ব্রাহ্মণ (গরুর জাত)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ব্রাহ্মণ
ব্রাহ্মণ জাতের যাঁড়, আভারে, সাও পাওলো, ব্রাজিল
সংরক্ষণ অবস্থাFAO (2007): not at risk[১]:143
উত্পত্তির দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
বন্টন
মানকAmerican Brahman Breeders Association
ব্যবহারমাংস

ব্রাহ্মণ হল আমেরিকায় উদ্ভাবিত একটি গোরুর জাত। এটি মূলত মাংস উৎপাদনের জন্য পরিচিত। ১৮৮৫ সালের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মূলত ভারতের বংশোদ্ভুত বিভিন্ন জাতের একাধিক গোরু থেকে এই জাতের উন্নয়ন করা হয়। এই ভারতীয় গোরুর জাত সমুহ বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাজ্য, ভারত, ব্রাজিল হতে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা হয়েছিল; এর মধ্যে রয়েছে গির, গুয়েজেরা, ইন্দো-ব্রাজিল এবং ওঙ্গোল জাতের গোরু। ব্রাহ্মণ জাতের গোরু তাপ, সূর্যের আলো এবং আর্দ্রতার প্রতি উচ্চ সহনশীল এবং পরজীবীদের প্রতিরোধ-ক্ষম। এটি অনেক দেশে রফতানি করা হয়েছে, বিশেষত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে; অস্ট্রেলিয়ায় এটিই গোরুর সবচেয়ে প্রচলিত জাত। এই জাতের গোরু আরও উন্নত গোরুর জাত উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন ব্রহ্মসেন যা ইতোঃমধ্যে আলাদা জাত হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।[২]:137[৩][৪]

নামের ব্যুৎপত্তি[সম্পাদনা]

গবাদিপশু প্রদর্শণ অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণ জাতের গোরু

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রাহ্মণ গবাদির জাতের নাম ব্রাহ্মণদের (হিন্দু পুরোহিতদের) নামে রাখা হয়েছিল, যারা নিজেরাই হিন্দু দেবতা ব্রহ্মার নামে নামকরণ করেছিলেন। অনেক হিন্দু ব্রাহ্মণ নিরামিষাশী এবং গোরু ও ষাঁড়কে পবিত্র বলে বিবেচনা করে, এবং গোমাংস ভক্ষণও করে না।[৫] বাংলাদেশের 'কৃষি দিবানিশি' নামক অনুষ্ঠানে এই জাতের গোরুকে 'ব্রাহমা' নামে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়[৬]

প্রজনন এবং ব্যবহার[সম্পাদনা]

আমেরিকান ব্রাহ্মণকে ১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে প্রথম চারটি ভারতীয় গরু প্রজাতির ক্রস হিসাবে জন্ম দেওয়া হয়েছিল: গুজরাত, ওঙ্গোল, গির এবং কৃষ্ণ উপত্যকা।[৭] আসল আমেরিকান ব্রাহ্মণ জাতের গোরু ১৮৫৪ থেকে ১৯২৬ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা Bos indicus প্রজাতির (অর্থাৎ ভারতের গোরু) প্রায় ২৬৬টি ষাঁড় এবং ২২টি স্ত্রী গাভীর নিউক্লিয়াস থেকে উদ্ভূত হয়েছিল।

ব্রাহ্মণ মাংস উৎপাদনের জন্যই মূলত ব্যবহৃত হয়। এটি মাংস উৎপাদনকারী জাত Bos taurus taurus (ইউরোপীয়) জাতের সাথে ব্যাপকভাবে ক্রস করানো হয়। এটি ব্রাঙ্গাস, বিফমাস্টার, সিমব্রাহ এবং সান্তা জের্‌ত্রুডিস সহ আরও অনেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাংস উৎপাদনকারী জাতের বিকাশে ব্যবহৃত হয়েছে।

ব্রাহ্মণ জাতের গোরুর উত্তাপের প্রতি চরম সহনশীল এবং এজন্য গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ব্যাপকভাবে প্রসারিত। পুরু ত্বকের কারণে এগুলি পোকামাকড়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী। ব্রাহ্মণ জাত অন্যান্য জাতের তুলনায় দীর্ঘকাল বেঁচে থাকে।[৭]

ছবিমালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Barbara Rischkowsky, D. Pilling (eds.) (2007). List of breeds documented in the Global Databank for Animal Genetic Resources, annex to The State of the World's Animal Genetic Resources for Food and Agriculture. Rome: Food and Agriculture Organization of the United Nations. আইএসবিএন ৯৭৮৯২৫১০৫৭৬২৯. Accessed January 2017.
  2. Valerie Porter, Lawrence Alderson, Stephen J.G. Hall, D. Phillip Sponenberg (2016). Mason's World Encyclopedia of Livestock Breeds and Breeding (sixth edition). Wallingford: CABI. আইএসবিএন ৯৭৮১৭৮০৬৪৭৯৪৪.
  3. Marleen Felius (1995). Cattle Breeds: An Encyclopedia. Doetinchem, Netherlands: Misset. আইএসবিএন ৯৭৮৯০৫৪৩৯০১৭৬.
  4. Hilton Marshall Briggs, Dinus M. Briggs (1980). Modern Breeds of Livestock. London; New York: Macmillan. Also cited in: Breeds of Livestock - Brahman Cattle. Department of Animal and Food Sciences, Oklahoma State University. Accessed April 2019.
  5. Rachel Cutrer (4 March 2014). That is a Brahman ... Or is it?. Brahman Journal. Archived 1 April 2015.
  6. কৃষি দিবানিশি "মাংসের গরু আমেরিকান ব্রাহমা | Channel i | Shykh Seraj"
  7. Breeds of Livestock - Brahman Cattle. Department of Animal and Food Sciences, Oklahoma State University. Accessed April 2019.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]