সর্বোচ্চ আদালত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সর্বোচ্চ আদালত, যা শীর্ষ আদালত বা সুপ্রিম কোর্ট (ইংরেজি: supreme court) নামেও পরিচিত, আদালতের অনুক্রমের সর্বোচ্চ স্তরে অবস্থিত। স্থূল অর্থে বলতে গেলে, অন্য কোনো আদালত সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে পুনঃমূল্যায়ন করতে পারে না। সর্বোচ্চ আদালত সাধারণত আপিল আদালত হিসাবে কাজ করে এবং এটি নিম্ন আদালতের কোনো রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি করে। তবে দেওয়ানি আইন দ্বারা চালিত রাষ্ট্রদের সাধারণত কোনো একক সর্বোচ্চ আদালত থাকে না।

আবার, বেশিরভাগ সর্বোচ্চ আদালত ইংরেজিতে "সুপ্রিম কোর্ট" নামে পরিচিত হলেও সব "সুপ্রিম কোর্ট" কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত নয়। যেমন: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট এবং কানাডার বিভিন্ন প্রদেশ বা রাজ্যক্ষেত্রের সুপ্রিম কোর্ট, উভয় আদালত উচ্চতর আপিল আদালতের অধীনস্থ।

কমন ল এক্তিয়ার[সম্পাদনা]

পাকিস্তান[সম্পাদনা]

পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট (উর্দু: عدالت عظمیٰ پاکستان‎‎; আদালত-ই-উজমা পাকিস্তান) হলো ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত।[১] এটি পাকিস্তানের সংবিধানের সপ্তম খণ্ড অনুসারে প্রতিষ্ঠিত হয়। পাকিস্তানের আদালত ব্যবস্থায়, এটি আইনি ও সাংবিধানিক বিরোধের চূড়ান্ত সালিসের পাশাপাশি সাংবিধানিক আইনের চূড়ান্ত ব্যাখ্যাকারী। এর আধুনিক গঠনে সুপ্রিম কোর্টে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি, ষোলজন বিচারপতি এবং দুজন অ্যাডহককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ নিশ্চিত করে। তাদের অবসর নেওয়ার বয়স ৬৫ বছর, যদি না সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের দ্বারা পদত্যাগ বা অভিশংসনের মাধ্যমে তাদের মেয়াদ শেষ না হয়।[২][৩] ইসলামাবাদের রেড জোনে এর কার্যালয় অবস্থিত।[৪]

বাংলাদেশ[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টকে বলা হয় সংবিধানের রক্ষক এবং ব্যাখ্যাকারী। লাদেশের সংবিধানের ষষ্ঠ অধ্যায়ে সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে আইনি বিধান রয়েছে। সংবিধানের ধারা ১০০-এর বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের রমনায় সুপ্রীম কোর্ট অবস্থিত।[৫] সুপ্রীম কোর্টের দুইটি বিভাগ রয়েছে- ১. আপিল বিভাগ ২. হাইকোর্ট বিভাগ। তবে এটা সচরাচর হাইকোর্ট নামে পরিচিত; কারণ ১৯৭১ সালের পূর্বে এই ভবনে পূর্ব পাকিস্তানের উচ্চ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হতো।

ভারত[সম্পাদনা]

ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বা ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ভারতের সর্বোচ্চ বিচারবিভাগীয় অধিকরণ ও ভারতের সংবিধানের অধীনে সর্বোচ্চ আপিল আদালত এবং সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সাংবিধানিক পর্যালোচনার অধিকারপ্রাপ্ত।[৬]

ভারতের প্রধান বিচারপতি ও অপর ৩০ জন বিচারপতিকে নিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত গঠিত। এটির মৌলিক, আপিলউপদেষ্টা এক্তিয়ার রয়েছে।

দেশের সর্বোচ্চ আপিল আদালত হিসেবে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত প্রাথমিকভাবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির উচ্চ আদালত ও অন্যান্য আদালত ও ট্রাইবুন্যালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণ করে।

ভারতের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য প্রসারিত মৌলিক এক্তিয়ার সর্বোচ্চ আদালতের রয়েছে। ভারতের বিভিন্ন সরকারগুলির অভ্যন্তরীণ বিবাদ নিরসণের জন্যও এই আদালত কাজ করে। উপদেষ্টা আদালত হিসেবে সর্বোচ্চ আদালত ভারতের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বিশেষত সংবিধানের অধীনস্থ বিষয়গুলির শুনানি গ্রহণ করে। আবার কেউ এই আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ না করলেও, এটি নিজে থেকে বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ (বা ‘সুয়ো মোটো’) করতে পারে। কলকাতায় বিচারবিভাগীয় প্রশাসন পরিচালনার জন্য প্রথম এই আদালত গঠিত হয়েছিল।

সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক ঘোষিত আইন ভারতের সকল আদালত মেনে চলতে বাধ্য।[৭]

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র[সম্পাদনা]

মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আদালত । যুক্তরাষ্ট্রের সকল আদালতের সর্বশেষ আপিল অধিকার এই আদালতের ।

এই কোর্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের তিন নম্বর অনুচ্ছেদ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, সুপ্রিম কোর্টের গঠন এবং পদ্ধতিগুলি প্রাথমিকভাবে ১৭৮৯ সালের বিচার বিভাগীয় আইনের মাধ্যমে প্রথম কংগ্রেস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরে ১৮৬৯ সালের বিচার বিভাগীয় আইন দ্বারা নির্ধারিত। আদালতটি প্রধান বিচারপতি এবং আট সহযোগী বিচারপতি নিয়ে গঠিত। প্রতিজন বিচারপতির আজীবন মেয়াদ থাকে, যার অর্থ তারা মৃত্যু, অবসর, পদত্যাগ বা পদ থেকে অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত আদালতে বিচারকার্য পরিচালনা করে। যখন একটি শূন্যপদ ঘটে, রাষ্ট্রপতি, সিনেটের পরামর্শ এবং সম্মতিতে, একজন নতুন বিচারপতি নিয়োগ করেন। আদালতের সামনে যুক্তিযুক্ত মামলাগুলির সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেক বিচারপতির একক ভোট রয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত নেন কে আদালতের মতামত লিখবেন; অন্যথায়, সংখ্যাগরিষ্ঠের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র বিচারপতিকে মতামত লেখার দায়িত্ব দেন।

আদালতটি ওয়াশিংটন ডিসি-তে সুপ্রিম কোর্ট বিল্ডিংয়ে মিলিত হয়। এর আইন প্রয়োগকারী শাখা হল সুপ্রিম কোর্ট পুলিশ

দেওয়ানি আইন এক্তিয়ার[সম্পাদনা]

ইসলামি আইন এক্তিয়ার[সম্পাদনা]

সোভিয়েত ধাঁচের এক্তিয়ার[সম্পাদনা]

মিশ্র ব্যবস্থার এক্তিয়ার[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Chapter 2: "The Supreme Court of Pakistan." of Part VII: "The Judicature""pakistani.org। ২২ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৮ 
  2. Ali, Tariq (২০১২)। The Duel: Pakistan on the Flight Path of American Power (ইংরেজি ভাষায়)। Simon and Schuster। আইএসবিএন 9781471105883 
  3. Ramraj, Victor V.; Thiruvengadam, Arun K. (২০১০)। "Islamism as a response to emergency rule in Pakistan" (google books)Emergency powers in Asia : exploring the limits of legality (ইংরেজি ভাষায়) (1. publ. সংস্করণ)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 500। আইএসবিএন 9780521768900 
  4. "History of Supreme Court of Pakistan"supremecourt.gov.pkSupreme Court of Pakistan Press। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  5. বাংলাদেশের সংবিধান
  6. "Supreme Court of India"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১০-০৩ 
  7. "History of Supreme Court of India" (পিডিএফ)। Supreme Court of India। ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]