বিষয়বস্তুতে চলুন

বোকাইনগর দুর্গ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বোকাইনগর দুর্গ
কেল্লা বোকাইনগর
বোকাইনগর, বাংলাদেশ
সাইটের তথ্য
অবস্থাধ্বংসপ্রাপ্ত
সাইটের ইতিহাস
উপকরণমাটি
রক্ষীসেনা তথ্য
দখলদারমুঘল (১৬১১)

বোকাইনগর দুর্গ অথবা কেল্লা বোকাইনগর ময়মনসিংহ শহর থেকে ১৯.৩২ কিমি পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা বালুয়া নদীর পূর্বতীরে, গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগরে অবস্থিত একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দুর্গ। বালুয়া নদীর একটি সংযোগধারা দুর্গের ভেতর দিয়ে পূর্ব-পশ্চিমে প্রবাহিত ছিল। দুর্গটি পূর্ব-পশ্চিমে ১.৬০ কিমি লম্বা এবং ০.৮০ কিমি চওড়া ছিল। দুর্গটি মাটির তৈরি উঁচু প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত এবং বাইরে গভীর পরিখা দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল।[১][২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বোকাইনগর দুর্গের পত্তন সম্পর্কে ঐতিহাসিক প্রমাণদি পাওয়া যায়নি। দুর্গ স্থাপন নিয়ে দুটি জনশ্রুতি আছে। প্রাথমিক জনশ্রুতি অনুসারে পনেরো শতকে যখন প্রাচীন কামরূপ রাজ্য বিভিন্ন অংশে ভাগ হয়ে যাচ্ছিল তখন ‘বোকাই’ নামে একজন কোচ উপজাতি-প্রধান দুর্গটি নির্মাণ করেন। বোকাই মারা যাওয়ার পর তার নামানুসারে দুর্গের নামকরণ হয়। অন্য কিংবদন্তি অনুযায়ী, সুলতান দ্বিতীয় সাইফুদ্দীন ফিরুজ শাহ (১৪৮৬-১৪৮৯)-এর প্রতিনিধি মজলিস খান হুমায়ুন দুর্গটি নির্মাণ করেন। ১৪৯৫ সালে দুর্গটি হোসেন শাহের নিয়ন্ত্রণে আসে এবং তিনি তার পুত্র নুসরত শাহকে অধিকর্তা নিয়োগ করেন। পরবর্তী সময়ে খাজা উসমান মুগলদের কাছে পরাজিত হয়ে উড়িষ্যা থেকে পালিয়ে ঈসা খানের কাছে আশ্রয় নেন এবং বোকাইনগরের সামন্তরাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। তিনি দুর্গ পুনঃনির্মাণ করে এটিকে একটি শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং এখান থেকে মুগলদের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১৬১১ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে ইসলাম খান তাকে চূড়ান্তভাবে পরাস্ত করেন এবং বোকাইনগর মুগলদের অধিকারে আসে।[১] মুঘলরা ১৬১১ সালের ৭ ডিসেম্বর বোকাইনগর দুর্গ পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয়।[৩]

দুর্গের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে খাজা উসমানের বাসস্থান ছিল বলে জানা যায়।[১] খাজা উসমান দুর্গের ভিতর একটি মসজিদ নির্মাণ ও একটি পুকুর খনন করেন। পরবর্তী সুবেদার চাঁদ রায় দুর্গে আরও একটি পুকুর খনন এবং একটি মন্দির নির্মাণ করেন।[২]

অবশেষ[সম্পাদনা]

বোকাইনগর দুর্গের মসজিদ, মন্দির ও ধ্ববংসাবশেষ এখনও বিদ্যমান।[২] বর্তমানে অসংখ্য ইটের টুকরা, দক্ষিণ দেয়ালের অংশ, দক্ষিণ-পূর্ব দিকের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা বুরুজ অবশিষ্ট নিদর্শন হিসেবে টিকে আছে।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. হুসনে জাহান, শাহনাজ (২০১৪-০৫-০৪)। "বোকাইনগর দুর্গ"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-১৩ 
  2. "কেল্লা বোকাইনগর"গৌরীপুর উপজেলা আনুষ্ঠানিক বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-১২ 
  3. হুসায়ন খান, মুয়ায্‌যম (২০১৫-০৪-১৭)। "খাজা উসমান"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-১৪