বিষয়বস্তুতে চলুন

বাংলা সালতানাত–কামাতা রাজ্য যুদ্ধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কামতা বিজয়
তারিখ১৪৯৮[]
অবস্থান
ফলাফল

বাংলা সালতানাতের জয়

বিবাদমান পক্ষ
শাহী বাংলা কামতা রাজ্য
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
আলাউদ্দিন হোসেন শাহ
শাহ ইসমাইল গাজী
শাহজাদা দানিয়াল
নীলাম্বর সেন

বাংলা সালতানাত-কামাতা রাজ্য যুদ্ধ ছিল ১৫শ শতকের শেষের দিকে কামাতা রাজ্য এবং বাংলা সালতানাতের মধ্যকার যুদ্ধ।[] এই সংঘাতের ফলে খেন রাজবংশ উৎখাত হয় এবং বাংলা সালতানাত ১৫০২ সালের মধ্যে বর্তমান পশ্চিম আসামের হাজো পর্যন্ত তার রাজ্য প্রসারিত করে। তা সত্ত্বেও, প্রায় দশ বছরের মধ্যে হারুপ নারায়ণের নেতৃত্বাধীন অসমিয়া ভুইয়ারা সুলতানি প্রশাসনকে সরিয়ে দেয়।[]:১৪১ তারপরও এই সাফল্য আসাম অঞ্চলে বাঙ্গালী মুসলিম শাসন সম্প্রসারণের জন্য সালতানাতের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।

অভিযান

[সম্পাদনা]

বিজয়টি সাচিপাত্র নামে একজন ব্রাহ্মণ দ্বারা প্ররোচিত হয়েছিল, যার পুত্রকে রানীর অবৈধ সম্পর্কের জন্য রাজা নীলাম্বর তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছিল।[] সিংহাসন গ্রহণের পরে, বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ সাচিপাত্রের আবেদনে সাড়া দিয়ে তার সেনাবাহিনীকে ১৪৯৮ সালে আসাম আক্রমণ করার জন্য শাহ ইসমাইল গাজীর নেতৃত্বে পাঠান। আক্রমণ বাহিনীতে অশ্বারোহী, পদাতিক এবং বাংলার নৌবাহিনী অন্তর্ভুক্ত ছিল।[][] বাংলার সেনাবাহিনী কামতাপুর দুর্গ অবরোধ করে শহরটি ধ্বংস করে দেয়। হুসেন শাহ কামতার নীলাম্বরকে পরাজিত করেছিলেন এবং খেন রাজবংশের রাজত্বের অবসান করেছিলেন। হুসেন শাহ ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার উজনি আসাম পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখেন।[] যদিও ১৪৯৮ সালে কামতাপুরের পতন ঘটে, তবে হুসেন শাহ ১৫০২ সালে হাজো পর্যন্ত দখল করতে সক্ষম হন।[][]

পরবর্তী ঘটনা

[সম্পাদনা]

এই অঞ্চলটি হাজোর বাঙালি রাজ্যপালদের প্রশাসনের আওতায় আনা হয়েছিল। হুসেন শাহ "কামরুপ, কামতা, জজনগর এবং উড়িষ্যার বিজয়ী" হিসেবে নিজেকে ঘোষণার ফিয়ে মুদ্রা তৈরি করেছিলেন।[] সুলতান তার পুত্র শাহজাদা দানিয়ালকে[১০] নতুন ভাবে বিজিত অঞ্চলের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত করেন; যা হাজো পর্যন্ত পৌঁছেছিল এবং মধ্য আসাম পর্যন্ত প্রসারিত করার উদ্দেশ্যে ছিল। তবে তাঁর উত্তরসূরীরা কোচ রাজবংশের কাছে এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. ইছামউদ্দীন সরকার (২০১২)। "কামতা-কামতাপুর"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  2. Manilal Bose (১৯৮৯)। Social History of Assam: Being a Study of the Origins of Ethnic Identity and Social Tension During the British Period, 1905-1947। Concept Publishing Company। পৃষ্ঠা 38। আইএসবিএন 978-81-7022-224-8 
  3. Baruah, S L (১৯৮৬), A Comprehensive History of Assam, New Delhi: Munshiram Manoharlal Publishers Pvt. Ltd. 
  4. Nath, D. (১৯৮৯)। History of the Koch kingdom, c. 1515-1615 (১ম সংস্করণ)। Delhi, India: Mittal Publications। পৃষ্ঠা ৭০। আইএসবিএন 81-7099-109-9ওসিএলসি 20491076 
  5. Sarkar, J. N. (1992), "Chapter II The Turko-Afghan Invasions", in Barpujari, H. K., The Comprehensive History of Assam, 2, Guwahati: Assam Publication Board, pp. 35–48
  6. Majumdar, R.C. (ed.) (2006). The Delhi Sultanate, Mumbai: Bharatiya Vidya Bhavan, pp.215-20
  7. আবদুল মমিন চৌধুরী (২০১২)। "হোসেন শাহ"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  8. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "হুসেন শাহ"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  9. Sircar, D. C. (২০০৮)। Studies in Indian Coins (ইংরেজি ভাষায়)। Motilal Banarsidass Publishe। পৃষ্ঠা ২১। আইএসবিএন 978-81-208-2973-2 
  10. Desai, Ziyaud-Din A.; Sharma, Arun Kumar (২০০৩)। Purā-prakāśa: Recent Researches in Epigraphy, Numismatics, Manuscriptology, Persian Literature, Art, Architecture, Archaeology, History and Conservation : Dr. Z.A. Desai Commemoration Volume (ইংরেজি ভাষায়)। Bharatiya Kala Prakashan। পৃষ্ঠা ২৪৪। আইএসবিএন 978-81-8090-007-5