বিষয়বস্তুতে চলুন

যাদুমনি হাজং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
যাদুমনি হাজং
জন্ম১৯২২ (বয়স ১০১–১০২)
রানীগাঁও, খারনৈ, কলমাকান্দা, নেত্রকোণা জেলা, অধুনা বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ববাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবিপ্লবী

যাদুমনি হাজং (বিশ শতক) টংক প্রথার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ শাসনামলে বর্তমান নেত্রকোণা জেলার সুসং দুর্গাপুরে যে বিখ্যাত টঙ্ক আন্দোলন শুরু হয় তার সক্রিয় একজন কর্মী ছিলেন।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

[সম্পাদনা]

বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের নেত্রকোণা জেলার কমলাকান্দা থানার খারনৈ ইউনিয়নের রানীগাঁও গ্রামে ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণ করেন যাদুমনি হাজং। তার বাবার নাম ললিত হাজং এবং মায়ের নাম নিত্যমনি হাজং। তিনি চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।

রাজনৈতিক জীবন

[সম্পাদনা]

যাদুমনি হাজং এর পরিবার আগে থেকেই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলো। তার বাবা ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী। একারণে তাদের বাড়িতে বিপ্লবী কমরেড মণি সিংহ, ললিত সরকার, আলতাব আলী, বিপিন গুণ সহ অনেক বিপ্লবী নেতাদের আসা যাওয়া ছিলো। এমন মহান বিপ্লবী নেতাদের সংস্পর্শে তিনি কমিউনিস্ট রাজনীতিতে আগ্রহী হন। পরবর্তীতে রশিমনি হাজং, কুমুদিনী হাজং সহ অন্যান্য বিপ্লবীদের সংস্পর্শে তিনি রাজনীতিতে কঠোর ভাবে মনোনিবেশ করেন।

টংক আন্দোলনে অংশগ্রহন

[সম্পাদনা]

ব্রিটিশ ভারতে জমিদারদের করা টঙ্ক প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠনের জন্য তিনি পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মানুষকে বুঝাতেন। চার ভাগ ধানের তিন ভাগ জমিদারকে দিতে হবে—এই অন্যায় দাবীর বিরুদ্ধে তিনি গোপনে মহিলাদের সংগঠিত করতে শুরু করেন। মণি সিংহ, বিপিন গুণ, ললিত সরকার সহ অন্যান্য নেতাদের সাথে গোপন বৈঠক, পার্টির জন্য বাড়ি বাড়ি যেয়ে সাহায্য তোলা সহ বিভিন্ন কাজ তিনি করেছেন। যে কারণে তাকে নিয়মিত পুলিশ ও জমিদারদের পাইক—পেয়াদাদের হুমকি শুনতে হতো। এতসব হুমকির মধ্যেও তিনি কাজ করে গেছেন। তার বিভিন্ন সভায় পুলিশ আক্রমণ পর্যন্ত চালায়।

১৯৪৬ সালে টঙ্ক প্রথার বিরুদ্ধে লেংগুড়া বাজারে একটি ঐতিহাসিক মিছিল হয়। মিছিলে পুলিশের গুলিতে অনেক হাজং আন্দোলন কর্মী মৃত্যুবরণ করেন। এই মিছিলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন যাদুমনি হাজং।

দেশভাগের পর

[সম্পাদনা]

দেশ ভাগের পরেও সব সময় তাকে পুলিশ, ইপিআর এর হুমকি আর জেল জরিমানার ভয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হওয়ার কারণে তার সমস্ত সম্পত্তি পাকিস্তান সরকার বাজেয়াপ্ত করে। তবু তিনি বলতেন, জমিদারকে ধান দেই নাই, সেই সময়ে জুলুম সহ্য করেছি এখন আর জেলের ভয় করি না।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  • সেলিনা হোসেন, অজয় দাশগুপ্ত এবং রোকেয়া কবীর সম্পাদিত সংগ্রামী নারী যুগে যুগে প্রথম খণ্ড।

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]