বোধগম্য তাপ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কোন বস্তু বা তাপগতীয় সিস্টেম এ যে তাপের আদান-প্রদান হলে তার তাপমাত্রা পরিবর্তিত হয় এবং তার সাথে উক্ত সিস্টেমের কিছু দৃশ্যমান বৈশিষ্ট্যেরও পরিবর্তন হতে পারে তাকে বোধগম্য তাপ বলে। কিন্তু এক্ষত্রে সিস্টেমের আয়তন, চাপের মত নির্দিষ্ট কিছু দৃশ্যমান বৈশিষ্ট্য অপরিবর্তনীয়ও থাকতে পারে[১][২][৩][৪]

ব্যবহার[সম্পাদনা]

 

বোধগম্য তাপ আসলে সুপ্ত তাপ এর বিপরীত একটি রাশি। সুপ্ত তাপ হল সেই তাপ যার আদান প্রদান ঘটলে সিস্টেমের তাপমাত্রার কোন পরিবর্তন হয় না, অর্থাৎ এটির উপস্থিতি বোঝা যায় না বা এটি সিস্টেমে সুপ্তাবস্থায় থাকে। উদাহরণস্বরূপ, কোন পদার্থের দশা পরিবর্তনের সময় যেমন বরফ গলনের সময় বরফ ও তরলের সিস্টেমের তাপমাত্রা সমস্ত বরফ গলে যাওয়া অবধি স্থির থাকে। 'সুপ্ততাপ' এবং 'বোধগম্যতাপ' আসলে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত।

কোন একটি তাপগতীয় প্রক্রিয়াধীন কোন বস্তুর আপেক্ষিক তাপ (c), তাপমাত্রার পরিবর্তন() ও তার ভর(m) এর গুণফলই হবে উক্ত প্রক্রিয়ার বোধগম্য তাপ। অর্থাৎ:

জুল বোধগম্য তাপকে থার্মোমিটার দ্বারা পরিমাপযোগ্য শক্তি হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন

বোধগম্য তাপ এবং সুপ্ত তাপ শক্তির কোনও বিশেষ রূপ নয়।বরং এরা কোন বস্তু বা তাপগতীয় সিস্টেমের ওপর এদের ওপর কী প্রভাব পড়ে সেটা বিবেচনায় নিয়ে কোন বস্তু বা তাপগতীয় সিস্টেমে তাপের বিনিময় ব্যাখ্যা করে।

আদি বিজ্ঞানীরা যারা তাপগতিবিদ্যার ধারণা প্রবর্তন করেছিলেন, তাঁদের লেখায় ক্যালোরিমিতিতে বোধগম্য তাপের তাৎপর্য স্পষ্ট ছিল। জেমস প্রেসকট জুল ১৮৪৭ সালে বোধগম্য তাপকে এমন একটি শক্তি হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন যা থার্মোমিটারের মাধ্যমে পরিমাপ করা যায়।

প্রকৃতিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শক্তি পরিবহনের সময় বোধগম্য তাপ ও সুপ্ত তাপ উভয়ই লক্ষ্য করা যায়। সুপ্ততাপ মূলতঃ দশা পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত, ধ্রুব তাপমাত্রায় এই তাপ পরিমাপ করতে হয়। বিশেষত প্রকৃতিতে জলীয় বাষ্পের দশা পরিবর্তনের সময় , বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যখন বাষ্পীকরণ এবং ঘনীভবন হয়, তখন সুপ্ততাপ কাজ করে। অপরদিকে বোধগম্য তাপ সরাসরি প্রকৃতির তাপমাত্রা পরিবর্তন করে ফেলে।

আবহাওয়াবিদ্যায়, 'বোধগম্য তাপ প্রবাহ(ফ্লাক্স)' শব্দটির অর্থ ভপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলে পরিবহন প্রক্রিয়ায় যে পরিমাণ তাপের প্রবাহ(ফ্লাক্স) ঘটে তার পরিমাণ।[৫] এটি পৃথিবীর পৃষ্ঠের শক্তির চাহিদার যোগান দেয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। বোধগম্য তাপ প্রবাহ সাধারণত এডি কোভ্যারিয়েন্স পদ্ধতিতে পরিমাপ করা হয়।

বোধগম্য তাপ সাধারণত কোন বস্তুর অভ্যন্তরীণ শক্তিকে বৃদ্ধি করে। এর ফলে বস্তুটির অণু-পরমাণুগুলোও অধিক গতিশীল হয়। ফলে সামগ্রিকভাবে বস্তুটির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

  • এডি তাপ প্রবাহ সাধারণত পদ্ধতিতে পরিমাপ করা হয়।কোভ্যারিয়েন্স ফ্লাক্স (এডি কোরিলেশন, এডি ফ্লাক্স)
  • এনথালপি
  • আদর্শ পদার্থসমূহের জন্য বিভিন্ন তাপীয় বৈশিষ্ট্যের তথ্যসংগ্রহ

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

 

  1. Partington, J.R. (1949). An Advanced Treatise on Physical Chemistry, Volume 1, Fundamental Principles. The Properties of Gases, Longmans, Green, and Co., London, pages 155-157.
  2. Prigogine, I., Defay, R. (1950/1954). Chemical Thermodynamics, Longmans, Green & Co, London, pages 22-23.
  3. Adkins, C.J. (1975). Equilibrium Thermodynamics, second edition, McGraw-Hill, London, আইএসবিএন ০-০৭-০৮৪০৫৭-১, Section 3.6, pages 43-46.
  4. Landsberg, P.T. (1978). Thermodynamics and Statistical Mechanics, Oxford University Press, Oxford, আইএসবিএন ০-১৯-৮৫১১৪২-৬, page 11.
  5. Stull, R.B. (2000). Meteorology for Scientists and Engineers, second edition, Brooks/Cole, Belmont CA, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫৩৪-৩৭২১৪-৯, page 57.

5.Thermodynamics An Engineering Approach, by Yunus A. Cengel and Michael Boles.