মাহমুদ আহমেদ গাজী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মাহমুদ আহমেদ গাজী
কেন্দ্রীয় শরীয়ত আদালতের বিচারক
কাজের মেয়াদ
২৬ মার্চ ২০১০[১] – ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১০
নিয়োগদাতারাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি[২]
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫০
কান্ধলা, উত্তর প্রদেশ, ভারত
মৃত্যু২৬ সেপ্টেম্বর ২০১০(2010-09-26) (বয়স ৬০)

মাহমুদ আহমেদ গাজী (১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫০ - ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১০) ছিলেন একজন পাকিস্তানি আইনবিদ এবং ইসলাম শিক্ষা, শরিয়ত এবং ফিকহের পন্ডিত। তিনি ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, কেন্দ্রীয় শরীয়ত আদালতের বিচারক এবং পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ১৬ বছর বয়সে তার দারসে নিজামি সম্পন্ন করেন এবং পরে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলাম শিক্ষায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি উর্দু, ইংরেজি, আরবি, ফার্সি, তুর্কিফরাসি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। এছাড়াও তিনি উর্দু এবং ইংরেজিতে অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং মুহাম্মদ ইকবালের ফার্সি কবিতা পায়াম-ই-মাশরিক আরবিতে অনুবাদ করেছেন।[১]

জন্ম ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

গাজী ১৯৫০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের কান্ধলাতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুহাম্মদ আহমদ ফারুকী মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভির একজন শিষ্য ছিলেন, অন্যদিকে তার মা ছিলেন ইজহারুল হাসান কান্ধলভীর ভাগ্নী।[৩] গাজী তার নানীর সাথে থাকাকালীন সময়ে সিদ্দিক আহমদ মাদ্রাসা থেকে আল-কুরআন মুখস্থ করা শুরু করেন এবং ১৯৫৪ সালে পাকিস্তানের করাচিতে হিজরত করার পর মাত্র আট বছর বয়সে ক্বারী ওয়াকা-আল্লাহ পানিপতি মাদ্রাসা থেকে হিফজ (মুখস্থ) সম্পন্ন করেন। তিনি করাচির জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়া থেকে দারসে নিজামি শুরু করেন এবং ১৯৬৬ সালে রাওয়ালপিন্ডির তা'লিমুল কুরআন মাদ্রাসা থেকে তা শেষ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে আরবিতে এবং ১৯৬৮ সালে ফারসিতে বিএ অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর তিনি ১৯৭৬ সালে আরবিতে এমএ এবং ১৯৯৮ সালে লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[৪]

গ্রন্থ[সম্পাদনা]

গাজী প্রায় ৩০টি বই এবং ১০০টিরও বেশি নিবন্ধ লিখেছেন। তার মুহাযরাত সিরিজও আলাদা বই হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। মুহাযরাত সিরিজ হলো প্রায় ৬৮টি বক্তৃতার সংকলন, গাজী ইদারা আল-হুদাতে কুরআন, হাদিস, ফিকহ, সিরাত এবং শরিয়তের মতো বিভিন্ন বিষয়ের সংমিশ্রণ দিয়েছিলেন। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:[৩]

উর্দু গ্রন্থ[সম্পাদনা]

  • আদাব আল-কাদি
  • মুসাওওয়াদাহ কানুন-ই-কিসাস ওয়া দিয়াত
  • আহকাম-ই-বুলুঘাট
  • ইসলাম কা কানুন বাইন আল-মামালিক
  • কুরআন এক তারুফ
  • ইসলামি শরীয়ত আওর আসর-ই-হাযির
  • মুহকামত-ই-আলম-ই-কুরআন
  • আমর বিল মারুফ ওয়া নাহি উন আল-মুনকার
  • উসুল আল-ফিকহ প্রথম ও দ্বিতীয় (ফিকহ সম্পর্কিত)
  • কাওয়া'ইদ আল-ফিকহিয়াহ প্রথম ও দ্বিতীয়
  • তাফনীন আশ-শরিয়ত

ইংরেজি গ্রন্থ[সম্পাদনা]

গাজীর উল্লেখযোগ্য ইংরেজি রচনাগুলো হলো: [৫]

  • হিজরত: আধুনিক মানুষের জন্য এর দর্শন ও বার্তা
  • কাদিয়ানিজম
  • ইসলামের নবীর জীবন ও কর্ম (বইটি ড. মোহাম্মদ হামিদুল্লাহ'র অসাধারণ ফরাসি গ্রন্থ থেকে অনুবাদ করা হয়েছে)
  • মুসলিম ভারতে রেনেসাঁ এবং পুনর্জাগরণের ধারা ― ১৭০৭-১৮৬৭
  • মুসলিম আন্তর্জাতিক আইনের সংক্ষিপ্ত বই (মুহাম্মদ ইবনে হাসান শাইবানীর আল-সিয়ার আল-সাগির হতে অনুবাদকৃত)
  • উত্তর আফ্রিকার সান্নুসিয়াত আন্দোলনের একটি বিশ্লেষণাত্মক অধ্যয়ন
  • দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলামি রেনেসাঁ (১৭০৭-১৮৬৭) ― শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী এবং তাঁর উত্তরসূরিদের ভূমিকা
  • ইসলামে রাষ্ট্র ও আইন

মৃত্যু[সম্পাদনা]

মাহমুদ আহমেদ গাজী ২০১০ সালের[৩] সেপ্টেম্বরে মারা যান।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Hon'ble Judges"। Federal Shariat Court of Pakistan। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১০ 
  2. Syed, Irfan Raza (২৩ মার্চ ২০১০)। "President appoints 4 Ulema judges"The Dawn। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. Dr Muhammad Ghitreef Shahbaz Nadwi। Aalam-e-Islam Ke Chand Mashaheer (Sawaneh wa Afkar ka Mutala) (Urdu ভাষায়) (March 2017 সংস্করণ)। Rahbar Book Service, Jamia Nagar, New Delhi। পৃষ্ঠা 334–347। 
  4. Chishti, Ali Asghar, “Dr. Mahmood Ahmad Ghazi: Shakhsiyyat awr Khidmât” (Islamabad: Ma‘arif-e-Islami, Allama Iqbal Open University, Vol. 10, No. 1, 2011), p.14-16; also see, Ismatullh, Dr., “Dr. Mahmood Ahmad Ghazi: Hayâtuhu wa Athâruhu al-‘Ilmiyyah” (Islamabad: Ma‘arif-e-Islami, Allama Iqbal Open University, Vol. 10, No. 1, 2011), p. 317.
  5. Dr. Mahmood Ahmad Ghazi (1950-2010): Life & Contributions (Pakistaniaat: A Journal of Pakistan Studies Vol.4, No. 2 (2012))

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]