সতীনাথ ভাদুড়ী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সতীনাথ ভাদুড়ী
সতীনাথ ভাদুড়ী
সতীনাথ ভাদুড়ী
জন্ম(১৯০৬-০৯-২৭)২৭ সেপ্টেম্বর ১৯০৬
ভট্টাবাজার, পূর্ণিয়া জেলা, বাংলা প্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৩০ মার্চ ১৯৬৫(1965-03-30) (বয়স ৫৮)
পূর্ণিয়া, বিহার, ভারত
ছদ্মনামচিত্রগুপ্ত
পেশাকথাসাহিত্যিক
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারতীয় (১৯০৬-১৯৪৭)
ভারতীয় (১৯৪৭-১৯৬৫)
ধরনউপন্যাস, ছোটগল্প
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিজাগরী, ঢোঁড়াই চরিত মানস, সত্যি ভ্রমণ কাহিনী
উল্লেখযোগ্য পুরস্কাররবীন্দ্র পুরস্কার

সতীনাথ ভাদুড়ী (২৭ সেপ্টেম্বর ১৯০৬ – ৩০ মার্চ ১৯৬৫) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক ও স্বাধীনতা সংগ্রামীভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় সমকালীন রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত জাগরী উপন্যাস তাঁকে খ্যাতি এনে দেয়। এই গ্রন্থটির জন্য ১৯৫০ সালে তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। বইটি ১৯৬৫ সালে ইউনেস্কো প্রতিনিধিত্বমূলক সাহিত্যকর্মের সংকলনের অংশ হিসেবে ইংরেজিতে অনূদিতও হয়।[১] তাঁর লেখা অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল উপন্যাস ঢোঁড়াই চরিত মানস (দুই খণ্ডে), অচিন রাগিণী এবং জার্নাল সত্যি ভ্রমণকাহিনী। সতীনাথ ভাদুড়ী বহু ভাষায় পারদর্শী ছিলেন এবং "চিত্রগুপ্ত" ছদ্মনামেও সাহিত্য রচনা করেন।

জীবন[সম্পাদনা]

জন্ম ও পারিবারিক পরিচয়[সম্পাদনা]

১৯০৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর (১১ আশ্বিন, ১৩১৩ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার) বিজয়াদশমীর দিন সন্ধ্যায় তদনীন্তন বাংলা প্রদেশের পূর্ণিয়ার (অধুনা ভারতের বিহার রাজ্যের অন্তর্গত) ভট্টাবাজারে সতীনাথ ভাদুড়ী জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ইন্দুভূষণ ভাদুড়ী (১৮৬৯-১৯৪৪) ও রাজবালা দেবীর ষষ্ঠ সন্তান। সতীনাথেরা ছিলেন তিন ভাই ও পাঁচ বোন; ভাইদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। সতীনাথ তাঁর জ্যেষ্ঠভ্রাতা ভূতনাথ ভাদুড়ীর বিশেষ স্নেহভাজন ছিলেন।[২]

সতীনাথের পিতা ইন্দুভূষণ ভাদুড়ীর আদি নিবাস ছিল অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার অন্তর্গত কৃষ্ণনগরে। এঁদের পূর্বপুরুষ সুধাময় খাঁ লাহিড়ী ছিলেন কৃষ্ণনগরের সম্পন্ন শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব। ইন্দুভূষণের মাতা মুক্তাকেশী দেবী ছিলেন রামতনু লাহিড়ীর ভ্রাতুষ্পুত্রী এবং একজন সংস্কৃতি-মনস্কা মহিলা।[২] ইন্দুভূষণ ১৮৯০ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর কিছুকাল দুই ভাই চন্দ্রভূষণ ও জ্যোতিভূষণের সঙ্গে একযোগে অধ্যাপনাও করেন। পরে আইন পাস করে আত্মীয় ভুবনমোহন সান্যালের পরামর্শক্রমে ১৮৯৬ সালে পূর্ণিয়া চলে আসেন এবং সেখানকার আদালতে ওকালতি শুরু করেন। নিজের চেষ্টায় অল্পদিনের মধ্যেই সে ব্যবসায়ে সাফল্যও অর্জন করেন। ১৯৪০ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ণিয়া আদালতে ওকালতি করেছিলেন। এর মধ্যে ১৯৩২ থেকে ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুত্র সতীনাথও তাঁকে ওকালতি ব্যবসায়ে সহায়তা করতেন। বিশিষ্ট হিন্দি কথাসাহিত্যিক ফণীশ্বরনাথ রেণু ছিলেন সতীনাথের বাল্যবন্ধু। সতীনাথ ও ফণীশ্বরনাথের পিতারা ছিলেন কর্মসূত্রে একে অপরের বিশেষ পরিচিত।[২] সতীনাথের মা রাজবালা দেবী ছিলেন হরিমোহন লাহিড়ীর কন্যা। বাবার চেয়ে মায়ের সঙ্গেই সতীনাথ ও তাঁর ভাইবোনেদের বেশি ঘনিষ্ঠতা ছিল। শৈশবে সতীনাথ বেশি অসুখবিসুখে ভুগেছিলেন। দু’বার নিউমোনিয়া ও প্রায়শই জ্বরে আক্রান্ত হতেন বলে দুর্বল সন্তানের প্রতি রাজবালা দেবীর মনোযোগও ছিল অধিক।[২]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

সতীনাথের বিদ্যালয় শিক্ষার সূত্রপাত পূর্ণিয়া জেলা স্কুলে। ১৯২৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি পাটনার সায়েন্স কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন এবং ১৯২৮ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক হন। এই বছরই তাঁর মা রাজবালা দেবীর মৃত্যু ঘটে। এরপর ১৯৩০ সালে সতীনাথ অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং পরের বছর পাটনা ল কলেজ থেকে বিএল পাস করেন।

কর্ম ও সাহিত্য জীবন[সম্পাদনা]

১৯৩২ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত সতীনাথ বাবার সহকর্মী রূপে পূর্ণিয়া আদালতে ওকালতি করেন। এই সময় তিনি বলিপ্রথা রদ ও মদের দোকানে পিকেটিং আন্দোলনের মতো বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজেও জড়িয়ে পড়েছিলেন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে বই সংগ্রহ করে পূর্ণিয়া গ্রন্থাগার স্থাপনেও অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন সতীনাথ। পরবর্তীকালে এই গ্রন্থাগারটির নাম সতীনাথের পিতার নামানুসারে রাখা হয় ইন্দুভূষণ সাধারণ গ্রন্থাগার। প্রায় একক উদ্যোগেই তিনি পূর্ণিয়ায় বাংলা পত্রিকা ক্লাব গঠন করেন এবং সাহিত্য পাঠ, স্মরণশক্তি প্রতিযোগিতা, সাহিত্যিকদের আড্ডা প্রভৃতির প্রচলন ঘটান। এই সূত্রেই তিনি বিশিষ্ট সাহিত্যিক কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য লাভ করেন। ইতিমধ্যে মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সক্রিয়ভাবে অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন। এই সময় পুলিশের চোখ এড়িয়ে গভীর রাতে বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের বার্তা পৌঁছে দিতেন। ১৯৪০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথমবারের জন্য কারারুদ্ধ হন সতীনাথ।[৩] ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় দ্বিতীয়বার কারাবাসকালে তিনি জেল ভেঙে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাই তাঁকে ভাগলপুরের সেন্ট্রাল জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। এই সময়টিই ছিল তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস জাগরী রচনার প্রস্তুতিকাল। ১৯৪৪ সালে তৃতীয় কারাবাসকালে তাঁর সঙ্গী ছিলেন ফণীশ্বরনাথ রেণু, অনাথবন্ধু বসু, ফণীগোপাল সেন, জয়প্রকাশ নারায়ণ, শ্রীকৃষ্ণ সিংহ, অনুগ্রহ নারায়ণ সিংহ প্রমুখেরা। এরপর ১৯৪৫ সালে প্রকাশিত হয় জাগরী

কংগ্রেস ত্যাগ[সম্পাদনা]

স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় সতীনাথ ভাদুড়ী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী এবং পূর্ণিয়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। কিন্তু দলের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও দলাদলিতে অতিষ্ঠ হয়ে ১৯৪৭ সালে কংগ্রেস ত্যাগ করে তিনি সমাজতন্ত্রী দলে যোগ দেন।[৪] এক পুরনো গ্রামীন পার্টিকর্মীর কাছে কংগ্রেস ছাড়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, কংগ্রেসের কাজ ছিল স্বাধীনতা অর্জন করা; সেই কাজ সম্পূর্ণ। এখন ‘রাজকার্য’ ছাড়া আর কংগ্রেসের কোনও কাজ নেই।

সম্মান ও শেষজীবন[সম্পাদনা]

কংগ্রেস ত্যাগের পর সতীনাথ পূর্ণিয়ায় কিশোর ও যুবকদের জন্য ব্যায়ামাগার গঠন করেন এবং শনিবারের সাহিত্যবাসর পরিচালনা করতে থাকেন। ১৯৪৯ সালে তিনি প্যারিসে যান; কিন্তু ছাড়পত্রের অভাবে স্পেনসোভিয়েত রাশিয়ায় যেতে পারেননি।[৫] বিদেশে থাকাকালীনই ১৯৫০ সালে তিনি জাগরী উপন্যাসের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্তির সংবাদ পান। তিনি এবং নীহাররঞ্জন রায় ছিলেন এই পুরস্কারের প্রথম প্রাপক। সেই বছরই দেশে ফিরে আসেন সতীনাথ। তাঁর সত্যি ভ্রমণকাহিনী বইটি এই সময় রচিত হয়।[৫] বিশিষ্ট হিন্দি সাহিত্যিক ফণীশ্বরনাথ রেণু তাঁর জীবনীমূলক স্মৃতিকথা ভাদুড়ীজী রচনা করেন, যা হিন্দি সাহিত্যে একটি বিশিষ্ট গ্রন্থ।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৯৬৫ সালের ৩০ মার্চ মাত্র আটান্ন বছর বয়সে পূর্ণিয়াতেই সতীনাথ ভাদুড়ীর মৃত্যু ঘটে।

সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

সতীনাথ ভাদুড়ী প্রসঙ্গে অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়

…সাম্প্রতিক বাংলা উপন্যাসের আলোচনা সতীনাথ ভাদুড়ীকে বাদ দিয়ে অসম্পূর্ণ থেকে যায়, সে বিষয়ে আমাদের কোনো সংশয় থাকা উচিত নয়। সতীনাথ ভাদুড়ী আসলে লেখকদের লেখক। তাঁর লেখা পাঠক সাধারণ না পড়লেও বাঙালি কথাসাহিত্যিক মাত্রেরই পড়া উচিত। সতীনাথ ভাদুড়ীর গল্প-উপন্যাস যতই পড়ি ততই এই ধারণা আমার মনে বদ্ধমূল হয় যে, [বিংশ] শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে বাংলা উপন্যাসে সতীনাথ ভাদুড়ী একটি অপরিহার্য নাম।[৬]

সতীনাথ ভাদুড়ী বহুপ্রসূ লেখক ছিলেন না। তাঁর উপন্যাস, গল্প-সংকলন ও অন্যান্য রচনা সংকলনের সংখ্যা মাত্র চোদ্দো। নিছক জনপ্রিয় কথাসাহিত্য রচনাও তাঁর লক্ষ্য ছিল না। অরুণকুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, "সতীনাথ ভাদুড়ীর জন্য বস্তুত পাঠকসমাজ প্রস্তুত ছিলেন না, ‘জাগরী’ উপন্যাস কয়েকজন প্রখ্যাত প্রকাশকের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরে প্রায়-অপরিচিত প্রকাশকের দ্বারা প্রকাশিত হয়। প্রথম রবীন্দ্র পুরস্কারে (১৯৫০) সম্মানিত হওয়ার পরেই পাঠকসমাজের দৃষ্টি পড়ে ‘জাগরী’র লেখকের প্রতি এবং আজ পর্যন্ত অনেকেই ‘জাগরী’ ছাড়া সতীনাথ ভাদুড়ীর অন্যান্য রচনার বিশেষ খোঁজ রাখেন না।"[৬] এই প্রসঙ্গে অরুণকুমার দেখিয়েছেন যে, জাগরী (একাদশ মুদ্রণ) ও সত্যি ভ্রমণকাহিনী (তৃতীয় মুদ্রণ) ছাড়া সতীনাথের কোনও বইই দ্বিতীয় মুদ্রণের মুখ দেখেনি। নিজের লেখা নিয়েও আত্মতুষ্ট হতে পারতেন না তিনি। লেখা নিয়ে নিরন্তর পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে যান।[৭]

উপন্যাস[সম্পাদনা]

জাগরী[সম্পাদনা]

জাগরী (১৯৪৫) সতীনাথ ভাদুড়ীর প্রথম উপন্যাস। গঠনকৌশল, চরিত্র-সৃষ্টি ও বিষয়বস্তুর সকল দিক থেকেই এটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। উপন্যাসটির উপজীব্য বিষয় হল রাজনীতির আবর্তে এক পরিবারের বাবা, মা ও দুই পুত্রের কথা। এক পুত্রের সাক্ষ্যের ফলে আরেক পুত্রের মৃত্যুদণ্ডের আগের রাতের ঘটনা চারটি চরিত্রের স্বগতোক্তির মধ্যে দিয়ে ফুটে উঠেছে।[৮]

ঢোঁড়াই চরিত মানস[সম্পাদনা]

দুই খণ্ডে প্রকাশিত ঢোঁড়াই চরিত মানস (১৯৪৯-৫১) উপন্যাসের পটভূমি বিহারের জিরনিয়া শহরের অদূরে তাৎমাটুলি। জাতে তাঁতি এই তাৎমাদের বৃত্তি ঘরামি ও কুয়োর বালি ছাঁকা। পাশের ধাঙ্গড়টুলিতে বড়ো হওয়া পরিত্যক্ত অনাথ বালক ঢোঁড়াই এই উপন্যাসের নায়ক। স্বাধীনতা আন্দোলনের শেষ পর্বের প্রেক্ষাপটে রচিত এই উপন্যাসে লেখক নায়ক ঢোঁড়াইকে করে তুলেছেন রামচন্দ্রের আধুনিক সংস্করণ। রাজনৈতিক চেতনা সমাজের নিচুতলায় প্রবেশ করে কীভাবে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয় এবং ঢোঁড়াইকে "রামায়ণজী"-তে পরিণত করে, তা-ই এই উপন্যাসের উপজীব্য। শিশিরকুমার দাশের মতে, "এই কাহিনীতে অন্তর্লীন হয়ে আছে তুলসীদাসের রামচরিতমানস। রাজনীতি ও সমাজ পরিবর্তন ও সমাজের অন্ত্যজ মানুষের বিশ্বস্ত রূপায়ণ এবং রামচরিতমানসের সঙ্গে আধুনিক কাহিনীর অন্তর্বয়ন এই তিনদিক থেকে এই আখ্যান বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রচনাগুলির অন্যতম।"[৯]

শেষ পর্যায়ের উপন্যাসত্রয়ী[সম্পাদনা]

অধ্যাপক অরুণকুমার মুখোপাধ্যায় অচিন রাগিণী (১৯৫৪), সংকট (১৯৫৭) ও দিগভ্রান্ত (১৯৬৬) উপন্যাস তিনটিকে সতীনাথ ভাদুড়ীর "শেষ পর্যায়ের উপন্যাসত্রয়ী" আখ্যা দিয়েছেন। ঢোঁড়াই চরিত মানস রচনার পর আত্মতুষ্ট হতে না পেরে সতীনাথ এই তিনটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। এই উপন্যাসগুলিকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে অরুণকুমার লিখেছেন, "চেতনলোক থেকে অবচেতনলোকে চরিত্রের নিঃসঙ্গ যাত্রা, বিচ্ছিন্নতাবোধ ও বিষাদে আক্রান্ত চরিত্রের কন্ফেস্যন্, অন্তঃসংলাপ, চিন্তার আপাত খাপছাড়া অনুষঙ্গ ও স্বেচ্ছাবিহারের আড়ালে সংলগ্ন আত্মকথন, আপাত শিথিল-গ্রথিত মুহুর্তের সমাহারে এক অখণ্ড জীবনবোধ, ব্যক্তির বিচ্ছিন্নতাবোধ ও নিঃসঙ্গতার সঙ্গে অপর ব্যক্তি ও সমাজের অদৃশ্য সংগ্রাম, জীবনের অসামঞ্জস্য ও অসঙ্গতির মধ্যে নতুন অর্থান্বেষণ, বাইরের সমাজ ও ঘটনার গুরুত্ব অস্বীকার, আধুনিক জীবনের ভিতরের রোগ নির্ণয় ও বিশ্লেষণ, মনোগহনের জটিল আঁধারে সন্ধানী আলো-নিক্ষেপ, সময় ও স্মৃতি সমবায়ে গঠিত এক নতুন শিল্প জগৎ সতীনাথের শেষ উপন্যাসত্রয়ীতে রূপ পেয়েছে।"[১০] সেই সঙ্গে অরুণকুমার এই তিন উপন্যাসে শিল্পকৌশল প্রচ্ছন্ন রাখা প্রসঙ্গে লেখেন, "তিনি শিল্পকৌশলকে এমনভাবে প্রচ্ছন্ন রেখেছেন যে তা ধরাই যায় না। কতো অনায়াসভঙ্গিতে তিনি পাঠককে এক জটিল মনোজগতে নিয়ে যান, তা পাঠক টের পান না। যখন তা টের পাওয়া যায়, তখন পাঠক সেই জগতের চিন্তার অংশীদার হয়ে যান।"[১০]

অচিন রাগিণী উপন্যাসটি পাতানো নতুন-দিদিমার সঙ্গে দুই কিশোর পিলে ও তুলসীর "টানভালোবাসার গল্প"।[১০] এই উপন্যাসে কাহিনী মূল্যহীন; এর মূল্য উক্ত তিন চরিত্রের পারস্পরিক সম্পর্কের বিশ্লেষণে।[১০] সংকট উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র বিশ্বাসজীর উপর সতীনাথ ভাদুড়ীর নিজের চরিত্রের ছায়া পড়েছে। উপন্যাসটির উপজীব্য একদা রাজনৈতিক কর্মী বিশ্বাসজীর আত্মানুসন্ধান। অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে এই আত্মানুসন্ধানের মধ্যে পাশ্চাত্য উপন্যাসের নায়কের আত্মানুসন্ধানের মিল পাওয়া যায়।[১১] দিগভ্রান্ত উপন্যাসটি আধুনিক মানুষের বিচ্ছিন্নতাবোধ ও নিঃসঙ্গতা এবং বিষাদ ও নৈরাশ্য থেকে সঙ্গলাভ ও আশায় উত্তরণের কাহিনি। ডাক্তার সুবোধ মুখোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী অতসীবালা ও দুই ছেলেমেয়ে মণি ও সুশীলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই উপন্যাসে আপাতদৃষ্টিতে আখ্যানভাগ নির্মাণে লেখকের মনোযোগ ধরা পড়েছে। আধুনিক সমাজে মানুষ পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে কতটা দিগভ্রান্ত তারই অনুপূঙ্খ বিশ্লেষণ পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।[১২]

ছোটোগল্প[সম্পাদনা]

অন্যান্য রচনা[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

সতীনাথ ভাদুড়ী রচিত বইগুলির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ নিচে দেওয়া হল:[১৩][১৪]

উপন্যাস
  • জাগরী (৪ অক্টোবর, ১৯৪৫): প্রথম প্রকাশিত হয় সমবায় পাবলিশার্স থেকে। পরে বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে দ্বিতীয় মুদ্রণ এবং প্রকাশভবন থেকে একাধিক সংস্করণ প্রকাশিত হয়। ১৯৪৮ সালের জুলাই মাসে বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে এই উপন্যাসের একটি কিশোর সংস্করণ প্রকাশিত হয়।
  • চিত্রগুপ্তের ফাইল (সেপ্টেম্বর, ১৯৪৯): বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত।
  • ঢোঁড়াই চরিত মানস, প্রথম চরণ (১৯৪৯): বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত।
  • ঢোঁড়াই চরিত মানস, দ্বিতীয় চরণ (১৯৫১): বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত।
  • অচিন রাগিনী (নভেম্বর, ১৯৫৪): বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত।
  • সংকট (জুন, ১৯৫৭): বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত।
  • দিকভ্রান্ত (১৯৬৬): লেখকের মৃত্যুর পর প্রকাশভবন থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়।
ছোটোগল্প-সংকলন
  • গণনায়ক (১৯৪৮): বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয়। এই সংকলনের অন্তর্গত গল্পগুলি হল: "গণনায়ক", "বন্যা", "আন্টাবাংলা", "পঙ্কতিলক" ও "ভূত"।
  • অপরিচিতা (সেপ্টেম্বর, ১৯৫৪): বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয়। এই সংকলনের অন্তর্গত গল্পগুলি হল: "অপরিচিতা", "পরিচিতা", "ফেরবার পথ", "রথের তলে", "ষড়যন্ত্র", "মামলার রায়", "অত্যাবশ্যক" ও "ঈর্ষা"।
  • চকাচকী (অগস্ট, ১৯৫৬): প্রকাশভবন থেকে প্রকাশিত হয়। এই সংকলনের অন্তর্গত গল্পগুলি হল: "চকাচকী", "বৈয়াকরণ", "ডাকাতের মা", "বিবেকের গণ্ডী", "মুষ্টিযোগ", "রাজকবি", "মুনাফা ঠাকরুণ" ও "তবে কি"।
  • পত্রলেখার বাবা (মার্চ, ১৯৫৯): প্রকাশভবন থেকে প্রকাশিত হয়। এই সংকলনের অন্তর্গত গল্পগুলি হল: "পত্রলেখার বাবা", "কম্যান্ডার ইন চিফ", "বাহাত্তুরে", "কণ্ঠকণ্ডুত্তি", "সাঁঝের শীতল", "একটি কিংবদন্তীর জন্ম", "পূতিগন্ধ", "অভিজ্ঞতা" ও "ধস"।
  • জলভ্রমি (এপ্রিল, ১৯৬২): বাকসাহিত্য থেকে প্রকাশিত হয়। এই সংকলনের অন্তর্গত গল্পগুলি হল: "মহিলা ইনচার্জ", "কৃষ্ণকলি", "জলভ্রমি", "স্বর্গের স্বাদ", "চরণদাস এম.এল.এ.", "দাম্পত্য সীমান্তে", "দুই অপরাধী", "পদাঙ্ক" ও "হিসাবনিকাশ"।
  • আলোকদৃষ্টি (মার্চ, ১৯৬৪): বাকসাহিত্য থেকে প্রকাশিত হয়। এই সংকলনের অন্তর্গত গল্পগুলি হল: "আলোকদৃষ্টি", "জাদুগণ্ডি", "ব্যর্থতপস্যা", "পরকীয়া সন-ইন-ল", "তিলোত্তমা সংস্কৃতি সংঘ", "জোড়কলম", "বায়োকেমি", "শেষ সংখ্যান", "গোঁজ" ও "সরমা"।
জার্নাল
  • সত্যি ভ্রমণকাহিনী (সেপ্টেম্বর, ১৯৫১): বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত।
অনূদিত গ্রন্থ
  • জাগরী (হিন্দি অনুবাদ: নারায়ণপ্রসাদ বর্মা; জুলাই, ১৯৪৮): বিহার সাহিত্য ভবন থেকে প্রকাশিত। বইটির ভূমিকা লিখে দেন সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
  • দ্য ভিজিল, (ইংরেজি অনুবাদ: লীলা রায়; মার্চ, ১৯৬৫): জাগরী উপন্যাসের অনুবাদ। ইউনেস্কোর উদ্যোগে এশিয়া পাবলিশিং হাউস থেকে প্রকাশিত হয়।
  • ঢোঁড়াই চরিত মানস (হিন্দি অনুবাদ: গঙ্গাধর মধুকর; ১৯৭৪)
রচনা-সংকলন
  • সতীনাথ বিচিত্রা (কার্তিক, ১৩৭২): প্রকাশভবন থেকে প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থের অন্তর্গত রচনাগুলি হল: গল্প - "দিগভ্রান্ত", "মা আম্রফলেষু", "বমিকপালিয়া", "তলানির স্বাদ", "অজাগড়", "রোগী", "ব্লাডপ্রেশার", "একচক্ষু", "একঘণ্টার রাজা", "করদাতা সংঘ জিন্দাবাদ", "রহস্য", "জামাইবাবু", "ওয়ারকোয়ালিটি" ও "আন্তর্জাতিক"; কবিতা - "গোপাল জাগো জাগো", "দিনপঞ্জি", "মোচের লড়াই" ও "মোহনপুরের ছবি"; "মুনাফা ঠাকরুণ" গল্পের নাট্যরূপ "পারবে না ওদের সঙ্গে"; রম্যরচনা ও প্রবন্ধ - "ঢোঁড়াই", "দুইটি খেলা", "সসংকোচ", "আমি কালিদাস", "অনুসন্ধানী", "প্যারিস ও লন্ডন", "ম্যাকরোনির স্মৃতি", "পড়ুয়ার নোট থেকে", "মধুসূচন ও লা ফঁতেন" ও "ইংলণ্ডে গান্ধীজি"।
গ্রন্থাবলি
  • সতীনাথ গ্রন্থাবলী, ৪ খণ্ডে, সম্পাদনা: শঙ্খ ঘোষ ও নির্মল আচার্য, অরুণা প্রকাশনী, কলকাতা (বর্তমানে মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স থেকে সতীনাথ ভাদুড়ী রচনাবলী নামে প্রকাশিত)
    • প্রথম খণ্ড (জানুয়ারি, ১৯৭৩): "সতীনাথ ভাদুড়ী: প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠা"; উপন্যাস - জাগরী, চিত্রগুপ্তের ফাইল; গল্প - "গণনায়ক", "বন্যা", "আন্টাবাংলা", "পঙ্কতিলক", "ভূত", "অপরিচিতা", "পরিচিতা", "ফেরবার পথ", "রথের তলে", "ষড়যন্ত্র", "মামলার রায়", "অত্যাবশ্যক" ও "ঈর্ষা"; গ্রন্থ প্রসঙ্গ।
    • দ্বিতীয় খণ্ড (জুলাই, ১৯৭৩): "সতীনাথ ভাদুড়ী: নিঃসঙ্গ দীক্ষা" (এখানে ডায়রির উল্লেখ আছে); উপন্যাস: ঢোঁড়াই চরিত মানস, প্রথম ও দ্বিতীয় চরণ; গল্প -"চকাচকী", "বৈয়াকরণ", "ডাকাতের মা", "বিবেকের গণ্ডী", "মুষ্টিযোগ", "রাজকবি", "মুনাফা ঠাকরুণ", "তবে কি", "পত্রলেখার বাবা", "কম্যান্ডার ইন চিফ", "বাহাত্তুরে", "কণ্ঠকণ্ডুত্তি", "সাঁঝের শীতল", "একটি কিংবদন্তীর জন্ম", "পূতিগন্ধ", "অভিজ্ঞতা" ও "ধস"; গ্রন্থ প্রসঙ্গ।
    • তৃতীয় খণ্ড (জুলাই, ১৯৭৪): "সতীনাথ ভাদুড়ী: অসম্পন্ন সাধনা" (এই অংশে লেখকে অলিখিত উপন্যাস জারজ-এর খসড়া মুদ্রিত হয়েছে); উপন্যাস - অচিন রাগিণী, সংকট; গল্প - "মহিলা ইনচার্জ", "কৃষ্ণকলি", "জলভ্রমি", "স্বর্গের স্বাদ", "চরণদাস এম.এল.এ.", "দাম্পত্য সীমান্তে", "দুই অপরাধী", "পদাঙ্ক", "হিসাবনিকাশ", "আলোকদৃষ্টি", "জাদুগণ্ডি", "ব্যর্থতপস্যা", "পরকীয়া সন-ইন-ল", "তিলোত্তমা সংস্কৃতি সংঘ", "জোড়কলম", "বায়োকেমি", "শেষ সংখ্যান", "গোঁজ" ও "সরমা"; গ্রন্থ প্রসঙ্গ।
    • চতুর্থ খণ্ড (অগস্ট, ১৯৭৫): "সতীনাথ ভাদুড়ী: জীবনযাপন"; উপন্যাস - দিগভ্রান্ত; গল্প - "জামাইবাবু", "ওয়ারকোয়ালিটি", "আন্তর্জাতিক", "তলানির স্বাদ", "অজাগড়", "রোগী", "দিগভ্রান্ত", "মা আম্রফলেষু", "ব্লাডপ্রেশার", "একঘণ্টার রাজা", "করদাতা সংঘ জিন্দাবাদ", "বমিকপালিয়া", "একচক্ষু" ও "রহস্য"; নাটক - পারবে না এদের সঙ্গে; প্রবন্ধ - "ইংলণ্ডে গান্ধীজি", "প্যারিস ও লন্ডন", "ম্যাকরোনির স্মৃতি", "পড়ুয়ার নোট থেকে", "হায় রবীন্দ্রনাথ", "উপন্যাস ও ভূগোল", "অনুসন্ধানী", "আমি কালিদাস", "মধুসূচন ও লা ফঁতেন", "সসংকোচ" ও "দুইটি খেলা"; ভ্রমণকাহিনি - সত্যি ভ্রমণকাহিনী; কবিতা - "দিবাস্বপ্ন", "দিনপঞ্জী", "মোচের লড়াই" ও "মোহনপুরের ছবি"; গ্রন্থ প্রসঙ্গ।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "দ্য ভিজিল [জাগরী]" 
  2. "জন্মের প্রথমক্ষণে", ভারতীয় সাহিত্যকার পুস্তকমালা: সতীনাথ ভাদুড়ী, স্বস্তি মণ্ডল, সাহিত্য অকাদেমি, নতুন দিল্লি, ২০০২ সংস্করণ, পৃ. ১-৫
  3. SATINATH BHADURI RACHANABALI VOL-1, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৩-৫০২০-০৪৯-০, জুন-২০১৪
  4. দত্ত, অমরেশ (১৯৮৭)। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইন্ডিয়ান লিটারেচার: এ-দেবো [ভারতীয় সাহিত্যকোষ: এ-দেবো] (ইংরেজি ভাষায়)। সাহিত্য অকাদেমি। পৃষ্ঠা ৪১৯৪২০আইএসবিএন 978-81-260-1803-1 
  5. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, ১ম খণ্ড, প্রধান সম্পাদক: সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত, সম্পাদক: অঞ্জলি বসু, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ১৯৯৮ সংস্করণ, ২০০২ সংশোধিত মুদ্রণ, পৃ. ৫৪৪
  6. কালের প্রতিমা: বাংলা উপন্যাসের পঁচাত্তর বছর (১৯২৩-১৯৯৭), অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ২০১৯ সংস্করণ, পৃ. ১২৮
  7. ভারতীয় সাহিত্যকার পুস্তকমালা: সতীনাথ ভাদুড়ী, স্বস্তি মণ্ডল, সাহিত্য অকাদেমি, নতুন দিল্লি, ২০০২ সংস্করণ, পৃ. তিন
  8. সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী, সংকলন ও সম্পাদনা: শিশিরকুমার দাশ, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ২০০৩ সংস্করণ, পৃ. ৮৪
  9. সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী, সংকলন ও সম্পাদনা: শিশিরকুমার দাশ, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ২০০৩ সংস্করণ, পৃ. ৯০
  10. কালের প্রতিমা: বাংলা উপন্যাসের পঁচাত্তর বছর (১৯২৩-১৯৯৭), অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ২০১৯ সংস্করণ, পৃ. ১৩৬
  11. কালের প্রতিমা: বাংলা উপন্যাসের পঁচাত্তর বছর (১৯২৩-১৯৯৭), অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ২০১৯ সংস্করণ, পৃ. ১৩৯, ১৪১
  12. কালের প্রতিমা: বাংলা উপন্যাসের পঁচাত্তর বছর (১৯২৩-১৯৯৭), অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ২০১৯ সংস্করণ, পৃ. ১৪১
  13. কালের প্রতিমা: বাংলা উপন্যাসের পঁচাত্তর বছর (১৯২৩-১৯৯৭), অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ২০১৯ সংস্করণ, পৃ. ১৪৪
  14. "গ্রন্থপঞ্জি", ভারতীয় সাহিত্যকার পুস্তকমালা: সতীনাথ ভাদুড়ী, স্বস্তি মণ্ডল, সাহিত্য অকাদেমি, নতুন দিল্লি, ২০০২ সংস্করণ, পৃ. ৭৭-৮০

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • বাংলা উপন্যাসের কালান্তর, সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়
  • সতীনাথ ভাদুড়ী: সাহিত্য ও সাধনা, গোপাল হালদার
  • প্রসঙ্গ: জাগরী, পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায়
  • সতীনাথ: মনন ও শিল্প, মিহিরকুমার মজুমদার
  • জাগরী ও ঢোঁড়াই চরিত মানস, ড: স্বস্তি মণ্ডল।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]