পাতি কাল কেউটে: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
১৭ নং লাইন: ১৭ নং লাইন:
}}
}}


'''পাতি কাল কেউটে''' (''Bungarus caeruleus)'' [[শ্রীলঙ্কা]], [[ভারত]], [[বাংলাদেশ]], [[মিয়ানমার]], [[মালয়েশিয়া]],[[চীন]], [[কম্বোডিয়া]], [[থাইল্যান্ড]] ,[[ভিয়েতনাম]] এবং [[নেপাল|নেপালের]] স্হানীয় [[এলাপিডি]] পরিবারের [[বিষধর সাপ|বিষধর]] [[সাপ|সাপের]] প্রজাতি। এটি '''বৃহৎ চার'''টি প্রজাতি গুলোর একটি যেগুলো ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষকে বেশী দংশন করেছে।<ref>Clinical Toxinology-Bungarus caeruleus". Archived from the original on 2016-10-16. Retrieved 2011-11-10.</ref>
'''পাতি কাল কেউটে''' (''Bungarus caeruleus)'' [[শ্রীলঙ্কা]], [[ভারত]], [[বাংলাদেশ]], [[মিয়ানমার]], [[মালয়েশিয়া]],[[চীন]], [[কম্বোডিয়া]], [[থাইল্যান্ড]] ,[[ভিয়েতনাম]] এবং [[নেপাল|নেপালের]] স্হানীয় [[এলাপিডি]] পরিবারের বা [[বিষধর সাপ|বিষধর]] [[সাপ|সাপের]] প্রজাতি। এটি '''বৃহৎ চার'''টি প্রজাতি গুলোর একটি যেগুলো ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষকে বেশী দংশন করেছে।<ref>Clinical Toxinology-Bungarus caeruleus". Archived from the original on 2016-10-16. Retrieved 2011-11-10.</ref>


==বর্ণনা==
==বর্ণনা==

০৯:৩২, ৭ জুন ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

পাতি কাল কেউটে
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: সরিসৃপ
বর্গ: Squamata
পরিবার: Elapidae
গণ: Bungarus
প্রজাতি: caeruleus'
দ্বিপদী নাম
Bungarus caeruleus
(Schneider, 1801)
প্রতিশব্দ
  • Pseudoboa caerulea Schneider, 1801
  • Bungarus candidus var. Cærulus Boulenger, 1896

পাতি কাল কেউটে (Bungarus caeruleus) শ্রীলঙ্কা, ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া,চীন, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড ,ভিয়েতনাম এবং নেপালের স্হানীয় এলাপিডি পরিবারের বা বিষধর সাপের প্রজাতি। এটি বৃহৎ চারটি প্রজাতি গুলোর একটি যেগুলো ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষকে বেশী দংশন করেছে।[১]

বর্ণনা

পাতি কালকেউটের স্বাভাবিক দৈর্ঘ্য ০.৯ মিটার বা ৩ ফুট যদিও এর দ্বিগুণ অর্থাৎ ১.৭৫ মিটার বা ৫ফুট ৯ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের সাপও পাওয়া গিয়েছে।[২] নবজাতকেরা দৈর্ঘ্যে ২৫-২৭ সে.মি. হয়। পুরুষ সাপ দৈর্ঘ্যে বড় এবং এদের পুচ্ছটি আনুপাতিকভাবে দীর্ঘতর। মাথা চ্যাপ্টা, ঘাড় প্রায় নেই বললেই হয়। দেহটি বেলনাকৃতি, লেজের কাছে সরু হয়ে এসেছে। লেজ ছোট এবং গোল। চোখদুটি ছোট ছোট, চোখের তারা কাল। মাথা বড় বড় আঁশে ঢাকা, যাদের শিরবর্ম বলা হয়, সংখ্যায় সাতটি।[৩]

প্রথমটি চোখের ঠিক উপরে নাসারন্ধ্রকে স্পর্শ করে। চোখ এবং নাসারন্ধ্রের মধ্যে কোন ফাঁক নেই। নীচের ঠোঁট বরাবর চারটি শিরবর্ম থাকে, তার মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থটি চোখের ঠিক পাশে।বাকী দুটি চোখের পিছনভাগে। মাথার দুপাশে দুটি। সারা দেহ মসৃণ চকচকে আঁশে ঢাকা। আঁশগুলি ১৫-১৭ সারিতে সাজানো। শিরদাঁড়া বরাবর যে আঁশগুলি, সেগুলি একটু বড় ও ষড়ভুজাকৃতি। বুক-পেটের কাছে আঁশের সংখ্যা ১৮৫ থেকে ২২৫, নীচের দিকে ৩৭ থেকে ৫০[৪]

এদের গাত্রবর্ণ সচরাচর কালো অথবা নীলচে কালো। দেহ ঘিরে আছে কম-বেশি ৪০টি সরু সাদা ফিতের মতন দাগ, পিঠের দিকে স্পষ্ট কিন্তু পেটের কাছে প্রায় অদৃশ্য়। শিশুদের ক্ষেত্রে যদিও এই দাগ অনেক বেশি স্পষ্ট ও সম্পূর্ণ পেটের কাছেও। আবার বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই দাগ অনেক সময় আবছা হতে হতে পাশাপাশি কয়েকটি বিন্দুতে পরিণত হয়, শুধু শিরদাঁড়ার নিকটবর্তী বিন্দুটি স্পষ্টতর থাকে। এদের পেট এবং নীচের ঠোঁট সাদা, - শিশুদের সম্পূর্ণ সাদা, বয়স্কদের হলদে সাদা।চোখের কাছে সাদা দাগ থাকতে পারে। প্রজাতিটির শ্বেতীরোগাক্রান্ত নমুনারও সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যদিও তা খুব বিরল।

বিরল আলবিনজম বা শ্বেত

আবাস

পাতি কালকেউটে এশিয়ায় ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলংকা, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে দেখতে পাওয়া যায়। ভারতের উত্তরপশ্চিম সীমান্ত থেকে পূবে পশ্চিমবঙ্গ ও সমগ্র দক্ষিণ ভারতে এদের সন্ধান পাওয়া যায়। বাসস্থান নির্বাচনে এদের বিশেষ বাছবিচার নেই, মাঠে, ঝোপঝাড়ে, অগভীর জঙ্গলে এমনকি মনুষ্যবসতি-পূর্ণস্থানেও এরা বাসা বাঁধতে পারে। উইঢিবি, ইঁটের পাঁজা, ইঁদুরের গর্ত অথবা মানুষের বাড়ির ভিতরে এরা আস্তানা গেঁড়ে থাকে। গ্রামাঞ্চলে জলে অথবা জলের ধারে এদের হামেশাই দেখতে পাওয়া যায়।

প্রাকৃতিক সমন্বয় ও আচরণ

পাতি কালকেউটে নিশাচর প্রাণী, সন্ধ্যার শেষভাগ থেকে পরের দিন প্রাতঃকাল অবধি এদের বিচরণের সময়[৫]। অন্যান্য সরীসৃপের মতন এরাও বুকে হেঁটে চলে। ভূতল এদের বাসস্থানের পছন্দের জায়গা। তবে শিকারের সন্ধানে বা আত্মগোপনের প্রয়োজনে খাড়া অমসৃণ দেওয়ালও বাইতে পারে। এদের দিনের এবং রাতের আচরণে বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্যে করা যায়। দিবাভাগে এরা শ্লথ এবং নিরীহ। প্রায়শঃ ইঁদুরের গর্ত, আলগা মাটি বা জঞ্জাল স্তূপের মধ্যে লুকিয়ে থাকে, দেখা যায়না। এ সময় সচরাচর এরা দেহটাকে কুণ্ডলী পাকিয়ে মাথাটাকে কুণ্ডলীর মধ্যে গুঁজে রাখে। এসময় এদের নাড়াচাড়া করলেও এরা বিশেষ আপত্তি করে না, তবে বাড়াবাড়ি করলেই বিপদ, দংশন অনিবার্য।

রাতে আবার এরাই হয়ে ওঠে সজাগ এবং সতর্ক এবং অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। যখন বিচরণ করতে বেরোয় মুখ দিয়ে জোরে হিসহিস শব্দ করে, কিংবা নিঃসাড়ে পড়ে থাকে কিন্তু হুমকিতে হলেই দংশন করতে ছাড়েনা। ভয় পেলে বা উত্তেজিত হলে এরা দেহটাকে চ্যাপ্টা করে কুণ্ডলী পাকিয়ে ফেলে, মাথাটাকে তার মধ্যে লুকিয়ে ফেলে আর সমস্ত শরীর ঝাঁকাতে থাকে। এই সময় এরা কামড়াতে চায়না কিন্তু যদি কামড়ায় তবে বেশ কিছুক্ষণ কামড়টাকে ধরে রাখে যার ফলে দংশিত প্রাণীর শরীরে অনেকটা বিষ ঢুকে যায়।

খাদ্য

পাতি কালকেউটে একটি মাংসাশী প্রাণী। অন্যান্য ছোট ছোট প্রাণী যেমন ইঁদুর, ব্যাঙ, টিকটিকি, ছোট কিংবা ছানা সাপ, নিজের বা ভিন্ন প্রজাতির, এদের স্বাভাবিক খাদ্য।এদের এই খাদ্যাভ্যাস মনুষ্য বসতিতে সাপ, ইঁদুর প্রভৃতি প্রাণীর অবাঞ্ছিত সংখ্যাবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক।[৬]। এদের চোয়ালের গঠন বৈশিষ্ট্যের জন্য, অর্থাৎ নীচের চোয়াল নমনীয় ও উপরের চোয়ালের সঙ্গে দৃঢ় সংযুক্ত না হওয়ার জন্য়, এরা নিজের আয়তনের তুলনায় অনেক বড় মুখব্যদান করতে পারে এবং নিজের পরিধির চেয়ে বড় মাপের প্রাণী অনায়াসে গিলে ফেলে।[৭]। মুখনিঃসৃত বিষ এ সময় শিকারটিকে নির্জীব রাখতে সাহায্যে করে। শিশুরা কীট পতঙ্গ মাকড়সা ইত্যাদি খেয়ে থাকে।

বিষ

পাতি কালকেউটে তীব্র বিষধর সর্প, এদের বিষ নিউরোটক্সিন গোত্রের অন্তর্গত, যা দেহের স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে এবং পেশীর পক্ষাঘাত ঘটায়। ডাক্তারি পরিভাষায় এই বিষ প্রিসাইনাপটিক ও পোস্টসাইনাপটিক নিউরোটক্সিনের সমন্বয়ে গঠিত যা স্নায়ুকোষের সংযোগস্থল অর্থাৎ যেখানে তথ্য় সরবরাহের কাজটি সম্পাদিত হয়, তাকে আক্রমণ করে। সর্পবিষের এই বিশেষ গুণ অর্থাৎ স্নায়ুতন্ত্রকে অবশ করার ক্ষমতা একে চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রয়োজনীয় করে তুলেছে।[৮]

যেহেতু এরা নিশাচর প্রাণী, রাতেই এদের দংশনের সম্ভাবনা বেশি তবে দিনের বেলা ক্ষেতে, মাঠে দংশনের ঘটনাও অপ্রতুল নয়। বৃষ্টি বাদলায় এরা গৃহস্থের ঘরে আশ্রয় নেয়, তাই বর্ষাকালে সর্পদংশনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এদের দংশনে কোনো ব্যথা অনুভুত হয় না তাই বহু সময়ে চটজলদি শনাক্তকরণ সম্ভব হয় না।কিন্তু কয়েকঘণ্টা পরে দংশিত ব্য়ক্তি তলপেটে প্রচণ্ড ব্য়থা অনুভব করে , সর্বাঙ্গ অসাড় হয়ে যায়, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায় ও প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সঠিক চিকিৎসা না হলে ৪থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।[৯]

ভারত-বাংলাদেশ শ্রীলংকা সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সর্পদংশনে প্রতি বৎসর বহু লোকের মৃত্যু ঘটে। পাতি কালকেউটের ভূমিকা তার মধ্যে অগ্রগণ্য। দুর্ভাগ্যবশতঃ দুর্ঘটনার শিকার অধিকাংশ সময়ে গ্রামাঞ্চলের অশিক্ষিত অধিবাসি, তাই সর্পদংশনের ঘটনা বা মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। ২০০৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থা সর্পদংশনকে ক্রান্তীয় অঞ্চলের একটি অবহেলিত রোগ বলে চিহ্নিত করেছে।[১০] সময়মত চিকিৎসা শুরু করলে এ রোগে জীবনলাভের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন, কৃত্রিম শ্বাসব্যবস্থা প্রভৃতি প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে পড়ে।

তথ্যসূত্র

  1. Clinical Toxinology-Bungarus caeruleus". Archived from the original on 2016-10-16. Retrieved 2011-11-10.
  2. "Clinical Toxinology-Bungarus caeruleus". Archived from the original on 2016-10-16. Retrieved 2011-11-10.
  3. Bungarus caeruleus(Schinder, 1801)-http://indiabiodiversity.org>species>show
  4. Gopalkrishnakone, P.; Chou, L.M. (1990). Snakes of Medical Importance: Asia-Pacific Region. Singapore: Venom and Toxin Research Group, National University of Singapore. pp. 284–285. ISBN 9971-62-217-3.
  5. Bungarus caeruleus(Schinder, 1801)-http://indiabiodiversity.org>species>show
  6. Bungarus caeruleus(Schinder, 1801)-http://indiabiodiversity.org>species>show
  7. Captive behaviour study of big four Indian snakes: http://www.researchgate.net/publication/334001128
  8. Bungarus caeruleus(Schinder, 1801)-http://indiabiodiversity.org>species>show
  9. Medical Management for bites by Kraits (Bungarus species)". Archived from the original on 2012-04-02.
  10. Management of Snake Bite - National Health Mission: http://nhm.gov.in › pdf › nrhm-guidelines › stg