মামুন মাহমুদ
মামুন মাহমুদ | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
শিক্ষা | এমএ (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক) |
মাতৃশিক্ষায়তন | প্রেসিডেন্সি কলেজ, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | পুলিশ সেবা |
পিতা-মাতা |
|
পুরস্কার | স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৫) |
অন্তর্ধান | মার্চ ২৬, ১৯৭১ রাজশাহী, পূর্ব পাকিস্তান | (৪২ বছর)
অবস্থা | মৃত বলে ধরা হয় |
মামুন মাহমুদ (১৭ নভেম্বর ১৯২৮ - ২৬ মার্চ ১৯৭১) একজন পুলিশ কর্মকর্তা যিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।[১]
শৈশব
[সম্পাদনা]মামুন মাহমুদ ১৯২৮ সালের ১৭ই নভেম্বর চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার পিতা মাতার দুই পুত্রের মধ্যে বড় ছিলেন। তার মা বেগম শামসুন নাহার মাহমুদ ছিলেন সে সময়ের বাংলার সবচেয়ে বিখ্যাত মহিলা শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী। তার পিতা ডা. ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদ কলকাতা মেডিকেল কলেজের সুপারিনটেনডেন্ট ছিলেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানের সার্জন জেনারেল ছিলেন। তার মামা হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন।
পাঁচ বছর বয়সে মামুন মাহমুদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে একটি চিঠি লিখেছিলেন এবং ঐ চিঠিটির উত্তর পেয়েছিলেন।
শিক্ষা ও কর্মজীবন
[সম্পাদনা]মামুন মাহমুদ ১৯৪৩ সালে বালিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন সম্পন্ন করেন। ১৯৪৫ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৪৭ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মাস্টার্স করেন। এরপর তিনি সিএসএস পরীক্ষায় যান যেখানে তাকে পুলিশ সার্ভিসের জন্য নির্বাচিত করা হয়। তিনি পুলিশের উপ মহাপরিদর্শক হিসেবে কুড়িগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, খুলনা, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
খেলাধুলা
[সম্পাদনা]একজন ক্রীড়াবিদ হিসাবে মামুন মাহমুদ ফুটবল, ক্রিকেট এবং হকি বেশ ভাল খেলেতেন। তিনি ফজলুল হক ফুটবল দলের পাশাপাশি ওয়ারী ক্লাবের জন্য খেলেছিলেন এবং ১৯৫৪ সালে কুড়িগ্রাম ক্রিকেট ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]মামুন মাহমুদ ১৯৫৪ সালের ২৬ মার্চ মুশফিকা মাহমুদকে বিয়ে করেন। তাদের মেয়ে জাবা মাহমুদ ১৯৫৬ সালে এবং তাদের ছেলে জাভেদ মাহমুদ ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
রাজনৈতিক সক্রিয়তা
[সম্পাদনা]১৯৪৮ সালে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার পর মামুন মাহমুদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
মামুন মাহমুদ মার্কসবাদী ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের উপর দৃঢ় অবস্থান থাকেন। তিনি সাধারণ জনগণের জন্য খুব ভাল মানবিক ও যত্নশীল ছিলেন। সরকারী কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তিনি সাধারণ জনগণের জন্য অনেক কাজ করেন।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক অত্যাচারের প্রতিবাদে কালো পতাকা তুলে ধরেন।
নিখোঁজ হওয়া
[সম্পাদনা]২৬শে মার্চ সন্ধ্যায় মামুন মাহমুদ রাজশাহীতে তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের সঙ্গে তার ১৭ তম বিবাহ বার্ষিকী উদ্যাপন করছিলেন। তখন তাকে রাজশাহী সেনানিবাস এলাকায় ডাকা হয়। সেখানে যাওয়ার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য ২০১৫ সালে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "মামুন মাহমুদ"। প্রথম আলো। ২০১৫-১০-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৯-৩০।
- ↑ "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭।