বিষয়বস্তুতে চলুন

কর্ণ (জ্যামিতি)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
১ একক বাহুর দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট একটি ঘনকের কর্ণসমূহ। AC' (নীল রঙে দেখানো) একটি ত্রিমাত্রিক কর্ণ নির্দেশ করে যার দৈর্ঘ্য , যখন এসি (লাল রঙে দেখানো হয়েছে) একটি মুখ </ref> এবং AC(লাল রঙে দেখানো) একটি দ্বিমাত্রিক কর্ণ নির্দেশ করে।যার দৈর্ঘ্য রয়েছে

জ্যামিতিতে, কর্ণ হলো এমন একটি রেখাংশ যা বহুভুজ বা বহুতলকের দুটি শীর্ষ যোগ করে পাওয়া যায় , যেখানে শীর্ষবিন্দুগুলি একই প্রান্তে থাকবে না । অনানুষ্ঠানিকভাবে, যে কোনও ঢালু রেখাকে কর্ণ বলা হয় । কর্ণ শব্দটি প্রাচীন গ্রিক διαγώνιος ডায়াগনোসিস থেকে উদ্ভূত হয়েছে,[] "কোণ থেকে কোণ" (- dia-, "মাধ্যমে", "জুড়ে" এবং γωνία গোনিয়া, "কোণ", গুনি "হাঁটু" সম্পর্কিত) । এটিকে স্ট্রাবো[] এবং ইউক্লিড উভয়[] একটি রম্বস বা ঘনকের দুই শীর্ষবিন্দুর সংযোগকারী একটি রেখা বোঝাতে ব্যবহার করতেন।[] এবং পরে লাতিন ভাষায় diagonus(" ঢালু রেখা") নামে গৃহীত হয়েছে ।

ম্যাট্রিক্স বীজগণিতের ক্ষেত্রে, বর্গ ম্যাট্রিক্সের ক্ষেত্রে কর্ণ হলো এক কোণ থেকে দূরের কোণে বিস্তৃত ভুুুুক্তিসমূহের একটি সেট।

কর্ণের অন্যান্য অ-গাণিতিক ব্যবহারও রয়েছে।

বহুভুজ

[সম্পাদনা]

বহুভুজের ক্ষেত্রে , একটি কর্ণ হলো এমন একটি রেখাংশ যা যেকোন দুটি অ-ধারাবাহিক শীর্ষ যোগ করে পাওয়া যায় । অতএব, একটি চতুর্ভুজের দুটি কর্ণ আছে, বিপরীত জোড়া শীর্ষ যোগ করে পাওয়া যায় । যে কোন উত্তল বহুভুজের জন্য, সমস্ত কর্ণ বহুভুজের ভিতরে থাকে, কিন্তু রি-এনট্রান্ট বহুভুজের জন্য, কিছু কর্ণ বহুভুজের বাইরে থাকে।

যেকোনো n-বাহু বিশিষ্ট বহুভুজ (n ≥ 3), উত্তল অথবা অবতলের, সংখ্যক কর্ণ রয়েছে , যেহেতু প্রত্যেকটি শীর্ষবিন্দুর তার নিজের এবং পার্শ্ববর্তী দুটি বিন্দু বাদে অন্য সকল শীর্ষবিন্দুর সাথে কর্ণ রয়েছে ।অথবা n − 3 সংখ্যক কর্ণ এবং প্রত্যেকটি কর্ণ দুটি শীর্ষবিন্দু বিনিময়(share) করে।

বাহুর সংখ্যা কর্ণের সংখ্যা
3 0
4 2
5 5
6 9
7 14
8 20
9 27
10 35
বাহুর সংখ্যা কর্ণের সংখ্যা
11 44
12 54
13 65
14 77
15 90
16 104
17 119
18 135
বাহুর সংখ্যা কর্ণের সংখ্যা
19 152
20 170
21 189
22 209
23 230
24 252
25 275
26 299
বাহুর সংখ্যা কর্ণের সংখ্যা
27 324
28 350
29 377
30 405
31 434
32 464
33 495
34 527
বাহুর সংখ্যা কর্ণের সংখ্যা
35 560
36 594
37 629
38 665
39 702
40 740
41 779
42 819

প্রয়োগ

[সম্পাদনা]

কর্ণের তত্ত্বটি শুধু জ্যামিতি বা বীজগণিতেই সীমাবদ্ধ নয়, এই তত্ত্বটি কাব্যে অলংকার হিসেবেও ব্যবহার করেন কবি মনোরঞ্জন রায়। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ কর্ণ সনেট, যা কৌণিক সনেট নামেও পরিচিত। কর্ণ সনেট হলো এমন এক সম্পর্কের রেখাংশ যা কবিতার পরপর দুটি চরণের প্রথম চরণের শেষবর্ণের সাথে দ্বিতীয় চরণের প্রথমবর্ণের মধ্যে কোণাকুণি সম্পর্ক স্থাপন করে করে রচিত, যেখানে শীর্ষবিন্দু হিসেবে অবস্থান করা বর্ণ দুটি বিপরীত পাশে অবস্থান করে জ্যামিতিক কর্ণের মতো করে। কৌণিক সনেটের ওপর রচিত তাঁর কাব্যগ্রন্থের নাম "দুর্ভিক্ষের কাকদল"। এই কাব্য থেকে সংগৃহিত একটি কৌণিক সনেট হলো "স্বপ্নচক্ষু"।

স্বপ্নচক্ষু

সাধ করে জীবনের দুঃখে বহু বার

রুদ্ধ করি স্বপ্ন, কত আঁকাবাঁকা পথ!

থাকে নির্বিকার যেন, একা বারবার

রচি অতৃপ্ত প্রত্যাশা, পুড়ে মনোরথ

থেকে থেকে পরাজয়ে; অস্বস্তি বেদনা

নিয়ে খুঁজে ফেরে কৃচ্ছ্র সাধন বিষাদে;

দৃপ্ত আকাঙ্ক্ষায় ভাঙে সুখের কল্পনা

নিজের বিফল গল্পে স্বপ্নচক্ষু কাঁদে।

দুস্থ এই সব গল্প বেঁধে রাখে দুখ

খসে পড়ে উচ্ছ্বাসের নক্ষত্র একান্তে

তিক্ত বাসনার কূপে ঝরে পড়ে সুখ

খুঁজে প্রজ্বলিত দীপ অপেক্ষার প্রান্তে।

তৃষ্ণালু নদীর চরে বর্ষার মতন

নিয়ে আসে ইচ্ছে বুকে সুখ আবর্তন।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

পাদটীকা

[সম্পাদনা]
  1. Online Etymology Dictionary
  2. Strabo, Geography 2.1.36–37
  3. Euclid, Elements book 11, proposition 28
  4. Euclid, Elements book 11, proposition 38

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  • Bronson, Richard (১৯৭০), Matrix Methods: An Introduction, New York: Academic Press, এলসিসিএন 70097490 
  • Cullen, Charles G. (১৯৬৬), Matrices and Linear Transformations, Reading: Addison-Wesley, এলসিসিএন 66021267 
  • Herstein, I. N. (১৯৬৪), Topics In Algebra, Waltham: Blaisdell Publishing Company, আইএসবিএন 978-1-114-54101-6 
  • Nering, Evar D. (১৯৭০), Linear Algebra and Matrix Theory (2nd সংস্করণ), New York: Wiley, এলসিসিএন 76091646 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]