বিষয়বস্তুতে চলুন

হরিসভা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হরিসভা
হরিসভা নামযজ্ঞ মঞ্চ
আনুষ্ঠানিক নামশ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান
অন্য নামনামযজ্ঞ
পালনকারীহিন্দু
তাৎপর্যবিশ্বের সকল মানবতার শান্তি ও মঙ্গল কামনা
উদযাপনমহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান, পদাবলী কীর্তন
পালনভারত উপমহাদেশ বাংলাদেশ
সংঘটনবার্ষিক

শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান ভারত উপমহাদেশে এবং বাংলাদেশের প্রচলিত একটি হিন্দু উৎসব। যা হরিসভানামযজ্ঞ নামেও পরিচিত। এটি সাধারণত চার প্রহর, অষ্ট প্রহর, ষোলো প্রহর, ৬৪ প্রহর ও ৭২ প্রহর ব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়ে থাকেও, এদের মধ্যে অষ্ট প্রহর সবচেয়ে জনপ্রিয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সুরে, ছন্দে, তালে কৃষ্ণনাম এবং রামনাম কীর্তন করা হয়।[] এ অনুষ্ঠানটি স্থান, সময় এবং আয়োজনের পরিধিভেদে কয়েক প্রহরব্যাপী হয়ে থাকে।

  • হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে ।
  • হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
  • ইতি ষোড়শকং নাম্নাং কলিকল্মষনাশনম্।
  • নাতঃ পরতরোপায়ঃ সর্ববেদেষু দৃশ্যতে।।

( কলিসন্তরণোপনিষদ্‌ )

অনুবাদঃ- হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্রের এই ষোলটি নাম বিশেষত কলিযুগের পাপ নাশের জন্যই উদ্দিষ্ট। নিজেকে কলিযুগের কলুষ থেকে মুক্ত রাখতে হলে এই হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন করার মতো অন্য আর কোন উপায় নেই। যুগধর্ম হিসাবে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন করার মতো অন্য কোন মহান পন্থা সমস্ত বৈদিক গ্রন্থে অনুসন্ধান করেও খুঁজে পাওয়া যায় না। ( প্রজাপতি ব্রহ্মা )

শাব্দিক অর্থ

[সম্পাদনা]

হরিসভা (তৎসম বা সংস্কৃত) হরি+সভা যার অর্থ: ভগবান বিষ্ণুর মহিমা আলোচনার জন্য সভা।[]

অনুষ্ঠান সূচী

[সম্পাদনা]
মহানামযজ্ঞ বা হরিসভা
ষোড়শ প্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞের অনুষ্ঠানসূচির একটি পোস্টার

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠ ও মঙ্গলঘট স্থাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। প্রথমে অধিবাসী কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এর পর অখন্ড তারকব্রহ্ম মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান চলে। নামামৃত পরিচালনা করার জন্য অনেক গুলো দল নির্ধারিত থাকে। তারা পালাক্রমে মঞ্চে হরি নাম সংকীর্তন করে থাকে। অনেক স্থানে লীলা কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। লীলা কীর্তন পরিবেশনার জন্য দুর দূরান্ত থেকে লীলা কীর্তনী আনা হয়। অনেক সময় নগর কীর্তন করতে দেখা যায়। দৈর্ঘ্য দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলে প্রায় প্রতিদিন বা নির্দিষ্ট দিনে প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা থাকে। প্রসাদ সব সময় সাত্তিক হয়ে থাকে। অধিকাংশ সময় খিচুড়ি প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়।

তাৎপর্য

[সম্পাদনা]

হরিসভায় ভক্তরা দূর-দূরান্ত থেকে আসেন। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী শ্রীহরির নাম করলে বা শুনলে পুণ্য লাভ করে। দুঃখ-যন্ত্রণা থেকে পরিত্রাণ পায়। আর এ বিশ্বাস নিয়েই মানুষ বহুদূর থেকে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। এই নামযজ্ঞের অনুষ্ঠান মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাই একাত্ম হয়ে যায়।

হরের্নাম হরের্নাম হরের্নামৈব কেবলম্ । কলৌ নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব গতিরন্যথা ।। (বৃহন্নারদীয় পুরাণ ৩/৮/১২৬)

অনুবাদঃ- এই কলিযুগে ভগবানের দিব্য নাম কীর্তন করা ছাড়া আর অন্য কোন গতি নেই, আর অন্য কোন গতি নেই, আর অন্য কোন গতি নেই।

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম নামযজ্ঞ মহোৎসব"বিডি২৪লাইভ। ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ 
  2. Ahmod, Tanvir। "হরিসভা - শব্দের বাংলা অর্থ at sobdartho.com"sobdartho.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০২-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১২ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]