চণ্ডী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৫৮ নং লাইন: ৫৮ নং লাইন:
চণ্ডী সৌভাগ্যের দেবী। সুখসমৃদ্ধি, সন্তান, বিজয় ইত্যাদি কামনায় তার [[মঙ্গলচণ্ডী]], সঙ্কটমঙ্গলচণ্ডী, রণচণ্ডী ইত্যাদি মূর্তিগুলি পূজা করা হয়। [[ওলাইচণ্ডী]]র পূজা হয় মহামারী ও গবাদিপশুর রোগ নিবারণের উদ্দেশ্যে।<ref>McDaniel(2002) pp. 9-11</ref>
চণ্ডী সৌভাগ্যের দেবী। সুখসমৃদ্ধি, সন্তান, বিজয় ইত্যাদি কামনায় তার [[মঙ্গলচণ্ডী]], সঙ্কটমঙ্গলচণ্ডী, রণচণ্ডী ইত্যাদি মূর্তিগুলি পূজা করা হয়। [[ওলাইচণ্ডী]]র পূজা হয় মহামারী ও গবাদিপশুর রোগ নিবারণের উদ্দেশ্যে।<ref>McDaniel(2002) pp. 9-11</ref>


পশ্চিমবঙ্গের বহু গ্রামের নামের সঙ্গে দেবী চণ্ডীর নাম যুক্ত। প্রাচীন কামতাপুর রাজ্যের সমগ্র জনজাতি ও রাজ্যের মঙ্গলের জন্য এই পূজা করতেন। বানগড়ের রাজা বিষ্নু বর্মন স্বাধীন বানগড়ে একটি বিশাল চন্ডী মন্দির স্থাপন করেছিলেন। বৈদেশিক আক্রমনের ফলে মন্দিরটির সম্পদ ধংস হয়েছে। বানগড়ের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। বর্তমানেও মন্দির ও রাজবাড়ির ইতিহাস
পশ্চিমবঙ্গের বহু গ্রামের নামের সঙ্গে দেবী চণ্ডীর নাম যুক্ত। মঙ্গলচণ্ডীর পূজা সমগ্র রাজ্যে এমনকি অসমেও প্রচলিত।<ref>Manna, Sibendu, Mother Goddess, {{IAST|Chaṇḍī}}, pp. 100-110</ref>
লুট করা হয়েছে। তবে জনগনের বিশ্বাস আছে বলে সমগ্র উওরবঙ্গ জুড়ে আজও চন্ডীপূজা হয়ে থাকে। মঙ্গলচণ্ডীর পূজা সমগ্র রাজ্যে এমনকি অসমেও প্রচলিত।<ref>Manna, Sibendu, Mother Goddess, {{IAST|Chaṇḍī}}, pp. 100-110</ref>


== পাদটীকা ==
== পাদটীকা ==

১৫:৪০, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই নিবন্ধটি দেবী চণ্ডী সম্পর্কিত। শ্রীশ্রীচণ্ডী নামে পরিচিত শাক্ত ধর্মগ্রন্থটি সম্পর্কে জানতে হলে দেখুন দেবীমাহাত্ম্যম্
চণ্ডী
দেবনাগরীचण्डी
সঙ্গীশিব

চণ্ডী (সংস্কৃত: चण्डी) বা চণ্ডিকা দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থের সর্বোচ্চ দেবী। তিনি দুর্গা সপ্তশতী নামেও পরিচিত। মহাকালী, মহালক্ষ্মীমহাসরস্বতী দেবীর সমন্বয়ে চণ্ডীকে উক্ত গ্রন্থে সর্বোচ্চ সত্ত্বা বলে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি দেবী পার্বতীর উগ্র অবতার বিশেষ,গ্রন্থের অন্তভাগে মূর্তিরহস্য অংশে তাকে অষ্টাদশভূজা মহালক্ষ্মী নামে অভিহিত করা হয়েছে।

ব্যুৎপত্তি

দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থে "চণ্ডী" বা "চণ্ডিকা" দেবীকে সর্বোচ্চ দেবীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কোবার্নের মতে, চণ্ডিকা হলেন ভয়ংকরী ও ক্রোধন্মত্তা দেবী। উল্লেখ্য, প্রাচীণ সংস্কৃতে "চণ্ডিকা" শব্দটি কোথাও পাওয়া যায় না। বৈদিক সাহিত্যেও এই শব্দটির কোনো উল্লেখ নেই। রামায়ণমহাভারতেও শব্দটি উল্লিখিত না হলেও, একটি স্তোত্রে "চণ্ড" ও "চণ্ডী" কথাদুটি বিশেষণ হিসেবে পাওয়া যায়।[১]

প্রাচীন সংস্কৃত রচনায় চণ্ডী কথাটির অনুপস্থিতির কারণ হল এই দেবী হিন্দুধর্মের অব্রাহ্মণ্য শাখার দেবতা। ইনি প্রকৃতপক্ষে বঙ্গদেশের অনার্য আদিবাসী সমাজের দেবী।

দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থে চণ্ডী বা চণ্ডিকা শব্দদুটি মোট ২৯ বার ব্যবহৃত হয়েছে। অনেক গবেষক মনে করেন এই দেবীর উৎস প্রাচীন বঙ্গদেশের শাক্ত সম্প্রদায়ের তন্ত্র সাধনায়। "চণ্ডী" শব্দটি দেবীর সর্বাপেক্ষা পরিচিত অভিধা। দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থে চণ্ডী, চণ্ডিকা, অম্বিকা ও দুর্গা শব্দগুলি সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত।[২]

পৌরাণিক উপাখ্যান

দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায়ে দেবীর উৎস ব্যাখ্যা করা হয়েছে: "অসুরগণের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধের পর দেবতারা পরাজিত হলে দেবী পার্বতী কত্যায়ানি রূপে নিজের অংশ তাদের দান করেন ও সেই শক্তিকে কায়া রূপ দিতে বলেন,দেবতাদের দেহসঞ্জাত তেজঃপুঞ্জ হতে মহাদেবীর উৎপত্তি। দেবগণের শক্তি সম্মিলিত হয়ে এক মহাজ্যোতির সৃষ্টি করলে দশদিক আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। সেই অভূতপূর্ব ত্রিলোক-উদ্ভাসনকারী আলোক এক হয়ে নারীমূর্তি ধারণ করে।"

"এই দেবী ছিলেন মহাশক্তি। তিনি ত্রিনয়না, তাঁর কপালে অর্ধচন্দ্র শোভিত। দেবীর বহু হাতে বহু প্রকার অস্ত্র, গাত্রে বহুমূল্য অলংকার ও মালা। সকলই দেবগণ দেবীকে উপহার দিয়েছিলেন। তাঁর সোনার অঙ্গ সহস্র সূর্যের ন্যায় উজ্জ্বল। এইরূপে সিংহবাহিনী দেবী চণ্ডী হয়ে উঠলেন বিশ্বশক্তির মূর্তিস্বরূপ।"আবার অন্য কিছু পুরান অনুসারে দেবী চন্ডী কেবল দেবতাদের অঙ্গ সম্ভূতা তিনি দেবী পার্বতীর অংশ নন কিন্তু দেবী পার্বতী আদি পরাশক্তি সর্বোচ্চ দেবী সত্তা যিনি মহামায়া তাই মহাশক্তি চন্ডী দেবী মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধান্তে দেবী আদি পরাশক্তি পার্বতীর দেহে বিলীন হয়ে। অন্য মতে মহা শক্তি ও আদি পরাশক্তি পূর্বে ভিন্ন ছিলো কিন্তু মহিষ বধের পর তিনি মহামায়ার দেহে বিলীন হয়ে যান এবং দেবী পার্বতীর রূপে পরিণত হন পরবর্তী সময়ে দেবী পার্বতী শুম্ভ নিশুম্ভা বধে তাকে নিজের কৃষ্ণ কোষ থেকে সৃষ্টি করেন পুনরায় এবং তিনি দেবী পার্বতীর ললাট সম্ভুতা কালীর সঙ্গে অসুর বধ করেন ও দেবী পার্বতীর দেহে আবার বিলীন হয়ে যান। [৩][৪] স্কন্দ পুরাণ এই কাহিনিটি রয়েছে। এই পুরাণে আরও বলা হয়েছে যে দেবী পার্বতী দেহসম্ভুুুতা এক দেবী চন্ড ও মুন্ড নামক অসুরদ্বয়কে বধ করেন।[৫] এবং এর থেকে তার নাম হয় চামুন্ডা।

এই চামুুন্ডা বা কালিকা দেবীর চন্ডীরই অপর রূপ।

মূর্তিতত্ত্ব

চণ্ডীর ব্রহ্মদেশীয় রূপ সন্ডি দেবী

দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থের মধ্যম চরিতে বর্ণিত ধ্যানমন্ত্র অনুযায়ী দেবী চণ্ডী অষ্টাদশভূজা, অক্ষমালা, পরশু, গদা, তীর, ধনুক, বজ্র, পদ্ম, কমণ্ডলু, মুদ্গর, শূল, খড়্গ, ঢাল, শঙ্খ, ঘণ্টা, মধুপাত্র, ত্রিশূল, অঙ্কুশ ও চক্রধার। তিনি রক্তবর্ণা ও পদ্মাসনা।[৬]

কোনো কোনো মন্দিরে দেবী চণ্ডী মহাকালী, মহালক্ষ্মী ও মহাসরস্বতী দেবীর রূপে পৃথক পৃথকভাবে পূজিতা হন। আবার কোথাও কোথাও দেবীর চতুর্ভূজা মূর্তিও পূজা করা হয়।

মন্দির

দেবী চণ্ডীর কয়েকটি বিখ্যাত মন্দিরের তালিকা নিচে দেওয়া হল:

চণ্ডী মন্দির, হরিদ্বার

বাংলার লোকবিশ্বাস

চণ্ডী পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় লৌকিক দেবী। খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে দেবী চণ্ডীর মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য একাধিক চণ্ডীমঙ্গল কাব্য রচিত হয়। এর ফলে লৌকিক চণ্ডী দেবী মূলধারার হিন্দুধর্মে স্থান করে নেন। মঙ্গলকাব্য ধারার চণ্ডী দেবী কালীর সমতুল্য।[৮] তিনি শিবের স্ত্রী গিরিজা পার্বতীর অবতার গণেশকার্তিকের জননী।[৯] চণ্ডীর ধারণাটি নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে এসেছে। তাই চণ্ডীর পূজাও বিভিন্ন প্রকার।

চণ্ডী সৌভাগ্যের দেবী। সুখসমৃদ্ধি, সন্তান, বিজয় ইত্যাদি কামনায় তার মঙ্গলচণ্ডী, সঙ্কটমঙ্গলচণ্ডী, রণচণ্ডী ইত্যাদি মূর্তিগুলি পূজা করা হয়। ওলাইচণ্ডীর পূজা হয় মহামারী ও গবাদিপশুর রোগ নিবারণের উদ্দেশ্যে।[১০]

পশ্চিমবঙ্গের বহু গ্রামের নামের সঙ্গে দেবী চণ্ডীর নাম যুক্ত। প্রাচীন কামতাপুর রাজ্যের সমগ্র জনজাতি ও রাজ্যের মঙ্গলের জন্য এই পূজা করতেন। বানগড়ের রাজা বিষ্নু বর্মন স্বাধীন বানগড়ে একটি বিশাল চন্ডী মন্দির স্থাপন করেছিলেন। বৈদেশিক আক্রমনের ফলে মন্দিরটির সম্পদ ধংস হয়েছে। বানগড়ের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। বর্তমানেও মন্দির ও রাজবাড়ির ইতিহাস লুট করা হয়েছে। তবে জনগনের বিশ্বাস আছে বলে সমগ্র উওরবঙ্গ জুড়ে আজও চন্ডীপূজা হয়ে থাকে। মঙ্গলচণ্ডীর পূজা সমগ্র রাজ্যে এমনকি অসমেও প্রচলিত।[১১]

পাদটীকা

  1. Coburn, Thomas B., Devī Māhātmya. p 95
  2. Coburn, Thomas B., Devī Māhātmya.
  3. Mookerjee, Ajit, Kali, The Feminine Force, p 49
  4. Wilkins p.255-7
  5. Wilkins p.260
  6. Sankaranarayanan. S., Devi Mahatmyam, P 148.
  7. Chandi Devi ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মে ২০০৬ তারিখে Haridwar.
  8. McDaniel(2004) p.21
  9. McDaniel(2004) pp. 149-150
  10. McDaniel(2002) pp. 9-11
  11. Manna, Sibendu, Mother Goddess, Chaṇḍī, pp. 100-110

তথ্যসূত্র