সাপশিঙি বনছাগল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সাপশিঙি বনছাগল
মারখোর
পুরুষ মারখোর
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: স্তন্যপায়ী
বর্গ: আর্টিওডাক্টাইলা
পরিবার: বোভিডি
উপপরিবার: ক্যাপ্রিনি
গণ: ক্যাপরা
প্রজাতি: C. falconeri
দ্বিপদী নাম
Capra falconeri
(Wagner, 1839)

সাপশিঙি বনছাগল বা মারখোর (উর্দু: مارخور‎‎; ফার্সি: مارخور; পশতু: مرغومی মার্গূমায় বা মার্গূমী; ইংরেজি: Markhor; বৈজ্ঞানিক নাম: Capra falconeri) হচ্ছে ক্যাপরা গণের একটি বড় প্রজাতি যেটি আফগানিস্তান, উত্তর পাকিস্তান, দক্ষিণ তাজিকিস্তান, দক্ষিণ উজবেকিস্তান, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে পাওয়া যায়। আইইউসিএন এটিকে বিপন্নশ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সমগ্র পৃথিবীতে এই প্রজাতির আর মাত্র ২৫০০টির মতো প্রাণী টিকে আছে এবং গত দু'প্রজন্মে ২০% সংখ্যা কমেছে। এটি পাকিস্তানের জাতীয় পশু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।[১]

ব্যুৎপত্তি[সম্পাদনা]

"মারখোর" শব্দটি ফার্সি। ফার্সি ভাষায় মার অর্থ "সাপ", যার সঙ্গে খোর (অর্থাৎ "ভক্ষক") যোগ করে মারখোর শব্দটি হয়েছে, যার অর্থ দাড়ায় "সাপখোর" বা "সর্পভক্ষক" - যে প্রাণী সাপ খায়। এরা সাপ মারতে পারে বলে এদের এমন নাম হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। আবার সাপের মতো পেঁচানো শিং-এর কারণে এদের আরেক নাম "সাপশিঙি" (ইংরেজি: screw-horned)।[২]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

সাপশিঙি কাঁধের দিক দিয়ে ৬৫ থেকে ১১৫ সেঃমিঃ (২৬ থেকে ৪৫ ইঞ্চি) উঁচু ও দৈর্ঘ্যে ১৩২ থেকে ১৮৬ সেঃমিঃ (৫২ থেকে ৭৩ ইঞ্চি) হয় এবং এর ওজন ৩২ থেকে ১১০ কিঃগ্রাঃ (৭১ থেকে ২৪৩ পাউন্ড) হয়ে থাকে।[২] এদের রয়েছে ক্যাপরা গণের প্রজাতিদের মধ্যে সর্বোচ্চ গরিষ্ঠ কাঁধের উচ্চতা তবে দৈর্ঘ্যে ও ওজনে সাইবেরীয় আইবেক্স এদের ছাড়িয়ে গেছে।[৩] এদের লোমের আবরণ হয় ধূসর, হালকা বাদামী থেকে কালো রঙের এবং গ্রীষ্মকালে তা ছোট ও মসৃণ থাকে যা শীতকালে লম্বা ও ঘন হয়ে যায়। পায়ের নিম্নাংশের পশম সাদা কালো। মারখোর যৌনভাবে দ্বিরূপী। পুরুষদের চিবুকে, গলদেশে, বক্ষে ও জঙ্ঘায় লোম স্ত্রীদের তুলনায় লম্বা হয়ে থাকে।[২] স্ত্রীরা গাত্রবর্ণে পুরুষদের থেকে বেশি লালচে, ছোট লোম ও খাটো কালো দাঁড়ি বিশিষ্ট এবং কেশরহীন হয়।[৪] উভয় লিঙ্গের সাপশিঙিদেরই সাপের মত শক্তভাবে পাকানো শিং রয়েছে, যা গোঁড়ায় কাছাকাছিভাবে মিলিত কিন্তু আগায় উপর দিকে ছড়ানো। পুরুষদের শিং ১৬০ সেঃমিঃ (৬৩ ইঞ্চি) পর্যন্ত বাড়ে এবং স্ত্রীদের ২৫ সেঃমিঃ (১০ ইঞ্চি) পর্যন্ত।[২] পুরুষদের গায়ে কটুগন্ধ আছে যা গৃহপালিত ছাগলের গন্ধকেও ছাড়িয়ে যায়।[৫]

লোককথা[সম্পাদনা]

কথিত আছে যে মারখোর মহাভারতের গরুড়ের ন্যায় সাপ মেরে খায়। জাবর কাটার পর এর মুখ থেকে একটি ফেনাজাতীয় পদার্থ বের হয় যা মাটিতে পড়ে শুঁকিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন এই জিনিসেরই খোঁজে থাকে কারণ বিশ্বাস করা হয় যে এর মধ্যে সাপের বিষ তোলার ক্ষমতা আছে।[৬]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Valdez, R. (2008). Capra falconeri. 2008 IUCN Red List of Threatened Species. IUCN 2008. Retrieved on 5 April 2009. Database entry includes a brief justification of why this species is regarded as endangered.
  2. ''Capra falconeri'' Markhor, An Ultimate Ungulate fact sheet ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে. Ultimateungulate.com. Retrieved on 2011-07-10.
  3. Fedosenko, A. K. & Blank, D. A. (২০০১)। "Capra sibirica" (পিডিএফ)Mammalian Species675: 1–13। ডিওআই:10.1644/1545-1410(2001)675<0001:CS>2.0.CO;2 
  4. ''NATURAL HISTORY OF THE MAMMALIA OF INDIA AND CEYLON'' by Robert A. Sterndale, published by CALCUTTA: THACKER, SPINK, AND CO., BOMBAY: THACKER AND CO., LIMITED., LONDON: W. THACKER AND CO. 1884. Gutenberg.org (2006-10-16). Retrieved on 2011-07-10.
  5. Shooting in the Himalayas: a journal of sporting adventures and travel in Chinese Tartary, Ladac, Thibet, Cashmere, &c by Frederick Markham, published by R. Bentley, 1854
  6. "Markhor"Museo de la Caza Los Yebenes। ১০ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৭