বিষয়বস্তুতে চলুন

বগুড়া–সিরাজগঞ্জ রেলপথ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বগুড়া–সিরাজগঞ্জ রেলপথ
সংক্ষিপ্ত বিবরণ
স্থিতিপ্রস্তাবিত
মালিকরেলপথ মন্ত্রণালয়
অঞ্চলবাংলাদেশ
বিরতিস্থল
স্টেশন১০
পরিষেবা
ধরনবাংলাদেশের রেলপথ
ব্যবস্থাবাংলাদেশ
কারিগরি তথ্য
রেলপথের দৈর্ঘ্য৮৪ কিলোমিটার
ট্র্যাক গেজডুয়েলগেজ ১,৬৭৬ মিলিমিটার (৫ ফুট ৬ ইঞ্চি) এবং ১০০০ মিলিমিটার
চালন গতি১৩০ কিমি/ঘ
যাত্রাপথের মানচিত্র

কাহালু
বগুড়া
রানীরহাট জংশন
আড়িয়াবাজার
শেরপুর
চান্দাইকোনা
রায়গঞ্জ
কৃষান্দিয়া
সদানন্দপুর
শহীদ এম মনসুর আলী
সূত্র: বণিকবার্তা.নেট

বগুড়া–সিরাজগঞ্জ রেলপথ হলো ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি প্রস্তাবিত ডুয়েলগেজ রেলপথ। এটি বাংলাদেশ সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত হবে। এই রেলপথ বগুড়া জেলাকে সরাসরি সিরাজগঞ্জ জেলার সাথে সংযুক্ত করবে।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

বগুড়া থেকে কেউ রেলগাড়িতে করে ঢাকায় যেতে চাইলে নাটোরপাবনা জেলা হয়ে যেতে হয়, এতে অনেক সময় লাগে। ২০০৫ সালে সরকার যাত্রীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের জন্য সিরাজগঞ্জ জেলার জামতৈল[] ও বগুড়ার মধ্যে একটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বিশ্ব ব্যাংক সেই রেলপথ প্রকল্পে অর্থায়নে সম্মত হওয়ার পর জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে একটি জরিপ করা হলেও রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিরোধিতার কারণে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১১ সালে শেখ হাসিনা বগুড়া–সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে চার বছরেও নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। চার বছরে নির্মাণে অগ্রগতির অচলাবস্থার বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিক্রিয়ার ফলে তিনি দ্বিতীয়বার রেলপথ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও সরকার এর অর্থায়ন নিশ্চিত করতে না পারায় প্রকল্পটি স্থবির হয়ে পড়ে। তারপরে ২০১৭ সালে ভারত সরকার প্রকল্পটির অর্থায়নের জন্য ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।[] ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১-এ বাংলাদেশ সরকার আরআইটিইএস লিমিটেডের নেতৃত্বাধীন একটি যৌথ প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করে।[] ৩০ অক্টোবর ২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি প্রকল্পটি অনুমোদন করে। রেলওয়ে প্রকল্পটির প্রাক-জরিপের দায়িত্ব পাওয়ার পর এসএমইসি ইন্টারন্যাশনাল ২০১০ সালে তাদের প্রাক-জরিপ জমা দেয়। সেই প্রাক-জরিপে তারা দুটি পথের প্রস্তাব করেছিলো। কিন্তু বারো বছরের মধ্যে সেসব পথের উপর জনবসতি গড়ে উঠলে পথগুলোকে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়। ২০২২ সালে নতুন পরামর্শক সংস্থা চারটি রুট প্রস্তাব করে। রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন চারটির মধ্যে তৃতীয় পথটি বেছে নেন যা বাস্তবায়িত হলে এটি সিরাজগঞ্জকে বগুড়ার সাতগে সরাসরি সংযুক্ত না করে শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে শেষ হবে।[] একই বছরের ১৪ নভেম্বরে বগুড়ায় একটি প্রকল্প সংক্রান্ত সভায় জানা যায় যে আগামী বছর প্রস্তাবিত রেললাইনের জন্য ৯৪৪ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য ২০২২–২০২৩ অর্থবছরে ৳১৯০ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে।[] পরিকল্পিত পথটিতে ৩টি জংশন ও ৭টি স্টেশন প্রস্তাব করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বর্তমান বগুড়াকাহালু রেলওয়ে স্টেশনকে রেলওয়ে জংশনে রূপান্তর করা এবং রানীরহাটে তৃতীয় জংশন নির্মাণ করা। রানীরহাট থেকে রেলপথটি আড়িয়াবাজার, শেরপুর, চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, কৃষান্দিয়া ও সদানন্দপুর হয়ে শহীদ এম মনসুর আলী রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে শেষ হবে।[] ২০২৩ সালে জানা যায় যে সরকার চলমান জমি অধিগ্রহণের জন্য মোট ৳১৯২১ কোটি টাকা দিয়েছে। প্রকল্পটি ২০২৬ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. ইসলাম, তাওহীদুল (৬ এপ্রিল ২০২২)। "বিফলে ১২ বছর আগের সমীক্ষা"আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০২৩ 
  2. নাসিম, এমডি নাজমুল হুদা (২৩ নভেম্বর ২০১৯)। "বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণে অগ্রগতি নেই"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০২৩ 
  3. "বাংলাদেশ সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণে পরামর্শক নিয়োগ"দ্য ডেইলি স্টার। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০২৩ 
  4. "বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ প্রকল্পে আশার আলো"যুগান্তর। ১৭ নভেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০২৩ 
  5. আলিম, এইচ (১১ ডিসেম্বর ২০২২)। "বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথে থাকছে ৩ জংশন, ৭ স্টেশন"বণিকবার্তা.নেট। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০২৩ 
  6. "বগুড়া-সিরাজগঞ্জ নতুন রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু হচ্ছে"বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা। ১৮ মার্চ ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০২৩