১৯৭১ সেঁদিয়া হত্যাকাণ্ড
সেঁদিয়া হত্যাকাণ্ড | |
---|---|
স্থান | সেঁদিয়া, ফরিদপুর, পূর্ব পাকিস্তান |
তারিখ | ২০শে মে, ১৯৭১ (ইউটিসি+৬:০০) |
লক্ষ্য | বাঙালি হিন্দু |
হামলার ধরন | হত্যাকাণ্ড |
ব্যবহৃত অস্ত্র | লাইট মেশিন গান |
নিহত | ১২৭ |
হামলাকারী দল | পাকিস্তান সেনাবাহিনী |
সেঁদিয়া হত্যাকাণ্ড বলতে, অবিভক্ত ফরিদপুর জেলার সেঁদিয়া গ্রামে, ২০শে মে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দ্বারা বাঙালি হিন্দুর ওপর করা গণহত্যাকে বোঝায়।[১][২][৩]<[৪] ১২৭ জন নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করা হয়। যাদের মাঝে ৭৬ জনই মেয়ে ছিল।[৩]
পটভূমি[সম্পাদনা]
বর্তমানে সেঁদিয়া গ্রামটা ঢাকা বিভাগ-এর মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত। মাদারীপুর জেলা সদর থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার (১৫ মা) দূর।[১] ১৯৭১রে মাদারীপুর জেলা অবিভক্ত ফরিদপুর জেলার একটা উপজেলা ছিল মাত্র। তখন এঅঞ্চলে গাড়ি চালানোর উপযুক্ত কোনো রাস্তা ছিল না। অগত্যা জলপথই ভরসা। স্টীমার, নৌকোয় করেই মানুষজন যাতায়াত করতো। [২] সেঁদিয়ার আশপাশেই অম্বিকাচরণ মজুমদার, গৌরচন্দ্র বালা, ফণীভূষণ মজুমদার প্রভৃতি স্বাধীনতা সংগ্রামীরা জন্মেছিলেন। ঐতিহাসিকভাবেই রাজৈর উপজেলা একটা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা ছিল। অপারেশন সার্চলাইট অনুযায়ী পাকিস্তান সেনাবাহিনী টাকেরহাট স্টীমার স্টেশনের কাছেই ঘাঁটি গাড়ে।[২]
ঘটনাবলী[সম্পাদনা]
ঘটনার দিন ৫ই জৈষ্ঠ্য ১৩৭৮, ১৯৭১রের ১৯শে মে সকাল ৯টায়, কিছু পাকিস্তানি সেনা একটা লঞ্চে করে গোপালগঞ্জ জেলার ভেনাবাড়ীর উদ্দেশ্য রওনা দেয়।[২] তারা মাদারীপুর জেলার কাদম্বরী ইউনিয়নের চর ছামটায় গুলিবর্ষণ ও লুঠপাট করে। তারপর উলাবাড়ি গণহত্যা ঘটায়।[২][৩] সেখান থেকে তারা রাস্তায় গুলিবর্ষণ করতে করতে সেঁদিয়ার উদ্দেশ্য রওনা দেয়।[২]
বিকেল ৪টের সময়, ওরা আনসার বাহিনীর সাথে সেঁদিয়া পৌঁছয়। গুলির শব্দ শুনে খালিয়া, পালিতা, ছটিঁয়াবাড়ি গ্রামের হিন্দুরা সেঁদিয়া গ্রামের আখক্ষেতে লুকিয়ে পড়ে। যতক্ষণে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সেঁদিয়া পৌঁছয়, ততক্ষণে গোটা গ্রাম জনশূন্য হয়ে গেছে। আনসাররা লুঠপাট করে গোটা গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। কিছু বুড়োবুড়ি মানুষরা ঐ আগুনে জ্যান্ত পুড়ে যায়।[২][৪] তবে শেষপর্যন্ত পলায়নরত হিন্দুরা ধরা পড়ে যায়। ওদেরকে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয়।[৪] ছাগলদের চিৎকারে ও আখক্ষেতে নড়াচড়া বুঝতে পেরে সেনারা গুলি চালায়। ঐ আখক্ষেতেই সেমি-অটোমেটিক রাইফেলের গুলিতে কয়েকশো মানুষ মারা যায়।[১][২][৩] ছ'দিন পর আরো ৫ জন ধরা পড়ে। তাদেরও একই পরিনতি হয়।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ মাদারীপুরে গণকবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেই। Amar Desh (Bengali ভাষায়)। Dhaka। ২২ ডিসেম্বর ২০১২।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ Chakraborty, Nripendranath (২৩ ডিসেম্বর ২০১২)। শত শহীদের রক্তেভেজা মাদারীপুর রাজৈরের চারটি গ্রাম। Jai Jai Din (Bengali ভাষায়)। Dhaka। সংগ্রহের তারিখ ২২ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ Chakraborty, Nripendranath (২১ মার্চ ২০১০)। ৭৬ জন নারী ৩৯ বছর ধরে অন্ধকারে। Dainik Destiny (Bengali ভাষায়)। Dhaka। ১০ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ ক খ গ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" আজ মাদারীপুর সেনদিয়া গণহত্যা দিবস। uttaradhikar71news.com (Bengali ভাষায়)। ১৯ মে ২০১৩। ২৪ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ অক্টোবর ২০১৩।