শ্মশান কালী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শ্মশান কালী
সৃষ্টি, পরিবর্তন, স্থিতি ও শক্তির দেবী
শ্মশান কালী, কেওড়াতলা শ্মশান
দেবনাগরীश्मशान काली
অন্তর্ভুক্তিহিন্দু দেবী , মাতৃকা, মহাশক্তি
আবাসশ্মশান
অস্ত্রআসবপূর্ণ খর্পর,মাংসখণ্ড,নরমুণ্ড
বাহনশবশিব
সঙ্গীমহাকাল

শ্মশান কালী দশমহাবিদ্যার[১][২] প্রথম বিদ্যা কালী বা কালিকার এক রূপ।[৩][৪] শাস্ত্র মতে দেবী কালিকা ব্রহ্মময়ী। তিনি নিরাকার ও সাকারও উভয় রূপেই অবস্থান করেন। কালী বিষয়ক আলোচনা ও পূজার আচার বা বিদ্যাকে মহাবিদ্যা বলা হয়। মা কালীর ধ্যান বর্ণিত স্থূল রূপ একটি রূপক মাত্র। শাস্ত্রজ্ঞগণ মনে করেন কালীকুল শরণাপন্ন হয়ে তান্ত্রিক কুল দীক্ষা ছাড়া এই কালীরূপ বা বিদ্যার প্রকৃত মর্ম উপলব্ধি অসম্ভব।

বাঙলার প্রায় সব শ্মশানেই শ্মশান কালী পূজা হয়। কোথাও নিত্য আবার কোথাও বা বাৎসরিক পূজা হয়ে থাকে।

দেবী বর্ণনা[সম্পাদনা]

শ্মশান কালীর ধ্যানবর্ণিত রূপ হল[৩][৪] -

শাস্ত্র মতে মা কালির রূপ শতসহস্র। তাই কমলাকান্ত ভট্টাচার্য তার শ্যামাসংগীতে বলেছেন[৫]

পূজার স্থান[সম্পাদনা]

মানুষ তার প্রয়োজনে যেমন ভাবে কালিকার সাধনা করেছেন, সাধককের কাছে সেই কর্মের প্রয়োজন অনুরূপ রূপে প্রতিভাত হয়েছেন। কালী সব রূপই শ্মশানবাসিনী। তবে গৃহস্থের বাড়িতে তার আরাধনা মূলত দক্ষিণা কালিকা বা রক্ষাকালী রূপেই হয়। তবে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে শ্মশানকালীকে মানুষ শ্মশানেই পুঁজো করতে অভ্যস্ত।

পূজা[সম্পাদনা]

এই শ্মশান কালীর পূজা তান্ত্রিকগণ মৎস ,মাংস আর মদ্য উপাচার দ্বারা পূজা করে থাকেন। তবে , এই তান্ত্রিক মৎস,মাংস বা মদ্য বলতে যা জিনিসকে নির্দেশ করে আসলে সেটি একটি সঙ্কেত মাত্র। শাস্ত্রীয় মতে সদগুরুর সাহায্য পেলে তবেই এই পঞ্চ ম-কারের প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি সম্ভব। বাস্তবে পঞ্চ ম-কারের সাধনা করা সাধকের সংখ্যা অতি বিরল। এই শ্মশান কালীর পূজায় অন্যান্য সবকিছু দক্ষিণা কালিকা পূজার অনুরূপ। পূজা যন্ত্রে সামান্য কিছু প্রভেদ বর্তমান।বীজমন্ত্র দক্ষিণা কালিকার মন্ত্র হতে ভিন্ন। তবে মা কালীর মূল বীজ যে কোন রূপভেদেও এক ও অভিন্ন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. The Ten Great Cosmic Powers: Dasa Mahavidyas (ইংরেজি ভাষায়) (৪র্থ সংস্করণ সংস্করণ)। চেন্নাই: সমতা বুকস। ১৯৭২। 
  2. Tantric Visions of the Divine Feminine: The Ten Mahavidyas (ইংরেজি ভাষায়)। Berkeley: University of California Press। ১৯৯৭। আইএসবিএন 0-520-06339-2 
  3. Mahavidyas Hindu goddesses: visions of the divine feminine in the Hindu religious tradition, by David R. Kinsley. University of California Press, 1988. আইএসবিএন ০-৫২০-০৬৩৩৯-২. Page 161-165.
  4. পৌরাণিকা: বিশ্বকোষ হিন্দুধর্ম, প্রথম খণ্ড, অমলকুমার মুখোপাধ্যায়, ফার্মা কেএলএম প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ২০০১
  5. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ১১২, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬