লক্ষ্মী বাওড় জলাবন
লক্ষ্মী বাওড় জলাবন বা লক্ষ্মী বাওড় সোয়াম্প ফরেস্ট বাংলাদেশের সর্ববৃহত মিঠাপানির জলাবন এবং পাখির অভয়ারণ্য, যা হবিগঞ্জের বানিয়াচং এ অবস্থিত।[১] দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে প্রায় সমান এই বনের আয়তন সাড়ে ৩ কিলোমিটার এবং আকার ও আয়তনের ব্যাপ্তিতে এটি রাতারগুল জলাবন অপেক্ষাও অনেক বড়।[২]
অবস্থান
[সম্পাদনা]সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার বানিয়াচং উত্তর পূর্ব ইউনিয়ন এর খড়তি নদীর দক্ষিণ দিকে বিরাট হাওরের মধ্যে অবস্থিত এই জলাবন।[১] এই বনের দক্ষিণ দিকে লোহাচুড়া, উত্তরে খড়তি আর পশ্চিমে নলাই নদী আর পূর্বপাশে রয়েছে গঙ্গাজলের হাওরের অবস্থান।[২] হবিগঞ্জ থেকে ১২ মাইল দূরবর্তী বানিয়াচং উপজেলা সদরের আদর্শ বাজার নৌকাঘাট থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তরে হাওরের মাঝে এ জলাবন।[১]আর সড়কপথে বানিয়াচং বড় বাজার থেকে লক্ষীবাওর জলাবন ৮ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
নামকরণ
[সম্পাদনা]খড়তি নদীর দক্ষিণ দিকে বিরাট হাওরের মধ্যে অবস্থিত এই জলাবন এলাকাবাসীর নিকট খড়তির জঙ্গল নামে পরিচিত।[৩]
উদ্ভিদবৈচিত্র্য
[সম্পাদনা]এই বনটিকে প্রথম-দর্শনে মনে হবে হিজল আর করচের বাগান।[৪] এই মিঠাপানির জলাবনটিতে দৃশ্যমান উদ্ভিদের মধ্যে হিজল-কড়চ ছাড়াও রয়েছে বরুণ, কাকুরা, বউল্লা, খাগড়া, চাইল্লা, নল ইত্যাদি অসংখ্য গাছ ও গুল্ম-লতা।[১]
প্রাণিবৈচিত্র্য
[সম্পাদনা]জলমগ্ন এই বনে সাঁপের আবাস বেশি; এদের মধ্যে রয়েছে কেউটে, লাড্ডুকা, দারাইশ সহ বিভিন্ন বিষধর সাপ।[১] এছাড়াও আছে জোঁক; শুকনো মৌসুমে বেজি আর গুই সাপও দেখা যায়। রয়েছে মেছোবাঘ, শিয়াল প্রভৃতি প্রাণী।[১] হরেক রকমের বিরল প্রজাতির পাখির বসবাস এই জলাশয়ে। এই জলাঞ্চলে বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল, সাদা বক, ঘুঘু, বালি হাঁস, পানকৌড়ি ও শালিকসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় পাখির পাশাপাশি শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখিও আসে।[১][২] এটি দেশী ও অতিথি পাখির অভয়ারন্য হিসাবে সংরক্ষিত এলাকা।[১] এছাড়াও এখানকার খাল-বিল ও হাওড়-বাওড়ে পাওয়া যায় প্রচুর মিঠাপানির মাছ।[১]
পর্যটন আকর্ষণ
[সম্পাদনা]জলে ডুবে থাকা এই বনটি দেখতে বিভিন্ন সময়, বিশেষতঃ বর্ষা মৌসুমে এখানে ভিড় করেন পর্যটকগণ; বনের ভিতর ডিঙি নৌকায় চড়ে ঘুরতে ঘুরতে দেখা যায় অপরূপ প্রকৃতি।[৩]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ "লক্ষ্মী বাওর জলাবন"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৫ মে ২০১৯। ১২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৯।
- ↑ ক খ গ "জেলা ব্র্যান্ডিং : বানিয়াচং'এর লক্ষ্মী বাওর জলাবন"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১১ জুলাই ২০১৯। ১২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৯।
- ↑ ক খ "ঈদে ঘুরে আসুন বিশ্বের বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচং"। সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম। ৫ জুন ২০১৯। ১২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "বানিয়াচংয়ের জলাবন : পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ"। দৈনিক কালেরকন্ঠ। ২৩ জুন ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- লক্ষ্মী বাওড় জলাবন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ জুলাই ২০১৯ তারিখে - বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়নে।