দীপক ধর
দীপক ধর | |
---|---|
জন্ম | প্ৰতাপগড়, উত্তরপ্রদেশ, ভারত | ৩০ অক্টোবর ১৯৫১
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | |
পরিচিতির কারণ | পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান এবং দৈব প্রক্রিয়া |
পুরস্কার |
|
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র |
|
প্রতিষ্ঠানসমূহ |
|
ডক্টরাল উপদেষ্টা |
|
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | অভিষেক ধর |
অধ্যাপক ড.দীপক ধর ( জন্ম- ৩০ অক্টোবর ১৯৫১) হলেন একজন ভারতীয় তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী এবং পুণের ভারতীয় বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থানের পদার্থবিদ্যা বিভাগের বিশিষ্ট অধ্যাপক। পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান এবং দৈব প্রক্রিয়ার উপর তাত্ত্বিক গবেষণার জন্য পরিচিত, অধ্যাপক ধর বিজ্ঞানের তিনটি প্রধান ভারতীয় একাডেমি - ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমী, ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী এবং ভারতের ন্যাশনাল একাডেমী অব সায়েন্সের নির্বাচিত সদস্য। ভৌত বিজ্ঞানে তাঁর অবদানের জন্য ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য ভারত সরকারের শীর্ষ সংস্থা, সিএসআইআর দ্বারা তিনি শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারে ভূষিত হন । [১] ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে, প্রথম ভারতীয় হিসাবে পরিসংখ্যানগত পদার্থবিদ্যার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি- বোল্টজম্যান পদক লাভ করেন। ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার বিজ্ঞান গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য তাকে দেশের সর্বোচ্চ তৃতীয় বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণে সম্মানিত করে।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
[সম্পাদনা]দীপক ধর ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রতাপগড়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মুরলী ধর এবং মাতা রমা গুপ্ত। দীপক ধর ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানের স্নাতক হন। এরপর ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে কানপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন [২] উচ্চ শিক্ষার্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। ক্যালিফোর্নিয়ার ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি সংক্ষেপে ক্যালটেকে জন ম্যাথিউসের অধীনে গবেষণা করে ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। [৩] ওই বছরেই, দেশে ফিরে তিনি টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের একজন গবেষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। [৪]
কর্ম জীবন
[সম্পাদনা]দু' বছর গবেষণার পর, তিনি টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের একজন পূর্ণকালীন গবেষক হন। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের তিনি রিডার পদে উন্নীত হন। ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে অ্যাসোসিয়েট অধ্যাপক এবং ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে নিয়মিত চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত, অধ্যাপক ধর টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং এর মধ্যে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দ হতে এক বৎসর তিনি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট হিসাবে যুক্ত ছিলেন। ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে আইজ্যাক নিউটন ইনস্টিটিউটে রথচাইল্ড প্রফেসর পদে আসীন ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর, অধ্যাপক ধর টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের একজন বিশিষ্ট ফ্যাকাল্টি সদস্য হিসাবে রয়ে যান। [৫]পাশাপশি তিনি পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের বিশিষ্ট ভিজিটিং প্রফেসরের পদ অলঙ্কৃত করেন।
গবেষণা
[সম্পাদনা]পরিসংখ্যানগত পদার্থবিদ্যা এবং স্টোকাস্টিক প্রক্রিয়াগুলির তথা দৈব প্রক্রিয়াগুলির উপর গবেষণায় অধ্যাপক ধর রানভম (র্যান্ডম) জালি তথা এলোমেলো জাফরির পরিসংখ্যানগত বলবিদ্যা এবং গতিবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার গবেষণা পদার্থবিজ্ঞানের এই শাখাগুলির উপর সম্যক ধারণা প্রদান করেছে। [৬] ফ্র্যাক্টালের গবেষণায় বর্ণালী মাত্রার ধারণাটি প্রবর্তনের কৃতিত্ব অধ্যাপক দীপক ধরেরই। এ ছাড়াও, রিয়েল-স্পেস রিনরমালাইজেশন সেটের কৌশল ব্যবহার করে তাদের মূল ঘটনা নির্ধারণের জন্য একটি পদ্ধতি স্থির করেন যা তিনিই সর্বপ্রথম গাণিতিক প্রক্রিয়ায় ফ্র্যাক্টালের উপর অ-তুচ্ছ গুরুত্বের সূচক গণনার জন্য ব্যবহৃত হয়। অধ্যাপক ধর সেল্ফ অর্গানাইজড ক্রিটিক্যালি'র (এসওসি), বা (স্ব-সংগঠিত সমালোচনার) আবেলিয়ান স্যান্ডপিল মডেল'-এর সমাধানের জন্য রামকৃষ্ণ রামস্বামীর সঙ্গে কাজ করেন [৭] এবং একটি নতুন মডেল তৈরি করেন। [৮] এই মডেলটি ধর-রামস্বামী মডেল নামে পরিচিত। [৯] 'বেথ অ্যানচাটজ' পদ্ধতি ব্যবহার করে নির্দেশিত মহাকাশ প্রাণী-গণনা সমস্যা নিয়ে কাজ করেন[১০][১১] তিনি বিবর্তন অপারেটর প্রস্তাব করেছিলেন যেটি তখন থেকে অন্যান্য গবেষকরা গবেষণাধীন মহাকাশ প্রাণী গণনা সমস্যা হিসাবে প্রণয়ন করেছেন। [১২] [১৩] ধরে স্বয়ংক্রিয়-ইন্টার্যাকশন ফাংশন এবং স্টোকাস্টিক বিবর্তনে মেটাস্টেবল গ্লাসী স্টেটের প্রস্তাবিত মডেলগুলিতে বিচ্ছিন্ন অ-উত্তেজক ক্লাস্টারগুলির ধীর গতিতে উল্টানোর আধিপত্য প্রদর্শন করেছেন। তাঁর অধ্যয়নগুলি বেশ কয়েকটি নিবন্ধে নথিভুক্ত করা হয়েছে [১২][১৩] এবং এর মধ্যে ১১৩টি ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমির অনলাইন নিবন্ধ তালিকাভুক্ত আছে। [১৪]
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]- ক্যালটেক-এ গবেষণাকালে দীপক ধর দুটি প্রাতিষ্ঠানিক ফেলোশিপ । ই পি অ্যান্টনি ফেলোশিপ (১৯৭২-৭৩ ) এবং রিচার্ড ফিলিপস ফাইনম্যান ফেলোশিপ (১৯৭৪-৭৬) লাভ করেন।
- ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতের ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর তরুণ বিজ্ঞানী পদক লাভ করেন।
- ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিল কর্তৃক শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারে ভূষিত হন । [১৫]
- ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল ফিজিক্স তাকে জে. রবার্ট শ্রেফার পুরস্কার প্রদান করে। [১৬]
- ২০০১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস তাকে আবার সত্যেন্দ্ৰনাথ বসু পদক প্রদান করে [১৭]এবং
- ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্সেসের টিডব্লিউএএস পুরস্কার পান। [১৮]
অধ্যাপক দীপক ধর ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেসের সদস্য নির্বাচিত হন [১৯] তিনি ১৯৯৫ সালে ভারতের ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেসে নির্বাচিত হন, [২০] এবং ১৯৯৯ সালে ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর সদস্য হন। [২১] অধ্যাপক ধর ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্সের ফেলো নির্বাচিত হন [২২] এবং ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল গবেষণা কাউন্সিলের জগদীশ চন্দ্র বসু জাতীয় ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত হন।
২০২২ খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক ধর মর্যাদাপূর্ণ বোল্টজম্যান পদকের (যা প্রতি তিন বৎসর অন্তর প্রদান করা হয়) জন্য নির্বাচিত হন। পরিসংখ্যানগত পদার্থবিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য তিনিই প্রথম ভারতীয় হিসাবে এই পুরস্কার হপফিল্ডের সঙ্গে যৌথভাবে প্রাপ্ত হন। [২৩]
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]মন্তব্য
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "View Bhatnagar Awardees"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Curriculum vitae on TIFR" (পিডিএফ)। Tata Institute of Fundamental Research। ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১০-২২।
- ↑ "Dr. Deepak Dhar Professor"। Expert Database and National Researcher Network। ২০১৭।
- ↑ "Indian fellow"। Indian National Science Academy। ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Faculty details"। Indian Institute of Science Education and Research, Pune। ২০১৭।
- ↑ "Brief Profile of the Awardee"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "ICTP Prize Winner 1993"। International Centre for Theoretical Physics। ২০১৭।
- ↑ Deepak Dhar, Ramakrishna Ramaswamy (১৯৮৯)। "Exactly solved model of self-organized critical phenomena"। Phys. Rev. Lett.। 63 (1659): 1659–1662। ডিওআই:10.1103/PhysRevLett.63.1659। পিএমআইডি 10040637। বিবকোড:1989PhRvL..63.1659D।
- ↑ Daniel O. Cajueiro, Roberto F. S. Andrade (মে ২০১৩)। A dynamical programming approach for controlling the directed abelian Dhar-Ramaswamy model (প্রতিবেদন)। Physical Review E, Statistical, Nonlinear, and Soft Matter Physics। arXiv:1305.6668 । বিবকোড:2010PhRvE..82c1108C।
- ↑ G. S. Joyce (১৯৮৯)। "On the Dhar directed-site animals-enumeration problem for the simple cubic lattice"। Journal of Physics A: Mathematical and General। 22 (19): L919–L924। ডিওআই:10.1088/0305-4470/22/19/001। বিবকোড:1989JPhA...22L.919J।
- ↑ Mireille Bousquet-Mélou, Andrew R Conway (১৯৯৬)। "Enumeration of directed animals on an infinite family of lattices"। Journal of Physics A: Mathematical and General। 29 (13): L919–L924। ডিওআই:10.1088/0305-4470/22/19/001। বিবকোড:1989JPhA...22L.919J।
- ↑ "On ResearchGate"। ২০১৭।
- ↑ "On Google Scholar"। Google Scholar। ২০১৭।
- ↑ "Browse by Fellow"। Indian Academy of Sciences। ২০১৭।
- ↑ "CSIR list of Awardees"। Council of Scientific and Industrial Research। ২০১৭।
- ↑ "Satyendranath Bose Medal"। Indian National Science Academy। ২০১৭। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩।
- ↑ "Satyendranath Bose Medal"। Indian National Science Academy। ২০১৭। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩।
- ↑ "Recipients of TWAS Awards and Prizes"। The World Academy of Sciences। ২০১৭।
- ↑ "Fellow profile"। Indian Academy of Sciences। ২০১৭।
- ↑ "INSA Year Book 2016" (পিডিএফ)। Indian National Science Academy। ২০১৭। ৪ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১৭।
- ↑ "NASI Year Book 2015" (পিডিএফ)। National Academy of Sciences, India। ২০১৭। ২০১৫-০৮-০৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "TWAS fellow"। The World Academy of Sciences। ২০১৭। ২১ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩।
- ↑ "IISER professor Deepak Dhar becomes first Indian to bag Boltzmann Medal"। The Indian Express। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে পদ্মভূষণ প্রাপক
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী
- জীবিত ব্যক্তি
- ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর সভ্য
- ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- আইআইটি কানপুরের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ভারতীয় তাত্ত্বিক পদার্থবিদ
- ভারতীয় বৈজ্ঞানিক লেখক
- উত্তরপ্রদেশের বিজ্ঞানী
- ১৯৫১-এ জন্ম