মেহমুদা আলী শাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মেহমুদা আলী শাহ
জন্ম১৯২০
মৃত্যু১১ মার্চ ২০১৪
সমাধিমালতেং গোরস্তান, শ্রীনগর, জম্মু ও কাশ্মীর, ভারত
পেশাশিক্ষাবিদ
সমাজকর্মী
রাজনীতিবিদ
পরিচিতির কারণনারী শিক্ষা
পিতা-মাতাসৈয়দ আহমদ আলী শাহ
দুলহান বেগম
পুরস্কারপদ্মশ্রী
মোস্ট আউটস্ট্যান্ডিং স্টুডেন্ট অব দ্য সেঞ্চুরি

মেহমুদা আহমেদ আলী শাহ হলেন একজন ভারতীয় শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী, যিনি শ্রীনগরের সরকারি নারী কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন।[১] তিনি ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন এবং কাশ্মীরি নারীদের মাঝে শিক্ষা ও নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করে গিয়েছেন।[২]

জীবনী[সম্পাদনা]

মেহমুদা আহমেদ আলী শাহ ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আহমেদ আলী শাহ ও মায়ের নাম দুলহান বেগম। তার বাবা তৎকালীন দেশীয় রাজ্য কাশ্মীরের ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার ছিলেন। মেহমুদা আলী শাহ স্থানীয় মিশনারি বালিকা বিদ্যালয়ে (বর্তমান: ম্যালিনসন বালিকা বিদ্যালয়) দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলেন।[৩] তিনি তার বাবা মায়ের একমাত্র কন্যাসন্তান। তার এক ভাই নাসের আহমেদ পরবর্তী জীবনে মেডিকেল কলেজ প্রিন্সিপ্যাল হয়েছিলে লন, আরেক ভাই সৈয়দ আহমেদ শাহ হয়েছিলেন ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল এবং অন্য ভাই জমির আহমেদ হয়েছিলেন সেশন জাজ।[৪]

মেহমুদা আলী শাহ তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ, বিএড ও এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম নারী হিসেবে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।[৩] তিনি যুক্তরাজ্যের লিডস থেকে স্নাতকোত্তর পরবর্তী ডিপ্লোমা কোর্সও করেছিলেন।[৩]

আল্লামা ইকবালের উপদেশে তিনি শ্রীনগর ফিরে আসেন এবং সেখানকার মাইসুমার একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন।[৩] পরবর্তীকালে কাশ্মীরের তৎকালীন মহারাজা বারামুল্লায় একটি বিদ্যালয় খুললে, তিনি সেখানে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৫৪ সালে শ্রীনগরের সরকারি নারী কলেজে যোগদানের পূর্বে সেখানে কর্মরত ছিলেন।[৩] তিনি প্রধান শিক্ষিকা ও অধ্যক্ষ থাকাকালীন সময়ে নারীদের মাঝে শিক্ষার প্রসারে কাজ করেছেন।[২] এছাড়াও শ্রীনগরে দ্বিতীয় নারী কলেজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন। তিনি তার কলেজে সহশিক্ষার প্রসারেও কাজ করেছেন।[৫] ১৯৭৫ সালে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন এবং ইন্দিরা গান্ধীর প্রভাবে দিল্লিতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। তিনি দলটির সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর তিনি জম্মু ও কাশ্মীরে ফিরে আসেন। তিনি দিল্লি থেকে ফিরে আসলেও দলে তার সদস্যপদ বহাল রেখেছিলেন।[৩] তিনি জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার সদস্য হিসেবে ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।[৬]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

ভারত সরকার ২০০৬ সালে ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে।[৭] ২০১২ সালে তার প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ম্যালিনসন বালিকা বিদ্যালয় তাকে মোস্ট আউটস্ট্যান্ডিং স্টুডেন্ট অব দ্য সেঞ্চুরি খেতাবে ভূষিত করে।[৫]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

মেহমুদা আহমেদ আলী নিজের ইচ্ছাতেই অবিবাহিতা ছিলেন। ২০১৪ সালের ১১ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর তাকে শ্রীনগরের মাল্টেং গোরস্তানে দাফন করা হয়।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Nyla Ali Khan, Gopalkrishan Gandh (২০১৪)। The Life of a Kashmiri Woman: Dialectic of Resistance and Accommodation। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 36 of 160। আইএসবিএন 9781137463296 
  2. "PDP condoles death of Ms Mehmooda Ahmad Ali Shah"। Scoop News। ১১ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  3. "Mehmooda Ahmed Ali Shah - Obituary"। Kashmir Life। ২৪ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  4. "Mehmooda Shah passes away"। Greater Kashmir। ১২ মার্চ ২০১৪। ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  5. "Mehmooda Ahmed Ali Shah: A Great educationist"। Kashmir Times। ২৩ মার্চ ২০১৪। ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  6. "Details of Pensioners-Family Pensioners as of March 2014"। J and K Legislative Assembly। ২০১৪। ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  7. "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৫। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৫