রায়ের পরে তাঁর ছেলে রাজা চন্দ্র রায় বছরে ২০ পাউন্ড বা ২০০ টাকা অনুদান দিতেন।[৩]

রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার এর প্রধান ফটক

এর মধ্যে পুরাতন বাস স্ট্যান্ডের কাশিমপুর হাউসে এক সময় ছিল এই গ্রন্থাগার। দিঘাপতিয়ার রাজা প্রমদা নাথ রায়ের দান করা বর্তমান ভবনে মিয়াপাড়ায় গ্রন্থাগারটি স্থানান্তিরত হয়। তার চার ছেলে রাজা প্রমদনাথ রায়, কুমার বসন্ত কুমার রায়, কুমার শরৎ কুমার রায়, কুমার হেমন্ত কুমার রায় এবং মেয়ে রাজকুমারী ইন্দুপ্রভা রায় রাজশাহীর অন্য প্রতিষ্ঠানের মতো এই লাইব্রেরিতেও বিভিন্নভাবে সহায়তা দিতেন।

পুনর্নির্মাণ কাজ স্থবির থাকা অবস্থায় রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার (নভেম্বর ২০২১)

আগে জেলা প্রশাসন, রাজশাহী এ্যাসোসিয়েশন এবং জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র থেকে নিয়মিত

অনুদান পাওয়া যেত। এখন শুধু জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র থেকে বছরে অনুদান পাওয়া যায় ৬০ হাজার টাকা। এর মধ্যে বই হিসেবে দেয়া হয় ৩০ হাজার টাকা এবং নগদ অনুদান পাওয়া যায় ৩০ হাজার টাকা।

সংগ্রহ[সম্পাদনা]

এখানকার শতকরা ৫০ ভাগ বই দুষ্প্রাপ্য ও দুর্লভ। গ্রন্থাগারের বয়স ১৫০ বছর হলেও এখানে ২০০ বছরের পুরনো বইও আছে।[৪] স্কটল্যান্ড হতে প্রকাশিত সেক্মপিওর গ্রন্থাবলী ১ম সংস্করণ, অ্যানুয়াল রেজিষ্টার, মাইকেল মধূসূদন দত্তের একেই বলে সভ্যতা ১ম সংস্করণ. বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো ১ম সংস্করণ, ব্রিটিশ আমলের পত্রিকা ভারতবর্ষ, শনিবারের চিঠি, বসুমতি, রিভিউ প্রভৃতি দুস্পাপ্য গ্রন্থ ও পত্রিকা থাকার কারণে বহু গবেষকের আগমন ঘটে এখানে।[৫]

পরিচালনা[সম্পাদনা]

এই গ্রন্থাগার পরিচালনা করে একটি কার্যনির্বাহী পরিষদ। বর্তমানে এখানে আছে ৯ সদস্য বিশিষ্ঠ এডহক কমিটি। জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে এই কমিটির সভাপতি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। অন্য ৭ জন সদস্য জেলা প্রশাসক মনোনীত।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার: কাজ শুরু না হতেই টাকা শেষ!"banglanews24.com। ২০২০-০১-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-১০ 
  2. "চিত্র:রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার.jpg - উইকিপিডিয়া"commons.wikimedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-১০ 
  3. খান, আবদুর রশীদ। রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগারের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস 
  4. "১৩০ বছর ধরে আলো ছড়াচ্ছে রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার"বিডিটুডে.নেট। ২৬ নভে ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. রশিদ, মামুন-অর (২২ নভেম্বর ২০১৪)। "৩৬ বছর ধরে ৬১ হাজার বই সামলাচ্ছেন শুকুর ভাই"দৈনিক জনকন্ঠ। ঢাকা, বাংলাদেশ: জনাব আতিকুল্লাহ খান। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৭১৩০ বছরের প্রাচীন রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগার [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]