বিষয়বস্তুতে চলুন

চটকা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা Waraka Saki (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০১:৩৫, ১১ নভেম্বর ২০২২ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (ক্যাট-এ-লট: বিষয়শ্রেণী:পশ্চিমবঙ্গের সংগীত সরিয়ে বিষয়শ্রেণী:পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীত যোগ করা হয়েছে)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

চট্‌কা গান  উত্তরবঙ্গে প্রচলিত এক ধরনের লোকগীতি যা আসলে ভাটিয়ালি না ভাওয়াইয়া গানের অধপতিত বা অপভ্রংস রূপ।[] ভারতের কোচবিহার জেলা ও বাংলাদেশের রংপুর জেলায় এই গানের জন্ম।[] চট্‌কা মূলত তাল প্রধান সুরে রচিত। হালকা তাল ও ছন্দে পরিবেশন করা হয়। এই গানে লঘু তাল এবং জলদ লয় ব্যবহার করা হয়।[] সেই কারণে দরিয়া গানের মতো প্রলম্বিত সুরের বিন্যাসের ধীরস্থির ভাব পাওয়া যায় না।[] চটকা ভাওয়াইয়াতে বিশেষ ঢং-এর দোতরার বাদনশৈলী পাওয়া যায়।  দৈনন্দিন জীবনের নিতান্ত সাধারণ বিষয় এই গানের উপজীব্য।[] এই গানের বিশেষ বৈশিষ্ট্যগত কারণে সাধারণত উত্তর বাংলার শিল্পী ছাড়া এ গানের সুরসংযোজনা সম্ভব হয় না।

নামকরণ

গ্রাম্য কথায় চট শব্দের অর্থ তাড়াতাড়ি। এই চট শব্দটির স্ত্রীলিঙ্গান্তর করে ‘চটকা’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে।[]

চটকা ও ভাটিয়ালি

ভাওয়াইয়া গান দুই প্রকারের[] হয়ে থাকে।

  • দীর্ঘ সুরবিশিষ্ট
  • চটকা সুরবিশিষ্ট

দীর্ঘ সুর বিশিষ্ঠ গানে নর-নারীর, বিশেষত নবযৌবনাদের অনুরাগ, প্রেমপ্রীতি ও ভালোবাসার আবেদনই মূল উপজীব্য।[] অন্যদিকে চটকা এক প্রকার রঙ্গগীতি।[] এই গান চটুল ও দ্রুত তালের হয়ে থাকে। এই শ্রেণীর গানে যথেষ্ট হাস্যরসের উপাদান থাকে।[]

চটকা গানের উপজীব্য

চটকা গানের সংগীত রচনাকারেরা এই গানের মধ্য দিয়ে সাংসারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রীর আশা-আকাঙ্ক্ষা, মনোমালিন্য, সন্তান-সন্ততি কামনা, সংসার জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত ইত্যাদি বিষয় ব্যক্ত করেন।[]

প্রকারভেদ

মূলত এই গান দোতারা ভিত্তিক তাল অর্থাৎ বদন শৈলীকে বাজানো হয়। একে বিশুদ্ধ চটকা বলা হয়ে থাকে।[] এছাড়াও আরো দুই ভাবে চটকা পরিবেশিত হয়।[]

  • খ্যামটা অঙ্গের চটকা:  এই অঙ্গের চটকা গানে নাগরিক গান অর্থাৎ জনজীবনের সাধারণ বিষয়ই হলো মূল উপজীব্য। অনেক সময় শাস্ত্রীয় ত্রিতাল ব্যবহার করা হয়।[] এই গানের চটুল দুলুনী অনুভব করা যায়, যার সাথে খ্যামটা গানের মিল পাওয়া যায়।[]
  • ঝুমুর চটকা:  দ্রুত ঝুমুর তালও অনেক সময় চটকায় ব্যবহার করা হয়। যেহুতু ঝুমুরটির প্রকৃতি দ্রুত দাদরার মতো। তাই এই ধরনের চটকা অতি দ্রুত তালে গাওয়া হয়। এই ধরনের গানের বাণীও চটুল।[]

ক্ষীরোল গান

দীর্ঘ সুর ও চটকা সুরের মিশ্রণে অপর এক শ্রেণীর গানও প্রচলিত, এটি ক্ষীরোল গান নামে পরিচিত।[]

জনপ্রিয় চটকা

  • ওরে পতিধন বাড়ি ছাড়িয়া না যান
  • পানিয়া মরা মোক মারিলু রে
  • ওরে কাইনের ম্যায়ার ঠসক বেশি
    ব্যাড়ায় শালী টাড়ি টাড়ি

তথ্যসূত্র

  1. ভট্টাচার্য, আশুতোষ (১৯৫৪)। বাংলার লোক সাহিত্য়|তৃতীয় খণ্ড। কলকাতা: ক্যালকাটা বুক হাউস। পৃষ্ঠা ২৮১। 
  2. "ভাওয়াইয়া - বাংলাপিডিয়া"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-০৫ 
  3. "ভাওয়াইয়া গান"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-০৫ 

বহিঃসংযোগ

ভাওয়াইয়া ও চটকা গান। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। ইউটিউব লিংক