তামপেরে
তাম্পেরে Tammerfors | |
---|---|
শহর | |
Tampereen kaupunki | |
ডাকনাম: ম্যানচেস্টার অফ দ্য নর্থ, মানসে (ফিনীয় ভাষায়) | |
ফিনল্যান্ডে তাম্পেরের অবস্থান | |
দেশ | ফিনল্যান্ড |
অঞ্চল | Pirkanmaa |
উপ-অঞ্চল | তাম্পেরে |
সরকার | |
• মেয়র | আন্না-কাইসা ইকোনেন |
আয়তন | |
• পৌর এলাকা | ২৫৮.৫২ বর্গকিমি (৯৯.৮২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | |
• পৌর এলাকা | ৩,১৩,০৫৮[৩] |
• পৌর এলাকার জনঘনত্ব | ১,২১১.০/বর্গকিমি (৩,১৩৬/বর্গমাইল) |
• মহানগর | ৩,৭৬,৪৪৫ |
সময় অঞ্চল | ইইটি (ইউটিসি+০২:০০) |
• গ্রীষ্মকালীন (দিসস) | ইইএসটি (ইউটিসি+০৩:০০) |
নগরায়ন | 96.9% |
বেকারত্বের হার | 17.1% |
ওয়েবসাইট | তাম্পেরে |
তাম্পেরে (ফিনীয় উচ্চারণ: [ˈtɑmpere] (; )সুয়েডীয়: Tammerfors [tamərˈfɔrs] বা [tamərˈfɔʂ]) ফিনল্যান্ডের দক্ষিণে পিরকানমা অঞ্চলে অবস্থিত একটি জনবহুল শহর। এটি ফিনল্যান্ডের দ্বিতীয় জনবহুল শহর। এটা যে কোন নর্ডিক দেশের সবচেয়ে জনাকীর্ণ অন্তর্দেশীয় শহর।
এই শহরের জনসংখ্যা ২২২,৫১২।[৪] নগর অঞ্চলে এই জনসংখ্যা ৩১৩,০৫৮।[৫] এবং ২০১১ সালের হিসেবে মেট্রোপলিটন (আমবেরে উপ-অঞ্চলের) ৪,৯৭৭ কিমি২ এলাকার জনসংখ্যা ৩৬৪,০০০।[৬][৭] হেলসিঙ্কির পরে তাম্পেরে ফিনল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং তৃতীয় জনবহুল পৌরসভা এলাকা।
তাম্পেরে শহরটি নাসিয়ারবি এবং পিহায়ারবি নামের দুইটি হ্রদের মাঝে অবস্থিত। এই দুইটি লেকের পানিপৃষ্ঠের উচ্চতার পার্থক্য প্রায় ১৮ মিটার (৫৯ ফু)। এ কারণে ঐতিহাসিকভাবে তাম্পেরে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। ফিনল্যান্ডের প্রধান শিল্প নগর হওয়ায় তাম্পেরেকে বলা হয় "ম্যানচেস্টার অফ ফিনল্যান্ড"; ফিনিশ ভাষায় একে বলে "মানসে" বা "মানসেরক"।[৭][৮][৯]
হেলসিঙ্কি থেকে ট্রেনে ১.৫ ঘণ্টায় এবং সড়কপথে ২ ঘণ্টায় তাম্পেরে পৌছানো যায়। tampere থেকে ফিনল্যান্ডের অন্যতম বড় শহর টুর্কুতে পৌছাতেও একই সময় লাগে। তাম্পেরে বিমানবন্দর ফিনল্যান্ডের তৃতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৭৭৫ সালে টেমেরকোস্কি চ্যানেলের তীরে সুইডেনের তৃতীয় রাজা গুস্তাভ কর্তৃক আমবেরে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর চার বছর পরে ১৭৭৯ সা;এর ১ অক্টোবরে আমবেরে নগরের স্বীকৃতি পায়। এসময় এটী একটি ছোট শহর ছিল। ১৯শ শতাব্দীতে আমবেরে ফিনল্যান্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে ফিনল্যান্ডের শিল্পক্ষেত্রে নিয়োজিত মানুষের অর্ধেকই তাম্পেরেতে বাস করতো। এসব কারণে এই নগর ম্যানচেস্টার অফ দ্য নর্থ নামে অভিহিত হয়।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ফিনল্যান্ডের অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈটিক ঘটনা তাম্পেরেতে ঘটে। ১৯০৫ সালের ১ নভেম্বর ধর্মঘটের সময় বিখ্যাত রেড ডেক্লারেশন আমবেরে শহরের কেন্দ্রে ঘোষিত হয়। পরবর্তিতে এই ঘটনার সূত্র ধরে ফিনল্যান্ডের সার্বজনীন ভোটাধিকার চালু হয়। এছাড়া রাশিয়ার জার শাসকগণ পরবর্তিতে ফিনল্যান্ডের নাগরিকদের অধিক স্বাধীনতা দেয়।
ফিনল্যান্ডের গৃহযুদ্ধের সময় তাম্পেরে গুরুওপূর্ণ কৌশলগত ভূমিকা পালন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পার্শ্ববর্তি কিছু এলাকার সমন্বয়ে তাম্পেরের আয়তন বৃদ্ধি করা হয়। তাম্পেরে তার ধাতু ও টেক্সটাইল শিল্পের কারণে সুপরিচিত ছিল। কিন্তু ১৯৯০ পরবর্তি সময়ে এসব শিল্প তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিকমিউনিকেশন শিল্প দ্বারা স্থলাভিষিক্ত হয়।
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]তাম্পেরে অঞ্চল, বা পিরকানমা অঞ্চলে প্রায় ০.৪৭ মিলিয়ন অধিবাসীর বসবাস। এর মধ্যে প্রায় ০.২৩ মিলিয়ন মানুষ কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত। ২০০৭ সাল নাগাদ এই জনশক্তি বার্ষিক ২৫ বিলিয়ন ইউরো পরিমাণ অর্থ আয় করে। তাম্পেরে ইন্টারন্যাশলান বিজনেস অফিসের সূত্রমতে এই অঞ্চলটি যন্ত্রকৌশল এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ। এছাড়া স্বাস্থ্য ও জৈব-প্রকৌশল ক্ষেত্রেও তাম্পেরে সমৃদ্ধ। এখানে বেকারত্বের হার শতকরা ১৫ ভাগ।
শিক্ষা
[সম্পাদনা]তাম্পেরেতে চারটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট ৪০০০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে। এগুলোড় মধ্যে দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দুইটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। বিশ্ববিদ্যালয় দুইটি হল ইউনিভার্সিটি অফ তাম্পেরে এবং তাম্পেরে ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলোজি।
সংস্কৃতি
[সম্পাদনা]সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের জন্য তাম্পেরে সুপরিচিত। ফিনল্যান্ডের অনেক খ্যাতনামা লেখক ও সাহিত্যিক তাম্পেরের অধিবাসী ছিলেন। তাঁরা শ্রমজীবী মানুষের জীবন সংগ্রামকে উপজীব্য করে সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন। বিখ্যাত ফিনিশ কবি লাউরি ভিটা নিজেই শ্রমজীবী পরিবারের সন্তান ছিলেন। তাম্পেরেতে অনেক আগে থেকে থিয়েটার ছিল। তাম্পেরেতে একটি আন্তর্জাতিক থিয়েটার উৎসব হয় প্রতি বছরের অগাস্টে।
তাম্পেরে ভিত্তিক বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]তাম্পেরে ফিনল্যান্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল জংশন। তাম্পেরে থেকে ফিনল্যান্ডের সব বড় শহরে রেলযোগে যাতায়াত করা যায়। তাম্পেরে রেলওয়ে স্টেশন শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। এছাড়া তাম্পেরে থেকে ফিন্নল্যান্ডের অধিকাংশ গন্তব্যে বাসে যাতায়াত করা সম্ভব। তাম্পেরের প্রধান বিমানবন্দর হল আমবেরে-পিরকালা বিমানবন্দর। এটি শহরের কেন্দ্র থেকে ১৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এটি দিয়ে প্রতি বছরে পাঁচ লক্ষাধিক যাত্রী যাতায়াত করে।
তাম্পেরের প্রধান গণযোগাযোগ ব্যবস্থা হল বাস। ২০০৯ সালে গণযোগাযোগে অগ্রগতি আনয়নের লক্ষ্যে শহরে একটি লাইট রেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এছাড়া তাম্পেরের পার্শ্ববর্তি শহরগুলো যোগাযোগের জন্য কমিউটার রেল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।[১০]
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
[সম্পাদনা]টুইন শহর — ভগিনী শহর
[সম্পাদনা]তাম্পেরেসংযুক্ত শহর:
|
|
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ "Area of Finnish Municipalities 1.1.2018" (পিডিএফ)। National Land Survey of Finland। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ ক খ গ "Suomen virallinen tilasto (SVT): Väestön ennakkotilasto [verkkojulkaisu]. Tammikuu 2019" (Finnish ভাষায়)। Statistics Finland। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৯।
- ↑ "Taajamat väkiluvun ja väestöntiheyden mukaan 31.12.2011"। Tiedote (Finnish ভাষায়)। Statistics Finland (Tilastokeskus)। ২০১১-১২-৩১। ২০১৩-০৪-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৩।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৯ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ http://pxweb2.stat.fi/Dialog/varval.asp?ma=160_vaerak_tau_340_fi&ti=Taajamat+v%E4kiluvun+ja+v%E4est%F6ntiheyden+mukaan+31%2E12%2E2011&path=../Database/StatFin/vrm/vaerak/&lang=3&multilang=fi আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ১২ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে Taajamat väkiluvun ja väestöntiheyden mukaan 31.12.2011
- ↑ "Kunnat - Tampereen kaupunkiseutu"। tampereenseutu.fi। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-২৫।
- ↑ ক খ "Tampere in brief" (পিডিএফ)। ২০১১-০৯-২৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-১৫।
- ↑ Tampere Economy ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ মার্চ ২০০৯ তারিখে, Tampere International Business Office
- ↑ Katko, Tapio S. and Juuti, Petri S. Watering the city of Tampere ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে, publications of the 5th IWHA Conference, 2007. Available at the website of the city of Tampere.
- ↑ "Joukkoliikennejärjestelmävaihtoehdot - Vaikutusten arviointi ja suositus Tampereen kaupunkiseudun joukkoliikennejärjestelmäksi" (পিডিএফ)। TASE 2025 (Finnish ভাষায়)। City of Tampere। মার্চ ২০০৭। ২৭ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯।
- ↑ "List of Twin Towns in the Ruhr District" (পিডিএফ)। © 2009 Twins2010.com। ২০০৯-১১-২৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০০৯।
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য) - ↑ "Miasta partnerskie - Urząd Miasta Łodzi [via WaybackMachine.com]"। City of Łódź (Polish ভাষায়)। ২০১৩-০৬-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-২১।
- ↑ "Trondheims offisielle nettsted - Vennskapsbyer" (নরওয়েজীয় ভাষায়)। Trondheim.com। ২০১১-০৯-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১১।
- ↑ "Guangzhou Sister Cities [via WaybackMachine.com]"। Guangzhou Foreign Affairs Office। ২০১২-১০-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-২১।
- ↑ "Some 15 Finnish towns have twinned with friendship cities in China"। Helsingin Sanomat International Edition। ২০১৩-০৬-২০। ২০১৩-১০-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-২৯।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- তাম্পেরে শহর – অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
- আমবেরের মানচিত্র
- অফিসিয়াল তাম্পেরে অঞ্চল পরিদর্শক ওয়েবসাইট
- শহরের ভার্চুয়াল নির্দেশিকা: VirtualTampere.com
- ১৯৫২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের সরকারি প্রতিবেদন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে পৃষ্ঠা ৬২–৩।
- Tammerkoski Heritage – Town's Industrial Heritage Portal
- CSSA Tampere Ry
- Lunch restaurants in Tampere
- উইকিভ্রমণ থেকে তাম্পেরে ভ্রমণ নির্দেশিকা পড়ুন।
- চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Tammerfors"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস।