নাকের গহনা
নাকের গহনা হল নাকে পরার একটি গয়না।
এই গয়নাটি ভারতীয় উপমহাদেশের মহিলাদের সাথে প্রাচীনকাল থেকে সবচেয়ে বেশি সংযুক্ত। ভারতে প্রায় সব জাতি গোত্রের মহিলারা এই গহনা পরিধান করেন। এই জায়গাগুলিতে, নাকের গহনার প্রতীকী তাৎপর্য আছে এবং এটি সংস্কৃতির সাথে একত্রীভূত, কিন্তু পশ্চিমে, নাকে গহনা পরাকে বিরোধী এবং ঐতিহ্যগত নিয়ম ও মূল্যবোধের পরিপন্থী বলে মনে হতে পারে।[১] নাকের পাটায় ছিদ্র করে সেখানে এই অলঙ্কারটি পরা হয়। প্রকৃতপক্ষে, কানে ছিদ্র করার পরে নাক ছিদ্র করে গয়না পরা হল দ্বিতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় ধরনের শরীর ভেদন (বডি পিয়ার্সিং)।[১]
ভারতে[সম্পাদনা]
দক্ষিণ ভারতীয়, পাস্তুন, পাঞ্জাবি, রাজস্থানী এবং নেপালি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে দুই নাকেই গয়না পরা খুব সাধারণ। এগুলিকে 'নথোরি' বলে। মহারাষ্ট্রে মহিলারা একটি বড় নথোরি পরেন, যেটিতে মুখের এক পাশ ভরে থাকে। বাঙালি মহিলারা বিবাহের পর নাসা পর্দায় ছিদ্র পছন্দ করেন।
নাকের গয়না, বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় যাকে বলা হয় নথ (হিন্দি: नथ, আ-ধ্ব-ব: [nətʰ]), ৯ম এবং ১০ম শতাব্দীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, এবং নারীর বৈবাহিক অবস্থার বিভিন্ন প্রতীকের অংশ হয়ে উঠেছিল। এই গয়নাটি পরিহিতার অর্থনৈতিক অবস্থাও প্রদর্শন করত; রাজা, মন্ত্রী এবং ধনী পরিবারের স্ত্রীরা মুক্তা, নীলা এবং কুন্দনেরর তৈরি নথ পরতেন, অন্যান্য সামাজিক অবস্থার মহিলাদের গয়না রুপোর তৈরি হত। ১৫ শতকের পর থেকে, অলঙ্কারটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, এবং ১৭শ ও ১৮শ শতাব্দীতে, লবঙ্গ, কাঁটা এবং পেরেক ইত্যাদি ব্যবহার করে এর মধ্যে বৈচিত্র এসেছিল। বর্তমানে প্রচলিত নকশা এবং উপকরণের ব্যবহার শুরু হয়েছিল বিংশ শতাব্দী থেকে।[২]
বাইবেলে উল্লেখ[সম্পাদনা]
বাইবেলে, ইশাইয়া ৩:২১-এ নাকের গয়নার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও যিহিষ্কেল ১৬:১২, আদি পুস্তক ২৪:৪৭, প্রবচন ১১:২২, এবং হোসেয় ২:১৩-তেও এর উল্লেখ পাওয়া গেছে। নাকের গয়না মহিলাদের সবচেয়ে মূল্যবান অলঙ্কারগুলির মধ্যে একটি ছিল। এগুলি হাতির দাঁত বা ধাতু দিয়ে তৈরি হত এবং মাঝে মাঝে রত্নখচিত থাকত। এগুলি এক ইঞ্চিরও বেশি ব্যাসের হত, এবং মুখের উপর ঝুলে থাকত। এলিয়েজার এই গয়না রেবেকাকে একটি দিয়েছিলেন যেটি ছিল সোনার তৈরি, আর তার ওজন ছিল অর্ধেক শেকেল।
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ "The Meaning of Nose Rings – A Symbolic Piece or Mere Fashion Accessory?"। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০২২।
- ↑ Shanti Kumar Syal (২০০৫)। Pragatiśīla nārī (Hindi ভাষায়)। Delhi, India: Atmaram & Sons। পৃষ্ঠা 171। আইএসবিএন 9788170436478।
- This article incorporates text from a publication now in the public domain: Easton, Matthew George (১৮৯৭)। Easton's Bible Dictionary (New and revised সংস্করণ)। T. Nelson and Sons।