বাংলাদেশ পুলিশে নারী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
২০১৮ সালের তোলা একটি ছবিতে একজন নারী পুলিশ কনস্টেবল

বাংলাদেশ পুলিশে নারীরা সর্বপ্রথম যোগ দিয়েছিলেন ১৯৭৪ সালে, ১৪ জন নারী এই বছর পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে যোগ দেন, এদের মধ্যে সাতজন ছিলেন সাব ইন্সপেক্টর এবং বাকি সাতজন কনস্টেবল।[১] ১৯৭৬ সাল ছিলো সেই বছর যখন নারীদের পুলিশ ইউনিফর্মে প্রথম দেখতে পাওয়া যায়, এই বছর ১৫ জন নারী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগ দেন, এদের মধ্যে কনস্টেবলও ছিলেন আবার সাব ইন্সপেক্টরও ছিলেন।[১]

১৯৮৬ সালে মাত্র একজন নারী কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশে ছিলেন, তিনি ছিলেন ফাতেমা বেগম, ফাতেমা বেগম ৫ম বিসিএস ব্যাচের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশে কর্মকর্তা (সহকারী সুপারিন্টেন্ডেন্ট) হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৮৬ সালেই এবং তিনি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের প্রথম নারী কর্মকর্তা যিনি জেলা পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন।[২] দুই বছর পর ১৯৮৮ সালে চারজন নারী ৭ম বিসিএস ব্যাচে পুলিশে কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত পুলিশে নারী কর্মকর্তা নিয়োগ বন্ধ ছিলো, ১৯৯৯ সালে ১৮তম বিসিএস ব্যাচে আটজন নারী পুলিশে কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন।[২]

রৌশন আরা বেগম ছিলেন ফাতেমা বেগমের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদধারী নারী পুলিশ কর্মকর্তা, রৌশন ১৯৯৮ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ইনি ছিলেন ১৯৮৮ সালে যোগ দেওয়া ৭ম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা; তার সর্বশেষ পদ ছিলো অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক।[৩]

২০০৯ সালে হোসনে আরা বেগমকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের পুলিশের প্রথম নারী যিনি কোনো থানার ওসি হিসেবে নিয়োগ পান।[৪]

২০১১ সালের ২১ জুন কেবল নারীদের নিয়ে গঠিত হয় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের একটি আলাদা ইউনিট।[৫]

২০১৫ সালে সর্বপ্রথম নারীদেরকে পুলিশ সার্জেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।[৬] ২০১৬ সালের পুলিশ সপ্তাহে একজন নারী কর্মকর্তা পুলিশ কুচকাওয়াজের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন চাঁদপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার।[৭]

বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যদের জন্য 'পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড' নামের একটি পুরস্কার আছে। নারী পুলিশ সদস্যরা পুলিশ বিভাগে অনন্য সাধারণ কাজের স্বীকৃতিরূপ এই পুরস্কার প্রাপ্ত হয়ে থাকেন।[৮]

নারী পুলিশ সদস্যদের জন্য ২০০৮ সালের ২১ নভেম্বর গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন্স নেটওয়ার্ক (বিপিডব্লিউএন)। সংগঠনটি নারী পুলিশের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে।[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "পুলিশে ৪৮ বছরে নারী সদস্য ৮ শতাংশ"দৈনিক ইত্তেফাক। ১৩ মার্চ ২০২২। 
  2. সিরাজুল ইসলাম (৭ মার্চ ২০২৩)। "পুলিশে নারী পুরুষ সমানতালে এগিয়ে"দৈনিক যুগান্তর 
  3. "পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ নারী কর্মকর্তা রৌশন আরা বেগম কঙ্গোতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত"বিবিসি বাংলা। ৬ মে ২০১৯। 
  4. "দেশের প্রথম নারী ওসি হোসনে আরা বেগমঃ বাংলাদেশ পুলিশে এই প্রথমবারের মতো একজন নারী কর্মকর্তাকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্যান্টনমেন্ট থানায় নিয়োগ পাওয়া ওই কর্মকর্তার নাম হোসনে আরা বেগম"বিডিনিউজ২৪ ডট কম। ১৭ মে ২০০৯। 
  5. মানসুরা হোসাইন (৪ নভেম্বর ২০১৮)। "পুরো ব্যাটালিয়নের দায়িত্বে নারী"প্রথম আলো 
  6. মানসুরা হোসাইন (২৭ জানুয়ারী ২০১৬)। "রাজপথ সামলাচ্ছেন নারী সার্জেন্টরা"প্রথম আলো 
  7. "নারীর পক্ষে পুলিশঃ নারীর নেতৃত্বে প্রথম পুলিশ প্যারেড"প্রথম আলো। ২৬ জানুয়ারী ২০১৬। 
  8. "পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৫ নারী পুলিশ"দৈনিক যুগান্তর। ১ ডিসেম্বর ২০২২। 
  9. মোঃ রুবেল (১৮ জুন ২০১৪)। "নারী পুলিশ নেটওয়ার্কের সম্মেলন"প্রথম আলো