বিষয়বস্তুতে চলুন

সোলিগা জনগোষ্ঠী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সোলিগা
একটি সোলিগা মেয়ে
মোট জনসংখ্যা
৪০,০০০
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
 ভারত
কর্ণাটক৩৩,৮১৯
তামিলনাড়ু৫৯৬৫
ভাষা
শোলাগা
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী
ইরুলা, তামিল, ইয়েরুকালা

সোলিগা, এছাড়াও লেখা হয় সোলেগা, শলাগা এবং শোলাগা, হল ভারতের একটি জাতিগোষ্ঠী। এর সদস্যরা বিলিগিরিরঙ্গ পাহাড় এবং দক্ষিণে কর্ণাটকের সাথে সম্পর্কিত পরিসীমার বেশিরভাগই তামিলনাড়ুর চামরাজনগর এবং ইরোড জেলায় বসবাস করে। অনেকেই কর্ণাটকের চামরাজনগর জেলার কোল্লেগাল তালুক এবং এলান্দুরের বিলিগিরিরঙ্গ পাহাড় এবং তার আশেপাশে বসতি স্থাপন করেছে। সোলিগারা শোলাগায় কথা বলে, যেটি দ্রাবিড় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত। ভারতীয় আইন অনুসারে, তারা একটি তফসিলি উপজাতি হিসাবে স্বীকৃত, তাদের জনসংখ্যা প্রায় ৪০,০০০।

সোলিগা উপজাতি মনে করে কর্ণাটকের মালেয়া মহাদেশশ্বর পাহাড়ের প্রভু, ভগবান মালেয়া মহাদেশশ্বরের পুত্র কারায়ার থেকে তাদের উৎপত্তি হয়েছে।[] কিংবদন্তি বলে যে বন্য প্রাণীর প্রতি কারায়ার সখ্যতা দেখে, ভগবান মালেয়া মহাদেশশ্বর স্বামী কারায়াকে বনে বাস করতে বলেছিলেন, অপর পুত্র বিলিয়ায় সমভূমিতে বসবাস করতেন এবং লিঙ্গায়তদের পূর্বপুরুষ হন।[]

সোলিগারা মাতৃভাষা হিসেবে শোলাগা ভাষায় (সোলিগানুড়ি) কথা বলে। এই ভাষা দ্রাবিড় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত। বেশ কিছু তামিল প্রভাব সহ কন্নড় ভাষার সাথে এটি সবচেয়ে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।[]

গোষ্ঠী সমূহ

[সম্পাদনা]

সোলিগাদের পাঁচটি উপগোষ্ঠী রয়েছে:[]

  • মালে সোলিগা: কর্ণাটকে বসবাসকারী কন্নড় ভাষাভাষী
  • উরালি সোলিগা: কন্নড় এবং তামিল ভাষাভাষী, তামিলনাড়ু সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী
  • পূজারি গোষ্ঠী: মালেয়া মহাদেশশ্বর পাহাড়ে বসবাসকারী
  • কাদু সোলিগা: বান্দিপুর জঙ্গলের কাছে বসবাসকারী
  • বুরুদে সোলিগা: হেগ্গড়দেবনকোট তালুক এবং কোড়গু জেলায় বসবাসকারী

তদ্ব্যতীত, এই গোষ্ঠীগুলির বেশ কয়েকটি উপ-গোষ্ঠীও রয়েছে।[]

পেশা এবং সামাজিক অবস্থান

[সম্পাদনা]

সোলিগা জুম চাষ পদ্ধতিতে চাষ করত, কিন্তু এখন তারা কমবেশি এই পদ্ধতি ত্যাগ করেছি। তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য রাগি (এলিউসাইন কোরাকানা) শষ্যবীজের চাষ করে। তাদের আয়ের প্রধান উৎস হল মধু, নেল্লি‌কাই (আমলকী, এম্বলিকা অফিসিনালিস), বাঁশ, পাসি (লাইকেন), শেওলা, বন্য হলুদ, জাম, রিঠা এবং নেন্নারির (বন্যমূল) মতো কাঠ-বহির্ভূত বনজ দ্রব্য (নন-টিম্বার ফরেস্ট প্রোডাক্ট, এনটিএফপি) সংগ্রহ ও বিক্রি। তারা বাঁশ দিয়ে ঝুড়িও তৈরি করে।[]

সরকার এবং এনজিওগুলির সক্রিয় উদ্যোগে তাদের ক্রমবর্ধমানভাবে "মূলধারায়" আনা হচ্ছে। অনেককে 'সংস্কৃতিপূর্ণ এলাকা'র কাছাকাছি জমি দেওয়া হয়েছে এবং বেশিরভাগ বনে বসবাসকারী জনসংখ্যাকে "পডাস" নামক দলে একত্রিত করা হয়েছে। তারা যে বনাঞ্চলে থাকে তার অধিকাংশই বন্যপ্রাণী সুরক্ষা এলাকার আওতায় আসে। বিলিগিরিরঙ্গ পাহাড় হল বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন, ১৯৭২ এর অধীনে একটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, মালে মহাদেশশ্বর পাহাড় একটি সংরক্ষিত বন এবং বান্দিপুর একটি জাতীয় উদ্যান। এনটিএফপি ফসল কাটার উপর তাদের অধিকার প্রত্যাহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে, কারণ সেটি সংরক্ষিত এলাকর জন্য উদ্বেগজনক। কিন্তু এটি আদিবাসীদের অধিকার সম্পর্কে একটি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সোলিগারা পরে তাদের জমিতে থাকার জন্য মামলা করে আদালতের রায়ে জয়লাভ করেছিল।[]

সোলিগা লোকেরা হিন্দু রীতিগুলি অনুসরণ করার সাথে প্রকৃতিবাদ এবং সর্বপ্রাণবাদ অনুসরণ করে এবং তাদের প্রধান দেবতারা হলেন বিলিগিরিরঙ্গ পাহাড়ের মদেশ্বর, রঙ্গস্বামী (যাকে বংশের ভগ্নিপতি বলে মনে করা হয়), কারায়া, কায়েতে দেবারু এবং জাদেস্বামী[] তাদের দ্বারা পূজিত অন্যান্য দেবতাদের মধ্যে রয়েছে মদেশ্বর, বাসবেশ্বর, নানজুন্ডেশ্বর এবং শ্রী আলামেলু রঙ্গনায়াকি স্মেথা শ্রী রঙ্গনাথ।[]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Singh, Nagendra Kr (২০০৬)। Global Encyclopaedia of the South Indian Dalit's Ethnography, Volume 1 (2006 সংস্করণ)। New Delhi: Global Vision Publication House। পৃষ্ঠা 759–763। আইএসবিএন 9788182201682। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  2. Buchanan, Francis (১৮৭০)। A Journey from Madras Through the Countries of Mysore, Canara, and Malabar। Higginbotham and Co.। আইএসবিএন 1108116302 
  3. Rajappa, Amoolya। "How a tribe in Karnataka fought and won a legal battle to stay in a tiger reserve"Scroll.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২০ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]