বিষয়বস্তুতে চলুন

সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন
সংক্ষেপেএআইএমআইএম
মিম
সভাপতিআসাদউদ্দিন ওয়াইসি
প্রতিষ্ঠাতানবাব মাহমুদ নওয়াজ খান
প্রতিষ্ঠা১২ নভেম্বর ১৯২৭ (৯৭ বছর আগে) (1927-11-12)
সদর দপ্তরদারুসালাম, আঘাপুরা, হায়দ্রাবাদ, তেলঙ্গানা, ভারত
সংবাদপত্রইন্ডিয়ান ইতেমাদ (উর্দু)
সদস্যপদ  (২০১৮)১,০৮,৪৭৩[]
ভাবাদর্শসম্মিলিত জাতীয়তাবাদ
দলিত অধিকার
সংখ্যালঘু অধিকার
সংবিধানবাদ
রাজনৈতিক অবস্থানমধ্য-দক্ষিণপন্থী[][]
জোটসংযুক্ত প্রগতিশীল জোট (২০০৮-২০১২)
গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক সেক্যুলার ফ্রন্ট (২০২০-)
ভাগীদারী সংকল্প মোর্চা
লোকসভা
১ / ৫৪৫
রাজ্যসভা
০ / ২৪৫
তেলঙ্গানা
৭ / ১১৯
মহারাষ্ট্র
১ / ২৮৮
বিহার
১ / ২৪৩
নির্বাচনী প্রতীক
kite
ওয়েবসাইট
www.aimim.org

সর্বভারতীয় মজলিসে-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমীন (অর্থাৎ সর্বভারতীয় মুসলমানের ইত্তেহাদের মজলিস) বা এমআইএম হল একটি ভারতীয় রাজনৈতিক দল।[] এর প্রধান কার্যালয় পুরাতন শহর হায়দ্রাবাদে অবস্থিত। এটি ভারতের তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং বিহার রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল।[]

১৯৮৪ সাল থেকে এআইএমআইএম হায়দ্রাবাদ আসনের লোকসভা আসন দখল করে আছে। ২০১৪ সালের তেলঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে দলটি সাতটি আসন জিতেছিল এবং ভারতের নির্বাচন কমিশন কর্তৃক "রাজ্য দল" হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল।[]

এর অস্তিত্বের বেশিরভাগ সময়, পুরাতন হায়দ্রাবাদের বাইরে এর উপস্থিতি খুব কম ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, এটি অন্যান্য রাজ্যেও প্রসারিত হতে শুরু করেছে। এখন মহারাষ্ট্রে এর উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে, ইমতিয়াজ জলিল ২০১৯ সালে ঔরঙ্গাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছেন এবং একাধিক সদস্য বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন।[] এটি ২০২০ সালে বিহারেও প্রবেশ করে পাঁচটি বিধানসভা আসন জিতেছে।[][][১০][১১]

উৎপত্তি

[সম্পাদনা]

এআইএমআইএম মূলত ১৯২৭ সালে হায়দ্রাবাদ রাজ্যের নবাব মাহমুদ নওয়াজ খান কিলেদার কর্তৃক মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা উলামায়ে মাশায়েকিনের উপস্থিতিতে একটি দেশভাগের সমর্থক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[১২] প্রথম সভাটি ১৯২৭ সালের ১২ নভেম্বর নওয়াজ খানের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় ।[১৩][১৪][১৫] ১৯৩৮ সালে বাহাদুর ইয়ার জং এমআইএম-এর সভাপতি নির্বাচিত হন। সেই সময়ে এর কেবল একটি সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ইশতেহার ছিল। এটি শীঘ্রই একটি রাজনৈতিক রূপ ধারণ করে। ১৯৪৪ সালে বাহাদুর ইয়ার জং- এর মৃত্যুর পর, কাসিম রিজভীকে এর নেতা নির্বাচিত করা হয়।[১৬] পুলিশি অভিযানের ( অপারেশন পোলো নামে) পর ভারত সরকার হায়দ্রাবাদ রাজ্যকে ভারতের সাথে একীভূত করে এবং এর নেতা কাসিম রিজভী সহ রাজাকারদের গ্রেপ্তার করে । ১৯৫৭ সালে তিনি পাকিস্তানে যাওয়ার শর্তে কারাগার থেকে মুক্তি পান।

কায়েদ-ই-মিল্লাত নবাব বাহাদুর ইয়ার জং ১৯৩৮ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত এমআইএম-এর নেতৃত্বে ছিলেন

১৯৫৮ সালে পাকিস্তানে যাওয়ার আগে রাজভী আবদুল ওয়াহিদ ওয়াইসিকে তার উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করেন। আইনজীবী আবদুল ওয়াহেদ ওয়াইসি দলটিকে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনে সংগঠিত করেন।[১৭][১৮] তার নেতৃত্বে এআইএমআইএম স্বাধীনতার কট্টর নীতি থেকে বাস্তবমুখী দিকে সরে আসে।[১৯] আব্দুল ওয়াহেদ ওয়াইসির পর, তার পুত্র সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি ১৯৭৫ সালে এআইএমআইএম-এর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং তাকে সালার-ই-মিল্লাত (সম্প্রদায়ের কমান্ডার) হিসেবে উল্লেখ করা হয় ।[২০][২১] এআইএমআইএম-এর সভাপতি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, তার পুত্র দাবি করেন যে এআইএমআইএম রাজাকারদের বংশধর নয় ।[২২]

ভারতীয় রাজনীতিতে

[সম্পাদনা]

নির্বাচনী কর্মক্ষমতা

[সম্পাদনা]

নেতৃত্ব

[সম্পাদনা]

সদর দপ্তর

[সম্পাদনা]

প্রধান দলীয় কার্যালয় দারুসসালামের মধ্যেই অবস্থিত, যেখানে ডেকান কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি , ডেকান স্কুল অফ ফার্মেসি, ডেকান স্কুল অফ প্ল্যানিং অ্যান্ড আর্কিটেকচার এবং ডেকান স্কুল অফ ম্যানেজমেন্টও অবস্থিত। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পাশেই ইন্ডিয়ান এতিম প্রেস অফিস অবস্থিত। ক্যাম্পাসের খোলা মাঠটি সময়ে সময়ে রাজনৈতিক সমাবেশ ("জলসা" নামে পরিচিত) আয়োজনের জন্যও ব্যবহৃত হয় যেখানে দলীয় নেতারা জনসাধারণ এবং মিডিয়ার সামনে বক্তৃতা দেন।

বিতর্ক

[সম্পাদনা]

২০২০ সালে ফেব্রুয়ারিতে ভারতের কর্ণাটকের কালাবুরাগি অঞ্চলের পুলিশ দলীয় নেতা ওয়ারিস পাঠানকে তার হিন্দুবিদ্বেষী মনোভাব প্রকাশ করা বিদ্বেষমূলক ভাষণের জন্য অভিযুক্ত করে। পরে ওয়ারিস টুইটারের মাধ্যমে তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান এবং দলীয় সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি তাকে জনসমক্ষে উসকানিমূলক মন্তব্য না করার পরামর্শ দেন।[২৩]

২০০৭ সালে তেলেঙ্গানা বিধানসভায় দলের সংসদীয় নেতা আকবরউদ্দিন ওয়াইসি লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে হুমকি দিয়ে বলেন, যদি তিনি আবার হায়দ্রাবাদে আসেন,[২৪] তাহলে তাকে হত্যা করা হবে।[২৫] পরে, তার উপন্যাস "শোধ"-এর তেলুগু অনুবাদের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে নাসরিনের ওপর হামলা চালানো হয়।[২৬]

আরো দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. MIM (২০১৪-০১-২০)। "About the Party | All India Majlis-e-Ittehadul Muslimeen"। Aimim.in। ২০১৪-০৬-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৫-১৭ 
  2. Seem Mustafa, Why the Owaisi Brothers can only Help the BJP ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে, The Citizen, 6 January 2015
  3. Bihar election result: Asaduddin Owaisi’s right-wing pitch falls flat in Bihar, The Times of India, 8 November 2015.
  4. "MIM gets State party recognition"The Hindu। ২৫ জুন ২০১৪। 
  5. "How AIMIM Has Emerged As the Principal Challenger of the BJP, Not 'Secular' Parties"The Wire। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ 
  6. Khan, Sameer (৩ জানুয়ারি ২০২১)। "Can AIMIM emerge as national party?"The Siasat Daily (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০২৩ 
  7. * Majumdar, Bappa (৩১ আগস্ট ২০১৫)। "MIM must grow beyond Owaisis"The Times of India 
  8. "AIMIM bags 5 seats in Bihar: The rise and rise of Asaduddin Owaisi"Times Now। ১১ নভেম্বর ২০২০। 
  9. Alam, Mahtab (১১ ডিসেম্বর ২০১৮)। "Love and Hate in Hyderabad: The Incendiary Political Life of Akbaruddin Owaisi"The Wire (India)। ৭ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২১ 
  10. "Asaduddin Owaisi's Party Leader Charged For "15 Crore Muslims" Remark In Karnataka"NDTV। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২১ 
  11. Kumar, Anuj (৩১ অক্টোবর ২০২১)। "At U.P. rally, Owaisi slams SP, RLD"The Hindu। ৩১ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২১ 
  12. Sudhir, TS (১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮)। "Telangana polls: BJP borrows from Hyderabad history to recast Modi as Vallabhbhai Patel, paints KCR as 'new Jinaah'"Firstpost 
  13. Dasgupta, Swapan (২২ মার্চ ২০১৬)। "Statute vs sacred: Owaisi's game has a familiar ring"The Times of India 
  14. Ramachandran, Rajesh (১৮ মার্চ ২০১৬)। "Asaduddin Owaisi's remark: Razakars say 'Bharat Mata Ki Jai'"The Economic Times 
  15. Malik, Ashok (২০ মার্চ ২০১৬)। "Instigating a controversy"Deccan Chronicle 
  16. Muralidharan, Sukumar (২০১৪)। "Alternate Histories: Hyderabad 1948 Compels a Fresh Evaluation of the Theology of India's Independence and Partition"। History and Sociology of South Asia8 (2): 119–138। এসটুসিআইডি 153722788ডিওআই:10.1177/2230807514524091 
  17. "MIM, the game changer in 2014 elections?"The Times of India। ২৪ মার্চ ২০১২। ৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৪ 
  18. "Majlis sounds election bugle"The Hindu। Chennai, India। ২ মার্চ ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৪ 
  19. "Holding them captive? The grip of the Majlis-e-ittehadul Muslimeen on the community remains strong, despite minor dents"The Hindu। ২৭ এপ্রিল ২০০৩। ২৯ জুলাই ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১২ 
  20. Songs in praise of Owaisi herald MIM's campaign – The Times of India. (16 February 2004). Retrieved 5 May 2012.
  21. MIM president Salahuddin Owaisi passes away | Indian Muslims[অধিগ্রহণকৃত!]. Indianmuslims.info. Retrieved 5 May 2012.
  22. "AIMIM is not a descendant of Razakars: Asaduddin Owaisi" 
  23. "Asaduddin Owaisi's Party Leader Charged For "15 Crore Muslims" Remark In Karnataka"NDTV। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২১ 
  24. "Owaisi booked for threatening Taslima"Hindustan Times। ১২ আগস্ট ২০০৭। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২১ 
  25. Alam, Mahtab (১১ ডিসেম্বর ২০১৮)। "Love and Hate in Hyderabad: The Incendiary Political Life of Akbaruddin Owaisi"The Wire (India)। ৭ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২১ 
  26. "Taslima Nasreen attacked in Hyderabad during book launch"Times of India। ৯ আগস্ট ২০০৭। ২০ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২১ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]