শয়তান
শয়তান বা শায়তান (আরবি: شَيْطَان, প্রতিবর্ণীকৃত: শায়তান, হিব্রু ভাষায়: שָׂטָן, "শয়তান " বা "দানব", বহুবচন: শায়াতিন (شَيَاطِين)) হল একটি মন্দ আত্মা যা মানুষের (এবং জ্বীনদের) অন্তরে "ফিসফিস" (وَسْوَسَة, ওয়াসওয়াসা) দ্বারা পাপ করতে প্ররোচিত করে (قَلْب ক্বলব)।[১][২] যদিও মানুষের কাছে অদৃশ্য, শায়তিনকে (নরক) আগুন থেকে সৃষ্ট কুৎসিত এবং বিভৎস প্রাণী হিসাবে কল্পনা করা হয়।[৩][৪](p২১)
কুরআন বিভিন্ন উপায়ের কথা বলে যে শায়তিন মানুষকে পাপে প্রলুব্ধ করে। তারা যাদু শেখাতে পারে, ফেরেশতাদের খবর চুরি করার জন্য স্বর্গের নিচে ভাসতে পারে, বা দেখা ছাড়া মানুষের কাছে লুকিয়ে থাকতে পারে। ইবলিস, যাদেরকে আশ-শয়তান ("শয়তান" বা " শয়তান " বলা হয়), তাদের নেতা। হাদিস সাহিত্য বিভিন্ন বিপর্যয়ের জন্য শায়তিনকে দায়ী করে যা ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে। হাদিস সাহিত্য এবং আরব লোককাহিনী উভয়ই সাধারণত শায়তিন সম্পর্কে বিমূর্ত ভাষায় কথা বলে, শুধুমাত্র তাদের খারাপ প্রভাব বর্ণনা করে। রমজান মাসে তাদেরকে জাহান্নামের শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।
মুসলিম দার্শনিক লেখনী অনুসারে, শায়তিন কাল্পনিক বাস্তবতায় 'আলাম আল-মিসাল' বা 'আলাম আল-মালাকুত' নামে অভিজাত ফেরেশতাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, যা দেবদূত এবং শয়তান উভয় গুণের সমন্বয়ে গঠিত। কিছু লেখক শায়তিনকে ঈশ্বরের উগ্র গুণাবলী এবং কর্মের অভিব্যক্তি হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ধর্মে
[সম্পাদনা]ইসলাম ও খ্রিষ্টান ধর্মে "'শয়তান"' কে যথাক্রমে "দুষ্ট জ্বীন" ও "দুষ্ট আত্মা" বলা হয়েছে। মানুষ খারাপ কাজ শয়তানের ধোকায় করে বলে এ ধর্মগুলোতে বলা হয়। বাইবেল ও কোরআনে অনেক জায়গায় শয়তানের ধোকা থেকে বাঁচার জন্য প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। মানুষ যে কোন খারাপ প্রবৃত্তির ব্যাপারে শয়তানকে দোষি সাব্যাস্ত করে থাকে। পবিত্র কোরআন এ উল্লেখ করা হয়েছে যে যখন আল্লাহ আদম কে সৃষ্টি করলেন এবং তিনি সকল ফেরেশতাদের বললেন তোমরা আদমকে সিজদাহ কর তখন সকল ফেরেশতা সিজদাহ করলো অথচ ইবলিশ ( শয়তান) সিজদা করল না। ফলে সে অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হলো এবং তাকে আল্লাহ অভিশপ্ত করলেন। বিশেষ করে ইসলাম ধর্মে শয়তানকে মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় শত্রু বলা হয়েছে। পবিত্র কোরআন এ শয়তান সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও ইসলামের দ্বিতীয় ধর্মশাস্ত্র অর্থাৎ হাদিস এও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শয়তানের বিষয়ে বর্ণনা রয়েছে।
সাধারণ ব্যবহার
[সম্পাদনা]মানুষ গালি হিসেবেও শয়তান শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। কেউ কোন খারাপ কাজ করলে সাধারণত তাকে শয়তান বলে গালি দেওয়া হয়।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ R. M. Savory Introduction to Islamic CivilizationCambridge University Press, 1976 আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫২১-০৯৯৪৮-৬ p. 42
- ↑ Szombathy, Zoltan, “Exorcism”, in: Encyclopaedia of Islam, Three, Edited by: Kate Fleet, Gudrun Krämer, Denis Matringe, John Nawas, Everett Rowson. ডিওআই:10.1163/1573-3912_ei3_COM_26268, First print edition: আইএসবিএন ৯৭৮-৯০-০৪-২৬৯৬৩-৭, 2014
- ↑ Oxford Centre for Islamic Studies
- ↑ el-Zein, Amira (2009). Islam, Arabs, and Intelligent World of the Jinn. Syracuse, NY: Syracuse University Press. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮১৫৬-৫০৭০-৬.
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ক্যাথলিক বিশ্বকোষ
- শয়তানের শিশু ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ জুলাই ২০০৯ তারিখে
- শয়তান - Unjustly Maligned
- “আল-কোরআন” জহুরুল হকের বাংলা অনুবাদ