বিষয়বস্তুতে চলুন

ভারতীয় প্রভাব ক্ষেত্র

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভারতীয় প্রভাব ক্ষেত্র (ইংরেজি: Indosphere) হল একটি শব্দ যা ভাষাবিদ জেমস ম্যাটিসফ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় ভাষাতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাবের জন্য ব্যবহার করেছেন। এটি সাধারণত পূর্ব এশীয় সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিপরীতে আঞ্চলিক ভাষাবিজ্ঞানে ব্যবহৃত হয়।

প্রভাব

[সম্পাদনা]
তিব্বতি-বর্মী ভাষাসমূহের ভৌগোলিক বিস্তৃতি

তিব্বতি-বর্মী ভাষাসমূহ এক বিস্তীর্ণ ভৌগোলিক এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং বহু শ্রেণিভিত্তিক বৈচিত্র্য বর্তমান। তিব্বতি-বর্মী ভাষাসমূহের মধ্যে কিছু ভাষা উচ্চ সুরতরঙ্গবিশিষ্ট (tonal), একদলীয় ও বিশ্লেষণধর্মী (analytic) যার রূপমূলতত্বে কার্যত কোনো উপসর্গ বা প্রত্যয় নেই, যেমন লোলোইশ ভাষা। আবার কিছু তিব্বতি-বর্মী ভাষায় সুরতরঙ্গ প্রায় নেই, যেমন নেপালের কিরাতি ভাষা। এই বৈচিত্র্যকে যথাক্রমে চৈনিকইন্দো-আর্য ভাষাসমূহের প্রভাব দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়।[] জেমস ম্যাটিসফ দুটি পরস্পর অভিলেপিত ভাষাতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত ক্ষেত্রের কথা বলেছেন – চীন দ্বারা প্রভাবিত চৈনিক প্রভাব ক্ষেত্র (ইংরেজি: Sinosphere) এবং ভারত দ্বারা প্রভাবিত ভারতীয় প্রভাব ক্ষেত্র (ইংরেজি: Indosphere)।[][][][] ক্রিস্টিন এ. হিল্ডাব্রান্ট, বি. বিকেল, জে. নিকোলস প্রমুখ অঞ্চলদুটির মধ্যে অভিলেপিত অংশকে তৃতীয় অঞ্চল বলেছেন।[] ভারতীয় প্রভাব ক্ষেত্রটি ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহের অধীনে।[]

কিছু ভাষা ও সংস্কৃতি যেকোনো একটি প্রভাব ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত। অস্ট্রো-এশীয় ভাষাসমূহের মুন্ডাখাসি শাখা, পূর্ব নেপালের তিব্বতি-বর্মী ভাষাসমূহ এবং তিব্বতি-বর্মী ভাষাসমূহের কামরূপী শাখা, যার মধ্যে মৈতৈ মণিপুরী অন্যতম ভাষা, ভারতীয় প্রভাব ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, মং-মিয়েন ভাষাসমূহ, তাই-কাদাই ভাষাসমূহের কাম-সুই শাখা, তিব্বতি-বর্মী ভাষাসমূহের লোলোইশ শাখা এবং ভিয়েতনামী ভাষা, চৈনিক প্রভাব ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত। কিছু ভাষা, যেমন থাইতিব্বতি, বিভিন্ন ঐতিহাসিক পর্যায়ে চীন ও ভারত উভয়ের দ্বারা প্রভাবিত। তা সত্ত্বেও, কিছু ভাষা সম্প্রদায় ভৌগোলিকভাবে এত পৃথক যে তারা চীন বা ভারত কোনোটির দ্বারা প্রভাবিত হয়নি। যেমন, মালয় উপদ্বীপে অস্ট্রো-এশীয় ভাষাসমূহের আসিলীয় শাখা, নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে অস্ট্রো-এশীয় ভাষাসমূহের নিকোবরি শাখা চীন বা ভারত কোনোটির দ্বারা প্রভাবিত হয়নি।[]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. ম্যাটিসফ, জেমস অ্যালান (২০০৩), Handbook of Proto-Tibeto-Burman: System and Philosophy of Sino-Tibetan Reconstruction (ইংরেজি ভাষায়), University of California Press, পৃষ্ঠা 6–7, আইএসবিএন 0-520-09843-9 
  2. রবার্ট এম. ডাব্লিউ. ডিক্সন, ওয়াই. আলেকজান্দ্রা, Adjective Classes: A Cross-linguistic Typology , page 74, Oxford University Press, 2004, আইএসবিএন ০-১৯-৯২০৩৪৬-৬
  3. Matisoff, James (১৯৯০), "On Megalocomparison", Language, 66 (1): 106–120, জেস্টোর 415281, ডিওআই:10.2307/415281 
  4. এনফিল্ড, এন. জে. (২০০৫), "Areal Linguistics and Mainland Southeast Asia", Annual Review of Anthropology, 34: 181–206, hdl:11858/00-001M-0000-0013-167B-Cঅবাধে প্রবেশযোগ্য, ডিওআই:10.1146/annurev.anthro.34.081804.120406 
  5. RJ LaPolla, The Sino-Tibetan Languages, La Trobe University
  6. Miestamo, Matti; Wälchli, Bernhard (২০০৭), New challenges in typology, Walter de Gruyter, পৃষ্ঠা 85, আইএসবিএন 978-3-11-019592-7 
  7. সক্সেনা, অঞ্জু (২০০৪)। "Linguistic synchrony and diachrony on the roof of the world – the study of Himalayan languages" (পিডিএফ)Himalayan Languages: Past and Present (ইংরেজি ভাষায়)। Walter de Gruyter। পৃষ্ঠা 3–29। আইএসবিএন 978-3-11-017841-8। ১৭ মে ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০২৩