ভাইরাস
ভাইরাস | |
---|---|
![]() | |
SARS-CoV-2, করোনাভাইরিনে (Coronavirinae) উপপরিবারের একজন সদস্য | |
ভাইরাসের শ্রেণীবিন্যাস ![]() | |
অপরিচিত শ্রেণী (ঠিক করুন): | ভাইরাস |
ভাইরাস জগৎ | |
|
ভাইরাস (Virus) হলো একটি অতিআণুবীক্ষণিক সংক্রামক বস্তু যা শুধুমাত্র জীবের জীবন্ত কোষের অভ্যন্তরে বংশবৃদ্ধি করতে পারে।[১] ভাইরাস উদ্ভিদ, প্রাণী থেকে শুরু করে ব্যাকটেরিয়া, আর্কিয়া সহ সকল জীবজগৎকে আক্রান্ত করে।[২][৩] পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি বাস্তুতন্ত্রেই ভাইরাস পাওয়া যায় এবং এরা হলো সবচেয়ে বহুল সংখ্যক জৈবিক সত্ত্বা।[৪][৫] ১৮৯২ সালে দিমিত্রি ইভানভস্কি তামাক গাছের একটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত নয় এমন রোগের বর্ণনা করার পর এবং ১৮৯৮ সালে মার্টিনাস বেইজেরিংক তামাকের মোজাইক ভাইরাস আবিষ্কারের পর থেকে, লক্ষাধিক ভাইরাস প্রজাতির মধ্যে ১১,০০০ এরও বেশি প্রজাতিকে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ভাইরাস নিয়ে গবেষণা ভাইরোলজি নামে পরিচিত যা মাইক্রোবায়োলজির একটি উপশাখা।
ভাইরাস আক্রান্ত হলে, একটি হোস্ট কোষ প্রায়শই আসল ভাইরাসের হাজার হাজার কপি দ্রুত তৈরি করতে বাধ্য হয়। যখন সেলের অভ্যন্তরে সংক্রমিত হয় না, তখন ভাইরাসরা স্বতন্ত্র ভাইরাল কণা বা ভিরিয়ন হিসেবে থাকে। এই ভিরিয়নে থাকে: (i) জিনগত উপাদান অর্থাৎ DNA বা RNA এর দীর্ঘ অণু যা ভাইরাসটির কার্যপ্রণালীর প্রোটিনগুলির গঠনকে এনকোড করে; (ii) একটি প্রোটিন আবরণ, ক্যাপসিড, যা জিনগত উপাদানকে ঘিরে রাখে এবং সুরক্ষিত করে; এবং কিছু ক্ষেত্রে (iii) লিপিডের একটি বাইরের খাম। এই ভাইরাস কণার আকারগুলি সরল হেলিক্যাল এবং আইকোসাহেড্রাল ফর্ম থেকে আরও জটিল কাঠামো পর্যন্ত হতে পারে। বেশিরভাগ ভাইরাস প্রজাতির ভিরিয়ন এত ছোট হয় যে অপটিক্যাল মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখা যায় না এবং এটি বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়ার আকারের এক-শততমাংশ।
জীবনের বিবর্তনীয় ইতিহাসে ভাইরাসের উৎপত্তি এখনও স্পষ্ট নয়। কিছু ভাইরাস প্লাজমিড থেকে বিবর্তিত হতে পারে (প্লাজমিড হলো DNA এর টুকরা যা কোষের মধ্যে চলাচল করতে পারে)। অন্যান্য ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া থেকে বিবর্তিত হতে পারে। বিবর্তনে, ভাইরাস হলো আনুভূমিক জিন স্থানান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম, যা যৌন প্রজননের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ উপায়ে জিনগত বৈচিত্র্য বাড়ায়। ভাইরাসকে কিছু জীববিজ্ঞানী জীবন রূপ হিসাবে বিবেচনা করেন, কারণ তারা জিনগত উপাদান বহন করে, বংশবৃদ্ধি করে এবং প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তিত হয়। যদিও তাদের কিছু গুণাবলী রয়েছে যেগুলিকে সাধারণত জীবন সংজ্ঞায়িত করার জন্য প্রয়োজনীয় মূল বৈশিষ্ট্য হিসাবে বিবেচনা করা হয় যেমন কোষের গঠন অভাব ইত্যাদি। যেহেতু তাদের কিছু গুণ আছে কিন্তু সব নেই, তাই ভাইরাসকে "জীবনের প্রান্তে থাকা জীব" (organisms at the edge of life) এবং রেপ্লিকেটর হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
ভাইরাস অনেকভাবে ছড়ায়। একটি সংক্রমণের পথ হলো রোগ-বাহী জীবের মাধ্যমে যেগুলো ভেক্টর নামে পরিচিত। উদাহরণস্বরূপ, উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ভাইরাসগুলি প্রায়শই পোকামাকড় দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে যেগুলো গাছের রস খায়, যেমন এফিডস; এবং প্রাণীর ভাইরাস রক্ত-চোষা পোকামাকড় দ্বারা বহন করা যেতে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, SARS-CoV-2, চিকেনপক্স, গুটিবসন্ত এবং হামসহ অনেক ভাইরাস কাশি এবং হাঁচির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। নরোভাইরাস এবং রোটাভাইরাস, ভাইরাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের সাধারণ কারণ, মল-মুখের পথে সংক্রমিত হয়। অর্থাৎ হাত থেকে মুখের সংস্পর্শে বা খাবার বা পানিতে ছড়িয়ে যেতে পারে। মানুষের মধ্যে সংক্রমণ তৈরি করতে প্রয়োজনীয় নরোভাইরাসের সংক্রামক ডোজ ১০০ কণারও কম। HIV হলো বেশ কিছু ভাইরাসের মধ্যে একটি যা যৌন সংসর্গের মাধ্যমে এবং সংক্রমিত রক্তের সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। ভাইরাসের একটি হোস্ট সেলের সংস্থানের পরিসরকে তার হোস্ট রেঞ্জ বলে: এটি ভাইরাসের জন্য সংকীর্ণ, যা শুধুমাত্র কয়েকটি প্রজাতিকে সংক্রমিত করতে পারে অথবা বহু প্রজাতিকে আক্রান্ত করতে সক্ষম এমন ভাইরাসগুলির জন্য বিস্তৃত হতে পারে।
প্রাণীদের মধ্যে ভাইরাল সংক্রমণ একটি অনাক্রম্য (Immunity) প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে যা সাধারণত সংক্রামিত ভাইরাসকে নির্মূল করে। টিকা দিয়েও অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া তৈরি করা যেতে পারে, যা নির্দিষ্ট ভাইরাল সংক্রমণের বিরুদ্ধে একটি কৃত্রিমভাবে অর্জিত অনাক্রম্যতা দেয়। কিছু ভাইরাস, যার মধ্যে রয়েছে HIV/AIDS, HPV সংক্রমণ এবং ভাইরাল হেপাটাইটিস, এই অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়াগুলি এড়িয়ে যায় এবং এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ হয়। বেশ কয়েকটি শ্রেণীর অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ তৈরি করা হয়েছে।
ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]- ভাইরাস জীব ও জড়ের মধ্যবর্তী পর্যায়ের এক প্রকারের বস্তু।
- ভাইরাস দেহে সাইটোপ্লাজম না থাকায় তা অকোষীয়।
- ভাইরাস অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বস্তু। যা কেবলমাত্র ইলেক্ট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দৃশ্য।
- ভাইরাস-দেহ নিউক্লিয়-প্রোটিন দ্বারা গঠিত।
- ভাইরাস বাধ্যতামূলক পরজীবী এবং রোগসৃষ্টিকারী।
- ভাইরাস কেবল পোষক কোষেই প্রজননক্ষম। পোষক কোষের বাইরে এরা জড়ের ন্যায় আচরণ করে।
- ভাইরাস একমাত্র প্রতিলিপি গঠনের (replication) মাধ্যমে বংশবিস্তার করে।
- ভাইরাস-দেহে কোনরূপ বিপাকীয় ক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় না।
- ভাইরাস-দেহে DNA অথবা RNA যে কোন একপ্রকারের নিউক্লিক অ্যাসিড থাকে।
- এদের অভিযোজন ও প্রকরণ (variation) ক্ষমতা অসাধারণ।[৬]
ভাইরাসের শ্রেণিবিভাগ
[সম্পাদনা]রোগবিস্তার বা বংশবিস্তারের ভূমিকা অনুযায়ী ভাইরাস প্রধানত তিন প্রকারের হয়, যথা-
১. উদ্ভিদ-ভাইরাস (Plant virus): যে সকল ভাইরাস উদ্ভিদদেহে রোগ সৃষ্টি করে বা বংশবিস্তার করে, তাদের উদ্ভিদ-ভাইরাস বলে। টোবাকো মোজাইক ভাইরাস (TMV), পি-মোজাইক ভাইরাস (PMV), বিন-মোজাইক ভাইরাস (BMV), টোমাটো বুসী ভাইরাস, আলুর এক্স-ভাইরাস ইত্যাদি এই রকমের ভাইরাস। এই ভাইরাসদের নিউক্লিক অ্যাসিডটি প্রধানত RNA (রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) ধরনের।
২. প্রাণী-ডাইরাস (Animal virus): যে সব ভাইরাস প্রাণীদেহে রোগ সৃষ্টি করে বা বংশবিস্তার করে, তাদের প্রাণী-ভাইরাস বলে। বসন্ত রোগের ভাইরাস 'ভ্যারিওলা' এবং 'ভ্যাকসিনিয়া', হাম রোগের ভাইরাস 'মিসল্ ভাইরাস', ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের ভাইরাস 'ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস', পোলিও রোগের 'পোলিওমাইয়েলিটিস' প্রভৃতি এই ধরনের ভাইরাস। এই রকম ভাইরাসের নিউক্লিক অ্যাসিড DNA (ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) অথবা RNA প্রকৃতির হয়। বসন্ত ভাইরাস DNA যুক্ত এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস RNA যুক্ত।
৩. ব্যাক্টিরিয়া-ভাইরাস (Bacteria virus): এই প্রকার ভাইরাস ব্যাক্টিরিয়ার দেহে বংশবিস্তার করে। এরা ব্যাক্টিরিয়ার উপর পরজীবী। এই রকম ভাইরাসের নিউক্লিক অ্যাসিডটি প্রধানত DNA প্রকৃতির। ফাজ ভাইরাস বা ব্যাক্টিরিওফাজ এই ধরনের ভাইরাস। এছাড়াও মাইকোফাজ (ছত্রাক আক্রমণকারী ভাইরাস), সায়ানোফাজ (নীলাভ-সবুজ শৈবাল আক্রান্তকারী ভাইরাস) এবং অ্যাক্টিনোফাজ (অ্যাক্টিনোমাইসিটিস আক্রমণকারী ভাইরাস) ইত্যাদি প্রকারের ভাইরাস বিদ্যমান।
আবার নিউক্লিক অ্যাসিডের উপস্থিতি অনুযায়ী ভাইরাস দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত।
(i) RNA যুক্ত ভাইরাস বা রাইবোভাইরাস, যেমন-অধিকাংশ উদ্ভিদ-ভাইরাস
(ii) DNA যুক্ত ভাইরাস, যেমন-অধিকাংশ প্রাণী-ভাইরাস।
এছাড়া ক্যাপসিডের গঠনবিন্যাস ও বাইরের মোড়কের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করেও ভাইরাসকে ভাগ করা হয়ে থাকে।
(i) ক্যাপসিডযুক্ত ভাইরাস, যেমন-ফাজ ভাইরাস, হার্পিস ভাইরাস, TMV,
(ii) ক্যাপসিডবিহীন ভাইরাস, যেমন-রাউস ভাইরাস, পোটাটো স্পিণ্ডিল ভাইরাস ইত্যাদি।
শব্দতত্ত্ব
[সম্পাদনা]ইংরেজি শব্দ "virus" এসেছে লাতিন শব্দ vīrus থেকে, যার অর্থ বিষ এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক তরল। Vīrus একই ইন্দো-ইউরোপীয় মূল থেকে এসেছে যেমন সংস্কৃত viṣa, আবেস্তান vīša, এবং প্রাচীন গ্রীক ἰός (iós), যার সবগুলোরই অর্থ "বিষ"। ইংরেজিতে "virus" এর প্রথম প্রমাণিত ব্যবহার দেখা যায় ১৩৯৮ সালে জন ট্রেভিসার বার্থলোমিউস অ্যাংলিকাসের De Proprietatibus Rerum (বিষয়বস্তুর বৈশিষ্ট্য) এর অনুবাদে। Virulent, লাতিন virulentus ('বিষাক্ত') থেকে এসেছে, প্রথম ব্যবহার পাওয়া যায় ১৪০০ সালের দিকে। 'সংক্রামক রোগ সৃষ্টিকারী উপাদান' অর্থে এর ব্যবহারের প্রথম রেকর্ড পাওয়া যায় ১৭২৮ সালে, অনেক আগে ১৮৯২ সালে দিমিত্রি ইভানোভস্কি কর্তৃক ভাইরাস আবিষ্কারের। ইংরেজি বহুবচন হলো viruses (কখনও কখনও vira), অন্যদিকে লাতিন শব্দটি একটি ভর বিশেষ্য (mass noun), যার কোনো শাস্ত্রীয়ভাবে প্রমাণিত বহুবচন নেই (Neo-Latin এ vīra ব্যবহৃত হয়)। বিশেষণ viral এর প্রথম ব্যবহার পাওয়া যায় ১৯৪৮ সালে। Virion শব্দটি (বহুবচন virions), যার উৎপত্তি ১৯৫৯ সালে, কোষ থেকে নির্গত একটিমাত্র ভাইরাস কণাকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয় যা একই ধরণের অন্য কোষকে সংক্রমিত করতে সক্ষম।
উৎপত্তি
[সম্পাদনা]ভাইরাস যেখানেই জীবন আছে সেখানেই পাওয়া যায় এবং সম্ভবত প্রাথমিক জীবকোষের বিবর্তনের পর থেকেই এগুলোর অস্তিত্ব ছিল। ভাইরাসের উৎপত্তি স্পষ্ট নয় কারণ সেগুলোর ফসিল পাওয়া যায় না, তাই সেগুলোর উদ্ভব বোঝার জন্য আণবিক কৌশল ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কখনো কখনো ভাইরাসের জিনগত উপাদান হোস্ট জীবের জার্মলাইনে (germline) সংযুক্ত হয়ে যায়, যার মাধ্যমে ভাইরাসগুলো বহু প্রজন্ম ধরে হোস্ট জীবের বংশধরদের কাছে চলে যেতে পারে। লক্ষ লক্ষ বছর আগের প্রাচীন ভাইরাসগুলো শনাক্ত করতে প্যালিওভাইরোলজিস্টদের (paleovirologists) জন্য এটি একটি অমূল্য তথ্যের উৎস।
ভাইরাসের উৎপত্তি ব্যাখ্যা করার জন্য তিনটি প্রধান অনুকল্প (hypothesis) আছে:
- রিগ্রেসিভ হাইপোথিসিস (Regressive hypothesis)
কোনো এক সময়ে ভাইরাস হয়তো ছোট কোষ ছিল যেগুলো বড় কোষগুলোকে পরজীবী হিসেবে ব্যবহার করতো। সময়ের সাথে সাথে, যেসব জিন পরজীবী হওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল না, সেগুলো হারিয়ে যায়। রিকেটসিয়া (rickettsia) এবং ক্ল্যামাইডিয়া (chlamydia) এমন দুই ধরণের জীবন্ত কোষ যারা ভাইরাসের মতো শুধু হোস্ট কোষের ভেতরেই বংশবৃদ্ধি করতে পারে। এগুলো 'রিগ্রেসিভ হাইপোথিসিস' এর পক্ষে প্রমাণ দেয়, কারণ পরজীবী হওয়ার উপর এদের নির্ভরশীলতা সম্ভবত কোষের বাইরে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনগুলোর ক্ষয়ের কারণ হয়েছে। এটিকে 'অবক্ষয় অনুকল্প' বা 'হ্রাসের অনুকল্প'ও বলা হয়।
- কোষীয় উৎপত্তি অনুকল্প (Cellular origin hypothesis)
কিছু ভাইরাস সম্ভবত কোন বড় জীবের জিন থেকে "পালিয়ে আসা" ডিএনএ বা আরএনএ'র অংশ থেকে বিবর্তিত হয়েছে। এই পলাতক ডিএনএ সম্ভবত প্লাজমিড (plasmid - কোষের মধ্যে চলাচল করতে পারে এমন খালি ডিএনএ'র অংশ) বা ট্রান্সপোসন (transposons - ডিএনএ'র যেসব অণু নিজেদেরকে কপি করে কোষের জিনের বিভিন্ন স্থানে চলে যেতে পারে) থেকে এসেছে। একসময় জাম্পিং জিন নামে পরিচিত ট্রান্সপোসনগুলি মোবাইল জেনেটিক উপাদানের উদাহরণ এবং কিছু ভাইরাসের উৎস হতে পারে। বারবারা ম্যাকক্লিনটক ১৯৫০ সালে ভুট্টার মধ্যে এগুলো আবিষ্কার করেছিলেন। এটিকে কখনও কখনও 'ভবঘুরে অনুকল্প' বা 'পালানোর অনুকল্প' বলা হয়।'
- সহ-বিবর্তন অনুকল্প (Co-evolution hypothesis)
এটিকে 'ভাইরাস-প্রথম অনুকল্প'ও বলা হয়। এই অনুকল্পের ধারণা হলো - পৃথিবীতে যখন প্রথম কোষের উদ্ভব হয়, ঠিক সেই সময়েই প্রোটিন এবং নিউক্লিক অ্যাসিডের জটিল অণু থেকে ভাইরাসগুলোর বিবর্তন ঘটেছে। ভাইরাসগুলো কোটি কোটি বছর ধরে বেঁচে থাকার জন্য কোষের উপর নির্ভরশীল। ভাইরয়েড হলো আরএনএ'র অণু যেগুলোকে ভাইরাস হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয় না কারণ তাদের প্রোটিন আবরণ নেই। ভাইরয়েডের কিছু বৈশিষ্ট্য বেশ কিছু ভাইরাসের সাথে মিলে যায় এবং এগুলোকে প্রায়শই সাবভাইরাল এজেন্ট বলা হয়। উদ্ভিদের জন্য ভাইরয়েড গুরুত্বপূর্ণ রোগের কারণ (pathogen)। সেগুলো প্রোটিনের জন্য কোডিং করে না তবে হোস্ট সেলের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং বংশবিস্তারের জন্য হোস্ট সেলের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে। মানুষের হেপাটাইটিস ডেল্টা ভাইরাসের ভাইরয়েডের মতোই আরএনএ জিনোম আছে, কিন্তু হেপাটাইটিস বি ভাইরাস থেকে তৈরি একটি প্রোটিন আবরণ থাকে এবং নিজস্ব কোন আবরণ তৈরি করতে পারে না। তাই, এটি একটি ত্রুটিপূর্ণ ভাইরাস। যদিও হেপাটাইটিস ডেল্টা ভাইরাসের জিনোম হোস্ট কোষের ভিতরে স্বাধীনভাবে নিজেকে কপি করতে পারে, নতুন কোষে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এটিকে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের একটি প্রোটিন কোটের সাহায্য প্রয়োজন হয়। একইভাবে, স্পুটনিক ভিরোফেজ মিমিভাইরাসের উপর নির্ভরশীল, যা প্রোটোজোয়ান অ্যাকান্থামোয়েবা ক্যাস্টেলানিকে সংক্রামিত করে। এই ভাইরাসগুলি হোস্ট কোষে অন্য ভাইরাস প্রজাতির উপস্থিতির উপর নির্ভরশীল, এদেরকে 'স্যাটেলাইট' বলা হয় এবং এগুলো সম্ভবত ভাইরয়েড এবং ভাইরাসের বিবর্তনগত মধ্যবর্তী অবস্থাকে তুলে ধরে।
অতীতে, এই হাইপোথিসিসগুলির সবগুলিতেই সমস্যা ছিল: রিগ্রেসিভ হাইপোথিসিস ব্যাখ্যা করতে পারেনি কেন ক্ষুদ্রতম কোষীয় পরজীবীও কোনওভাবে ভাইরাসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়। 'এসকেপ হাইপোথিসিস' ভাইরাসের কণিকায় জটিল ক্যাপসিড এবং অন্যান্য কাঠামোর ব্যাখ্যা করতে পারেনি। 'ভাইরাস-প্রথম হাইপোথিসিস' ভাইরাসের সংজ্ঞাকে সমর্থন করেনা কারণ ভাইরাসগুলো বেঁচে থাকার জন্য হোস্ট কোষের উপর নির্ভরশীল। ভাইরাসগুলিকে এখন প্রাচীন হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং এগুলোর উৎপত্তি সেই সময়ের আগে থেকে, যখন জীবন তিনটি ডোমেইনে ভাগ হয়নি। এই আবিষ্কারের ফলে আধুনিক ভাইরোলজিস্টরা এই তিনটি ধ্রুপদী অনুকল্প (classical hypotheses) পুনরায় বিবেচনা ও মূল্যায়ন করতে শুরু করেছেন।
আরএনএ কোষের পূর্বপুরুষদের জগতের প্রমাণ এবং ভাইরাস ও হোস্ট ডিএনএ ক্রমের কম্পিউটার বিশ্লেষণ বিভিন্ন ভাইরাসের মধ্যে বিবর্তনীয় সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ করে দেয় এবং আধুনিক ভাইরাসের পূর্বপুরুষদের শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে।
বর্তমান পর্যন্ত, এই বিশ্লেষণগুলি প্রমাণ করতে পারেনি যে এই অনুকল্পগুলির মধ্যে কোনটি সঠিক। এটা অসম্ভব মনে হয় যে বর্তমানে পরিচিত সকল ভাইরাসের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ রয়েছে এবং ভাইরাস সম্ভবত অতীতে একাধিকবার এক বা একাধিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভূত হয়েছে।
অণুজীববিজ্ঞান
[সম্পাদনা]জীবনের বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]ভাইরাসকে জীব হিসেবে গণ্য করা যায় কিনা, নাকি এগুলো জীবের সাথে মিথষ্ক্রিয়ায় যুক্ত জৈব কাঠামো - এই নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ভাইরাসকে বলা হয় "জীবনের প্রান্তসীমায় থাকা সত্ত্বা" কারণ এরা জীবের কিছু বৈশিষ্ট্য বহন করে। যেমন, এদের জিন রয়েছে, প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে এরা বিবর্তিত হয় এবং স্ব-সমাবেশ-এর মাধ্যমে নিজেদের অনেকগুলো প্রতিরূপ তৈরি করে বংশবিস্তার করে। কিন্তু, ভাইরাসের কোনও কোষীয় কাঠামো নেই, যেটিকে প্রায়শই জীবনের মৌলিক একক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভাইরাসের নিজস্ব বিপাক ক্রিয়া নেই এবং নতুন ভাইরাস তৈরি করতে এদের একটি পোষক কোষের প্রয়োজন হয়। অতএব, একটি পোষক কোষের বাইরে এরা স্বাভাবিকভাবে বংশবিস্তার করতে পারে না - যদিও কিছু ব্যাকটেরিয়া যেমন রিকেটসিয়া এবং ক্ল্যামাইডিয়াকে একই সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও জীবন্ত জীব বলে মনে করা হয়। জীবনের স্বীকৃত রূপগুলি বংশবিস্তারের জন্য কোষ বিভাজন ব্যবহার করে, যেখানে ভাইরাসগুলি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোষের মধ্যে জমা হয়। তারা স্বায়ত্তশাসিত ক্রিস্টাল বৃদ্ধির থেকে আলাদা কারণ তারা প্রাকৃতিক নির্বাচনের শিকার হওয়ার সময় জিনগত পরিবর্তনগুলি উত্তরাধিকারসূত্রে পায়। হোস্ট কোষের মধ্যে ভাইরাসের স্ব-সংযোজন জীবনের উৎপত্তি অধ্যয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি এই অনুমানের আরও বিশ্বাসযোগ্যতা দেয় যে জীবন স্ব-সংযোজনকারী জৈব অণু হিসাবে শুরু হতে পারে।
গঠন
[সম্পাদনা]ভাইরাসগুলি বিভিন্ন আকার এবং ধরনের হয়, যাকে 'মরফোলজি' বলা হয়। সাধারণভাবে, ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে অনেক ছোট এবং একটি Escherichia coli (ইশেরিচিয়া কোলাই) ব্যাকটেরিয়া কোষের ভিতরে হাজারেরও বেশি ব্যাকটেরিওফেজ ভাইরাস থাকতে পারে। অনেক ভাইরাস যা নিয়ে গবেষণা হয়েছে, সেগুলো গোলাকার এবং এদের ব্যাস ২০ থেকে ৩০০ ন্যানোমিটারের মধ্যে। কিছু ফিলোভাইরাস, যা আঁশের মত চিকন, তারা প্রায় ১৪০০ ন্যানোমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে; তবে এদের ব্যাস মাত্র ৮০ ন্যানোমিটার। বেশিরভাগ ভাইরাস সাধারণ আলোকীয় মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখা যায় না, তাই সেগুলো দেখার জন্য স্ক্যানিং এবং ট্রান্সমিশন ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করা হয়। ভাইরাস এবং এর পটভূমির মধ্যে পার্থক্য বাড়াতে, ইলেকট্রন-ডেন্স "দাগ (stain)" ব্যবহার করা হয়। এগুলো টাংস্টেনের মতো ভারী ধাতুর লবণের দ্রবণ, যা দাগযুক্ত অঞ্চল থেকে ইলেকট্রনকে বিক্ষিপ্ত করে। ভিরিয়ন যখন দাগ দিয়ে আবৃত থাকে (পজিটিভ স্টেইনিং), তখন সূক্ষ্ম বিবরণ অস্পষ্ট হয়ে যায়। পটভূমি স্টেইন করে নেগেটিভ স্টেইনিং এই সমস্যাটির সমাধান করে।
একটি সম্পূর্ণ ভাইরাস কণা, যাকে ভিরিয়ন বলা হয়, তা নিউক্লিক অ্যাসিড দিয়ে গঠিত, যা প্রোটিনের একটি সুরক্ষামূলক আবরণ দ্বারা বেষ্টিত থাকে এবং একে ক্যাপসিড বলা হয়। ক্যাপসিড ক্যাপসোমিয়ার নামে প্রোটিন সাবইউনিট থেকে গঠিত হয়। ভাইরাসের হোস্ট কোষের ঝিল্লি থেকে একটি লিপিড "এনভেলপ" থাকতে পারে। ক্যাপসিড ভাইরাল জিনোম দ্বারা এনকোডেড প্রোটিন থেকে তৈরি এবং এর আকৃতি রূপগত পার্থক্যের ভিত্তি হিসাবে কাজ করে। ভাইরাস থেকে তৈরি প্রোটিন সাবইউনিট নিজ থেকেই একত্রিত হয়ে একটি ক্যাপসিড গঠন করে, সাধারণত ভাইরাসের জিনোমের উপস্থিতির প্রয়োজন হয়। জটিল ভাইরাসের সাংকেতিক প্রোটিনগুলো ক্যাপসিডের গঠনে সহায়তা করে। নিউক্লিক অ্যাসিডের সাথে যুক্ত প্রোটিনগুলিকে নিউক্লিওপ্রোটিন বলা হয় এবং ভাইরাল নিউক্লিক অ্যাসিডের সাথে ভাইরাল ক্যাপসিড প্রোটিনের সংযুক্তিকে নিউক্লিওক্যাপসিড বলা হয়। ক্যাপসিড এবং সম্পূর্ণ ভাইরাসের গঠন অ্যাটমিক ফোর্স মাইক্রোস্কোপির মাধ্যমে যান্ত্রিকভাবে (শারীরিকভাবে) পরীক্ষা করা যেতে পারে। সাধারণভাবে, ভাইরাসের পাঁচটি প্রধান রূপগত প্রকার রয়েছে:
- হেলিকাল (প্যাঁচানো)
- এই ধরনের ভাইরাসগুলি একক ধরণের ক্যাপসোমিয়ার দ্বারা গঠিত, যেগুলো একটি কেন্দ্রীয় অক্ষের চারপাশে প্যাঁচানোভাবে সজ্জিত হয়ে থাকে। এটি একটি হেলিক্যাল কাঠামো তৈরি করে, যার কেন্দ্রে একটি ফাঁপা নালী বা টিউব থাকতে পারে। এই গঠনকাঠামোর ফলে ভাইরাসগুলি ছোট ও অনমনীয় দণ্ডাকার অথবা লম্বা ও নমনীয় সুতার মতো হতে পারে। ভাইরাসের জিনগত উপাদান (সাধারণত একসূত্রক আরএনএ, কিছু ক্ষেত্রে একসূত্রক ডিএনএ) প্রোটিনের হেলিক্সের সাথে আবদ্ধ থাকে। এই বন্ধন তৈরি হয় ঋণাত্মক আধানযুক্ত নিউক্লিক অ্যাসিড এবং প্রোটিনের ধনাত্মক আধানের মধ্যকার আকর্ষণের ফলে। মোটের উপর, একটি হেলিক্যাল ক্যাপসিডের দৈর্ঘ্য নির্ভর করে তার ভিতরে থাকা নিউক্লিক অ্যাসিডের দৈর্ঘ্যের উপর এবং ব্যাস নির্ভर করে ক্যাপসোমিয়ারের আকার ও বিন্যাসের উপর। সুপরিচিত টোব্যাকো মোজাইক ভাইরাস ও ইনোভাইরাস হেলিক্যাল ভাইরাসের উদাহরণ।
- আইকোসাহেড্রাল (বিশপার্শ্ব)
- অধিকাংশ প্রাণীঘটিত ভাইরাস আইকোসাহেড্রাল কিংবা প্রায়-গোলাকার হয়ে থাকে, যেখানে একটি বিশেষ চিরাল আইকোসাহেড্রাল প্রতিসাম্য বিদ্যমান। আইকোসাহেড্রন হলো সদৃশ অংশ দিয়ে একটি বদ্ধ কাঠামো তৈরির সর্বোত্তম উপায়। একটি ত্রিভুজাকার পৃষ্ঠের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যাপসোমিয়ারের সংখ্যা অন্তত ৩টি, যা একটি আইকোসাহেড্রনের ক্ষেত্রে মোট ৬০টি ক্যাপসোমিয়ার তৈরি করে। রোটাভাইরাসের মতো অনেক ভাইরাসে ৬০টির বেশি ক্যাপসোমিয়ার থাকে এবং সেগুলো দেখতে গোলাকার মনে হয়, কিন্তু ভাইরাসগুলো এই প্রতিসাম্যটি ধরে রাখে। এটা সম্ভব করতে, শীর্ষবিন্দুতে থাকা ক্যাপসোমিয়ারগুলোকে অন্য পাঁচটি ক্যাপসোমিয়ার ঘিরে রাখে এবং এগুলোকে 'পেন্টন' বলা হয়। ত্রিভুজাকার পৃষ্ঠগুলোর ক্যাপসোমিয়ারগুলোকে অন্য ছয়টি ক্যাপসোমিয়ার ঘিরে রাখে এবং এদের 'হেক্সন' বলা হয়। হেক্সনগুলো আসলে সমতল হয়, অন্যদিকে ১২টি শীর্ষবিন্দু তৈরি করা পেন্টনগুলো কিছুটা বளைযুক্ত থাকে। একই প্রোটিন পেন্টন ও হেক্সন উভয়েরই উপ-একক হিসেবে কাজ করতে পারে, অথবা এগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রোটিন দিয়ে গঠিত হতে পারে।
- প্রলম্বিত
- এটি একটি আইকোসাহেড্রন যা পাঁচগুণ অক্ষ বরাবর দীর্ঘায়িত এবং ব্যাকটেরিওফাজের মাথার একটি সাধারণ বিন্যাস। এই কাঠামোটি দুই প্রান্তে একটি ক্যাপযুক্ত একটি সিলিন্ডার দিয়ে গঠিত।
- এনভেলপড (আবৃত)
- কিছু প্রজাতির ভাইরাস, আক্রান্ত কোষের বহিরাআবরণের পরিবর্তিত রূপ দিয়ে নিজেদেরকে আবৃত করে নেয়। এটি সেই কোষের বাইরের ঝিল্লি বা অভ্যন্তরীণ ঝিল্লি যেমন নিউক্লিয়াস বা এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম হতে পারে। এর মাধ্যমে ভাইরাস একটি লিপিড বাইলেয়ার দ্বারা গঠিত বহিরাবরণ লাভ করে। একে ভাইরাল এনভেলপ বা ভাইরাসের বহিরাবরণ বলা হয়। এই বহিরাবরণে ভাইরাসের নিজস্ব জিনোম থেকে তৈরি প্রোটিনের পাশাপাশি আক্রান্ত কোষের জিনোম থেকে তৈরি প্রোটিনগুলিও থাকে। লিপিড ঝিল্লি এবং উপস্থিত যেকোনো কার্বোহাইড্রেট সম্পূর্ণরূপে আক্রান্ত কোষ থেকে নেওয়া হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, এইচআইভি (যা এইডস সৃষ্টি করে) এবং SARS-CoV-2 (যা কোভিড-১৯ রোগের কারণ) এই কৌশলটি ব্যবহার করে। বেশিরভাগ এনভেলপযুক্ত ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষমতার জন্য তাদের বহিরাবরণের উপর নির্ভরশীল।
- জটিল
- এই ভাইরাসগুলিতে একটি ক্যাপসিড থাকে যা সম্পূর্ণরূপে প্যাঁচানো বা সম্পূর্ণভাবে আইকোসাহেড্রাল নয় এবং এতে প্রোটিন লেজ বা একটি জটিল বাইরের প্রাচীরের মতো অতিরিক্ত কাঠামো থাকতে পারে। কিছু ব্যাকটেরিওফাজ (যে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করে), যেমন এন্টারোব্যাকটেরিয়া ফাজ টি4-এর কাঠামো বেশ জটিল। এদের একটি আইকোসাহেড্রাল মাথা এবং হেলিক্যাল লেজ থাকে। লেজের সাথে একটি ষড়ভুজাকৃতি বেস প্লেট এবং বেরিয়ে থাকা প্রোটিন দিয়ে তৈরি টেইল ফাইবার থাকতে পারে। লেজের এই কাঠামোটি একটি আণবিক সিরিঞ্জের মতো কাজ করে। এটি ব্যাকটেরিয়া কোষের সাথে সংযুক্ত হয় এবং তারপর ভাইরাসের জিনোমকে কোষের ভেতরে প্রবেশ করায়।
পক্সভাইরাস হলো এক ধরণের বৃহৎ ও জটিল জীবাণু যাদের রূপ গঠন বেশ অস্বাভাবিক। এই জীবাণুর জিনোম কেন্দ্রে অবস্থিত একটি ডিস্ক আকৃতির কাঠামোর সাথে প্রোটিনের সাথে যুক্ত থাকে, যা নিউক্লিওয়েড নামে পরিচিত। নিউক্লিওয়েড একটি ঝিল্লী এবং দুটি অজানা কার্যকারিতা সম্পন্ন পার্শ্বীয় অংশ দ্বারা বেষ্টিত থাকে। জীবাণুর বাইরের অংশে প্রোটিনের মোটা স্তরে আবৃত একটি বাইরের আবরণ থাকে। পুরো ভাইরিয়ন কিছুটা প্লিওমর্ফিক, ডিম্বাকৃতি থেকে ইটের আকৃতি পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়।
বৃহদাকার ভাইরাস
[সম্পাদনা]মাইমিভাইরাস হল চিহ্নিত বৃহত্তম ভাইরাসগুলির মধ্যে একটি, যার ক্যাপসিডের ব্যাস ৪০০ ন্যানোমিটার। ১০০ ন্যানোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রোটিন ফিলামেন্টগুলি ভাইরাসটির পৃষ্ঠ থেকে বেরিয়ে থাকে। একটি ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের নিচে এর ক্যাপসিড ষড়ভুজাকার দেখায়, অতএব ক্যাপসিডটি সম্ভবত আইকোসাহেড্রাল গঠনের। ২০১১ সালে, গবেষকরা চিলির লাস ক্রুসেস উপকূলের সমুদ্রতল থেকে সংগৃহীত পানির নমুনায়, তখনকার জানা সবচেয়ে বড় ভাইরাস আবিষ্কার করেন। অস্থায়ীভাবে 'মেগাভাইরাস চিলেনসিস' নামে পরিচিত এই ভাইরাসটিকে একটি সাধারণ অপটিক্যাল মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখা যেতে পারে। ২০১৩ সালে, পান্ডোরাভাইরাস গণটি চিলি এবং অস্ট্রেলিয়ায় আবিষ্কৃত হয়েছিল, এবং এর জিনোম মেগাভাইরাস এবং মিমিভাইরাসের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বড়। সমস্ত বৃহদাকার ভাইরাসের মধ্যেই dsDNA জিনোম রয়েছে এবং সেগুলি বিভিন্ন পরিবারে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে: মিমিভিরিডে, পিথোভিরিডে, পান্ডোরাভিরিডে, ফাইকোডনাভিরিডে এবং মলিভাইরাস গণ।
কিছু ভাইরাস আর্কিয়া নামক এককোষী অণুজীবকে আক্রমণ করে। এইসব ভাইরাসের গঠন অত্যন্ত জটিল, যা এখন পর্যন্ত জানা অন্য বিন্যাসের ভাইরাসের সাথে মেলে না। আর্কিয়াতে সংক্রমিত ভাইরাসের মধ্যে কুমড়োর মতো আকার থেকে শুরু করে হুকযুক্ত রড, অশ্রুবিন্দু এমনকি বোতলের মতো অদ্ভুত আকৃতিও দেখা যায়। কিছু আর্কিয়ান ভাইরাস দেখতে লেজযুক্ত ব্যাকটেরিওফাজের মতো, এবং তাদের একাধিক লেজের কাঠামো থাকতে পারে।
আকার-আকৃতি
[সম্পাদনা]ভাইরাস সাধারণত নিম্ন লিখিত আকৃতির হয়ে থাকে। গোলাকার, দণ্ডাকার, বর্তুলাকার, সূত্রাকার, পাউরুটি আকার, বহুভুজাক্রিতি, ব্যাঙ্গাচি আকার প্রভৃতি।[৭]
ভাইরাসের গঠন
[সম্পাদনা]ভাইরাসের দেহে কোন নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম নেই; কেবল প্রোটিন এবং নিউক্লিক এসিড দিয়ে দেহ গঠিত। কেবলমাত্র উপযুক্ত পোষকদেহের অভ্যন্তরে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। এদের অভ্যন্তরীণ তথ্য বহনকারী সূত্রক দুই প্রকারের হতে পারে: ডিএনএ এবং আরএনএ।
ভাইরাসের বাইরের প্রোটিন আবরণকে ক্যাপসিড বলা হয়। ক্যাপসিডের গঠন প্রধানত দুই প্রকার, সর্পিলাকার এবং সমবিশতলাকার।ভাইরাস অতি আণুবীক্ষণিক সত্তা। ভাইরাসের গড় ব্যাস ৮-৩০০ ন্যানোমিটার।
বংশাণুগত গঠন
[সম্পাদনা]ভাইরাসের প্রজাতিভেদে বংশাণুসমগ্রের আকারও ভিন্ন হয়। এসএসডিএনএ সার্কোভাইরাসের বংশাণুসমগ্র আকারে সবচেয়ে ক্ষুদ্র। Circoviridae পরিবারের এই ভাইরাসের মাত্র দুই প্রোটিন রয়েছে ও বংশাণুসমগ্রের আকার মাত্র দুই কিলোবেস।[৮] সবচেয়ে বড় বংশাণুসমগ্রের ভাইরাস হলো প্যান্ডোরাভাইরাস। প্রায় ২৫০০ প্রোটিনের কোড সংবলিত এই ভাইরাসের বংশাণুসমগ্রের আকার প্রায় দুই মেগাবেস। [৯] ভাইরাস বংশাণুর খুব কমই ইন্ট্রোন থাকে আর সেগুলো বংশাণুসমগ্রে এমনভাবে সাজানো থাকে যেন তারা উপরিস্থাপিত বা একে অপরের উপর সুবিন্যস্ত হতে পারে।[১০] সাধারণত, আরএনএ ভাইরাসের বংশাণুসমগ্রের আকার ডিএনএ ভাইরাস অপেক্ষা ছোট হয়। কেননা এই ধরনের ভাইরাসের প্রতিলিপিকরণের সময় বেশি ভ্রান্তি হওয়ার সুযোগ থাকে।
ভাইরাসঘটিত রোগ
[সম্পাদনা]মানুষের ক্ষেত্রে
জল বসন্ত (Chicken Pox) এবং গুটি বসন্ত (Small Pox): প্রায় সকল বয়সের মানুষ ভাইরাস-ঘটিত এই রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়। এই সকল রোগ চর্মে হয়। অতীতে এই রোগ বহু মানুষের মৃত্যু ঘটালেও বর্তমানে এই রোগ প্রায় সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রাধীন। এই রোগ দুটি যথাক্রমে-Vaccinia sp এবং Variola sp নামক ভাইরাস দ্বারা সংগঠিত হয়।
মাম্পস্ (Mumps): এই রোগ মাম্পস্ ভাইরাস (Mumps virus) দ্বারা সংগঠিত হয়। রোগাক্রান্ত মানুষের গলা ও গাল ফুলে উঠে এবং লালাগ্রন্থির প্রদাহ সৃষ্টি হয়।
হাম (Measles): এই রোগ প্রধানত শিশুদের হয়। ইহা মিসলস্ ভাইরাস (Measles virus) ঘটিত রোগ। এই রোগের ফলে শিশুদের শ্রবণক্ষমতা হ্রাস পায় এমনকি মৃত্যু ঘটে।
পোলিও (Poliomyelitis): এই রোগ প্রধানত শিশুদের হয়। পোলিওমায়েলিটিস ভাইরাস (Poliomyelitis sp) দ্বারা পোলিও রোগ হয়। ইহা রোগাক্রান্ত শিশুর স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রান্ত করে, ফলে মস্তিষ্ক ও পেশী অবশ হয়ে পক্ষাঘাত ঘটায়। বর্তমানে পোলিও টিকা (ভ্যাকসিন) ব্যবহারে এই রোগ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রাধীন।
এনকেফালাইটিস্ (Encephalitis): মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টিকারী এনকেফালাইটিস ভাইরাস (Encephalitis virus) দ্বারা এই রোগ ঘটে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza): ইহা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস (Influenza virus) দ্বারা ঘটে। এই রোগ সকল বয়সের মানুষের দেখা যায়। সাধারণত সর্দি-কাশির সাথে জ্বর এই রোগের প্রধান লক্ষণ। এই ভাইরাস প্রধানত শ্বসন তন্ত্রকে আক্রমণ করে।
এইডস AIDS: মানবদেহে HIV অর্থাৎ Human Immunodeficiency Virus দ্বারা ঘটে। এই রোগে আক্রান্তকারী মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে লোপ পায়।[১১]
আরও দেখুন: জন্ডিস, ডেঙ্গু, সর্দি কাশি,ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস,সার্স,কোভিড ১৯
প্রাণীর ক্ষেত্রে
জলাতঙ্ক (Hydrophobia or Rabies): রেবিস ভাইরাসের আক্রমণে কুকুর, বিড়াল এমনকি মানুষেরও জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে। এটি মারাত্মক রোগ, তাই পাগলা কুকুর বা বিড়াল কামড়ালেই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
পা ও মুখের রোগ (Foot and Mouth disease): এই রোগ সাধারণত গবাদি পশুর হয়। জল ও বিচালির মাধ্যমে সংক্রামিত এই রোগে অসংখ্য গবাদি পশুর মৃত্যু ঘটে। এই রোগে আক্রান্ত পশুর হৃৎপিণ্ড ও অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ক্ষতি হয়।
গো-বসন্ত (Cow Pox): গবাদি পশুর একটি সংক্রামক রোগ। এই রোগে প্রতি বছর বহু গবাদি পশুর মৃত্যু হয়।[১২]
উদ্ভিদ ভাইরাস
[সম্পাদনা]- টোবাকো মোজাইক ভাইরাস (Marmor tabaci), রোগের নাম: টোবাকো মোজাইক। আক্রান্ত স্থান: তামার গাছের পাতা।
- পি-মোজাইক ভাইরাস (Pea mosaic virus), রোগের নাম: পি মোজাইক। আক্রান্ত স্থান: মটর গাছের পাতা।
- বিন-মোজাইক ভাইরাস (Bean mosaic virus), রোগের নাম:বিন মোজাইক। আক্রান্ত স্থান:শিম গাছের পাতা।
- টোমাটো-বুসি ভাইরাস (Tomato bushy virus), রোগের নাম:লিফ কার্ল। আক্রান্ত স্থান: টোমাটো গাছের পাতা।
- লেটুস মোজাইক ভাইরাস (Lettuce mosaic virus), রোগের নাম: লেটুস মোজাইক। আক্রান্ত স্থান: লেটুস গাছের পাতা।
- বাঞ্চি-টপ ভাইরাস (Bunchy top virus), রোগের নাম: বঞ্চি টপ। আক্রান্ত স্থান: কলা গাছের অগ্রভাগ।
- লিফকার্ল ভাইরাস (Leaf curl virus), রোগের নাম: লিফকার্ল। আক্রান্ত স্থান: পেঁপে গাছের পাতা।
- স্টার ক্রাক ভাইরাস (Star crack virus), রোগের নাম: স্টার ক্রাক। আক্রান্ত স্থান: আপেল ও নাসপাতি ফল।
- স্ট্রেক ভাইরাস (Streak virus), রোগের নাম: স্ট্রেক। আক্রান্ত স্থান: বাজরা দানা।[১৩]
বংশবৃদ্ধি
[সম্পাদনা]ভাইরাস পোষক দেহে বংশবৃদ্ধি করে থাকে। এদের জীবনচক্র দুই প্রকারের হয়ে থাকে:
১. লাইটিক চক্র
২. লাইসোজেনিক চক্র
১. লাইটিক চক্র: ভাইরাস পরজীবী হিসেবে বংশবৃদ্ধি করে তাই এদের বংশবিস্তার প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করা কঠিন। যে জীবনচক্রে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে ফাযের (অণুজীব আক্রমণকারী ভাইরাস) অপত্য কোষগুলো শেষ পর্যায়ে ব্যাকটেরিয়াকে বিগলিত করে মুক্ত হয়, সে জীবনচক্রকে লাইটিক চক্র বলে। লাইটিক চক্র সম্পন্নকারী ফাজকে লাইটিক ফাজ বলে। লাইটিক চক্র সাধারণত ব্যাকটেরিওফাযের জীবনচক্রে দেখা যায়। নিচে T2 ভাইরাসের E. coli ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের ক্ষেত্রে লাইটিক চক্রের ধাপগুলো বর্ণনা করা হল:
- পৃষ্ঠলগ্ন হওয়া: এ পর্যায়ে T2 ভাইরাস পোষক E. coli ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীরে স্পর্শকতন্তু ও স্পাইক এর সাহায্যে পৃষ্টলগ্ন হয়। E. coli ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীরে ফায প্রোটিনের জন্য রিসেপ্টর সাইড থাকায় রিসেপ্টর সাইডের প্রোটিনের সাথে ফায ক্যাপসিডের স্পর্শক তন্তুর প্রোটিনের রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে ফাযটি ব্যাকটেরিয়ার প্রাচীরে সংযুক্ত হয়ে যায়।
- অনুপ্রবেশ: পৃষ্টলগ্ন হওয়ার পর ভাইরাসের লেজের স্পাইক থেকে লাইসোজাইম এনজাইম নিঃসৃত হয়। এই এনজাইমের কার্যকারিতায় ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীরের স্তরকে দ্রবীভূত করে সূক্ষ্ণ নালিকার সৃষ্টি করে। এ প্রক্রিয়াকে ড্রিলিং বলে। T2 ভাইরাসের লেজের প্রোটিন আবরণটি বাইরে পড়ে থাকে।
- প্রোটিন সংশ্লেষণ: ভাইরাসের DNA পোষক কোষে প্রবেশ করার পর ব্যাকটেরিয়া কোষের DNA-এর উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ও পলিমারেজ এনজাইমের সহায়তায় mRNA উৎপাদরেন মাধ্যমে প্রোটিন তৈরি শুরু করে। এই প্রোটিন পরবর্তীতে ভাইরাসের বহিঃরাবনণ বা খোলস (মাথা ও লেজ) তৈরিতে অংশগ্রহণ করে।
- বংশাণুসমগ্র তৈরীঃ এ পর্যায়ে পলিমারেজ এনজাইমের সহাতায় ব্যাকটেরিয়ার নিউক্লিওটাইড ব্যবহার করে ভাইরসের DNA অসংখ্য প্রতিরূপ সৃষ্টি করে।
- একত্রীকরণ ও নির্গমনঃ এ দশায় বংশাণুসমগ্রগুলি প্রোটিন আবরণের দ্বারা মোড়কের ন্যায় আবৃত হয় এবং অপত্য ভাইরাসের সৃষ্টি করে। অপত্য ভাইরাসের চাপে পোষক ব্যাকটেরিয়ার প্রাচীর বিদীর্ণ হয়ে যায়। ফলে পরিণত ফাজগুলো পেষক কোষের বাইরে নির্গত হয়।
লাইটিক চক্রের মাধ্যমে T2 ব্যাকটেরিওফাজের সংখ্যা বৃদ্ধির সমগ্র প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে লাগে ২০-৩০ মিনিট এবং এ সময়ের মধ্যে প্রায় ২০০ টি নতুন অপত্য ব্যাকটেরিয়ওফাজ সৃষ্টি হয়।
২. লাইসোজেনিক চক্র: এই প্রক্রিয়ায় ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার কোষে তার নিউক্লিক এসিড প্রবেশ করায় ঠিকই, কিন্তু সেটা লাইটিক চক্রের মত কোষকে ভেঙে ফেলে না বা ভাইরাসের কোষের সংখ্যাবৃদ্ধি করে না। এই চক্রে ভাইরাস তার নিউক্লিক এসিড ব্যাকটেরিয়ামের কোষের ডিএনএ এর সাথে যুক্ত করে দেয় এবং ভাইরাল নিউক্লিক এসিড ব্যাকটেরিয়াল ডিএনএ এর সাথে সাথে সংখ্যা বৃদ্ধি করে। যেহেতু এখানে কোষের মৃত্যু ঘটে না, তাই একে বলে মৃদু আক্রমণ। আর যে সব ভাইরাস এই চক্র ব্যবহার করে, তাদের বলে টেমপারেট ফাজ। ল্যামডা ভাইরাস এক ধরনের টেম্পারেট ফাজ, এরা E.coli কে আক্রমণ করে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Wu KJ (১৫ এপ্রিল ২০২০)। "There are more viruses than stars in the universe. Why do only some infect us? – More than a quadrillion quadrillion individual viruses exist on Earth, but most are not poised to hop into humans. Can we find the ones that are?"। National Geographic Society। ১৫ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২৫।
- ↑ Koonin EV, Senkevich TG, Dolja VV (সেপ্টেম্বর ২০০৬)। "The ancient Virus World and evolution of cells"। Biology Direct। 1 (1): 29। ডিওআই:10.1186/1745-6150-1-29
। পিএমআইডি 16984643। পিএমসি 1594570
।
- ↑ Zimmer C (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। "The Secret Life of a Coronavirus - An oily, 100-nanometer-wide bubble of genes has killed more than two million people and reshaped the world. Scientists don't quite know what to make of it."। The New York Times। ২০২১-১২-২৮ তারিখে মূল
থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ Lawrence CM, Menon S, Eilers BJ, Bothner B, Khayat R, Douglas T, Young MJ (মে ২০০৯)। "Structural and functional studies of archaeal viruses"। The Journal of Biological Chemistry। 284 (19): 12599–603। ডিওআই:10.1074/jbc.R800078200
। পিএমআইডি 19158076। পিএমসি 2675988
।
- ↑ Edwards RA, Rohwer F (জুন ২০০৫)। "Viral metagenomics"। Nature Reviews. Microbiology। 3 (6): 504–10। এসটুসিআইডি 8059643। ডিওআই:10.1038/nrmicro1163। পিএমআইডি 15886693।
- ↑ জীবন বিজ্ঞান: তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, প্রকাশক: শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি কলকাতা বছর:১৯৮৭,পৃ.১৪৬
- ↑ উচ্চ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান, প্রথম পত্র (ড. মোহাম্মদ আবুল হাসান)
- ↑ Belyi VA, Levine AJ, Skalka AM (২০১০)। "Sequences from ancestral single-stranded DNA viruses in vertebrate genomes: the parvoviridae and circoviridae are more than 40 to 50 million years old"। Journal of Virology। 84 (23): 12458–62। ডিওআই:10.1128/JVI.01789-10। পিএমআইডি 20861255। পিএমসি 2976387
।
- ↑ Philippe N, Legendre M, Doutre G, Couté Y, Poirot O, Lescot M, Arslan D, Seltzer V, Bertaux L, Bruley C, Garin J, Claverie JM, Abergel C (২০১৩)। "Pandoraviruses: amoeba viruses with genomes up to 2.5 Mb reaching that of parasitic eukaryotes"। Science। 341 (6143): 281–86। ডিওআই:10.1126/science.1239181। পিএমআইডি 23869018। বিবকোড:2013Sci...341..281P।
- ↑ Brandes, Nadav; Linial, Michal (২১ মে ২০১৬)। "Gene overlapping and size constraints in the viral world"। Biology Direct। 11 (1): 26। ডিওআই:10.1186/s13062-016-0128-3। পিএমআইডি 27209091। পিএমসি 4875738
।
- ↑ জীববিদ্যা: গুহ- দাশগুপ্ত- সাঁতরা, মৌলিক লাইব্রেরী, কলকাতা। বছর: ২০০৪,পৃ ২৪-২৬
- ↑ উচ্চ মাধ্যমিক জীব বিজ্ঞান: শৈলেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়-তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি, কলকাতা, বছর:১৯৭৬পৃ.৮০
- ↑ জীববিদ্যা: গুহ-দাশগুপ্ত-সাঁতরা, প্রকাশক: মৌলিক লাইব্রেরী, কলকাতা,বছর:২০০৪, পৃ.২৮