সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত | |
---|---|
বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২৮ নভেম্বর ২০১১ – ১৬ এপ্রিল ২০১২ | |
দফতরবিহীন মন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৭ এপ্রিল ২০১২ – ৫ জানুয়ারি ২০১৪ | |
সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ | |
সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ৭ মে ১৯৮৬ – ৩ মার্চ ১৯৮৮ | |
পূর্বসূরী | আসন শুরু |
উত্তরসূরী | গোলাম জিলানী চৌধুরী |
কাজের মেয়াদ ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ – ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ | |
পূর্বসূরী | গোলাম জিলানী চৌধুরী |
উত্তরসূরী | মিফতা উদ্দিন চৌধুরী রুমী |
কাজের মেয়াদ ১ আক্টোবর ২০০১ – ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | |
পূর্বসূরী | নাসির উদ্দিন চৌধুরী |
উত্তরসূরী | জয়া সেনগুপ্ত |
হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৯৭ উপ-নির্বাচন – ১ আক্টোবর ২০০১ | |
পূর্বসূরী | শরিফ উদ্দিন আহমেদ |
উত্তরসূরী | নাজমুল হাসান জাহেদ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | [১] আনোয়ারপুর, দিরাই উপজেলা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ) | ৫ মে ১৯৪৫
মৃত্যু | ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৭১)
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি জাতীয় একতা পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | জয়া সেনগুপ্ত |
সন্তান | এক সন্তান |
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত (৫ মে ১৯৪৫–৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদসহ মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।[২] এর আগে সত্তরের নির্বাচনেও তিনি প্রদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১২ সালে দ্বিতীয় রেল মন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করে তিনি দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি ছিলেন এশিয়া মহাদেশের শ্রেষ্ঠ পার্লামেন্টিয়ান।
জন্ম ও শৈশব
[সম্পাদনা]সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম দেবেন্দ্র নাথ সেনগুপ্ত এবং মাতার নাম সুমতিবালা সেনগুপ্ত। তার স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তের সাথে তাদের এক সন্তান সৌমন সেনগুপ্ত।[৩]
শিক্ষা
[সম্পাদনা]সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পরে ঢাকা সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ আইন পেশায় নিযুক্ত হন। এছাড়াও তিনি বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত ও হিন্দি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন৷
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]ছাত্র জীবনেই তিনি বামপন্থী রাজনীতির মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ভিপি প্রার্থী হয়েছিলেন। ১৯৬৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) পিকিং ও মস্কো ধারায় দুই টুকরা হলে মাওলানা ভাসানীকে ত্যাগ করে সুরঞ্জিত অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন অংশে যোগ দেন।
হাওরাঞ্চলের ‘জাল যার জলা তার’ আন্দোলনে দীর্ঘদিন তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭০ সালের পাকিস্তান নির্বাচনে তিনি সিলেট জেলা থেকে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে ৫ নম্বর সেক্টরের সাব কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন সিলেট-২ (বর্তমান সুনামগঞ্জ-২) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৪] ৭ মে ১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৫][৬] ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে তিনি কারচুপি করে জয়ী হন এবং দায়িত্ব পালন করেন। পরে নির্বাচনী ট্রাইবুনালে তার কারচুপি প্রমাণ হয় এবং জাতীয় পার্টির গোলাম জিলানী চৌধুরী জয়ী হন।
১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে হেরে গেলেও হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য শরিফ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচন তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৭]
২০০১ সালের অষ্টম, ২০০৮ সালের নবম ও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৮][৯][১০]
বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান পরিষদে তিনি বিরোধী বেঞ্চের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এরপর তিনি নিজে জাতীয় একতা পার্টি নামক একটি দল গঠন করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালে বিশেষ ক্ষমতার অধীনে পুলিশ তার বাসায় তল্লাশি চালিয়ে তাকে ধরতে অসমর্থ হয়।[১১]
তিনি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলমন্ত্রী নিযুক্ত হন। রেল মন্ত্রণালয়ের ৮০ কোটি টাকা আত্মসাতের কেলেঙ্কারির ঘটনা মিডিয়ার সামনে আসলে তাকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিপরিষদে রাখা হয়। এর আগে ১৯৯৬ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংসদে সব সময় সরব এ সংসদ সদস্য একজন অভিজ্ঞ সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন।
২০১২ সালে রেলমন্ত্রী হয়ে পরে মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করলে তা গ্রহণ না হলে তিনি দপ্তরবিহীন মন্ত্রী ছিলেন।
মৃত্যু
[সম্পাদনা]ফুসফুসের সমস্যার জন্য ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৪ তারিখ রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় প্রথমে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ও পরে লাইফ সাপোর্টে দেয়া হলেও ৫ ফেব্রুয়ারি ভোর রাত ৪টা ২৪ মিনিটে ৭১ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন৷[১২][১৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Suranjit Sengupta: At a glance"। ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৫।
- ↑ "সুরঞ্জিতের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ Sajidul Haque (৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। "Suranjit Sengupta's death marks 'end of an era'"। bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "৮ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "৯ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২০১৬-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২২।
- ↑ "১০ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২০১৯-০৯-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১২।
- ↑ "Bangladesh Political Violence On All Sides"। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (ইংরেজি ভাষায়)। খণ্ড ৮ নং ৬। ১ জুন ১৯৯৬।
- ↑ "সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আর নেই"। এনটিভি অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৫।
- ↑ "চলে গেলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ১৯৪৫-এ জন্ম
- ২০১৭-এ মৃত্যু
- সুনামগঞ্জ জেলার রাজনীতিবিদ
- বাংলাদেশী হিন্দু
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ
- বাংলাদেশী আইনজীবী
- দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ সদস্য
- তৃতীয় জাতীয় সংসদ সদস্য
- পঞ্চম জাতীয় সংসদ সদস্য
- সপ্তম জাতীয় সংসদ সদস্য
- অষ্টম জাতীয় সংসদ সদস্য
- নবম জাতীয় সংসদ সদস্য
- দশম জাতীয় সংসদ সদস্য
- বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী
- বাংলাদেশের দপ্তরবিহীন মন্ত্রী
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জড়িত ব্যক্তি
- সুনামগঞ্জ জেলার ব্যক্তি